শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে
শিক্ষানবিশ এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে

পশ্চিমবঙ্গের গণ-আন্দোলন মমতার জন্য কতটা চিন্তার

ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে আছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। এ আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি এবং এর প্রভাব রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল কীভাবে সামাল দেবে, তা নিয়ে লিখেছেন শুভজিৎ বাগচী 

এক সান্ধ্য আড্ডার আসরে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতা পশ্চিমবঙ্গের গণ-আন্দোলনের নানান ব্যাখ্যা দিলেন। একদিকে তিনি বললেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয় ব্যর্থতা রয়েছে, আবার এ-ও বললেন যে এর ফলে আগামী দিনে খুব বড় বিপদে পড়বে না পার্টি। তিনি বললেন, ‘এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে আর জি করের দায়িত্বে থাকা প্রিন্সিপালকে (সন্দীপ ঘোষ) সাসপেন্ড বা গ্রেপ্তার না করে কীভাবে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে অপর একটি মেডিকেল কলেজের (ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ) একই পদে বসিয়ে দেওয়া হলো বুঝলাম না। এতে প্রচণ্ড খেপে যায় মানুষ।’ তাঁর ব্যাখ্যা, দিদি অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর আশপাশে থাকা উপদেষ্টারা ভুল বোঝাতে শুরু করেছেন।

আবার তিনি এ-ও বললেন, এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বেশি দূর গড়াবে না। ‘বাংলাদেশের অভ্যুত্থান আমাদের আরও বিপদে ফেলে দিল। বাংলাদেশ দেখে এখানে সবাই ভাবলেন তাঁরাও সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কোনো সিনেমা হিট করলে, সবাই সেটা দেখতে যায়। কিন্তু তার “রিমেক” হলে, অত লোক যায় না, ছবিও হিট করে না। ঢাকার পুনরাবৃত্তি কলকাতায় হবে না।’

হয়তো কথাটা ঠিক, কিন্তু কলকাতায় আন্দোলন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে মনে হচ্ছে না যে আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দুর্গাপূজা শুরু হলে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যাবে। আন্দোলন সাময়িকভাবে থেমে গেলেও পূজার পরে আবার নতুন করে যে শুরু হবে না, এমন গ্যারান্টি তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দিতে পারছেন না। গভীর যে ক্রোধ মানুষের মনে জমা হয়েছে, তা চট করে অদৃশ্য হয়ে যাবে বলে সেপ্টেম্বরের গোড়াতে মনে হচ্ছে না।

সাধারণ মানুষ, যাঁরা কোনো আন্দোলন বা রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে সরাসরি নিজেদের তেমন যুক্ত করেন না, তাঁরা যেভাবে পথে নেমেছেন বা সমর্থন দিচ্ছেন, তা তৃণমূল কংগ্রেসের ১৩ বছরের শাসন আমলে ঘটেনি। যেমন ধরা যাক সাত-পাঁচে না থাকা পেশাদার নার্স বনশ্রী চ্যাটার্জির কথা। তিনি বলছিলেন, তাঁর কাজে যেতে ইচ্ছে করছে না। কারণ, যে চিকিৎসক মারা গেলেন, তিনি তাঁর মতোই একজন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন।

গত ৯ আগস্ট কলকাতার অন্যতম প্রধান মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল আর জি করে এক শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসককে নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে রাস্তায় নেমে আসে প্রায় গোটা রাজ্য। শুরু হয় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মিটিং-মিছিল। ঘটনার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে গত ১৪ আগস্ট রাতে পাড়ায় পাড়ায় মহিলা-পুরুষ-শিশু-যুবক মিছিল করেছেন, স্লোগান দিয়েছেন, গান গেয়েছেন হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে।

আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় সংগঠক ঝিলম রায় বললেন, তাঁদের হিসাবমতো পশ্চিমবঙ্গের মোটামুটি আড়াই শ জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে স্বাধীনতার আগের রাতে অর্থাৎ ১৪ আগস্ট। ভবিষ্যতে আন্দোলন যাতে স্তিমিত হয়ে না যায়, তা মাথায় রেখে বিভিন্ন জায়গায় সংগঠকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানালেন এ সমাজকর্মী ছাত্রী। ‘আমার মনে হয় না যে এই আন্দোলন স্থিত হবে, যতক্ষণ না দোষী ব্যক্তিরা সাজা পাচ্ছে,’ বললেন তিনি।

আরও একাধিক দাবি

তবে শুধুমাত্র দোষীদের সাজাই আন্দোলনকারীদের একমাত্র লক্ষ্য নয়। আন্দোলনকারীদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও অন্তত বিশটি দাবি তোলা হয়েছে। প্রাথমিক দাবি অবশ্যই দোষীদের গ্রেপ্তার করা ও শাস্তি দেওয়া।

বস্তুত, দুই আলোচিত অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাদের একজন হলেন অস্থায়ী পুলিশ কর্মী সঞ্জয় রায়। সঞ্জয়কে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরজিকর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও বেশ কয়েকজনকে এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হয়েছে ধর্ষণ-বিরোধী একটি বিল, যেখানে অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে বলেও নির্দেশ করা হয়েছে। যদিও এই বিলটি নিয়ে প্রবল বিতর্ক রয়েছে কারণ তড়িঘড়ি বিলটি পাস করানো হয়েছে ফাঁসির ব্যবস্থা রেখে যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক বলে আইনি বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন।

আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আরও যে দাবিগুলি উঠে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে প্রধানত ২০১৩ সালে গঠিত কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানি বিষয়ক আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া থেকে যৌন সংখ্যালঘুদের কর্মক্ষেত্রে তো বটেই জীবনেরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমান অধিকার দেওয়ার দাবি।

স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে ভারতে

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ভারতে বাড়ছে। বিশেষ করে করোনাকালে তা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল, সম্প্রতি আবার কিছুটা কমেছে। তবে যেসব দেশের উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে হামেশাই হামলা হয়। সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলো জানাচ্ছে, প্রায় ৫৮ লাখ ভারতীয় স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ৭৫ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন, যেখানে চীনে এই হার ৮৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৪৭ শতাংশ।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) জানিয়েছে, ভারতে প্রায় ৮৩ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী প্রবল চাপের মধ্যে কাজ করেন। এ বছরের মার্চ মাসে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেট বলেছে, আফগানিস্তানের মতো একটি সংঘাতপূর্ণ দেশ না হওয়া সত্ত্বেও ভারতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে হামলার ঘটনা যথেষ্ট বেশি। পত্রিকাটি জানিয়েছে, ভারতে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বিশ্বের মোট স্বাস্থ্যকর্মীর ১ শতাংশের কম হলেও বিশ্বে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে সহিংসতার ঘটনার ৩ দশমিক ৪ শতাংশ ঘটছে ভারতে।

করোনাকালে আক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধির পরে ভারত একটি কেন্দ্রীয় আইনে (মহামারি রোগ সংশোধন আইন ২০২০) বলে স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ‘স্বীকৃত অপরাধ’। স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে আক্রমণের ঘটনায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার রুপি পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পরে এবং পাঁচ বছরের জন্য জেলও অস্বাভাবিক নয়। তবে চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ মনে করে, এই আইন যথেষ্ট নয়। তাদের বক্তব্য, ২০১৯ সালের ‘স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট বিলটি’ পাস করিয়ে আইনে পরিণত করার প্রয়োজন ছিল। কেন্দ্র সরকার বিলটি মুলতবি করে জানিয়েছে, এটিকে আইনে করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

আর জি করের ঘটনার পরে ভারতজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের যে আন্দোলন শুরু হয়, তার জেরে গোটা দেশে ধর্মঘট করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। গত ১৪ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ বাদে দেশের অন্যান্য প্রান্তে সেই ধর্মঘট তাঁরা তুলে নেন, যখন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নাড্ডা তাঁদের বলেন যে ২০১৯-এর বিলটি সরকার নতুন করে পেশ করে আইনে পরিণত করার চেষ্টা করবে। আইএমএর তরফে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

আন্দোলনের রাজনৈতিক প্রভাব

যাঁকে নিয়ে মানুষের এত ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মেডিকেল কলেজের সেই সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি এর ফলে আন্দোলনের গতি স্তিমিত হবে? আরও কয়েক দিন গেলে সেটি স্পষ্ট হবে। কিন্তু অন্য একটি প্রশ্নের উত্তর এখন স্পষ্ট—কেন ও কীভাবে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল এই আন্দোলন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বললেন, নানান কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছিল।

‘নতুন নতুন আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে আসছিল, কখনো মানুষ টেলিভিশনে দেখছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক মহাসচিব) বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে, কখনো গ্রেপ্তার হচ্ছেন অন্য কোনো নেতা। এরই পাশাপাশি চলছে তৃণমূলের গুন্ডামি, সর্বাত্মক রাজনৈতিক হিংসা প্রভৃতি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে একটা ‘টক্সিক ম্যাসকুলিনিটি’—বিষাক্ত পুরুষতান্ত্রিক বেয়াদবি। এটা প্রায় দেড় যুগ ধরে দেখে দেখে মানুষ খেপে ছিলেন। এরপর যখন রাস্তাঘাটে নয়, একেবারে একটি হাসপাতালে একজন নারীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো, তখন মানুষ যেন আর থাকতে পারলেন না, ফেটে পড়লেন।’

এর সঙ্গে যুক্ত হলো মমতার পরপর নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত, যার কথা দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল নেতাও বলেছিলেন। অধ্যাপক মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘মমতার দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে পারতেন, প্রিন্সিপাল ঘোষকে দ্রুত সাসপেন্ড করতে পারতেন ইত্যাদি। কিন্তু সেসব না করে স্বাস্থ্য দপ্তর প্রিন্সিপালকে অন্য কলেজে বহাল করল, আর শিশুসুলভ বিবৃতি দিয়ে মমতা বললেন, সাত দিনের মধ্যে দোষীর ফাঁসি চাই। হয়তো মমতা বুঝতে পারেননি যে মানুষের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে।’

গ্রামের আন্দোলন না শহরের?

এখনো এই আন্দোলন গ্রামে অতটা ছড়ায়নি বলে মনে করছেন সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। ‘এটা অনেকটাই শহরের মধ্যবিত্ত ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে অনেক আন্দোলনই শহরে শুরু হয়ে গ্রামে ছড়ায়। সিপিআইএম আমলেও আমরা এটা দেখেছি।’ তবে ঝিলম রায় মনে করেন, ‘রাত দখলের’ আন্দোলন ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের জেলায় এবং গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়েছে।

সাংবাদিক এবং প্রবীণ সম্পাদক রজত রায় মনে করেন, আন্দোলনের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। ‘আজ রাতে (বুধবার) আমরা জানতে পারছি যে শুধু কলকাতায় নয়, জেলার প্রধান শহর এবং ছোট শহরগুলিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং জমায়েত হয়েছে। আন্দোলন প্রধানত শহরের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তদের দিয়েই শুরু হয়, যেমন হয়েছিল বামফ্রন্ট আমলে নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের সময়ও। তবে এখন এও দেখছি যে শহরের গরিবরা আন্দোলনে ধীরে ধীরে অংশ নিচ্ছেন,’ বললেন রায়।

এই আন্দোলনের আর একটা বড় সুবিধা হলো কোনো রাজনৈতিক দলই এখনো এই আন্দোলনকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারছে না, যার ফলে আন্দোলনকে সিপিআইএম বা বিজেপির আন্দোলন বলে তার বিরোধিতায় যেতে পারছে না তৃণমূল।

তৃণমূল কংগ্রেসের সুবিধা

এরপরেও, তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যে এর পরের বড় নির্বাচন অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আরও অন্তত ১৮ মাস পরে, ২০২৬ সালের গোড়ায়। এই ঘটনার একটা প্রভাব সেই নির্বাচনে পড়বে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের হার ও আসন দুইই কমবে বলে মনে করছেন অধ্যাপক মুখোপাধ্যায়। তবে হাতে সময় থাকার কারণে খানিকটা ঘর গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ হয়তো তৃণমূল পাবে।

তৃণমূলের আরও একটা বড় সুবিধার কথা অধ্যাপক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় ছাড়াও অনেকই বললেন।সিপিআইএম-নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ধীরে ধীরে আবার সংগঠিত হচ্ছে, যদিও নির্বাচনী রাজনীতিতে এখনো পর্যন্ত তার প্রতিফলন ঘটেনি। ‘আমার মনে হয়, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএম ভালো ভোট পাবে। সে ক্ষেত্রে সুবিধা হবে তৃণমূলের। মমতা-বিরোধী ভোট যদি বামফ্রন্ট এবং বিজেপির মধ্যে ভাগ হয়, তাতে লাভ তৃণমূলেরই’,  বললেন অধ্যাপক মুখোপাধ্যায়।

রজত রায় অবশ্য মনে করেন যে এই আন্দোলনের ফলে শেষ পর্যন্ত বিজেপি বা সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের লাভ হবে কিনা তা বলার সময় এখনো আসেনি। ‘আপাতত এটাই দেখার যে এই আন্দোলন কীভাবে এবং কত দিন চলে। তৃণমূল অসম্ভব চাপে রয়েছে। এটাও দেখার যে সেই চাপ তারা কীভাবে সামলায় এবং কীভাবে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করে’, বক্তব্য রজত রায়ের।

এই চাপ তৃণমূল কীভাবে সামলাবে তা নিয়ে অবশ্য এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশ যে তাদের কাছে পৌঁছায়নি তা স্বীকার করে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ভরসা রাখছেন ওই বিশ্বাসের ওপরেই যে ‘বাংলাদেশের ছবির রিমেক পশ্চিমবঙ্গে হবে না।’

  • শুভজিৎ বাগচী প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা