বিশ্লেষণ

মানুষের অধিকার নিশ্চিত না করে কি উন্নয়ন সম্ভব

২০২৪ সালে জনসংখ্যা ও উন্নয়নবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের (আইসিপিডি) ৩০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করছে জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ১৫-১৬ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘জনমিতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি বৈশ্বিক সংলাপ। এ সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য জাতিসংঘ দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম। বৈশ্বিক এ সংলাপের উদ্দেশ্য, গুরুত্ব ও বাংলাদেশের জন্য বার্তা নিয়ে তাঁর এই লেখা।

আইসিপিডির উপজীব্য বিষয় কী

১৯৯৪ সালের ৫ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয় যুগান্তকারী জনসংখ্যা ও উন্নয়নবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (আইসিপিডি)। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৭৯টি দেশের ১১ হাজার অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করেছিলেন ১৯৯৪ সালের ওই আইসিপিডি সম্মেলনে। আইসিপিডি ছিল জনসংখ্যা ও উন্নয়ন ভাবনায় এক ‘প্যারাডাইম’ শিফট বা চালচিত্রের পরিবর্তন। এতে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যার গুণগত দিক তথা অধিকারের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব পায়। উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত হয় অধিকার ও পছন্দ।

আইসিপিডির মূলে রয়েছে মানুষের অধিকার ও উন্নয়ন। আইসিপিডি সম্মেলনে অধিকার ও উন্নয়নকে উপজীব্য করে চূড়ান্ত হয় জনসংখ্যা ও উন্নয়ন–সংক্রান্ত কর্মসূচি, যা ‘আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন’ নামে পরিচিত। এতে নারী ও মেয়েদের সম-অধিকার, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার, ব্যক্তির মানবাধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে স্বীকৃত রয়েছে। প্রজননস্বাস্থ্য অধিকার, লিঙ্গসমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবার পরিকল্পনা অধিকতর গুরুত্ব পায়, যা জনসংখ্যা ও উন্নয়ন-ভাবনার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিপরিকল্পনায় সংযুক্ত হয়।

এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় জনসংখ্যা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের আন্তসম্পর্ক; লিঙ্গসমতা, সমদর্শিতা এবং নারীর ক্ষমতায়ন; পরিবারের ভূমিকা, অধিকার, গঠন এবং কাঠামো; জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও কাঠামো; প্রজনন অধিকার ও প্রজননস্বাস্থ্য; স্বাস্থ্য, রোগ ও মরণশীলতা; জনসংখ্যা বণ্টন, নগরায়ণ ও স্থানান্তর; আন্তর্জাতিক স্থানান্তর; জনসংখ্যা, উন্নয়ন ও শিক্ষা; প্রযুক্তি, উন্নয়ন ও গবেষণা; জাতীয় কর্মকৌশল; আন্তর্জাতিক সহযোগিতা; বেসরকারি খাতে অংশীদারত্ব এবং সম্মেলনের অগ্রগতি পর্যালোচনা।

৩০ বছর পূর্তিতে বৈশ্বিক সংলাপের উদ্দেশ্য

২০২৪ সালে আইসিপিডির ৩০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন চলছে। এ উপলক্ষে জাতিসংঘ ও সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতায় তিনটি বৈশ্বিক সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গত ৪–৫ এপ্রিল প্রথমটি আয়োজন করা হয় আফ্রিকার দেশ বেনিনে, যার যৌথ আয়োজক দেশ ছিল বেনিন, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস। এর শিরোনাম ছিল ‘আইসিপিডির জন্য নতুন প্রজন্মের দৃষ্টি’।

দ্বিতীয় সংলাপটি হতে যাচ্ছে ১৫-১৬ মে, ঢাকায়। এতে যৌথ আয়োজক হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ, বুলগেরিয়া ও জাপান। এ সংলাপের শিরোনাম হলো ‘জনমিতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়ন’। আর তৃতীয়টি হবে আগামী ২৪-২৫ জুন, যার শিরোনাম হলো ‘প্রযুক্তির পরিবর্তন ও আইসিপিডি অ্যাজেন্ডা’।

প্রতিটি সংলাপের স্বতন্ত্রতা থাকলেও বিভিন্ন অংশীজন (যুবগোষ্ঠী ও তাঁদের বৈচিত্র্য, চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ এবং প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান, মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী এবং আরও অনেকের) পারস্পরিক অংশগ্রহণ থাকবে এ সংলাপগুলোতে। এসব সংলাপের কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে।

প্রথমত, বৈশ্বিক এ সংলাপগুলোতে সমগ্র বিশ্ব থেকে আমন্ত্রিত অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে একত্রে উদ্‌যাপন করা হবে ৩০ বছর আগে গৃহীত জনসংখ্যা ও উন্নয়নের সামগ্রিক দর্শন। সংলাপে উঠে আসবে সর্বোত্তম চর্চার উদাহরণ, বিস্তৃত হবে আইসিপিডি সম্প্রদায়, যারা একত্রে প্রভাব রাখবে এবং তৈরি করবে, যা ২০২৪–পরবর্তী আইসিপিডি অ্যাজেন্ডাকে ভিত্তি করে শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

