১০ বছর পেরোনোর আগেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশু

পরিবারে মা–বাবা, খেলার মাঠে আগন্তুক ও বন্ধু এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও সহপাঠীদের হাতে শিশু নির্যাতনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি।

‘উনি মাঠের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন। আমার বলটা গিয়ে তাঁর গায়ে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে উঠে এসে তিনি আমাকে ঠাস ঠাস করে চড় মারতে শুরু করেন। বল গায়ে লাগায় আরেকবার এক বড় ভাই আমার মাথা মাঠে ঠেসে ধরেছিল।’

৫ জুন রাজধানীর সোয়ারীঘাটে এই প্রতিবেদককে কথাগুলো বলছিল ১১ বছরের শিশু আবদুল সুবাহান। দেবীদাস ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। কাছেই কামালবাগে তার বাড়ি।

আরেকবার সুবাহান গাছে চড়ে রহমতগঞ্জ মাঠে ফুটবল ম্যাচ দেখছিল। সেই সময়ে মাঠের পাশে টিকটকের জন্য ভিডিও বানাচ্ছিলেন একজন। সুবাহান গাছ থেকে নেমে এলে সেই ভিডিওর ফ্রেমে ঢুকে পড়ে। এতে টিকটক নির্মাতা ক্রুদ্ধ হয়ে ওকে পেটাতে শুরু করেন।

রহমতগঞ্জ মাঠ সুবাহানের নিত্যদিনের খেলার জায়গা। সেখানেই ‘বড় ভাই’ আর আগন্তুকদের হাতে মারধরের শিকার হতে হয়েছে তাকে বেশ কয়েকবার।

কথা হলো কামালবাগের ১০ বছর বয়সী আরেক শিশু লামিয়ার সঙ্গে। ওর দুই বোন বিয়ে করে এখন আলাদা সংসারে। বাড়িতে অসুস্থ বাবা আর মায়ের সঙ্গে সে থাকে। মা সোয়ারীঘাটে শ্রমিকদের জন্য রান্নার কাজ করেন। বাসার কিছু কাজের দায়িত্ব তখন লামিয়ার। লামিয়া বলল, কাজে ‘ফাঁকি’ দেওয়ার কারণে সে কম মার খায় না।

আসা যাক ৭ বছরের অনামা এক শিশুর গল্পে। পড়াশোনায় ‘অমনোযোগী’ ও ‘অবাধ্য’ এই শিশুটিকে বাবা-মা নিয়ে গিয়েছিলেন রাজধানীর এক মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে। ছেলে হঠাৎ হঠাৎ মারমুখী হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড রেগে যায়, কাউকে মানে না। মনোরোগ চিকিৎসক এই প্রতিবেদককে বললেন ভিন্ন এক গল্প। শিশুটির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, স্কুলে যাতায়াতের পথে গাড়িচালক ওর যৌনাঙ্গ স্পর্শ করত। ঘটনা শুনে বাবা-মা বিপন্ন হয়ে পড়েন। শিশুটি তাদের কিছু বলেনি।

এ বছরের মে মাসে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস (বিইউএইচএস) প্রকাশিত ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট চিলড্রেন অ্যান্ড ইটস অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাক্টরস ইন আরবান এরিয়া অব ঢাকা, বাংলাদেশ’ (‘ঢাকা শহরে শিশুর প্রতি সহিংসতা ও সম্পর্কিত কারণ’) শিরোনামের প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে এমন সব অভিজ্ঞতার ছবি। গবেষণায় দেখা যায়, ৮৮ শতাংশ শিশু কমপক্ষে একবার এবং ৫৫ শতাংশ শিশু একাধিকবার শারীরিক (মারধর, চড়, লাথি, চুলটানা, কানমলা, হাত মোচড়ানো), মানসিক (বকাঝকা, চিৎকার, গালি, অন্য শিশুর সঙ্গে তুলনা, অপমান) এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

খেলার মাঠে আগন্তুক ও বন্ধু, পরিবারে বাবা-মা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও সহপাঠীদের হাতে শিশু নির্যাতনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ৪৯ শতাংশের বেশি শিশু-কিশোর শারীরিক নির্যাতনের শিকার; আর প্রায় ৪৬ শতাংশ মানসিক নির্যাতন এবং ৫ শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার।

বিইউএইচএসের প্রতিবেদনটি স্থান পেয়েছিল মে মাসে আইসিডিডিআরবি আয়োজিত ‘জাতীয় সম্মেলন ২০২৩’-এর সেরা তিন উপস্থাপনার তালিকায়। গবেষণাটি হয় ২০১৯ সালে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মিরপুরের দুটি ওয়ার্ডে। অংশ নেয় ১০ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৪০১ শিশু। অধিকাংশই স্কুলশিক্ষার্থী, বসবাস পরিবারের সঙ্গে। বেশির ভাগের বাবাই কাজ করেন, মায়েরা থাকেন বাড়িতে। ১০ বছর বয়সের আগেই এর অধিকাংশ শিশুর নির্যাতনের অভিজ্ঞতা হয়েছে।

নির্যাতন: শারীরিক, মানসিক, যৌন

বিইউএইচএসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের মধ্যে খেলার মাঠে প্রায় ৬৫ শতাংশ শারীরিক, ৩২ শতাংশ মানসিক ও প্রায় ৩ শতাংশ যৌন; পরিবারে প্রায় ৫৮ শতাংশ শারীরিক ও ৪২ শতাংশ মানসিক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৬ শতাংশ শারীরিক ও ৪২ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পরিবারে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছে ১ শতাংশেরও কম শিশু।

পরিবারের সদস্যরাই শিশুদের নির্যাতন করে বেশি—৩৯ শতাংশ। এর পরপর শিক্ষক, আগন্তুক, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা যথাক্রমে ১৭ এবং প্রায় ১৫, ১৩ ও ৫ শতাংশ করে। এদের বাইরে সহপাঠী, স্বজন ও নিয়োগকর্তাদের হাতেও তারা কমবেশি নির্যাতিত হয়। সঙ্গী ও সেবাদানকারীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় যথাক্রমে ৫৫ ও ৩৯ শতাংশ শিশু।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বিইউএইচএসের প্রজনন ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বেগম রওশন আরা প্রথম আলোকে বলেন, গবেষণাটি তাঁরা করেছিলেন শিশু নির্যাতন রোধে সচেতনতা গড়ে তুলতে। কারণ, নির্যাতন শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশে বাধা দেয়। নির্যাতনে বেড়ে ওঠা শিশুর ভবিষ্যতে নির্যাতক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

বেগম রওশন আরা বলেন, গবেষণায় শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের তথ্য ভালোমতো পাওয়া গেলেও যৌন নির্যাতনের তথ্য সেভাবে পাওয়া যায়নি। সবার সামনে শিশুরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। যারা কিছুটা বলেছে, তারা পথে আগন্তুকের হাতে যৌন নির্যাতনের কথা বলেছে।

নির্যাতনের প্রথম অভিজ্ঞতা

পরীক্ষার ফল কিশোর শিক্ষার্থীদের বড় এক আতঙ্কের কারণ। এই প্রতিবেদকের এক সহকর্মীর মেয়ে খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। মেয়েটি একবার তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেছে, ‘পরীক্ষার ফল বের হলে অনেক মা বাচ্চাদের মারতে মারতে বাড়ি ফেরে। মা, তুমি যে আমাকে কিছু বলো না, এ জন্য ধন্যবাদ।’

একজন অভিভাবক জানালেন, পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর স্কুলে অনেক শিশুকেই তিনি ভীত থাকতে দেখেন। নম্বর কম পেলে অভিভাবকেরা সবার সামনেই শিশুদের মারধর করেন। সহপাঠীরা বেশি নম্বর পেলে আরও বেশি। তবে বললেন, নিজের সন্তানের সঙ্গে তিনি এত কড়াকড়ি করেন না।

না মারলে পড়ে না বলে মাঝেমধ্যে চড়থাপ্পড় দিতে হয়, এ কথা বলে কয়েকজন অভিভাবক মত দিলেন। তাঁরা একেবারে শাসন না করার বিপক্ষে।

বিইউএইচএসের গবেষণা অনুসারে, ১০ বছর বয়সের আগেই বেশির ভাগ শিশুর প্রথম নির্যাতনের অভিজ্ঞতা হয়। পরিবারে প্রথম নির্যাতনের অভিজ্ঞতা হয় সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৪৬ শতাংশের। ১০ বছর বয়সের আগেই বন্ধুদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয় প্রায় ৩১ শতাংশ শিশু। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০ শতাংশ, খেলার মাঠে প্রায় ২৪ শতাংশ এবং সেবাদানকারীর হাতে ৯ শতাংশ শিশু প্রথম নির্যাতনের অভিজ্ঞতা হয়।

শিশুসন্তানের পড়াশোনা এবং পরীক্ষার নম্বর নিয়ে অভিভাবকের বাড়াবাড়ি অনেক সময় মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া মেয়ের বিজ্ঞানে ২ নম্বর কম পাওয়া নিয়ে এক অভিভাবক রাজধানীর খ্যাতনামা একটি স্কুলের ফেসবুক গ্রুপে শিক্ষকদের দোষারোপ করে পোস্ট দিয়েছিলেন।

রাজধানীর একটি মানসম্মত স্কুলের শিক্ষক-অভিভাবকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুটি পোস্ট দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। গণিতে খারাপ করা দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে অন্য এক শিশুর অভিভাবক সেই গ্রুপে পোস্ট দিয়েছিলেন। এটি শিশুর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন, এই বলে স্কুলের শিক্ষক এ ধরনের কাজে অভিভাবকদের নিবৃত্ত থাকার কথা বলে ফিরতি পোস্ট দেন।

অধ্যাপক বেগম রওশন আরা বলেছেন, বাবা-মায়েরা সন্তানের পড়াশোনার উন্নতির জন্য বকাঝকা আর মারধর করেন। অন্য শিশুর সঙ্গে তুলনাও করেন। এতে হিতে বিপরীত হয়। শিশু হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। পরীক্ষায় খারাপ ফল করায় অনেক শিশুকে আত্মহত্যা করতেও দেখা যায়।

খেলার মাঠ শিশুবান্ধব নয়

বিইউএইচএসের প্রতিবেদন অনুসারে, খেলার মাঠে আগন্তুক ও বন্ধুদের হাতে শারীরিক নির্যাতনের হার ৬৫ শতাংশ।

সোয়ারীঘাটের সুবাহান বলেছে, বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে অনেক সময় ধাক্কাধাক্কি, মারামারি ও বিরোধ হয়। সেসব অত খারাপ লাগে না। তবে ছোটখাটো কারণে বড়রা মারধর করলে তার খুব কষ্ট হয়। সে কেঁদেছেও। তবে এলাকায় মাঠ থাকায় সে আনন্দিত। মাঠ তাকে টানে।

শিশু অধিকারকর্মীদের মতে, একে খেলার মাঠ কম; যা-ও কয়েকটি আছে, সেসব শিশুবান্ধব নয়। বড়দের খবরদারিতে শিশুরা কোণঠাসা। কিছু মাঠ বেসরকারি ক্লাবের দখলে, কিছু আবার উন্নয়নকাজ ও মেলার নামে বন্ধ। কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবনের নির্মাণ আন্দোলনের মুখে বন্ধ হয়েছে। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, এক মাস ধরে শিশুরা মাঠে খেলতে পারছে না।

সুবাহানের মতো একই কথা বলেছে রাজধানীর শুক্রাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. শাহীন এবং নিউ মডেল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো. ফাহিম। দুজনের বাবাই গাড়িচালক। ১৩ জুন কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে পানির পাম্প বসানোর কাজ চলছে। মাঠজুড়ে কাদা। সেখানেই শাহীন আর ফাহিমের সঙ্গে দেখা। তারা বলল, এ মাঠে তারা নিয়মিত খেলত। মাসখানেক ধরে খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকায় এখন আর পারছে না। শাহীনও বলল, খেলতে গেলে বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি হয়। তবু মাঠে খেলতে ভালো লাগে।

যৌন নির্যাতন নিয়ে কেউ বলে না

দেশের খ্যাতনামা একজন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে এক বাবা এসেছিলেন মেয়ের (২২) মাথাব্যথার সমস্যা নিয়ে। এর আগে বহু চিকিৎসক দেখালেও মেয়ের মাথাব্যথা সারছিল না। বেশ কয়েকটা অধিবেশনের পরও মনোরোগ চিকিৎসক মাথাব্যথার কারণ বুঝতে পারছিলেন না। মেয়েটি পরে বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি বাবার যৌন নির্যাতনের শিকার। শৈশবে মাকে বললেও তিনি বিশ্বাস করেননি। শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যে এমন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে তার দিন যাচ্ছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করে, এমন একটি সংগঠনকে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, বাবা এত যত্ন করে মেয়েকে নিয়ে আসায় তিনি (চিকিৎসক) নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

শিশু অধিকারবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের কাউন্সেলিংয়ে সাত বছরের এক শিশুসন্তানের মানসিক সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন এক মা। ওই শিশুটিও মাকে বাবার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পায়নি বলে জানায়।

সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮-এর তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে শিশু নির্যাতনের বিষয়ে সহায়তা চেয়ে কল এসেছিল ৮ হাজার ২১টি। একই বিষয়ে কল এসেছিল ২০২০ সালে ৫ হাজার ২৭৫ এবং ২০২১ সালে ৬ হাজার ৩৮৮টি। নির্যাতনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

শিশু আইন ২০১৩-এর ৭০ ধারা অনুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি তাঁর হেফাজতে, দায়িত্বে বা পরিচর্যায় থাকা কোনো শিশুকে আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলা, বর্জন, অরক্ষিত অবস্থায় পরিত্যাগ, ব্যক্তিগত পরিচর্যার কাজে ব্যবহার বা অশালীনভাবে প্রদর্শন করে এবং এতে শিশুর অহেতুক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও মানসিক বিকৃতি হয়, তাহলে ওই ব্যক্তি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ অপরাধের জন্য অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

দরিদ্র শিশুদের সুরক্ষায় সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ইউনিসেফ পরিচালিত চাইল্ড সেনসিটিভ সোশ্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (সিএসপিবি) প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট মো. এমরান খান বলেন, শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সমাজকর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি পদক্ষেপ কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, নিজেদের অভিযোগ জানানোর জন্য পথ খোলা রাখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ বা পথে শিশুদের জন্য বিনা মূল্যের টেলিফোন বুথ রাখতে পারলে ভালো হতো।

 নীরবতা ভাঙা জরুরি

ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো নির্যাতনই শিশুর মানসিক বিকাশের অন্তরায়। মারধর আর বকাঝকার মধ্যে বড় হওয়া শিশু ভয়ে কিছুই প্রকাশ করতে চাইবে না। যৌন নির্যাতনের কথা সে গোপন করবে। ফলে প্রতিকারের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

এতে শিশুর যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়বে। শিশুর প্রতি ঘরে-বাইরে যৌন নির্যাতনের ভয়াবহতা প্রতিরোধ করতে এ বিষয়ে নীরবতা ভাঙা দরকার। অনেকে মনে করেন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলে তবে সেটা যৌন নির্যাতন। আসলে যেকোনো মন্দ স্পর্শই যৌন নির্যাতন।

রোকসানা সুলতানা আরও বলেন, পরিবারে শিশুর নির্যাতন ঠেকাতে সচেতনতা সৃষ্টি হওয়া জরুরি। খেলার মাঠ শিশুর জন্য নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। শিশুর মাঠে গিয়ে খেলা জরুরি। খেলাধুলা শিশুকে ক্ষমতায়িত ও বিকশিত হয়ে উঠতে সহায়তা করে।