ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগে অনেকেই মনে করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি এবার খুব সহজেই জয়ী হবে। কিন্তু নির্বাচন শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোদিবিরোধী হাওয়া দৃশ্যমান হয়েছে। এটা বাস্তবে কতটা প্রতিফলিত হবে? মোদি কি সত্যিই হেরে যাবেন? এই লেখায় সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজেছেন শুভজিৎ বাগচী
এটা এমন এক প্রশ্ন, যেটা ভারতে এই মুহূর্তে প্রায় সবাই করছেন নিজের মতো করে। মোদিবিরোধী একটা হাওয়া অবশ্যই রয়েছে; কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি হারবেন কি? ভারতে এবার প্রায় ১০০ কোটি ভোটার। নির্বাচনের ফল বের হওয়ার আগে এ নিয়ে নির্দিষ্টভাবে আন্দাজ করা কঠিন, বিশেষ করে নানা সমীক্ষার মাধ্যমে। কারণ, কোনো সমীক্ষা মোট ভোটারের ধারেকাছে যেতে পারবে না। ফলে ফল নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী না করেও দুটি নির্দিষ্ট ধারার দিকে আলোকপাত করা যায়।
বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ১৪ শতকের ধর্মীয় গুরু রামানন্দ স্বামী পূর্ব ভারতে ব্রাহ্মণ্যবাদবিরোধী গরিব এবং নিম্নবর্ণের মানুষের জন্য এক সামাজিক আন্দোলন করেছিলেন চতুর্দশ শতাব্দীতে। আন্দোলনের নাম ছিল রামানন্দী। পূর্ব ভারতে তার প্রবল বিস্তার। গত সপ্তাহে আলাপ হলো জদ্দু চৌধুরী নামের এক ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে, যিনি ছোটবেলায় বিহারে দীক্ষা নিয়ে রামানন্দী মত অবলম্বন করেছেন। কিন্তু ৩০ বছরের বেশি সময় ট্যাক্সি চালাচ্ছেন কলকাতায়।
তিনি রাতের ট্যাক্সিতে হিন্দু দেবতা হনুমানের বন্দনায় লেখা ‘হনুমান চালিশা’ হিন্দিতে গাইতে গাইতে আসছিলেন। নির্বাচনের ফল কী হবে, তা নিয়ে প্রথমে মন্তব্য করতে না চাইলেও পরে তিনি বললেন, নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিই জিতবেন।
‘উনি অনেক ভুল করেছেন, তা আমি অস্বীকার করি না। কিন্তু কাজ করতে গেলে তো ভুল হবেই। আর এটাও ভেবে দেখতে হবে যে সারা পৃথিবী এখন তাঁকে সম্মান করে। তার মানে ভারতকেই সম্মান করে’—বক্তব্য জদ্দু চৌধুরীর। আরও একটি বিষয় নির্দিষ্টভাবে বললেন ওই ট্যাক্সিচালক, ‘ওনার বিপক্ষে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কি ওনার মতো শক্তিশালী আর কোনো নেতা আছেন?’
গত কয়েক সপ্তাহে একটু উদ্যোগ নিয়েই আমি এমন অন্তত ৩০ জনের সঙ্গে কথা বলেছি, যাঁদের কেউ জদ্দু চৌধুরীর মতো ট্যাক্সি চালান, কেউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, কেউ-বা রংমিস্ত্রি আবার কেউ প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহর কলকাতায় আসেন কফি শপে কাজ করতে। তাঁদের অন্তত ৮০ শতাংশ সেই কথাই বলেছেন, যা বললেন চৌধুরী।
কলকাতা শহরে যাঁরা মফস্বল থেকে কাজ করতে আসেন বা আসেন বিহার, উত্তর প্রদেশ বা ঝাড়খন্ড থেকে, তার সংখ্যা বিরাট। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, মাত্র ৩০ জনকে প্রশ্ন করে কি এই বিশালকায় কর্মরত নিম্নবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণি, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ওয়ার্কিং ক্লাস, তার সার্বিক মত বোঝা সম্ভব? না, সম্ভব নয়। বিশেষত আন্তর্জাতিক অর্থসংস্থান পরিসংখ্যান যখন বলছে ভারতে ‘ওয়ার্কিং ক্লাসের’ আয়তন প্রায় ৫০ কোটি, তখন কোনো অবস্থাতেই ৩০ জনকে জিজ্ঞাসা করে এটা বোঝা সম্ভব নয় দরিদ্রের ভোট কোন দিকে যাবে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও করতে হয়; কারণ, সাংবাদিকতার কাজটাই অনেকটা সে রকম। কয়েকজনের সঙ্গে সামনাসামনি বা ফোনে কথা বলে একটা ধারণা তৈরি করা যে হাওয়া কোনো দিকে বইছে। পাঁচ দফা নির্বাচনের পর আমার ধারণা তৈরি হয়েছে যে নিম্নবিত্ত দরিদ্রের ভোট এবারও পাবেন নরেন্দ্র মোদি।
আর যেহেতু এই শ্রেণির আয়তন ৫০ কোটি এবং ভারতের মোট ভোটার প্রায় ১০০ কোটি, তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে ‘ওয়ার্কিং ক্লাসের’ ভোটের বড় অংশ পেতে চলেছেন মোদি। বারবার মোদি বলছি কিন্তু বিজেপি নয় তার কারণ, ভারতে আর কেউই এই নির্বাচনে বলছেন না যে এই লড়াই বিজেপি বনাম বাকিদের। সবাই অজ্ঞাতে বা সচেতনভাবে বলছেন এই লড়াই মোদি বনাম বিরোধীদের এবং সেই লড়াইয়ে অন্তত ‘ওয়ার্কিং ক্লাসের’ মধ্যে কেন মোদি এগিয়ে রয়েছেন, তার খুব যৌক্তিক উত্তর দিলেন দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের ‘দ্য রেড হাউস’ নামের এক ক্যাফে কর্মী জগবন্ধু দাস।
‘আমাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই। কারণ, তিনি তো অনেক কিছু করেছেন। সে জন্য আমরা তাঁকে সরাতে চাই না এবং অবশ্যই তাঁকে ভোট দেব ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী রাখার ভোট, আর এখন যে ভোট হচ্ছে, সেটা তো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোট। ফলে এখন আমরা মোদিকেই ভোট দেব’, বললেন জগবন্ধু।
এর মানে অবশ্য এটা নয় যে গরিব মানুষের সবাই নরেন্দ্র মোদিকে ভোট দেবেন। তবে একটা বড় অংশ যে দেবেন, তা নিয়ে বিশেষ সন্দেহ না রাখাই ভালো।
এখানেই মজা। ২০১৪ বা ২০১৯ সালে সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখলে নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপিবিরোধী মন্তব্য প্রায় চোখেই পড়ত না। আর ২০২৪ সালে মনে হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি দখল করে আছেন মোদিবিরোধীরা। ভারতে মোদিবিরোধী ভিডিও ব্লগার ধ্রুব রাঠি বা রবিশ কুমার মোদিবিরোধী বাস্তু চক্রের মহাতারকায় পরিণত হয়েছেন।
মোদিবিরোধী নাগরিক সমাজ এবং ভারতের রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রবল প্রচারণা দেখে মনে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩৭০ আসন (শুধু বিজেপির জন্য) বা বিজেপি জোটের জন্য ৪০০ আসন দিবাস্বপ্ন। ক্ষমতায় আসার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ আসন এককভাবে পেলেই বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদি যথেষ্ট সন্তুষ্ট হবেন।
সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক দেবাশীষ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘বিজেপি বরাবরই আসনসংখ্যা বিরাট বাড়িয়ে বলে। তারা যে জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা বোঝানোর জন্যই তারা এটা করে। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে আমরা দেখেছি, তাদের যখন তিনটি আসন রয়েছে তখন তারা বলছে, তারা ২০০ পেরিয়ে যাবে। অনেকটা এই স্লোগানের কারণে তারা শেষ পর্যন্ত সত্তরের ওপরে আসন পেয়েছিল।’ অর্থাৎ ৩৭০ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ভারতে যে অংশটা একটু ভালো চাকরির ওপর নির্ভরশীল বা ছোট ব্যবসায়ী, তাঁরা বিজেপির ওপরে প্রবল ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে প্রশ্নোত্তরে এক ব্যবসায়ীর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রীতিমতো বিপদে পড়েছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
প্রশ্নকর্তা অর্থমন্ত্রীকে সরাসরি বলেন যে যত দিন যাচ্ছে ব্যবসায়ী এবং শেয়ারবাজারের লেনদেনকারীরা অর্থ বিনিয়োগ করছেন অর্থাৎ ঝুঁকি নিচ্ছেন এবং ‘নিদ্রিত শরিক’ (স্লিপিং পার্টনার) হিসেবে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে উত্তরোত্তর বেশি লাভ করছে সরকার। সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত সীতারমণ এক লাইনের একটি চটুল উত্তর দেন। ‘আপনার শরিক যদি নিদ্রিত থাকে, তাহলে সে তো এখানে বসে উত্তর দিতে পারবে না।’ তাঁর এই মন্তব্য গোটা দেশে সমালোচিত হয়।
এই ক্ষুদ্র উদাহরণ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে ভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, মধ্য এবং উচ্চবিত্ত চাকরিজীবী এবং ভারতের বাজারের প্রধান ক্রেতাগোষ্ঠী বিজেপির ওপর প্রবল খেপে রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিন্তু অর্ধেক আসন বা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার দৌড়ে বিজেপি কোথায় দাঁড়িয়ে?
সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস কলকাতার অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মইদুল ইসলাম মনে করেন, অর্ধেকের বেশি ভোট হয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
মইদুল বলেন, ‘এবার যে কিছুটা কম ভোট পড়ছে, এটা বিজেপির জন্য অবশ্যই চিন্তার ব্যাপার। এর একটা কারণ হতে পারে, প্রধান যে দাবিগুলো বিজেপির পূর্ণ করার কথা ছিল, যেমন কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার বা রামমন্দির নির্মাণ—সেগুলো হয়ে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের নেতা-কর্মীরা একটু উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। যে উৎসাহ নিয়ে তাঁরা অতীতে ভোট দিতে গিয়েছিলেন, তেমনটা অনেক ক্ষেত্রেই যাচ্ছেন না।’
মইদুল আরও বলেন, ‘অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সাধারণের সমাধান বিজেপি গত কয়েক বছরে করে উঠতে পারেনি। কৃষির সংকট রয়ে গেল, মুদ্রাস্ফীতি রয়ে গেল। চাকরির বাজারের বিস্তার হলো না। সমস্যাগুলো মিটল না। ১০ বছরে এগুলো না মেটায় এখন তাঁরা বুঝেছেন যে এগুলো আগামী ১০ বছরেও মিটবে না। সে কারণেই তাঁরা ভোট দিতে কেন্দ্রমুখী হচ্ছেন না এবং প্রথম দিকে যে রাজ্যগুলোতে বিজেপি শক্তিশালী, সেখানে কম ভোট পড়েছে।’
বিজেপি যে যথেষ্ট চাপের মধ্যে রয়েছে, তা স্বীকার করেন ভেঙ্কিটেশ রামাকৃষ্ণান। ভেঙ্কিটেশ অতীতের দ্য ফ্রন্টলাইন পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সম্পাদক এবং বর্তমানে একটি সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইটের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। তিনি মনে করেন না যে বিজেপি হেরে গেছে এমনটা এই মুহূর্তে ধরে নেওয়া উচিত।
তাঁর মতে, ‘অবশ্যই বিজেপিবিরোধী একটা হওয়া রয়েছে এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি বেশ কটি রাজ্যে বিজেপির অবস্থা ভালো নয়। যেমন দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকে, যেখানে বিজেপি জোট গত নির্বাচনে ২৮-এর মধ্যে ২৭ আসন পেয়েছিল, সেখানে এবার তাদের ভালো রকম আসন কমার একটা আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু আবার এর পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানায় চার-পাঁচটি আসন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে বিষয়টি কাটাকাটি হয়ে যাচ্ছে।’
নির্বাচনের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশের ওপর, যেখানে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৮০টি আসন রয়েছে। ভেঙ্কিটেশের বক্তব্য, বিজেপি এই নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে ৭০-এর বেশি আসন আশা করেছিল।
ভেঙ্কিটেশ বলেন, ‘কিন্তু বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, এটা ৬২-এর ওপরে যাচ্ছে না এবং তাদের শরিক “আপনা দল”কে নিয়ে ৬৪। ২০১৯ সালেও তারা এই আসন পেয়েছিল। কিন্তু বিজেপিরই অন্যান্য কিছু মহলের ধারণা যে তারা ৩০টি আসন হারাবে, মানে ৫০-৫৫ আসন পাবে উত্তর প্রদেশে। সে ক্ষেত্রে এটা রুখতে যা করার, তারা সেটা করবে। এখন এটাকে ঠেকাতেই যেটা প্রাথমিকভাবে বিজেপি করেছে, সেটা হচ্ছে বিভিন্ন দল থেকে ভাগিয়ে নেতাদের নিজেদের দলে নিয়ে এসেছে, যাতে মনে হয় ময়দানে বিজেপি ছাড়া আর কোনো দল নেই। একচ্ছত্রভাবে এই নির্বাচন জিতবে। এ ছাড়া এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) এগুলো দিয়েও একটা চাপ দেওয়ানো হচ্ছে, সেটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।’
জাতপাতের রাজনীতির প্রশ্নে উত্তর প্রদেশে প্রায় একই রকম জনপ্রিয়তা বা সমালোচনা রয়েছে বিজেপি এবং বিরোধীদের, বিভিন্ন বর্ণ ও জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে। বিষয়টির ব্যাখ্যা করলেন দ্য ওয়্যার পত্রিকার রাজনৈতিক সম্পাদক অজয় আশীর্বাদ।
অজয় আশীর্বাদ বলেন, ‘উত্তর ভারতে, বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাত্রার অসন্তোষ থাকা সত্ত্বেও বিজেপি এখনো বিভিন্ন বর্ণ-গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত সমাজে তার সামাজিক অস্তিত্ব ধরে রাখতে পেরেছে। কিছু বৃহত্তর বর্ণ-গোষ্ঠী, যেমন রাজপুতরা কিছু অঞ্চলে বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ দেখিয়েছে। অন্য ছোট বর্ণ-গোষ্ঠীগুলো, যারা গত কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন করেছে, তারাও তাদের অসন্তোষ দেখিয়েছে। এই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে উত্তর ভারতের একটি মূল কৃষিভিত্তিক সম্প্রদায় জাঠ, তারা কাকে ভোট দেবে বা দিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অজয় আশীর্বাদ।
উত্তর ভারতে মোদির এখনো ভালো প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন ভেঙ্কিটেশ। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই যে উত্তর ভারতে মোদি বড় ফ্যাক্টর। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে যে এই ফ্যাক্টর ঠিক কতটা বড়? সম্প্রতি আমার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে (বিরোধী রাজনৈতিক নেতা) যোগেন্দ্র যাদব যেটা বলেছেন, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে মোদি নামেরই একটা বিরাট প্রভাব ছিল। রাস্তাঘাটে মোদির বিরোধিতা করা হলে, হয়তো দেখা যেত যে অনেক ক্ষেত্রে যিনি বিরোধিতা করছেন, তিনি মার খাচ্ছেন। সেই আবেগ সম্ভবত এখন আর নেই।’
কিন্তু বিশ্লেষকদের বাইরে ট্যাক্সিচালক জদ্দু চৌধুরী বা জগবন্ধু দাসের মতো ক্যাফের ওয়েটার মনে করেন না মোদিকে নিয়ে আবেগ কমেছে।
মধ্য ও উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের এই টানাপোড়েনে শেষ পর্যন্ত তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হন কি না, তা জানা যাবে আর এক সপ্তাহ পর—৪ জুন।
শুভজিৎ বাগচী প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা