কিছুদিন বিরতির পর আবার শুরু হয়ে গেল হিন্দি ছবির পীঠস্থান মুম্বাইয়ের চলচ্চিত্রশিল্প ও শিল্পীদের ওপর আক্রমণ। গত শনিবার দেখা গেল, মুম্বাই বা বলিউডের ইন্ডাস্ট্রিকে আক্রমণ করে লেখালেখি হচ্ছে সামাজিক মাধ্যম টুইটারে। শনিবার লেখা হলো, এখনই বলিউডকে বয়কট করা প্রয়োজন, কারণ কিছুদিন আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর শিল্পী-কলাকুশলীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘ফিল্মফেয়ার’ প্রদান অনুষ্ঠানে। টুইটার ব্যবহারকারীদের বক্তব্য, ফিল্মফেয়ারের অনুষ্ঠান থেকে ‘কাশ্মীর ফাইলস’-এর নির্মাতাদের বাদ দেওয়ার কারণ, ছবিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে কাশ্মীরে হিন্দুদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে।
ভারতে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে জনপ্রিয় বলিউডের ওপর আক্রমণের অনেক উদাহরণ গত আট বছরে দেখা গেছে। কয়েকটির কথা বলা যাক। হিন্দি ছবির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা-প্রযোজক আমির খানের ‘লাল সিং চাড্ডা’ মুক্তি পেয়েছে গত আগস্ট মাসে। ছবিটি দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে। ছবির গুণগত মান নিয়ে সমালোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু সে কারণে বিভিন্ন মাধ্যমে ছবির বিরোধিতা করা হয়নি; বিরোধিতা করা হয়েছে মূলত এ কারণে, এটি একজন ‘খানের ছবি’।
‘আর কত দিন বলিউডে রাজত্ব করবে চার খান (আমির, শাহরুখ, সালমান এবং অল্পবিস্তর সইফ আলী) ’—সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন এক ব্যক্তি। এখনো বিরাট একটা বিনিয়োগ খানদের ওপর হচ্ছে, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, সমাজে তাঁদের প্রভাব রয়েছে; অথচ একটি হিন্দুত্ববাদী সরকার আট বছর ধরে ক্ষমতায়।
এটাই বলিউডের বিরুদ্ধে প্রধান ক্ষোভ, এটা সামাজিক মাধ্যমে বারবার বলাও হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা বলিউডে মুসলমানের প্রভাব কমাতে প্রচার করছেন। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক—সব ক্ষেত্রে মুসলমান সমাজের প্রভাব ভারতে কমেছে। ব্যতিক্রম বলিউড।
বস্তুত, বর্তমান ভারতে হিন্দুত্ববাদবিরোধী কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক দল নেই, বলিউডই যেন শেষ বিরোধী। তার কেন্দ্রে ওই চার খান, যদিও তাঁদের নিয়ন্ত্রণ কমছে। একদিকে তাঁদের ছবির বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রচার হচ্ছে, অন্যদিকে মাদক সেবন ও চোরাচালানে যুক্ত থাকা বা কর ফাঁকি দেওয়ার মামলা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শাহরুখ খানের ছেলেকে মাদক ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করার ছয় মাস পর বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। সালমান খানকে নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমে হেনস্তা করা হচ্ছে, সাইফ আলী খান ছেলে নাম তৈমুর রেখেছিলেন বলে তাঁকেও বিষাক্ত সমালোচনা সহ্য করতে হয়। হেনস্তার তালিকা দীর্ঘ।
তবে শুধু মুসলমান তারকাদেরই হেনস্তা করা হয়েছে—এ কথা বললে ভুল হবে। যেসব তারকা জন্মসূত্রে হিন্দু বা অন্য সম্প্রদায়ের কিন্তু হিন্দুত্ববাদবিরোধী বিবৃতি দিয়েছেন বা ছবিতে এমন কিছু দেখিয়েছেন, যা হিন্দুত্ববাদবিরোধী, তাঁরাই বিপদে পড়েছেন।
বলিউডের এক বিখ্যাত নায়িকা, প্রযোজক এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলির স্ত্রী আনুশকা শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ওয়েব সিরিজ ‘পাতাল লোক’-এ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তিতে আঘাত করেছেন। এই সিরিজ বয়কট করার জন্য প্রচার চালানো হয় ২০২০ সালে। (কোহলি বিপদে পড়েন সতীর্থ ফাস্ট বোলার মোহান্মদ শামির সমর্থনে কথা বলার জন্য। ২০২১ সালে শামিকে হেনস্তা করা শুরু হয় ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হারার পর)। প্রায় নিয়মিত প্রকাশ্যে অপমানিত হচ্ছেন অনুরাগ কাশ্যপের মতো পরিচালক থেকে নাসিরুদ্দিন শাহের মতো অভিনেতা বা দক্ষিণ ভারতের একাধিক শিল্পী-পরিচালক।
বলিউডের কলাকুশলী ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের আক্রমণের প্রবণতা যে হিন্দি ছবির পেশাদারদের আতঙ্কের মধ্যে রেখেছে, তা নিয়ে আমেরিকার পত্রিকা দ্য আটলান্টিকে ২০২১ সালে দীর্ঘ প্রতিবেদন করেছিলেন ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক আতিস তাসির। তিনি লম্বা তালিকা দিয়ে জানান কোন কোন ছবি প্রযোজক, অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। চলচ্চিত্রশিল্পের এক প্রভাবশালী নারীকে উদ্ধৃত করে লেখেন, ‘প্রত্যেকে চূড়ান্ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এ এক অবিশ্বাস্য প্রতিশোধকামী সরকার।’
‘ওই নারীর সঙ্গে আলাপের এক দিন আগেই ভারতের অন্যতম বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকের অফিসে আয়কর দপ্তরের তল্লাশি চলে। তল্লাশি চলে তাঁর অভিনেতার অফিসেও। তাঁরা দুজনেই সরকারের সমালোচনা করেছেন, ’ লিখেছেন তাসির।
মুম্বাইয়ের বিজ্ঞাপনজগতের এক প্রযোজক-পরিচালক প্রথম আলোকে টেলিফোনে বলেন, ‘বলিউডের তারকাদের বড় সমস্যা হলো, তাঁরা বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন করেন। এটা পুরোপুরি আইনিভাবে নেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের পক্ষে একটা সময়ের পর সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলা সম্ভব নয়।’ ওই পরিচালক আরও বলেন, চলচ্চিত্রশিল্পের কমবেশি সবাই বরাবরই মাদকাসক্ত।
‘এভাবেই চলে আসছে। এখন সরকার ঝামেলা করতে চাইলে করতে পারে। এভাবে চললে বলিউডে টিকে থাকা মুশকিল, ’ বলেন ওই পরিচালক।
অনেকে টিকতে পারছেনও না, কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছেন। যেমন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। তাঁকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ধরা হয়েছিল মাদক ব্যবহারের অভিযোগে। এর কিছুদিন আগে হিন্দুত্ববাদী ছাত্রসংগঠনের বিপক্ষে গিয়ে তিনি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আর কার্যনির্বাহী প্রযোজক ক্ষীতীশ রবিপ্রসাদ বলেছেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (এনসিবি) তাঁকে আটক করে পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহর, অভিনেতা রণবীর কাপুর, দিনো মরিয়া ও অর্জুন রামপালের নামে অভিযোগ করতে বলেছিল। এনসিবি এ অভিযোগ অস্বীকার করে।
তাঁর লেখায় তালিকা পেশ করে তাসির বলেছেন, এটা নতুন কিছু নয়। সব দেশেই চলচ্চিত্রশিল্পকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা রাষ্ট্র করে। ‘মনে করা যেতে পারে ১৯৩৫ সালের ঘটনার কথা। জার্মানির নাৎসি সরকারের প্রচারমন্ত্রী জোসেপ গোয়েবলস কোনো এক রাতে হলিউডের একটি ছবি দেখতে গেলেন, “ইট হ্যাপেন্ড ওয়ান নাইট”। বাসায় ফিরে ডায়েরিতে লিখলেন, “আমেরিকানরা কত স্বাভাবিকভাবে এ (নিয়ন্ত্রণের) কাজ করে। আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে।” স্বৈরতান্ত্রিকরা ইন্ডাস্ট্রিকে সব সময়েই তাদের “মাইক্রোফোন হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে”, ’ মন্তব্য তাসিরের।
শুধু মুসলমান তারকাদেরই হেনস্তা করা হয়েছে—এ কথা বললে ভুল হবে। যেসব তারকা জন্মসূত্রে হিন্দু বা অন্য সম্প্রদায়ের কিন্তু হিন্দুত্ববাদবিরোধী বিবৃতি দিয়েছেন বা ছবিতে এমন কিছু দেখিয়েছেন, যা হিন্দুত্ববাদবিরোধী, তাঁরাই বিপদে পড়েছেন।
হয়তো সে কারণেই হিন্দুত্ববাদীদের একটি দল বলিউডে গড়ে উঠেছে। পুরুষদের মধ্যে এর নেতৃত্বে রয়েছেন অক্ষয় কুমার, নারীদের মধ্যে কঙ্গনা রনৌত। বছর দশেক আগে তাঁরা খানদের সঙ্গে কেন, মাঝারি মাপের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারতেন না, বর্তমানে বলিউড অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁদের সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের অফিসে আয়কর বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তল্লাশি চালায় না, জানাচ্ছে কলাকুশলীদের একাংশ। তাঁদের ঘনিষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রী-পরিচালকেরা কাজ পান, আশীর্বাদধন্য ছবি পায় নানান সুবিধা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় স্তরে অকেজো করে দিতে পেরেছে বিজেপি। কিন্তু বলিউডকে আট বছরে পুরোপুরি মাটিতে মিশিয়ে ফেলতে পারেনি।
ইতিহাসগত কারণে বলিউডের প্রতিনিধিরা এশিয়ার নানা প্রান্ত থেকে এসেছেন। একেবারে গোড়ায় অবিভক্ত বাংলার শিল্পী-কলাকুশলী থেকে আফগানিস্তান, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেশাদাররা এসেছিলেন মুম্বাইয়ে। প্রথম ছবির নাম ছিল ‘দ্য ফ্লাওয়ার অব পার্শিয়া’ (১৮৯৮), পরিচালক এক বাঙালি চিত্রগ্রাহক হীরালাল সেন। মারাঠি ব্রাহ্মণ দাদাসাহেব ফালকে থেকে জরাথুষ্ট্রীয় পারসি আর্দেশির ইরানির হাত ধরে পরের কয়েক দশকে সাবালক হয় বলিউড। ইন্ডাস্ট্রির বড় অংশই এসেছে হয় আজকের পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে অথবা মুসলমান সমাজ থেকে। অনেকেই এসেছেন হিন্দি-উর্দুর মিলিত হিন্দুস্তানি সংস্কৃতির শহর, জেলা বা প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে।
তাঁদের মধ্যে আছেন বলিউডের স্বর্ণযুগের (১৯৪০-৭০) প্রথম সারির গায়ক মোহান্মদ রফি, তালাত মাহমুদ, নুরজাহান (যিনি পাকিস্তানে জন্মে সংগীতের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কলকাতায়), সামসাদ বেগম, চিত্রনাট্যকার সাদাত হাসান মান্টো থেকে দিলীপ কুমার (ইউসুফ খান), মীনাকুমারী (মাহজেবিন বানো), মধুবালা (মমতাজ জাহান), নার্গিস দত্ত (ফাতিমা রশিদ), আমজাদ খানের (মুম্বাইয়ের পাঠান) মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। হিন্দুরাও এসেছেন হিন্দু-মুসলমানের মিশ্র সংস্কৃতি থেকে। যেমন প্রযোজক-পরিচালক কে এল সায়গল (জম্মু-কাশ্মীর), পৃথ্বীরাজ কাপুর (পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ) এবং তাঁর পরিবার, সুনীল দত্ত (পাকিস্তানের পাঞ্জাব), বলরাজ সাহনি (রাওয়ালপিন্ডি), মনোজ কুমার (খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের অ্যাবোটাবাদ), দেবানন্দ (পাকিস্তানের পাঞ্জাব) প্রভৃতি। তাঁদের অধিকাংশই ভারত-পাকিস্তানের স্বাধীনতার আগে-পরে লাহোরের চলচ্চিত্রশিল্প থেকে এসেছিলেন মুম্বাইয়ে।
সম্ভবত সবচেয়ে সফল চিত্রনাট্যকারদ্বয় হলেন সেলিম (খান)-জাভেদ (আখতার)। মহাতারকা অমিতাভ বচ্চনের বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন এসেছেন হিন্দি-উর্দুর মিশ্র সংস্কৃতির পীঠস্থান এলাহাবাদ থেকে, লিখেছেনও এ নিয়ে। বাঙালিদের মধ্যে রয়েছেন অশোক কুমার, কিশোর কুমার, পরিচালক বিমল রায়, ঋষিকেশ মুখার্জি থেকে সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত অসংখ্য শিল্পী। অবিভক্ত ও বিভক্ত পাঞ্জাব প্রদেশ থেকেও কিছু কম অভিনেতা-পরিচালক আসেননি। যদিও সেই বলিউড থেকে আজ সিনেমার ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র, যেমন ‘কুলি’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চন বা ‘শোলে’-তে এ কে হাঙ্গল অন্তর্হিত। তাঁদের জায়গা নিচ্ছে কিছু যুদ্ধবাজ জেনারেল, লাফিয়ে বাড়ছে যুদ্ধের ছবির সংখ্যা।
পাশাপাশি দক্ষিণ ভারত থেকে এসেছেন গুরু দত্ত। তাঁর স্ত্রী গীতা দত্ত জন্মেছিলেন বাংলাদেশের মাদারীপুরে, সংগীতজগতের মহিরুহ শচীন দেববর্মন ত্রিপুরায়। বস্তুত, গানের কথা উঠলে লিখে শেষ করা যাবে না, কারণ হিন্দি ছবির গানে সারা পৃথিবী এসে মিশেছে। ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পা, ঠুমরির সঙ্গে অবলীলায় তাল মিলিয়েছে এসরাজ-সুরবাহার-সারেঙ্গি, তুর্কি রাগ-রাগিণী, বলিউড মিলিয়ে দিয়েছে কবির-তুলসীদাস-লালন-শাহ জালাল-বুল্লে শাহ-আব্বাসউদ্দীন থেকে সলিল চৌধুরী-কাইফি আজমি-নওশাদ আর রাহুল দেববর্মনকে। এই ঐতিহ্য একরৈখিক হিন্দুত্ববাদী সমাজ-আদর্শ নয়, যে আদর্শ বিভিন্ন জাত-ধর্মের মধ্যে ভালোবাসার বিরোধী—এটা একসঙ্গে কাজ করার আদর্শ।
নাচগানে ভরা অবাস্তব, হয়তো খানিক অলৌকিক ছবির শতাব্দীপ্রাচীন বলিউডই তাই আজ হিন্দুত্বের প্রধান শত্রু। এ কারণে বলিউডকে ভাঙতে উঠেপড়ে লেগেছেন মাতব্বরেরা। সংশয় নেই, ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরলে কোনো রাজনৈতিক দল নয়, বলিউডের মিশ্র ঐতিহ্যকে ভাঙাই হবে হিন্দুত্বের প্রধান লক্ষ্য।
শুভজিৎ বাগচী প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা।