দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কী শক্তিশালী অবদান রাখছে, তা কারেও অজানা নয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ও জাতীয়ভাবে প্রবাসীদের এই অবদানের সেই অর্থে স্বীকৃতি নেই, থাকলেও তা যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয় না। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা, প্রবাসী আয় বাড়ানো, প্রবাসীদের মর্যাদা বৃদ্ধি, অভিবাসনপ্রক্রিয়ায় সংস্কার—এসব বিষয় নিয়ে লিখেছেন মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সিকদার ও কে এম নূর-ই-জান্নাত
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের যে ব্যাপক ভূমিকা ছিল, তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবাসীদের বারবার অনুরোধ করা হয় রেমিট্যান্সকে হাতিয়ার হিসেবে নিতে, তখন থেকেই প্রবাসীরা এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ফলে কয়েক দিনের ব্যবধানে আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ জুন মাসের তুলনায় ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। এতে বাংলাদেশের জুলাই মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের মাসের থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার কমে যায় (ডেইলি স্টার)।
এ থেকে প্রমাণিত হয় প্রবাসীরা একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত নড়িয়ে দিতে সক্ষম। এ ঘটনা জাতীয় আয়ে প্রবাসীদের ভূমিকা যে অনস্বীকার্য, তা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল। প্রবাসীরা সব সময় নিজেদের অবাঞ্ছিত ভাবলেও এ আন্দোলনে তাঁদের অংশগ্রহণে যে ব্যাপক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি রয়েছে, তা প্রকাশিত হয়েছে।
এ শক্তি সম্পর্কে প্রবাসীরা আগে কখনো বুঝে উঠতে বা উপলব্ধি করতে না পারলেও এ গণ-আন্দোলন তাঁদের এই শক্তি সম্পর্কে শিখিয়ে দিয়েছিল। তাই যখন দেশ ব্ল্যাকআউটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রবাসীরা রাস্তায় আন্দোলনের সমর্থনে নেমে পড়েছিলেন।
এই প্রবাসীদের মধ্যে যাঁরা আবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত, তাঁরা আগে থেকেই জানতেন, এ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পরিণতি কী হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী জেল ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা শুধু নিজেদের মাতৃভূমির টানে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
কাজেই প্রবাসীদের এ আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাংলাদেশে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছিল, শক্তি সঞ্চয় করেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দেড় কোটি বাংলাদেশিও যে তাঁদের সঙ্গে আছেন, তা আন্দোলনকারীদের মনোবল বৃদ্ধি করেছিল। এখন বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়ানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে, প্রবাসীদের বেশি করে উদ্বুদ্ধ করতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ বাড়াতে আমরা যদি বেশি মনোনিবেশ করি, তাহলে আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাব। আবার পুরোনো চক্রেই আটকে যাব। তাই সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে আমাদের পুরো অভিবাসনপ্রক্রিয়ার সংস্কার করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং নোবেল বিজয়ী বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে নিম্নোক্ত অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রথমত, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করব টেলিভিশনে প্রবাসীদের উদ্দেশে একটি বক্তব্য প্রদানের জন্য, যেখানে তিনি এই আন্দোলনে প্রবাসীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেবেন। তাঁদের দেশপ্রেম এবং এ আন্দোলনে অংশগ্রহণের স্বীকৃতি প্রবাসীদের মানসিক শক্তির সঞ্চার করবে।
একইভাবে এ বক্তব্যের মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসীদের দেশে বৈধভাবে অর্থ পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সাহায্য করবে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আমাদের এ অনুরোধও থাকবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি জেল-জরিমানার শিকার হয়েছেন, তাঁদের ওই সব দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যেন দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা হয় এবং তাঁদের চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
এসব প্রবাসী যদি কোনো কারণে চাকরি পেতে ব্যর্থ হন বা চাকরি হারান, সে ক্ষেত্রে দেশে ফেরার পর তাঁরা যেন সহজেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করতে হবে। এ ছাড়া অভিবাসন খাতে যেসব দুর্নীতির প্রচলন আছে, তা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নতুন সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে।
দ্বিতীয়ত, দেশে প্রবাসী আয় পাঠানো যেসব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, তার মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ অভিবাসন ব্যয়। বাংলাদেশের অভিবাসন খাত সংস্কার করতে হলে এই খরচের পরিমাণ অবশ্যই কমাতে হবে। বিভিন্ন সময়ে এ উচ্চ ব্যয় কমানোর আওয়াজ উঠলেও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে যেসব অভিবাসী নিজেদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে বিদেশে যান, তাঁরা তাঁদের উপার্জিত আয়ের সিংহভাগ দিয়ে এই উচ্চ অভিবাসন খরচ মেটাতে বাধ্য হন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভিনদেশে প্রতিকূল পরিবেশে কঠোর পরিশ্রমের পরেও প্রবাসীদের নিজেদের জন্য কোনো অর্থই আর থাকে না। এই উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ হলো অভিবাসনপ্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে দুর্নীতিবাজ দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্টদের দৌরাত্ম্য। প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারি, বিগত সরকারের চার সংসদ সদস্য মালয়েশিয়ায় অভিবাসনের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। সিন্ডিকেটটি দেড় বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকা বানিজ্য করেছে। তাঁদের এই দৌরাত্ম্যের কারণে সে সময় যাঁরা অভিবাসন নিয়ে কাজ করতেন, তাঁরা সবাই এই প্রভাবশালীদের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। যদিও তাঁদের অনেকেরই রিক্রুটিং এজেন্ট ছিল, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তাঁরা দাবি করতেন, দালালদের কারণে এ অভিবাসন খরচ বাড়ছে।
তবে সত্যিকার অর্থে কিছু দুর্নীতিবাজ রিক্রুটিং এজেন্ট এবং বিভিন্ন নেতা-কর্মী, বিশেষ করে ওই পাঁচ প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে দেশে অভিবাসন খরচ বেড়ে চলছিল। এ পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, খুব শিগগির যেন রিক্রুটিং এজেন্সির সংস্থা বায়রাকে (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ) সংস্কারের আওতায় আনা হয়।
এ ক্ষেত্রে আমরা ভারতীয় মডেলের অনুসরণ করতে পারি। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে রকম র্যাঙ্কিং সিস্টেমের ব্যবস্থা আছে, রিক্রুটিং এজেন্টদের জন্যও একটি র্যাঙ্কিং সিস্টেমের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। র্যাংকিং পয়েন্ট অনুসারে এজেন্টদের সেবার মান, গ্রহণযোগ্যতা সব কিছু অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইটগুলোয় প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এসব রিক্রুটিং এজেন্টের প্রোফাইল ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রাখতে হবে।
অধিকাংশ রিক্রুটিং এজেন্টের মধ্যে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি তাঁর ছেলেমেয়ে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের দিয়ে একাধিক লাইসেন্স নিয়ে থাকেন, যাতে ভবিষ্যতে কোনো কারণে তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করা হলে তাঁরা যেন অন্য লাইসেন্স দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারেন। অর্থাৎ এই লাইসেন্সের ডুপ্লিকেশন হচ্ছে। দেখা গেছে, দেশে দুই হাজারের মতো লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্ট আছেন। অথচ বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার এ লাইসেন্সের সংখ্যার তুলনায় বিস্তৃত নয়। তাই শ্রমবাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে এ লাইসেন্সের সঠিক সংখ্যা নিরূপণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
তৃতীয়ত, অনেক সময় এই রিক্রুটিং এজেন্টদের সঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত থাকেন। এসব কর্মকর্তার অনেকেরই আবার এসব এজেন্সিতে শেয়ার থাকে। দেশের অভিবাসনপ্রক্রিয়া সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত এসব কর্মকর্তাকে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা ছাড়া রিক্রুটিং এজেন্টদের প্রতিনিধি নির্বাচনে যেন সঠিক ও যোগ্য লোক নির্বাচিত হন, এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক।
