সরকার পতনের পর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা সমাবেশ। নয়াপল্টন, ৭ আগস্ট ২০২৪
সরকার পতনের পর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা সমাবেশ। নয়াপল্টন, ৭ আগস্ট ২০২৪

মতামত

বিএনপির রাজনীতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের রোডম্যাপ

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের কারণে দেশের মানুষের রাজনৈতিক মনস্তত্ত্বে বড় পরিবর্তন এসেছে। তারা আগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও ক্ষমতাচর্চা দেখতে চায় না। নতুন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র সংস্কার এখন সবার দাবি। বিএনপি ও অন্য দলগুলো এর একটা রূপরেখা প্রস্তাব করতে পারে। তার ভিত্তিতেই হতে পারে একটা রোডম্যাপ। এসব বিষয় নিয়ে লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমদ

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে আওয়ামী-বাকশাল সরকারের পতন হয়। সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বীর উত্তম তার ৯ দিন পর ২৪ আগস্ট সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। ওই বছর ৭ নভেম্বর আরেকটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তিনি সামরিক সরকারের উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব নিজ হাতে নিয়ে নেন। ১৯৭৭ সালের ৪ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতি পদে বসেন। ৩১ মে এক গণভোটে তিনি আস্থাসূচক অনুমোদন পান।

 ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’-এর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিনে জিয়াউর রহমান দেশবাসীকে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে’ উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি উপরাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারকে আহ্বায়ক করে তিনি তৈরি করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল’ (জাগদল)। ২৮ এপ্রিল তিনি নিজেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেন। এ-সংক্রান্ত গেজেটটি অবশ্য প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৯ এপ্রিল।

১ মে ১৯৭৮ জিয়াকে চেয়ারম্যান করে গঠিত হয় ছয়দলীয় ‘জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট। এই ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ৩ জুন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২৮ আগস্ট বিলুপ্ত হয় জাগদল। ১ সেপ্টেম্বর জিয়া নিজেকে চেয়ারম্যান করে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি’ (বিএনপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের ৭৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ভেঙে দেওয়া হয়। ১ ডিসেম্বর তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান।

এভাবেই জেনারেল জিয়া হয়ে ওঠেন রাজনীতিবিদ। তাঁর হাত ধরে তৈরি হয় বিএনপি নামের রাজনৈতিক দল। এই দলে সমাবেশ ঘটে এক ঝাঁক সামরিক-অসামরিক আমলা, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী এবং ডান-বাম বলয়ের দলছুট রাজনীতিবিদের। আজ ১ সেপ্টম্বর দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বয়স ৫৩ আর বিএনপির বয়স ৪৬। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ভাঙনের মুখে পড়েছে দলটি। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর দলটি ছন্নছাড়া হতে গিয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ভাইস চেয়ারপারসন ও ১৯৮৪ সালে চেয়ারপারসন হয়ে দলের হাল ধরেছিলেন খালেদা জিয়া। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি একজন ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পান। একজন গৃহবধূ থেকে তাঁর পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার আখ্যানও বিস্ময়কর।

বলা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি টেকসই হতে পেরেছে তাঁর হাত ধরে। বিএনপির আগে ও পরে জন্ম নেওয়া অনেক দল খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেছে। তাদেরকে রীতিমতো অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজতে হয়। কিন্তু বিএনপি টিকে গেছে।

২০০৭ সালে বিএনপির গায়ে লেগেছিল এক-এগারোর সুনামি। দলটি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে একটা সমঝোতা করে ও কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

এই সমঝোতা বৈঠকটি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে (সূত্র: এক-এগারো, প্রথমা প্রকাশন)। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি রাখেনি। এরপর আমরা দেখলাম দলদাস নির্বাচন কমিশনের অধীনে পরপর তিনটি পাতানো নির্বাচন। ১৯৭৫ সালে উৎখাত হওয়া পারিবারিক শাসন জনগণের ঘাড়ে আবার চেপে বসেছিল সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো। সমর্থন দিয়েছিল দিল্লি। দিল্লির শাসকেরা মনে করেন, তাঁদের জাতীয় নিরাপত্তার বর্ম হচ্ছে শেখ হাসিনার তাঁবেদার সরকার।

রাজনীতির চালচিত্র পাল্টে যাচ্ছে

গত ১৫ বছরে দেশে যে সরকারব্যাবস্থা ছিল, তাকে এককথায় বলা যায় ‘ফ্যাসিবাদ’। এই কথাটা আমরা সরাসরি কাগজে লিখতে পারতাম না। বলতাম ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন’। স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদ এক জিনিস নয়। ফ্যাসিবাদ এমনি এমনি হয় না। তার একটা জনভিত্তি লাগে। আমরা দেখেছি, দেশের গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন বাঘা বাঘা সাংবাদিক,
কবি, লেখক, অধ্যাপক, শিল্পী। মোসাহেবির একটা স্থূল চিত্র আমরা নিয়মিত দেখতাম প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে কিছু ধামাধরা সাংবাদিক শিখিয়ে দেওয়া প্রশ্ন করতেন। সেই প্রশ্নের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিহিংসার বিষ উগরে দিতেন।

নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের শূন্যতা পূরণে সহায়ক ছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক। সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য করা হয়েছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো দমনমূলক আইন দিয়ে। ভয়ে মানুষ ফোনেও মন খুলে কথা বলতে পারত না। গোয়েন্দারা জনগণের টাকায় বেতন-ভাতা নিয়ে জনগণের টাকায় যন্ত্র কিনে জনগণের ওপর আড়ি পাতত। ভাবা যায়?

সরকার পতনের পর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা সমাবেশ। নয়াপল্টন, ৭ আগস্ট ২০২৪

এখন চালচিত্র কিছুটা পাল্টেছে। মানুষ অনেকটা মন খুলে কথা বলতে ও লিখতে পারছে। কিন্তু এটা কত দিন পারা যাবে? ১৯৯০-এর গণ-আন্দোলনের পর মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল। কিন্তু সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে বিএনপি ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য নতুন করে আন্দোলন করতে হয়েছিল। তখন থেকেই দেখেছি, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয়েই পালাক্রমে ছক কষেছে। এরপর এলো এক-এগারোর ধাক্কা। এর ফলে অনেক রাজনীতিবিদ লাঞ্ছিত হন। তবে এটি অনবার্য ছিল। রাজনীতিবিদেরাই খেয়োখেয়ি করে সেনা-হস্তক্ষেপ ডেকে এনেছিলেন। কিন্তু এ ঘটনা থেকে তাঁরা কোনো শিক্ষা নেননি।

সম্প্রতি দেশে একটা অভূতপূর্ব গণবিদ্রোহ হয়েছে। তার অনুঘটক হলেন ছাত্ররা। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আবরণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে দেশের সব স্তরের মানুষ পথে নেমে এসেছিল। ফলে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা হাসিনা সরকারের পতন হয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, এখান থেকেও কি রাজনীতিবিদেরা শিক্ষা নিয়েছেন? দেশ চালাবেন রাজনীতিবিদেরা, এটাই এ দেশের সনাতন চিন্তা। এখন দেশে আছে একটা অন্তর্বর্তী সরকার। বিএনপি দাবি করছে নির্বাচনী রোডম্যাপের। রাজনৈতিক দল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু একমাত্র অংশীজন নয়। জনগণই মূল অংশীজন। অনেক দিন ধরেই জনগণ দাবি করছে রাষ্ট্র সংস্কারের।

গত ৭৭ বছরে আমরা দেশ বদলেছি, পতাকা বদলেছি, জাতির পিতা বদলেছি। কিন্তু রাষ্ট্র বদলায়নি। নাগরিকেরা চান রাষ্ট্র সংস্কার। তাঁরা চান সংস্কারের রোডম্যাপ। এটি তো আসা উচিত ছিল রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকেই। সেটি পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্র মেরামত না করে নির্বাচন দিলে যাঁরা ক্ষমতায় যাবেন, তাঁরা কী ডেলিভার করবেন? আমরা ১৯৭২, ১৯৯১, ২০০৯—প্রতিবার প্রতারিত হয়েছি। হাজার মানুষের রক্তে কেনা আজকের এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা কী, সেটা এই সরকারকে যেমন বুঝতে হবে, বিএনপিসহ ক্ষমতাপ্রত্যাশী অন্যান্য দলকেও তা উপলব্ধি করতে হবে।

দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। সামাজিক শৃঙ্খলা তলানিতে। কেউ কারও কথা শোনে না। চলছে মাৎস্যন্যায়। এ অবস্থা থেকে দেশকে তুলে আনতে হলে দরকার একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও রূপকল্প। আস্তিন গুটিয়ে, গর্দান ফুলিয়ে, আঙুল উঁচিয়ে গলাবাজির রাজনীতির দিন শেষ।

ক্ষমতায় গেলেই নেতাদের ভাষা বদলে যায়

আমাদের হাসি পায়, যখন রাজনৈতিক নেতারা বলেন, আমরা গণতন্ত্র দিয়েছি, আমরা উন্নয়ন করেছি। ১৭ কোটি লোক তো একসঙ্গে বসে দেশ চালাতে পারবে না। জনগণ আপনাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের হয়ে নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে। এ জন্য আপনাদের বেতন-ভাতাও দেওয়া হয়। আমরা চাই, আপনারা সে দায়িত্বটুকু পালন করুন ন্যূনতম খরচে। আমরা গরিব দেশ, অনেক সমস্যা। তাই সরকারকে হতে হবে দায়িত্বের দিক থেকে বড় আর খরচের দিক থেকে ছোট।

ক্ষমতায় গেলেই রাজনৈতিক নেতাদের ভাষা বদলে যায়। তাঁরা তখন বলেন, আমরা ‘গঠনমূলক’ সমালোচনা চাই। ভিন্নমতের মানুষকে দেশদ্রোহী বলাটা ক্ষমতাসীনদের স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে। সরকারের সমালোচনার জন্য গণমাধ্যমের ওপর নেমে এসেছে খড়্গ। একটা উদাহরণ দিলেই কিছুটা বোঝা যায়।

যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তখন একপর্যায়ে তাঁরা দৈনিক প্রথম আলোয় সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কারণ, পত্রিকাটি কথা শোনে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবার এ কাজটিই করেছে। কারণ, প্রথম আলো কথা শোনে না। পছন্দ না হলেই পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া। আমরা দেখেছি, বিএনপির পুলিশ নাসিম-তোফায়েল-মতিয়াকে পেটায়, আর আওয়ামী লীগের পুলিশ পেটায় খোকা কিংবা জয়নুল আবদিনকে। এ রকম উদাহরণ আছে অজস্র।

দৃশ্যপটে আপাতত আওয়ামী লীগ নেই। দলের অনেকে গ্রেপ্তার হচ্ছেন, অনেকেই পালাচ্ছেন। বাকিরা গণপিটুনির ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। সরকারের দায়িত্বশীল লোকেরা বলছেন, তাঁরা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করতে চান না। আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করেই কথাটা বলা হচ্ছে।

বিএনপি আর আওয়ামী লীগের মধ্যে অমিল যত, মিল তার চেয়েও বেশি। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করে আমাদের লজ্জায় ডুবিয়েছিল। আমরা দূরের অতীত ভুলে যাই, নিকট অতীতকে মনে রাখি বেশি। এখন আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের দুশমন। আর আওয়ামী শাসনের ‘ভিকটিম’ হিসেবে বিএনপি এখন জনগণের দল। বিএনপিকে দেখাতে হবে যে তারা আওয়ামী লীগের মতো হবে না। তাহলে তাদের এজেন্ডা কী, ফারাক কোথায়, সেটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিতে হবে।

রাষ্ট্র সংস্কার সবার দাবি

দেশের মালিক রাজনীতিবিদেরা নন, দেশের মালিক জনগণ। এটা কাজির খাতায় আছে, বাস্তবে নেই। অনেক দেশের সংবিধানের ভিত্তি হলো নাগরিক সনদ। রাষ্ট্রের পরিধি কী, সরকারের এখতিয়ার কতটুকু—এসব তো ঠিক করে দেবে নাগরিকেরা। ফিনল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। আর আমাদের দেশে লোকেরা ভোটের বাক্স মাথায় নিয়ে দৌড়ায়। ক্ষমতার প্রতি এত মোহ!

 ন্যূনতম কিছু বিষয়ে আমাদের সবাইকে একমত হয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। এটাই হবে সংবিধানের ভিত্তি। তাহলেই আমরা একটা নাগরিকদের রাষ্ট্র পাব। পুরোনো ও বড় দল হিসেবে বিএনপির একটা জনভিত্তি আছে। এই দলে অনেক পোড় খাওয়া নেতা-কর্মী আছেন। জনভিত্তির কারণে দলটি চাইলে সমাজে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে, আবার ভয়ংকর ফ্যাসিস্টও হয়ে উঠতে পারে। কারণ, দলটি চলে ব্যক্তিবিশেষের মরজিতে। সব দলের একই অবস্থা। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়।

বড় দলগুলো এত দিন রাজনীতিতে হিন্দুস্তান-পাকিস্তান, হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-বাংলাদেশি, মুক্তিযোদ্ধা-রাজাকার কার্ড নিয়ে খেলেছে। এসবের অবসান হওয়া দরকার। বিএনপিকে বুঝতে হবে, জন-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ না করে বা তার বিপরীতে গিয়ে আগের মতো ক্ষমতার চর্চা করলে তার পরিণতিও হবে পতিত আওয়ামী লীগের মতো। তাদের চিন্তাভাবনা ও আচরণ পাল্টাতে হবে। তারা এখন নাগরিকদের নজরদারিতে আছে।

রাষ্ট্র সংস্কার এখন সবার দাবি। এর একটা রূপরেখা প্রস্তাব করতে পারে বিএনপি। অন্যরাও দেবেন। তার ভিত্তিতেই হতে পারে একটা রোডম্যাপ। ৪৭তম জন্মদিনে এটাই হোক বিএনপির ভাবনা।

  • মহিউদ্দিন আহমদ লেখক ও গবেষক