জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শুধু একটি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান নয়, দেশে একটি নতুন ধরনের রাজনীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। আরেকটি ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতির নির্বাচন সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন কীভাবে নতুন নতুন কিছু দেখার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে, তা নিয়ে লিখেছেন নজরুল ইসলাম
দেশে আনুপাতিক নির্বাচন নিয়ে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। এটা উৎসাহব্যঞ্জক। অমর্ত্য সেনের মতে, গণ-আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হওয়াই গণতন্ত্রের মূল কথা। আপাতদৃষ্টিতে প্রতীয়মান হচ্ছে, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আনুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান ঘোষণা করেছে। তবে কিছু দল এ বিষয়ে এখনো সম্মত হয়নি। দেশের বুদ্ধিজীবীদের বেশির ভাগ আনুপাতিক নির্বাচন সমর্থন করেছেন। তবে এ বিষয়ে কিছু দ্বিমতও প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
আনুপাতিক নির্বাচনের বহু ধরন আছে। অবস্থাভেদে বিভিন্ন দেশে এটা সুনির্দিষ্ট রূপ গ্রহণ করতে পারে। আনুপাতিক নির্বাচনের সাফল্য বহুলাংশে নির্ভর করে এই সুনির্দিষ্টকরণের সঠিকতার ওপর। পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে একই দেশের জন্য এই সুনির্দিষ্টকরণ বিবর্তিত হতে পারে। সুতরাং এটা ভালো যে আনুপাতিক নির্বাচনের আলোচনা সাধারণ ধরন থেকে ক্রমেই এর সুনির্দিষ্ট রূপের ওপর নিবদ্ধ হচ্ছে।
কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন যে উন্নত দেশগুলোতে সফল হলেও অনেক উন্নয়নশীল দেশে আনুপাতিক নির্বাচন সফল হয়নি। এ ক্ষেত্রে সংগত কারণেই প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও নেপালের প্রসঙ্গ এসেছে। তবে যেটা মনোযোগ পায়নি, তা হলো এই উভয় দেশেই আনুপাতিক নির্বাচনের প্রয়োগের মাত্রা ও ধরন দুর্বল।
শ্রীলঙ্কা মূলত রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার। সেখানে রাষ্ট্রপতি একাধারে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান। তিনি সংসদে নিজ দলের সদস্যদের নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী হন রাষ্ট্রপতির ডেপুটি বা সহকারী।
শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্বান, স্থগিত ও সমাপ্ত ঘোষণা করতে পারেন। তিনি নির্বাচনের এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর যেকোনো সময় সংসদ বাতিলও ঘোষণা করতে পারেন। এ ধরনের ব্যবস্থায় আনুপাতিক নির্বাচনের জোরালো ভূমিকা আশা করা কঠিন। কারণ, এই ব্যবস্থা সংসদের নির্বাচনের জন্য।
এটা ঠিক যে শ্রীলঙ্কার সংসদ একধরনের আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়। কিন্তু এই ধরনও দুর্বল। কারণ, সংসদের মোট ২২৫ জনের মধ্যে মাত্র ২৯ জন জাতীয়ভিত্তিক আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হন। বাকি ১৯৬ আসন দেশের ২২টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে বণ্টন করা হয়; অর্থাৎ গড়ে মাত্র ৯টি আসন।
এত ক্ষুদ্র পরিধিতে প্রয়োগ হলে আনুপাতিক নির্বাচন তার কার্যকারিতা হারায়। সুতরাং একদিকে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ও অন্যদিকে সংসদ নির্বাচনে অত্যন্ত ক্ষুদ্র পরিধিতে প্রয়োগ—এই দুই কারণে শ্রীলঙ্কার উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশের জন্য আনুপাতিক নির্বাচনের উপযোগিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সংগত নয়।
নেপালের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। নেপাল রাষ্ট্রপতিশাসিত নয়। সুতরাং সেখানে আনুপাতিক নির্বাচনের সফল হওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু নেপালের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের মূল যে কক্ষ, যার নাম ‘প্রতিনিধি সভা’।
প্রতিনিধি সভায় মোট ২৭৫ জন সদস্যের মধ্যে ১৬৫ জন (৬০ শতাংশ) বাংলাদেশের মতো আসনভিত্তিক অর্থাৎ সরল সংখ্যাগরিষ্ঠতানির্ভর; ‘উইনার টেকস অল’ (বিজয়ী কর্তৃক সব পাওয়া) পদ্ধতিতে নির্বাচিত হন। নেপালের যে ৭টি ৫৫০ সদস্যবিশিষ্ট ‘প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলি’, সেগুলোরও ৩৩০ জন (৬০ শতাংশ) সদস্য একই পদ্ধতিতে নির্বাচিত হন।
সর্বোপরি ‘জাতীয় অ্যাসেম্বলি’ নামক উচ্চকক্ষ নির্বাচিত হয় প্রতিনিধি সভার সদস্য, প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলির সদস্য এবং ৭৫৩টি স্থানীয় সরকারের প্রধান ও উপপ্রধান নিয়ে গঠিত ‘নির্বাচকমণ্ডলী’র (কলেজিয়াম) ভোটে। সুতরাং নেপালেও সামগ্রিকভাবে সরকার গঠনে আনুপাতিক পদ্ধতির পরিবর্তে ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতির ভূমিকাই মুখ্য। ফলে নেপালের অভিজ্ঞতা দিয়েও বাংলাদেশের জন্য আনুপাতিক নির্বাচনের উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ করা ঠিক নয়। কিন্তু আনুপাতিক নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরেও গণতন্ত্র প্রসারের উপায় বের করা কঠিন।
নির্বাচনব্যবস্থা হিসেবে আনুপাতিক নির্বাচন যে ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতির নির্বাচনের চেয়ে উন্নত—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তা না হলে উন্নত বিশ্বের ৭০ শতাংশের বেশি দেশ এই পদ্ধতি অনুসরণ করত না। আগে যেসব উন্নত দেশ ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতির নির্বাচন অনুসরণ করত, সেগুলো (যেমন নিউজিল্যান্ড) ক্রমেই আনুপাতিক নির্বাচন গ্রহণ করেছে।
খোদ যুক্তরাজ্যে স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলসের অ্যাসেম্বলি নির্বাচনের জন্য আনুপাতিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। জার্মানি ক্রমেই মিশ্র থেকে আনুপাতিক নির্বাচনের দিকে ঝুঁকছে। তবে উন্নত দেশের জন্য উপযোগী হলেও বাংলাদেশের জন্য এই পদ্ধতি উপযোগী কি না, তা একটি ন্যায়সংগত প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তরে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
প্রথমত, উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রায় ৫৫ শতাংশ দেশ আনুপাতিক নির্বাচনের পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। সুতরাং কেবল কম সফল দেশের উদাহরণে সীমাবদ্ধ না থেকে সফল উদাহরণের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন।
অনেক দেশ আনুপাতিক ব্যবস্থার আংশিক প্রয়োগ সত্ত্বেও সফল হয়েছে। একইভাবে যেসব উন্নয়নশীল দেশ ততটা সফল হয়নি, সেগুলো সম্পর্কে ভাসা-ভাসা মন্তব্য বা খণ্ডিত বিশ্লেষণে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত হবে না; আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি কেন সফল হয়নি, তা অনুসন্ধান করা বরং বেশি উপকারী হবে।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের প্রতি যে অনুরাগ প্রদর্শন করেছেন এবং গণতন্ত্র অর্জনের জন্য আত্মত্যাগের নিদর্শন দেখিয়েছেন, তা গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বে বিরল। কাজেই এ দেশের জনগণ উন্নত মানের গণতন্ত্র চর্চায় অন্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি সফল হবে, তা আশা অসংগত নয়।
তৃতীয়ত, অনন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে জনমিতিগত পার্থক্য কম এবং ভৌগোলিকভাবে তাঁরা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে বা কাছাকাছি অবস্থান করেন। কাজেই বাংলাদেশে আনুপাতিক নির্বাচনের সাফল্য সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট বস্তুগত ভিত্তি রয়েছে।
তবে এই সাফল্যের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশের জন্য আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির সঠিক সুনির্দিষ্টকরণ। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত আনুপাতিক নির্বাচন—কী এবং কেন শীর্ষক বইয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা উপস্থিত করেছি। এখানে সংক্ষেপে তার কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে।
প্রথমত, আনুপাতিক নির্বাচনের বহু বৈচিত্রপূর্ণ রূপ থাকলেও বাংলাদেশে এর একটি সরল রূপ দিয়ে শুরু করা শ্রেয় হবে। ক্রমেই যখন বাংলাদেশের জনগণ এই নতুন নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন এবং তাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির মান উন্নত হবে, তখন সেটার সঙ্গে সংগতি রেখে এই ব্যবস্থার আরও ‘বিদগ্ধ’ রূপে উত্তরণ সম্ভব হতে পারে।
শুরুতে ‘বদ্ধতালিকা’ ভিত্তিক আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েই অগ্রসর হওয়া যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে ভোটাররা অপরিবর্তনীয় পার্টি তালিকার ভিত্তিতেই ভোট দেবেন; তবে দলগুলো যাতে দলের ভেতরে স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বীয় প্রার্থীর তালিকা নির্ধারণ করে, সেটার ওপর জোর দিতে হবে।
সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় বিধিমালা জারি ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে। কেউ কেউ বলতে পারেন যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির কারণে আনুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তিত হলে দলীয় প্রার্থীর তালিকা নির্ধারণের সুযোগে দলীয় নেতৃত্বের ক্ষমতা ও দলের ভেতর স্বৈরতন্ত্র বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু বিষয়টিকে উল্টোভাবেও দেখা যেতে পারে। দলীয় প্রার্থী তালিকা নির্ধারণ প্রক্রিয়া দলের ভেতর গণতন্ত্র প্রসারের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে ও তার ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া দলগুলোর ভেতর গণতন্ত্র প্রসারের উপায় বের করা কঠিন।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে সংসদ সদস্যরা এযাবৎ এক দ্বৈত ভূমিকা পালন করে এসেছেন। একদিকে তাঁরা জাতীয় পরিধির নীতি ও আইন প্রণয়ন করেছেন। এটা তাঁদের ‘জাতীয় ভূমিকা’।
অন্যদিকে আসনভিত্তিক হওয়ায় তাঁরা স্বীয় এলাকার জনগণের দাবিদাওয়া ও অভিমত-সুপারিশ জাতীয় অঙ্গনে বা সংসদে পেশ করেছেন। এটা তাঁদের ‘স্থানীয় ভূমিকা’। আনুপাতিক নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের স্থানীয় ভূমিকা লোপ পাবে, কারণ, তাঁরা আসনভিত্তিক হবেন না। ফলে একটি শূন্যতার সৃষ্টি হবে। এই শূন্যতা পূরণ করা আনুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তনের একটি সহগামী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে হবে।
এটা সন্তোষজনক বিষয় যে আনুপাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ‘স্থানীয় ভূমিকা’র অবসানের ফলে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে। তবে এটুকুই পর্যাপ্ত হবে না।
স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের জাতীয় অঙ্গনে বক্তব্য রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সে জন্য ৬৪টি জেলা পরিষদ ও ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের সভাপতিদের নিয়ে ‘জেলা-উপজেলা সভাপতি পরিষদ’ গঠন করা যেতে পারে। মোট ৫০১ সদস্যের এই পরিষদকে দেশের বাজেট আলোচনা ও অনুমোদনে ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও সাংবিধানিক সংস্থাগুলো গঠনে সংসদে সৃষ্ট যেকোনো অচলাবস্থা নিরসনের ভূমিকাও এই পরিষদকে দেওয়া যেতে পারে। এভাবে দেশে জাতীয় সরকার ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে একটা ভারসাম্য সৃষ্টি হবে এবং জাতীয় অঙ্গনে স্থানীয় জনগণের মতামত তুলে ধরার ক্ষেত্রে আনুপাতিক নির্বাচন সৃষ্ট শূন্যতা বহুলাংশে দূর হবে।
জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার উভয়ের মেয়াদ চার বছর করা যেতে পারে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পর সব পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধান করা যেতে পারে।
লক্ষণীয়, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব করেছেন। যেমন বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির ৫ম দফায় ‘বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে “উচ্চকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা” প্রবর্তন করার কথা বলা হয়েছে।’(যুগান্তর, ১৩ জুলাই ২০২৪)
প্রস্তাবিত এই ‘কক্ষের’ প্রয়োজনীয়তা, অবস্থান, ভূমিকা ও গঠনের প্রক্রিয়া পরিষ্কার নয়। তবে ওপরে প্রস্তাবিত ‘জেলা-উপজেলা সভাপতি পরিষদ’ ক্রমেই একটি ‘দ্বিতীয় কক্ষ’ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। সেক্ষেত্রে আনুপাতিক পদ্ধতির মূল সংসদের সঙ্গে আসনভিত্তিক প্রতিনিধিত্বসম্পন্ন একটি কক্ষের সমন্বয় ঘটবে এবং বিএনপির প্রস্তাবিত দ্বিকক্ষের প্রয়োজনীয়তা বহুলাংশে পূরণ হবে।
নির্বাচিত সরকার–পরবর্তী সময় দ্বিকক্ষ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে পারে। তবে আনুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তনের জন্য সংবিধানের তেমন কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমেই এটা সম্ভব। আনুপাতিক নির্বাচনের খুঁটিনাটি সব বিষয় ‘জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ’ পরিবর্তনের মাধ্যমেই করা সম্ভব।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শুধু একটি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান নয়, দেশে একটি নতুন ধরনের রাজনীতির প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। আরেকটি ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতির নির্বাচন সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
আর কিছু না হোক, অন্তত আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন নতুন কিছু একটা দেখার প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হতে পারে। আশা করা যায় যে দেশের রাজনীতিবিদেরা তরুণ প্রজন্ম ও দেশবাসীকে এ ব্যাপারে নিরাশ করবেন না।
নজরুল ইসলাম অধ্যাপক, এশীয় প্রবৃদ্ধি গবেষণা ইনস্টিটিউট