দ্বিতীয়ত, এ সংলাপে সমঝোতা হবে বিস্তৃত। বিভিন্ন প্রতিনিধিত্বশীল অংশীজনের (জাতিসংঘভুক্ত বিভিন্ন সংস্থা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, বহুমুখী এজেন্সির প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ-সিভিল সোসাইটি, বেসরকারি আওতায় বিভিন্ন সংগঠন, নারী ও যুবা নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা) সমন্বয়ে হবে গঠনমূলক আলোচনা, বিতর্ক আর আইসিপিডির সঙ্গে সম্পর্কিত জটিল বিষয়ে হবে বোঝাপড়া।

তৃতীয়ত, আইসিপিডির কেন্দ্রীয় দর্শন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য রেখে ভবিষ্যতে আমাদের অবস্থান ও কর্মকাণ্ড গ্রহণের তাগিদ থাকবে।

বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় বৈশ্বিক সংলাপের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব কী

বাংলাদেশে ১৫ থেকে ১৬ মে অনুষ্ঠেয় বৈশ্বিক এ সংলাপে গত ৩০ বছরে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও দেশীয় পর্যায়ে অর্জনের পাশাপাশি বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের বহুমুখী চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে বজায়যোগ্য বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বিবেচনায় রেখে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়–সংক্রান্ত জনসংখ্যা বিভাগের ‘বিশ্ব জনসংখ্যা সম্ভাবনা ২০২২’ অনুযায়ী ১৫ নভেম্বর ২০২২ বিশ্বের জনসংখ্যা পৌঁছে গেছে ৮০০ কোটিতে। ১৯৭৪ সালেও বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ৪০০ কোটি। ৮ বিলিয়ন জনসংখ্যা একটি বড় সংখ্যা, বড় চ্যালেঞ্জ ও বড় সম্ভাবনা। ২০৩৭ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা পৌঁছে যাবে ৯ বিলিয়নে এবং ২০৫৮ সালে ১০ বিলিয়নে।

লক্ষণীয় যে বিশ্বে জনসংখ্যার আকার অব্যাহতভাবে বাড়ছে, তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি মূলত দরিদ্র দেশগুলোতেই লক্ষণীয়। ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ৬৫ বছরের নিচের জনগোষ্ঠী মূলত দরিদ্র ও নিম্নমধ্য আয়ের দেশগুলোতেই বাড়ছে আর উচ্চ আয় ও উচ্চমধ্য আয়ের দেশগুলোতে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্ব জনগোষ্ঠী বাড়তে থাকবে। এ বাস্তবতায় বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় বৈশ্বিক সংলাপের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে।

প্রথমত, এ সংলাপে বিভিন্ন জনমিতিক ক্রমধারা, বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও ১৯৯৪ সালের পটভূমিতে ভিন্নতা তুলে ধরা হবে।

দ্বিতীয়ত, জনমিতিক পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে তাদের চ্যালেঞ্জগুলো নির্ধারণ ও সমস্যা সমাধানে সহায়তা করা।

তৃতীয়ত, অধিকারভিত্তিক, জেন্ডার সংবেদনশীল, মানবকেন্দ্রিক জনসংখ্যা ও উন্নয়ন নীতি, যার ভিত্তিমূলে রয়েছে আইসিপিডির মূলনীতি, এমন জাতীয় ক্ষেত্রের উদাহরণ তুলে ধরা, যা জনমিতিক পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করবে।

চতুর্থত, নতুন ও বিদ্যামান অংশীদারত্ব গঠন করা। বিশেষ করে যুবগোষ্ঠী এবং তাদের ভূমিকা নির্ধারণ, কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রভাব রাখবে।

পঞ্চমত, কীভাবে আইসিপিডি গৃহীত কর্মসূচিকে জনমিতিক বৈচিত্র্যময়তায় এগিয়ে নিয়ে যায়, সেগুলো নির্ধারণ করা; যেমন জনমিতিক লভ্যাংশ, পপুলেশন এজিং, নগরায়ণ, বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী, দ্রুত প্রযুক্তির বিকাশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট, যা ২০৩০ কেন্দ্র করে টেকসই উন্নয়ন ও ভবিষ্যতের জন্য পথনকশা হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশের জন্য বার্তা কী

জনসংখ্যা ও উন্নয়নচর্চায় বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আর এ কারণেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ বৈশ্বিক সংলাপ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশের জন্য হতে পারে উদাহরণ।

জনসংখ্যা ও উন্নয়ন আলোচনায় বাংলাদেশের রয়েছে সফল পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির অতীত দৃষ্টান্ত, তাৎপর্যময় দারিদ্র্য হ্রাস ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, বয়সকাঠামোর পরিবর্তনে জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনের সম্ভাবনা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার বিস্তার, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য। এ ছাড়া সরকারের পাশাপাশি এনজিও বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের বিশেষ ভূমিক রয়েছে, যা বৈশ্বিক সংলাপের বিভিন্ন প্যানেল আলোচনায় উদাহরণ হিসেবে আসতে পারে।

দ্বিতীয়ত, জনমিতিক পরিবর্তনে উদ্ভূত বিদ্যমান ও নতুন চ্যালেঞ্জগুলো হলো প্রজননহার ও মৃত্যুহার হ্রাস ও আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে দ্রুত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর দিকে ধাবিত হওয়া, দ্রুত নগরায়ণ ও স্থানান্তরের প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তনে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক স্থানান্তরের তাৎপর্যময় উপস্থিতি, উচ্চ যুব বেকারত্ব ও অদক্ষ জনশক্তি। এ বিষয়গুলো নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যময় তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত আসতে পারে এ বৈশ্বিক সংলাপে।

আইসিপিডি অ্যাজেন্ডা ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো ২০১৯ সালে নাইরোবি সামিটে প্রদত্ত ২০৩০ সালের মধ্যে ‘তিন শূন্য প্রতিশ্রুতি’ পূরণ করা। এগুলো হলো, পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অপূর্ণ চাহিদা পূরণ, উচ্চ মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, পরিবার ও পরিবারের বাইরে সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন দূরীকরণ ও বাল্যবিবাহ নিরোধ। এ ছাড়া কিশোরী মাতৃত্ব হ্রাস, শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় স্থানীয় ও পরিবর্তিত বিশ্ববাজারে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিয়ে দিকনির্দেশনা ও উপায় অনুসন্ধান করা।

আইসিপিডি কর্মসূচির ৩০ বছর পূর্তিতে আমাদের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো নির্মোহভাবে পর্যালোচনা করা এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা দরকার। আরও দরকার জাতীয় নীতি ও পরিকল্পনাতে আইসিপিডি ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট–সংক্রান্ত জনসংখ্যা ও উন্নয়ন ইস্যুগুলোকে সমন্বয় ও একীকরণ। গুণগত উপাত্ত ও উপাত্তের বৈশ্বিক, আঞ্চলিক, জাতীয়, স্থানীয় বা এলাকা/অঞ্চল ও বয়স, লিঙ্গ প্রভৃতির মতো বহুধাভিত্তিক বিশ্লেষণ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

শুধু অর্থনৈতিক বা জিডিপির উন্নয়নকে উপজীব্য না ভেবে মানুষের জীবনের গুণগত উন্নয়নে অধিকার নিশ্চিতকরণ ও পছন্দকে বেছে নেওয়ার সক্ষমতা বা সামর্থ্য সৃষ্টি করা। গণতন্ত্রের বিকাশ আর সুশাসন নিশ্চিত করা উচিত। উন্নয়নের ভিত্তিমূলে রাখা দরকার মানুষের অধিকার, পছন্দ ও সমতা।

বৈশ্বিক সংলাপ ও প্রত্যাশা

জনমিতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে বৈশ্বিক এ সংলাপে সব অংশীজনের সক্রিয় অংশগ্রহণে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হবে। এতে অতীতের অর্জন, বর্তমানের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতের প্রভাব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

বিশেষ করে প্রজননহার ও মৃত্যুহার হ্রাসে বয়সকাঠামোর পরিবর্তনে জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জন, লিঙ্গসমতা, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার ও নিম্ন প্রজননহারে জনমিতিক সহনশীলতা অর্জন, জনসংখ্যার পরিবর্তনে ভবিষ্যতের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও জীবনবিজ্ঞান, আন্তপ্রজন্মীয় সুস্থতা এবং স্বাস্থ্যকর বার্ধক্য, জনসংখ্যা উপাত্তের ভবিষ্যৎ, জনসংখ্যার গতিময়তা ও জলবায়ু সংকট, জনমিতিক পরিবর্তন ও প্রযুক্তির বিকাশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তি ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ—এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

এ ছাড়া নগরায়ণে আইসিপিডি অনুকূলীয় সবুজময় নগর উন্নীত করা, জনমিতিক পরিবর্তনে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে এবং ২০৩০–পরবর্তী ভবিষ্যতের জনসংখ্যা নীতি ও টেকসই উন্নয়ন কেমন হওয়া উচিত—এসব বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হবে। এ থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় ‘জনমিতিক বৈচিত্র্য ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক বিশ্ব সংলাপ সফল হবে—এই প্রত্যাশা করি।

  • মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রধান সম্পাদক, পিপিডি ইন্টারন্যাশনাল ই-জার্নাল অব সাউথ-সাউথ কো–অপারেশন ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।