রিজার্ভের ক্ষয় নিয়ে ভয় কাটছে না কেন

বর্তমান মজুত যতটা না ভয়ের, তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ের বিষয় হচ্ছে মজুত কমে যাওয়ার এই প্রবণতা রেখা।

রবীন্দ্রনাথ বৃষ্টিবাদলের দিনে আমাদের ‘ঘরের বাহিরে’ যেতে নিষেধ করেছেন। এটা তাঁর কাব্যিক আহ্বান। চাষার পক্ষে যে এই কাব্যিক ডাক মানা সম্ভব নয়। তাকে বাইরে যেতেই হবে। চিন্তা নেই গৃহস্থের। ঘরে আছে চাল, ডাল, তেল, নুন। ঘরে চাল থাকলে ঘোর বর্ষাতেও যেমন গৃহস্থের উদ্বেগের কারণ নেই, বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ভালো মজুত বা রিজার্ভ থাকলে কোনো দেশের জন্যও সে রকম দুশ্চিন্তার কারণ থাকে না। ভালো রিজার্ভ থাকা সংসারে গোলাভরা চাল থাকার মতো ব্যাপার। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে প্রায় আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। এখন রিজার্ভ এসে ঠেকেছে ৩০ বিলিয়ন ডলারে।

যে রিজার্ভ এত দিনে কমপক্ষে ৬০ বিলিয়ন ডলারে ওঠার কথা, তা কি না ৫০ শতাংশ স্বাস্থ্যহানি। আইএমএফের হিসাব-রীতি অনুযায়ী, এই মজুতের বর্তমান পরিমাণ ২৩ বিলিয়ন ডলার। আগামী দু–এক মাসের দায়দেনা শোধ করে মাস তিনেকের মজুত থাকে হাতে। ভাণ্ড একেবারে শূন্য করা যায় না। মানুষের প্রাণ বাঁচানোর ওষুধ ও ইনজেকশন আনতেই হবে।

খেলাপিদের জন্য পাঁচ কোটি টাকার গাড়ি না হয় পরের মাসে আনা যাবে। বর্তমান মজুত যতটা না ভয়ের, তার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ের বিষয় হচ্ছে মজুত কমে যাওয়ার এই প্রবণতা রেখা। গত সোয়া এক বছর ধরে নানা টোটকা চিকিৎসা করেও এই ‘ট্রেন্ড লাইন’ ঠেলে ওপরে তোলা যাচ্ছেই না। চিকিৎসায় ভুল রয়েছে। বিনিময় হারের নির্ধারণ ত্রুটিপূর্ণ। এখনো টাকা কৃত্রিমভাবে উচ্চ মূল্যায়িত।

অভয় বাজে হৃদয় মাঝে

অর্থনীতিতে যে ভয় ছিল, তা নাকি কেটে গেছে—এমন বাণীতে আশ্বস্ত করলেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। তিনি কম কথা বলেন, অফিসে যান আরও কম। মন্ত্রীর এই রাবীন্দ্রিক অভয় বাণী তিনটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এক, অর্থনীতিতে যে একটা ভয় ছিল, সে কথা তো তিনি কখনো বলেননি। তবে কি ভয় এসেছিল ‘নিঃশব্দচরণে…?’ দুই, এই ‘ভয়’টা কেটে গেল কী ঘটনা থেকে? মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, রিজার্ভ সংকট, খেলাপি বিস্ফোরণ, মুদ্রা পাচার—এর কোনোটিতে গত তিন বছরে কোনো উন্নতি হয়েছে বলে সাক্ষ্য পাওয়া না। তৃতীয় প্রশ্ন, ভয় যদি চলেই গিয়ে থাকে, তাহলে সবকিছু আগের পথে আসছে না কেন? কেন আমদানিতে এখনো নিয়ন্ত্রণ? অতএব ভয় আসলে কাটেনি। আরও বাড়ছে।

রিজার্ভ কীভাবে গড়ে ওঠে?

