আমাদের উন্নয়নের পথনকশাটা তাহলে কী হবে?

বিকাশমান বৈশ্বিক ব্যবস্থা যেসব জটিলতার মুখে পড়েছে, সে জটিলতাগুলোকে লাগসইভাবে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে আমরা কী কী রূপান্তরমূলক কৌশল অবলম্বন করছি? গণতন্ত্রের ঘাটতি ও শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে কী কী উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে? এই লেখায় সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর

দুনিয়াটা বলা যায় একেবারে অনিশ্চিত অবস্থায় চলে এসেছে। কখন যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তার কোনো ঠিকঠিকানা থাকছে না। কোভিড-১৯ মহামারি বুঝিয়ে দিয়েছে, কোনো ঘটনার ব্যাপারে এখন আর নিশ্চিত করে কিছু বলার উপায় নেই। কোন ঘটনা যে কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে এখন বড়জোর সম্ভাবনাসূচক একটা মত দেওয়া যেতে পারে।

কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমরা জানি যে আমরা জানি (নোন-নোনস বা চেনা-জানা); কিছু আছে, আমরা জানি যে আমরা জানি না (নোন-আননোনস বা চেনা-অজানা); কিছু আছে, আমরা জানি না যে আমরা জানি (আননোন-নোনস বা অচেনা-জানা); কিছু আছে, আমরা জানি না যে আমরা জানি না (অচেনা-অজানা)।

এই চারটি কোয়ান্ডারি বা বিভ্রম নিয়ে কোনো বিষয় সম্পর্কে আমরা কোনো পূর্বধারণায় পৌঁছালেও তা অমীমাংসিত, অনিশ্চিত, বিশৃঙ্খল অথবা দৈবচয়নভিত্তিক হয়ে পড়তে পারে।

এতে আমাদের কাছে যে অনুমান বা চিন্তার নিরীক্ষাটিকে সবচেয়ে জোরালো সম্ভাবনাভিত্তিক মনে হয়, তা শেষমেশ প্রবাদপ্রতিম শ্রেয়েডিংগারের বিড়ালতত্ত্বে (কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে শ্রোয়েডিংগারস ক্যাট তত্ত্ব অনুযায়ী, পদার্থের ক্ষুদ্র কণাগুলোকে পর্যবেক্ষণ না আনা পর্যন্ত সেগুলো আমাদের কাছে পরস্পরবিরোধী দুই অবস্থানেই আছে বলে মনে হতে পারে।

এটি অনেকটা বিষপূর্ণ অস্বচ্ছ বাক্সের মধ্যে আটকে রাখা একটি বিড়ালের মতো। আটকে রাখার অনেকক্ষণ পর বিড়ালটিকে না দেখা পর্যন্ত বিড়ালটিকে আমাদের কাছে জীবিত কিংবা মৃত দুটোই মনে হতে পারে) পর্যবসিত হতে পারে।

একটা কূটাভাসিক গতিপথও এর সম্ভাব্য পরিণাম হতে পারে। অর্থাৎ কিনা নানা তত্ত্ব ও তথ্যের আলোকে আমরা পরিণাম সম্পর্কে যা ধারণা করছি, বাস্তবে ঠিক তার উল্টো ঘটতে পারে।

উন্নয়নবিষয়ক আলোচনার পরিসরে ভূরাজনীতি এবং ভূ-অর্থনীতির সঙ্গে ‘নোন-আননোন কোয়ান্ডারি’ তথা চেনা-অজানার বিপত্তিটি জড়িয়ে পড়েছে। এভাবে জানা এবং অজানা বিশ্বব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। এই চেনা-অজানার বিপত্তি বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে।

গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পূর্ব থেকে এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা দুটি মৌসুমি বায়ু শুধু ফসল ফলাতেই যে সাহায্য করে, তা নয়; এই দুই বায়ুপ্রবাহ পণ্য পরিবহনকেও সহজ করে। বর্ষা মৌসুমের পণ্য চাল এশিয়াকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। চাল শস্যের মধ্যে সবচেয়ে কম অ্যালার্জেনিক এবং প্রতি হেক্টরে এই শস্য উল্লেখযোগ্য ক্যালরি উৎপাদন করে এবং এই অঞ্চলের সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এগুলো আমাদের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে আমাদের উত্তেজিত করতে উসকানি দেয়। সেসব প্রশ্নের মধ্যে কিছু হলো: বিকাশমান বৈশ্বিক ব্যবস্থা যেসব জটিলতার মুখে পড়েছে, সে জটিলতাগুলোকে লাগসইভাবে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে আমরা কী কী রূপান্তরমূলক কৌশল অবলম্বন করছি? গণতন্ত্রের ঘাটতি ও শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে কী কী উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে?

ন্যায়ভিত্তিক টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার ক্ষেত্রে মোক্ষম পন্থাগুলো কী কী? ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও জ্বালানি-রাজনীতির গোলক ধাঁধার মধ্যে পড়েও এই গ্রহের স্থিতিশীলতার স্বার্থে উন্নয়নশীল বিশ্ব কোন কায়দায় সবুজ রূপান্তরের লক্ষ্য অর্জন করবে? এ ধরনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পয়সাকড়িও–বা কারা জোগাবে?

একটি দেশের উন্নয়ননীতির মৌলিক নীতিগুলো সংশ্লিষ্ট দেশটির জনগণের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট জন–আকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ভূত হয়। সেদিক থেকে বলা যায়, কোনো একটি দেশের মানুষ যে ধরনের সমাজে বাস করতে চায়, তাকে বোঝা ও মেনে নেওয়াই হলো উচ্চাকাঙ্ক্ষী উন্নয়ননীতি।

এই সামাজিক রূপান্তরটি অর্থনীতি, সমাজ ও রাজনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত। তাই এসপিরেশন বা আকাঙ্ক্ষা ও ইম্পোজিশন বা আরোপণ-পরস্পরবিরোধী এই দুটি সত্তার মধ্যে আজন্মের দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাষ্ট্র এবং বাজার উভয়ই অধিকতর জবরদস্তিমূলক এবং জবাবদিহিহীন হয়ে উঠেছে। বাজারগুলো শিকারিসুলভ পথে হাঁটছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রযন্ত্রগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার করে ততধিক বলপ্রয়োগ ও সংবিধান লঙ্ঘনপ্রবণ হয়ে উঠছে।

রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের সামাজিক চুক্তির ভঙ্গুর দশা রাষ্ট্রকে নাগরিকদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। সামাজিক নিয়ম এবং মূল্যবোধ নাগরিকদের বৈষম্য মেনে নিতে বাধ্য করেছে এবং অর্থের জোরে রাজনীতি কুক্ষিগত করা চক্রগুলোকে শক্তি বাড়াতে প্ররোচিত করেছে। রাষ্ট্রের তথা জনগণের সম্পদের মধ্যে কে কত অংশ পাবে, তা ভাগ–বাঁটোয়ারা করছে ক্ষমতার কনফিগারেশন বা বহিরবয়ব।

একটি বখরা-বণ্টনকারী রাজনৈতিক বন্দোবস্ত যখন একটি রাষ্ট্র চালায়, তখন তাদের দায়বদ্ধতা থাকে না। দায়বদ্ধতা না থাকার কারণে সেই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দেয় এবং নাগরিকদের কল্যাণের বিষয়গুলো জলাঞ্জলি দিয়ে তাদের নিজেদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়। জনকল্যাণ মূলত ‘পাবলিক সোসাইটি’র ওপর নির্ভরশীল। আর ক্ষমতার সুষম বণ্টনের মধ্য থেকেই সেই পাবলিক সোসাইটির উত্থান ঘটে। তবে বাস্তবতা হলো, বাস্তবে তির্যক বণ্টনব্যবস্থাকেই বিদ্যমান দেখতে পাই।

কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সামনে বেশ কিছু ‘ফল্ট লাইন’ উন্মোচিত করেছে। এই মহামারি সাধারণ মানুষের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। সামাজিক সুরক্ষাব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণে জীবনযাত্রার মান নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং তা শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক বিভাজনকে বাড়িয়ে তুলেছে। চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতগুলো মানুষের দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বিভিন্ন আয় গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে।

বিদ্যমান সামাজিক বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থা, সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা, সুসংহত স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে কিছু দেশ অন্যদের তুলনায় তুলনামূলকভাবে দ্রুত খারাপ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। তবে বেশির ভাগ স্বল্পোন্নত দেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। এসডিজি অর্জনের দিক থেকে তারা পিছিয়ে পড়ছে। নতুন দরিদ্র ও সামাজিক সুরক্ষাবঞ্চিত জনসংখ্যার সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

এসব দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ভূস্থানিক দুর্বলতার কারণে তাদের পুনরুদ্ধারের গতিপথ একটি সর্পিল কে-কার্ভের (সূচক নির্ধারণী বক্র রেখাবিশেষ) আকার নিচ্ছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ এখনো স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তাকে জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করেনি। অনেক সংবিধান এগুলোকে মৌলিক নীতি হিসেবে অনুমোদন করলেও এগুলো মানার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কার্যত কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তাকে নাগরিকদের অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এসব দেশে নীরবতা দেখা যাচ্ছে। একটি ত্রুটিপূর্ণ তির্যক রাজনৈতিক মীমাংসা অসম অর্থনৈতিক সুবিধাভোগের জন্ম দেয়। এসব দেশের নীতিগুলো প্রায়ই সেই সব ব্যবস্থাকে দায়মুক্তি দেয়, যেসব ব্যবস্থার কারণেই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

জনগণের সম্পদ বণ্টনে সরকার ‘মেইন স্ট্রিটের’ চেয়ে ওয়াল স্ট্রিটকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং সব নাগরিকের সমান অধিকারের বিধানের বিপরীতে গিয়ে জনগণের অর্থ দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্ধার করছে। এর মধ্য দিয়ে শাসকগোষ্ঠী জনগণের অর্থ দিয়ে অভিজাতদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। ফল হিসেবে দুর্ভাগা নাগরিকেরা চাকরি হারিয়ে, সঞ্চয় ভেঙে এবং ঘরবাড়ি বেচে টিকে থাকতে গিয়ে নিদারুণ ক্ষতির মুখে পড়ে।

এখন পুরোনো তত্ত্বে গোঁড়ামি থাকায় তা ভেঙে যাচ্ছে। আর্থসামাজিক অগ্রগতির জন্য এখন উন্নয়নের নতুন তত্ত্ব এবং সহযোগিতার একটি নতুন রূপ প্রয়োজন। মানব জাতি ও এই গ্রহের জন্য একটি সবুজ, নিরাপদ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে জাতিগুলোর অভ্যন্তরে ও পরস্পরের মধ্যে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি প্রয়োজন।

ভবিষ্যতের জটিল ধাক্কা এবং অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে আর্থসামাজিক, আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো নতুন অসামঞ্জস্যতার পক্ষে জনসাধারণের বিতর্ক আলোড়িত করেছে। আন্ত-প্রজন্মীয় সাম্য প্রতিষ্ঠাসহ একটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের জন্য যেসব নীতি প্রণয়ন করা দরকার, সেগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নাজুকতা, অর্থনৈতিক ও আর্থিক ধাক্কা, পরিবেশগত ক্ষতি, প্রযুক্তিগত অনিশ্চয়তা এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আমাদের বুঝতে হবে, এই বিশ্ব এখন সমতা, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের অধিকার থেকে অনেক দূরে।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ৫০ বছরের বেশি সময় পার করে ফেলেছে। দেশটি কুখ্যাত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে ‘উন্নয়নের চমক’ দেওয়া দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। তবে সাফল্যের পাশাপাশি দেশটির সামনে বড় বড় চ্যালেঞ্জও আসছে।

বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ; যদিও ভৌগোলিক আকারের দিক থেকে দেশটি ৯৪তম অবস্থানে রয়েছে। দেশটির স্থলভাগের বেশির ভাগই ভারতের সীমান্তের সঙ্গে এবং কিছু অংশ মিয়ানমারের সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া। এ ছাড়া দেশটির অবস্থান চীনের কাছাকাছি। বঙ্গোপসাগরের তীরে থাকার কারণে দেশটির ভূকৌশলগত গুরুত্ব অনেক।

বঙ্গোপসাগর দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রে অবস্থিত। এটি চীনের দক্ষিণ ভূমিবেষ্টিত অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনেরও একটি উৎস। এই উপসাগর বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের আধারও বটে। এই অঞ্চল এবং বাইরের কুশীলবদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধে বাংলাদেশ এখন সমৃদ্ধির সন্ধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাল পার করছে।

বিজ্ঞানভিত্তিক ইতিহাসের নিরিখে উদ্ভূত ও পতিত সভ্যতাগুলো বাংলাদেশের জন্য একটি দিকনির্দেশক হতে পারে। শস্যভিত্তিক কৃষি এশিয়ার সভ্যতাগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং বিভিন্ন ভৌগোলিক সভ্যতার সঙ্গে তাদের পরস্পরকে সংযুক্ত করেছে।

গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পূর্ব থেকে এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা দুটি মৌসুমি বায়ু শুধু ফসল ফলাতেই যে সাহায্য করে, তা নয়; এই দুই বায়ুপ্রবাহ পণ্য পরিবহনকেও সহজ করে। বর্ষা মৌসুমের পণ্য চাল এশিয়াকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। চাল শস্যের মধ্যে সবচেয়ে কম অ্যালার্জেনিক এবং প্রতি হেক্টরে এই শস্য উল্লেখযোগ্য ক্যালরি উৎপাদন করে এবং এই অঞ্চলের সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

তবে কার্যকরী প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক মিলমিশ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ প্রাচীন খেমার শহর আঙ্কোরে পানিপ্রবাহ ব্যবস্থা ভেঙে গিয়েছিল এবং সে সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল। বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বরের ধ্বংসাবশেষ থেকে সেখানে জাপোনিকা চাল পাওয়ার প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ মিলেছে, যা পূর্ব দিকের অঞ্চলগুলোর সঙ্গে প্রাচীন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার ইঙ্গিত দেয়।

এটি অতীতের দ্বিমুখী সংযোগ থাকার প্রমাণ নির্দেশ করে। এটি একটি আশাবাদী ভবিষ্যতের সূচনা করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা সুবিশাল।

[এই লেখাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও দৈনিক বণিক বার্তার যৌথ আয়োজনে ৫ ও ৬ মে অনুষ্ঠেয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের নির্ধারিত বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত সংস্করণ। ইংরেজি থেকে অনূদিত]

  • রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়