চতুর্থত, বাংলাদেশের স্থানীয় সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যস্বত্বভোগী (দালাল) সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ। তাই অভিবাসনপ্রক্রিয়া থেকে তাদের পুরোপুরি নির্মূল না করে আইনের কাঠামোয় এনে তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ফি প্রদানের ব্যবস্থা করে তাদের এ কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে; প্রয়োজনে তাদের জন্য এলাকাভিত্তিক অফিসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে আমাদের টেকনিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারগুলোকে যেন প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নিয়োগপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মী নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া অভিবাসীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে জব পোর্টাল তৈরি করতে হবে। এ পোর্টালে অভিবাসীদের বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি তাঁরা কোনো ধরনের টেকনিক্যাল ট্রেনিং পেয়েছেন কি না, এ তথ্য সিভি আকারে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর ফলে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে সহজেই পোর্টাল থেকে দক্ষ কর্মী খুঁজে নিতে পারবে।
সপ্তমত, আমাদের প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে হবে। দুঃখের বিষয়, অভিবাসী কর্মীরা বাংলাদেশের সমাজে প্রতিনিয়ত অবহেলার শিকার হচ্ছেন। এসব অভিবাসী যখন দেশে ফেরত আসেন, তখন তাঁদের দেশের সমাজে অন্তর্ভুক্তিকরণের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কাজেই এসব অভিবাসী কর্মীকে কীভাবে বাংলাদেশের সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
প্রয়োজনে জেলাভিত্তিক জব ফেয়ারের মাধ্যমে তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশ থেকে তাঁরা যে অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফেরত এসেছেন, তা যেন এ দেশে কাজে লাগানো যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিবাসী কর্মীরা যদি ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চান, সে ক্ষেত্রে স্বল্পসুদে (সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হারে) তাঁদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
অষ্টমত, আমাদের অনুরোধ থাকবে, প্রধান উপদেষ্টা যেন তাঁর বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। বহির্বিশ্বে কারিগরি শিক্ষাকে যে সম্মানের সঙ্গে দেখা হয় এবং এখান থেকে শিক্ষার্থীদের যে উচ্চ বেতনের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা যেন তিনি তাঁর বক্তব্যে আলোকপাত করেন। দেশের অভিভাবকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সন্তানদের টেকনিক্যাল সেন্টারে পাঠাতে তিনি উৎসাহ দিতে পারেন। এতে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে মানুষের চিন্তাভাবনা ও ধ্যানধারণা পরিবর্তন আসতে পারে।
আমাদের অনুরোধ থাকবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আধুনিকীকরণে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে যেন যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রয়োজনে এ খাতে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন। তাঁদের অনেকেই ওই সব দেশে অবৈধভাবে প্রবেশের কারণে জেল খাটছেন, শাস্তি পাচ্ছেন। তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে এবং দেশে তাঁদের প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
দেশের অর্থনীতিতে এই প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, দেশে আসার পর তাঁরা কোনো ধরনের সামাজিক মর্যাদা পান না। বিভিন্ন দূতাবাস থেকে শুরু করে বিমানবন্দরগুলোয় লাগেজ হারিয়ে যাওয়া, ট্রলি খুঁজে না পাওয়ার পাশাপাশি আলাদা কোনো লাইন না থাকায় তাঁরা নানা বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হন। অথচ প্রবাসীদের অংশগ্রহণ এ গণ-আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
কাজেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে দ্রুত এই গণ-আন্দোলনে অভিবাসীদের ভূমিকার স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাঁদের অভিবাদনের ব্যবস্থা করা। আমরা আশা করছি, চলমান পরিস্থিতি উন্নয়নেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।
মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সিকদার শিক্ষক ও সদস্য, সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।
কে এম নূর-ই-জান্নাত গবেষণা সহযোগী, সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।