কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলম্বিত ‘বিদ্রোহ’ ও মুদ্রানীতির গলদ

নীতি প্রণয়নে স্বাধীনতা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সর্বদাই যুদ্ধ করে যেতে হয় সরকার বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। ব্যাংকের নেতৃত্ব সব সময়ই চাইবে নিজের হাতিয়ারগুলো নিজের অধিকারে রাখতে।

১৮ জুন ছয় মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার (ডান থেকে চতুর্থ)

অবশেষে বহুপ্রতীক্ষিত ঋণ সুদহারের টুপি বিমোচন ও বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের আগমনবার্তা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যথেষ্ট বিলম্বে হলেও কিঞ্চিৎ ‘বিদ্রোহ’ করার ‘সাহস’ দেখিয়েছে। ধন্যবাদ গভর্নর মহোদয়কে এই জন্য যে তিনি সুদহারের টুপি সাফাইয়ের যাবতীয় তত্ত্বের শ্রাদ্ধ করতে পারলেন।

এ নিয়ে অর্থনীতিবিদদের যুক্তির তোয়াক্কা করেননি অর্থমন্ত্রী মহোদয় এবং শীর্ষ ব্যবসায়ীরা—যাঁরা সস্তায় বা শূন্য প্রকৃত সুদে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে পারছিলেন অনায়াসে। অবশেষে আইএমএফ ‘অবতার’রূপে আবির্ভূত হয়ে এই ‘৯ ভাগ সুদ সিলিং’ বিতাড়নের সবক দিয়ে গেল। সম্ভবত সে ওষুধই সাহস জুগিয়েছে।

মুদ্রানীতির মূলকথা

অর্থবছর ২০২৩-২৪–এর প্রথম ছয় মাসের জন্য এই মুদ্রানীতি অর্থাৎ এটি ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর। মুদ্রানীতির মূল উদ্দেশ্য একটি সহনীয় মাত্রায় মূল্যস্ফীতি (৪ থেকে ৫ শতাংশ) নিশ্চিত করে অর্থনীতির নিয়োগ সর্বোচ্চ করা। যেহেতু নিয়োগের তথ্য–উপাত্ত বিভ্রান্তিকর, তাই এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয় প্রবৃদ্ধি। অর্থনীতিবিদ আর্থার আকুনের সূত্রমতে প্রবৃদ্ধি বাড়লে বেকারত্ব কমে।

সর্বোপরি আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগ্য পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য অর্জন করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার, মুদ্রা জোগান, বিনিময় হার প্রভৃতি হাতিয়ার ব্যবহার করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখে—ব্যায়াম করে রক্তচাপ ভালো রাখার মতো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার কমিয়ে ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ালে বিনিয়োগ বাড়ে, নিয়োগ বাড়ে, বাড়ে উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি। মুদ্রা জোগান বাড়িয়ে এটি করা হয় বলে একে বলে মুদ্রাগত শৈথিল্যকরণ বা ‘মনিটারি লুসেনিং’, যা মূল্যস্ফীতি উসকে দেয়। তখন মনিটারি টাইটেনিং বা মুদ্রাগত কষায়নের প্রয়োজন পড়ে। সুদহার বৃদ্ধি এই কষায়নের হাতিয়ার। গত এক-দেড় বছরের উচ্চ মূল্যস্ফীতির যুগে বাংলাদেশে এই কষা বা টাইট মুদ্রানীতির প্রয়োজন ছিল, যা পৃথিবীর সব দেশ করলেও বাংলাদেশ করেনি। ঋণের ওপর সুদহার বাড়ায়নি। কারণ, সেখানে শতকরা ৯ ভাগের ওপর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে কোভিডের আগে থেকেই সিলিং বা ছাদ দেওয়া ছিল।

ছাদ বিতাড়ন ‘রাজনৈতিক’ বিষয়

এই ছাদ ভেঙে দেওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিপক্ষে এক বিদ্রোহের আলামত। যদিও গভর্নর এটিকে ‘রাজনৈতিক’ সিদ্ধান্ত বলে নিজেকে নিরাপদ করেছেন। অর্থাৎ ব্যাংকিং অর্থনীতিবিদ্যার নীতিতে চলে না। চলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। এটা তো ভালো লক্ষণ নয়। গভর্নর বলতে পারতেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনৈতিক জ্ঞান থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি কমাবে এবং সরকারের বাজেটে মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হবে। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির কল্যাণ ও দেশের মুদ্রার মান সংরক্ষণ, যা বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) আদেশ ১৯৭২-এ নিবন্ধন করা হয়েছে।

বিবির উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ইচ্ছা–অনিচ্ছার পূরণকর্মে প্রতিষ্ঠানকে নিয়োজিত করা নয়। তার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় আছে, যার প্রধান একজন রাজনৈতিক মানুষ। গভর্নর একজন পেশাদার নিয়ন্ত্রক, যিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রভাবমুক্ত হয়ে দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রস্বার্থে কাজ করবেন, যা বিবি আদেশের ২০০৩-এর সংশোধনীতে বর্ণিত। তবে ছাদ সরিয়ে আরেকটি অদৃশ্য ছাদের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই মুদ্রানীতিতে।

 ‘স্মার্ট’–এর প্রবর্তন কতটা স্মার্ট

সরকারের ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদহারের সংক্ষিপ্ত নাম ‘স্মার্ট’। এটি বর্তমানে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এর ওপর শতকরা ৩ ভাগের বারান্দা বা করিডর বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ঋণ সুদহার ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতার কাঁধে চাপাতে পারবে। ৯ শতাংশের ঋণ সুদহার এখন ১০ শতাংশ, এই যা পরিবর্তন। সুদহারের এই সামান্য বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি কমাতে পারবে কীভাবে? ১০ শতাংশ সুদহার বিয়োগ ১০ ভাগ মূল্যস্ফীতি, যা অর্থনীতিবিদ ফিশারের বিখ্যাত সমীকরণ অনুসারে প্রকৃত সুদহার দিচ্ছে শূন্য হার। অর্থাৎ ঋণগ্রহীতা শূন্য প্রকৃত খরচে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে পারবে। এ সুযোগটি ধনিক শ্রেণি হাতছাড়া করবে না।

ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ কমিয়ে আনা সুদহার বৃদ্ধির উদ্দেশ্য হলেও সুদহারের এই নামমাত্র বৃদ্ধি ঋণপ্রবাহ সংকোচনে কোনো ভূমিকা রাখবে না। ফলে মূল্যস্ফীতির আগুনে পাখার বাতাস লেগেই যাবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ঋণ সুদহারকে যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, বাংলাদেশে তা হয়নি শুধু ধনিক তুষ্টির প্রেরণায়। এখন এই ক্ষতিপূরণ করতে গেলে অন্য দেশের চেয়ে এক ধাক্কায় বেশি মাত্রায় সুদহার বাড়াতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত এখন কী করছে, সেদিকে তাকালে ভুল হবে। কারণ, ওরা ঋণ নিয়ন্ত্রণ সম্পন্ন করে মূল্যস্ফীতিকে কমিয়ে ফেলেছে। বাংলাদেশের মতো ঋণ সুদহারের কোমর বেঁধে রেখে নীতি সুদহার বা রিপো টুকটুক করে বাড়িয়ে যায়নি। এই প্রহসন কাজে দেয়নি বলেই আমাদের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশেই অনমনীয় রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১০ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে নামিয়েছে। ভারত নামিয়েছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে। তাই ‘স্মার্ট’–এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে মাত্র ৩ শতাংশের করিডর দেওয়া মূল্যস্ফীতি কমাতে কোনো স্মার্ট সিদ্ধান্ত হবে না।

আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়

নীতি প্রণয়নে স্বাধীনতা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সর্বদাই যুদ্ধ করে যেতে হয় সরকার বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। ব্যাংকের নেতৃত্ব সব সময়েই চাইবে নিজের হাতিয়ারগুলো নিজের অধিকারে রাখতে। উন্নত বিশ্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার ব্যক্তি ঋণের সুদহার এবং সরকারের ট্রেজারি বিল বা টি-বিলের সুদহারকে প্রভাবিত করে। এখানে ব্যাপারটি উল্টো হয়ে গেল। এবারের মুদ্রানীতি সরকারের স্নেহপালিত টি-বিলের সুদহারকে খামোখা ডেকে আনল ব্যাংকিং খাতের ঋণ সুদহার ঠিক করতে। এ কাজটি তো করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার।

এ যেন ব্রিটিশ আমলের বিপ্লবীর স্বেচ্ছায় কারাবরণ। এই অদ্ভুত উদ্ভাবন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে আরেক দফা খর্ব করার পদক্ষেপ। টি-বিলের সুদহারের ওপর মাত্র ৩ শতাংশের মার্জিন না দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার প্রধান হাতিয়ার নীতি সুদহারের ওপর ৫-৬ শতাংশ মার্জিন দিয়ে ঋণ সুদহার নির্ণয় করার পদ্ধতি ঠিক করলে তা বিচক্ষণতার পরিচয় বহন করত। টি-বিলের সুদহার সঠিক বাজার পদ্ধতিতে ঠিক হয় না।

এখানে সরকার কখন কতটুকু বেচবে, ব্যাংকগুলোর সে পরিমাণ ক্ষুধা আছে কি না, না থাকলে প্রাইমারি ডিলারদের কাঁধে জোর করে চাপিয়ে দিতে হবে একটি নির্দিষ্ট সুদহারে—এসব বিষয় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলোর মধ্যে ‘ঘটক’–এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এখানে চাহিদা-জোগানের সুস্থ খেলার মধ্য দিয়ে যোগ্য সুদহার প্রতিফলিত হয় না। ঋণ সুদহারের নির্ধারণ কৌশল অন্য বাড়ির সুদহারের ওপর ছেড়ে দিয়ে একদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চণ্ডীদাসের মতো বিলাপ করতে হবে—“আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায় আমার আঙিনা দিয়া।”

ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে

২০০৩ সাল থেকে মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ভাসমান করা হলেও ২০১০ সালের পর থেকে একে “ম্যানেজ” করার তৎপরতা বেড়ে যায় সরকারের। ১৯৫৬ সালের মানসিকতাসম্পন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটিগণ কে কার আগে টাকার মানকে ডলারের বিপরীতে কৃত্রিমভাবে চাঙা করে রাখবেন, সে প্রতিযোগিতা শুরু হয় ২০১০ সালের দশকের শেষ ভাগ থেকে। কয়েকজন উপদেষ্টাও ছিলেন ওই মানসিকতার, যাঁদের বাজার অর্থনীতির প্রতি ছিল তীব্র অনীহা। কারণ, এতে মাতব্বরি কমে যায়। এটি রাজনৈতিক তুষ্টিসাধনেও ব্যবহৃত হতো।

টাকার এই কৃত্রিম উচ্চমূল্যের কারণে ওই সময় থেকে প্রকৃত বিনিময় হারের সূচক তরতর করে ১০০–এর ওপরে উঠে যায়, যা তোয়াক্কা করা হয়নি। নিয়ম হলো ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমিয়ে হলেও প্রকৃত বিনিময় হারের সূচককে ১০০–এর কাছাকাছি রাখা। এত রপ্তানি বাড়ে, বাড়ে রেমিট্যান্স, লাগাম টানা হয় আমদানিতে। সেটি ঠিক দীর্ঘ আট বছর ধরে পরোয়া করা হয়নি বলেই আজ তার খেসারত দিতে হচ্ছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি সেভাবে বাড়েনি, প্রচুর বেড়েছে আমদানি, যা চলতি হিসাবে ধস নামিয়েছে দিনে দিনে। রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণকে এই ধসের জন্য দায়ী করে হলেও এটি বর্তমান বিপর্যয়ের পেছনে ১০ শতাংশের ১ শতাংশও দায়ী নয়। দায়ী টাকার মানের অবাজারীয় নিয়ন্ত্রণ, যা দিনে দিনে বিদেশি মুদ্রার মজুতকে অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত করেছে।

এ অবস্থার উত্তরণকল্পে অর্থনীতিবিদেরা মুদ্রাকে বাজার দামে ভাসমান করার সুপারিশ করলেও রাজনীতিকেরা কেউ কেউ তাঁদের ‘অ-দেশপ্রেমিক’ বানিয়ে ফেলেছেন। অবশেষে গভর্নর সম্ভবত আইএমএফের চাপে এবার বাজারের গাঙে বিনিময় হারের নৌকা ভাসিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই কাজ গত মুদ্রানীতিতে করলে আজ রেমিট্যান্সের বিপর্যয় অনেকটা ঠেকানো যেত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্তারা আমলাতান্ত্রিক আটকা-আটকি পছন্দ করেন। হয়তো সেখান থেকেও ‘সবুজসংকেত’ ছিল না। তবু গভর্নরের এই বিলম্বিত ‘বিদ্রোহ’ ধন্যবাদার্হ। এ বিনিময় হার পরোক্ষভাবে যদি আবারও ‘বাফেদা’ বা ‘এবিবি’র পোষ্যপুত্র হয়ে যায়, তাহলে এ–জাতীয় ভাসানোর কাজ হবে ডোবানোর নামান্তর।

রাজস্ব অক্ষমতা ও হৈমন্তীর বয়স

ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহের বৃদ্ধি যেখানে ধরা হলো ১১ শতাংশ, সেখানে সরকারি ঋণ বৃদ্ধির হার হয়ে গেল ৪৩ শতাংশ। এই তীব্র অসংগতি ব্যক্তি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে ও মূল্যস্ফীতিতে ঘৃতাহুতি দেবে। কারণ, সরকার ওই হাতে পাওয়া টাকা বাজারে ছাড়বে দেদার।

এ অবস্থায় ‘মুদ্রা জোগানের হাতিয়ার বাদ দিয়ে সুদহারের হাতিয়ারের দিকে বিবির পলিসি শিফট’ মুখ থুবড়ে পড়বে সরকারের মাত্রাতিরিক্ত ঋণের কারণে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব অক্ষমতার খেসারত, যা আবার জন্ম নিয়েছে ধনিক শ্রেণিতে সঠিক কর চাপিয়ে নাখোশ না করার রাজনৈতিক আদিখ্যেতা থেকে।

এখন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নাকি আইএমএফের ম্যানুয়াল মেনে মুদ্রা মজুতের নেট বা সঠিক হিসাব করবে। সঠিক হিসাব না থাকার কারণেই কি অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বললেন যে এখন সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো মজুত আছে? হিসাব তো মিলছে না!

কিন্তু গভর্নর সম্ভবত এও বলেছেন যে এই নেট সঠিক হিসাব তিনি আমাদের জানাবেন না। আমাদের জানাবেন ‘ইডিএফ’ যোগ করে একটু ফোলানো ফিগার। আসলটা জানালে দোষ কোথায়? এটা কি রবীন্দ্রনাথের গল্পের ‘হৈমন্তী’র আসল বয়স, যা শ্বশুরবাড়ির মানুষকে জানানো যাবে না?

সাফল্য আসবে কি?

আসবে, যদি চারটি কাজ ঠিকমতো করা যায়। যথা ১. বিনিময় হারকে ধীরে ধীরে ‘বাফেদামুক্ত’ করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। ২. সরকারের ঋণপ্রবাহে কিছুটা লাগাম টেনে ধরা। ৩. ব্যাংকঋণ সুদহারকে টি-বিলের রেফারেন্স রেটের খপ্পরে ছেড়ে না দিয়ে আরও বড় করিডর দিয়ে ব্যাংক নীতি সুদহারের ওপর নির্ভরশীল করা এবং ৪. খেলাপি ঋণের প্রতিরোধে সৎ ও আন্তরিক হয়ে আর কোনো মধুর সংজ্ঞায়নে খেলাপি ও অর্থ পাচারকে উৎসাহিত না করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগকে কাজে লাগিয়ে সংকট ও সমস্যার সমাধান অর্থনৈতিকভাবেই খুঁজতে হবে এবং সেভাবেই নীতি বানাতে হবে।

  • ড. বিরূপাক্ষ পাল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ড-এ অর্থনীতির অধ্যাপক