একটি দেশের লেনদেনের হিসাব শেষ করে যে বাড়তি ডলার পাওয়া যায়, তা বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডে জমা হয়ে রিজার্ভ বাড়ায়। লেনদেনের দুটি অঙ্গ—চলতি হিসাব ও পুঁজি হিসাব। এ দেশে চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকে, যা পুঁজি হিসাবের উদ্বৃত্ত দিয়ে মেটানো হয়। ধরি, একটি দেশের ডলার মজুত ২৫ ডলার। চলতি হিসাবে যদি ১৫ ডলার ঘাটতি থাকে এবং পুঁজি ও আর্থিক হিসাবে যদি ২০ ডলার উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে সে দেশের লেনদেনের ভারসাম্য নিশ্চিত করার পর অতিরিক্ত ৫ ডলার চলে যাবে মজুতে, যার উচ্চতা হবে ৩০ ডলার।

তাই রিজার্ভ বাড়ানোর পথ তিনটি—চলতি হিসাবের ঘাটতি কমানো, অথবা আর্থিক হিসাবে সঞ্চয় বাড়ানো, অথবা এ দুইয়ের মিলিত পদক্ষেপ। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে গেলেও রিজার্ভ বাড়ে যদি আর্থিক হিসাবের বৃদ্ধি আগেরটিকে পেছনে ফেলে দেয়। চলতি হিসাবের তিনটি অঙ্গ—বাণিজ্য, সেবা ও উপার্জন। ধরি, রপ্তানি আয় ৫০ ডলার ও আমদানি ব্যয় ৭০ ডলার।

এতে বাণিজ্য ঘাটতি ২০ ডলার। জাহাজভাড়া ও বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট সেবা খাতে আয় ধরি ৮ ডলার, ব্যয় ১৩ ডলার। এখানেও ঘাটতি ৫ ডলার। ফলে বাণিজ্য ও সেবার মোট ঘাটতি দাঁড়ায় ২৫ ডলার। ধরি, উপার্জন খাতে আমরা বিদেশি কর্মীদের দিলাম ৫ ডলার, আমাদের কর্মীরা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আনল ১৫ ডলার।

এতে নিট উপার্জন ১০ ডলার, যা বাণিজ্য ও সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়ে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমিয়ে দিল ১৫ ডলারে। এটি ২০ ডলারের আর্থিক হিসাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে লেনদেনের ভারসাম্য নিশ্চিত করে বাড়তি ৫ ডলার রিজার্ভে জমা করল।

রিজার্ভ বাড়ানোর উপায়

এ উদাহরণ থেকে আমরা রিজার্ভ বাড়ানোর সাতটি বড় কৌশল পেয়ে থাকি—১. আমদানি কমানো; ২. রপ্তানি বাড়ানো; ৩. প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাড়ানো; ৪. আর্থিক হিসাবে বিদেশিদের বিনিয়োগ বাড়ানো; ৫. আমদানি বাড়লেও রপ্তানির বৃদ্ধি দিয়ে ওকে টেক্কা দেওয়া; ৬. বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে গেলেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি দিয়ে ওকে টেক্কা দেওয়া ও ৭. বাণিজ্যিক সেবা খাতের ব্যয় কমিয়ে আনা বা আয় বেশি হারে বাড়ানো। অপচয়মূলক ও বিলাসদ্রব্যের আমদানি কমালে দেশের মঙ্গল হয়। তবে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের আমদানি কমালে রপ্তানি আয় ও শেষতক জাতীয় আয় কমে যায়। এদিকে বিলাসদ্রব্যের আমদানি কমালে সমাজের ধনিক, বণিক ও খেলাপিরা বিরক্ত হন। যেহেতু আর্থিক খাতের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই এই শ্রেণিরই প্রতিনিধি, তাই সেখানে লাগাম টানা যাচ্ছে না।

দেশি–বিদেশি বণিকেরা পৃথিবীর ভালো ভালো কোম্পানির জাহাজ ও বিমা সেবা নিতে চান। তাই বাণিজ্যিক সেবা খাতের সক্ষমতাও বাংলাদেশে দুর্বল। দ্রুত একে সবল করা সম্ভব নয়। টাকা খরচ করে হয়তো বিশ্বমানের জাহাজ কেনা যায়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা থাকবে আমাদের মতো কেরানি ও ট্রেড ইউনিয়নের লিডারদের হাতে। সেখানেও বিমানের কপালে যা ঘটেছে, তা–ই ঘটবে। আর্থিক হিসাব খাতে বিদেশিরা যে বিনিয়োগ করবে, সেটা তাদের ইচ্ছা ও আমাদের সক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। দেশের পুঁজিবাজার চাঙা নয়। ১২ বছর আগে যাঁরা পোড় খেয়েছিলেন কিংবা পুঁজিদস্যুদের ইহজনমে বিচার হতে দেখেননি, তাঁদেরও ভাঙা হৃদয় এখন পর্যন্ত জোড়া লাগেনি। তাই শেষ পর্যন্ত ভরসার স্থল রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। এদের বৃদ্ধি ছাড়া সংকটমুক্তি অসম্ভব।

ভয় কেন ঘনীভূত হলো?

চলতি হিসাবের আটপৌরে এই কাহিনি সব সময় চলে আসছিল। এতে ভীত হওয়ার কিছু ছিল না। ভয় বাড়িয়ে দিয়েছে ২০২৩ অর্থবছরে আর্থিক হিসাব খাতের আকস্মিক পতন, যা ক্রমাগত ভ্রান্তনীতির ফসল। ২০২২ অর্থবছরে আমরা প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার আর্থিক হিসাবে পেয়েছি।

এই অবদান ২০২২-এ প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলারের চলতি হিসাব ঘাটতিকে অনেকটা লাঘব করেছে। শেষতক লেনদেনের হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৭ বিলিয়ন, যা আগে সঞ্চিত রিজার্ভ থেকে টেনে এনে মিটমাট করা হয়েছে। ২০২৩-এ আর্থিক হিসাবে ডলারের আগমন তো দূরের কথা, বরং আরও ২ বিলিয়ন ডলার ‘মাইনাস ফিগার’ হয়ে গেছে; অর্থাৎ আর্থিক হিসাবে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলারের ধস নেমেছে এক বছরে।

এটি বাংলাদেশে আর্থিক হিসাবে আগে আর ঘটেনি। এত লেনদেনের সামগ্রিক হিসাবে ঘাটতি ৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে চলে গেছে, যা আবার রিজার্ভ থেকে টেনে মিটমাট করা হয়েছে। এই পরিবর্তনই ভয়কে ঘনীভূত করছে, যদিও অর্থমন্ত্রী বা গভর্নর এই নাজুক বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা বলতে চান না। কারণ, অবাজারীয় নীতি প্রণয়নের জন্য তাঁরা দুজনেই কমবেশি দায়ী। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়িয়েও রিজার্ভের দ্রুত ক্ষয় ঠেকানো যাবে না। এ যেন কোভিডের পর ডেঙ্গু এল। নতুন চিকিৎসা ও নতুন ওষুধ দিতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারও বদলাতে হবে।

ভয় নিরসনের উপায়

দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২০১০–এর দশকের প্রক্ষেপণ থেকে আজ ৮ শতাংশে পৌঁছার কথা ছিল। এটি এখন ৬–এর কোঠায়। কোভিড ও পুতিনকে আর বেশি দিন দায়ী করা যাবে না। এই অপেক্ষাকৃত কম প্রবৃদ্ধির বড় কারণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা। মূল্যস্ফীতি ভোগের নীরব ঘাতক। ভোগ জাতীয় আয়ের প্রায় ৭০ ভাগ। ভোগ কমলে বিনিয়োগ কমে। বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু জাতীয় আয়ের অংশ হিসাবে বিনিয়োগ বাড়ছে না। ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেশেও বিদেশি বিনিয়োগ যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের নিশ্চয়তা থাকতে হয়। প্রথমত, ওই দেশের অর্থনৈতিক কূটনীতি হতে হয় চৌকস, যে ক্ষেত্রে এ দেশে অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে কৌশলগত সমন্বয়হীনতা প্রবল।

দ্বিতীয়ত, ওই দেশে প্রণীত নীতিগুলো অর্থশাস্ত্রের প্রত্যাশিত, সুস্থ ও স্বাভাবিক হওয়া উচিত। গবেষণা ও জ্ঞানভিত্তিক নীতি প্রণয়ন আবশ্যক। ঘোষিত নীতিমালার বিরুদ্ধে গিয়ে মুদ্রার বিনিময় হারকে অবাজারীয় পথে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, যা লেনদেনের ভারসাম্যকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সারা দুনিয়া যখন মূল্যস্ফীতি দমনে সুদহার ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলছিল, তখন মূলত বড় ব্যবসায়ীদের খুশি রাখতে গিয়ে সুদহারের ওপর টুপি পরিয়ে রাখা হয়েছে কয়েক বছর। ফলে মূল্যস্ফীতি অন্য দেশে কমে গেলেও এ দেশে নামেনি এক কোঠাও, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়েছে, অনেকের সঞ্চয় খেয়ে দিয়েছে, এখনো খাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী এই অবস্থানের সপক্ষে এক ‘নববিনিয়োগ তত্ত্ব’ উপস্থাপন করলেও বিশ্বমানের রেটিং এজেন্সিগুলো কেন যে তা বুঝতে পারল না, এটাই আক্ষেপের বিষয়। একটি রেটিং এজেন্সি অর্থনীতির ‘আউটলুক’ এত দিনের রক্ষিত ‘স্টেবল’ বা ‘স্থিতিশীল’ থেকে নামিয়ে ‘নেগেটিভ’ বা ‘ঋণাত্মক’ করে দিয়েছে। এই সবকিছুই অদক্ষ নীতি প্রণয়নের ফসল।

বাজারীয় বিনিময় হার আবশ্যক

রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ানো ছাড়া শুধু আমদানির কষনি দিয়ে রিজার্ভ বাড়ানো সম্ভব নয়। বিনিময় হারের অবমূল্যায়ন ঘটাতে হবেই। অর্থাৎ ডলারের দাম ১০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৫ টাকার ওপরে তুলতে হবে। এই সময়ে বাজার থেকে ডলার কিনতে গেলে ১১৬ টাকা লাগছে। হুন্ডিওয়ালা যদি এই দাম দেয় আর কারও যদি হুন্ডিওয়ালার সঙ্গে পরিচয় থাকে, তাহলে কোন বোকা অফিশিয়াল চ্যানেলে টাকা পাঠাবে? সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ অর্থবছরে সরকার ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। কিন্তু অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স ঢুকেছে আরও কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা বিশেষজ্ঞরা অনুমান করে থাকেন। ডলারের সঠিক দাম না দিলে এই অবৈধ চ্যানেল কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না। পুলিশ বা গোয়েন্দা দাবড়িয়েও কোনো কাজ হবে না। ছিঁচকে চোর হয়তো ধরা পড়বে। কিন্তু দাগি মুদ্রা তস্কররা বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাবে সিঙ্গাপুর, কানাডা ও আরব আমিরাতে।

যে বাঙালি নিউইয়র্ক থেকে ঢাকা যাচ্ছেন এবং বৈধভাবে সঙ্গে করে পাঁচ হাজার ডলার নিতে পারেন, তিনি কোন দুঃখে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠিয়ে ৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনবেন? বাফেদার নির্ধারিত বিনিময় হারে ডলার অবমূল্যায়িত, যা এই রিজার্ভ সংকটকে দিন দিন বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাফেদাই যদি ডলারের দাম ঠিক করে দেয়, তাহলে মুদ্রানীতিতে ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হার’ ঘোষণার কোনো সত্যতা থাকে না। এটি নীতি কপটতা। কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকা নীতি প্রণয়নের প্রথম শুদ্ধাচার, যা অবশ্যপালনীয়।

  • ড. বিরূপাক্ষ পাল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডে অর্থনীতির অধ্যাপক