পণ্য কিনতে কিংবা সেবা পেতে গিয়ে ঠকলে, প্রতারিত হলে ভোক্তাদেরও যে প্রতিকার চাওয়ার অধিকার আছে, বাংলাদেশের মানুষ এটা জানতে পারছে এই সেদিন। যদিও আইন পাস হয়েছে চৌদ্দ বছর আগে। ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতে কার্যক্রম শুরু হতে লেগেছে আরও কয়েক বছর।
রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধ ও লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশের মানুষ তথা ক্রেতারা পণ্য ও সেবা পেতে গিয়ে নানা ছলনা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে অতিরিক্ত মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছেন, প্রতারিত হচ্ছেন দশকের পর দশক ধরে। মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িত অধিকার ও সেবাগুলোকে ভোক্তা–অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে জাতিসংঘ। তারই আলোকে অন্যান্য দেশে ভোক্তার অধিকারের সুরক্ষা দিতে আইন প্রণয়ন ও এর প্রয়োগ শুরু হয়েছে অনেক আগে।
তাতে ওসব দেশের নাগরিকেরা মানসম্মত পণ্য ও সেবা পেয়েছেন, প্রতারণা বা অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ‘ক্রেতা সুরক্ষা আদালত’ স্থাপন ও কার্যক্রম চালু হয়েছে ১৯৮৬ সালে। তাতে সে দেশের ভোক্তাদের অধিকার অনেকটাই নিরাপদ হয়েছে। আর আমাদের বাংলাদেশে ‘ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন’ হয়েছে ২০০৯ সালে। কিন্তু এই আইন সম্পর্কে দেশের মানুষের বৃহত্তর অংশই কিছু জানে না। ফলে পদে পদে সেসব মানুষের জন্য রয়েছে ভোগান্তি আর হয়রানি। দুঃখের বিষয়, মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষিত ও সচেতন ব্যক্তি ছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এই আইন সম্পর্কে এখনো সম্যক অবগত নয়। তাতে ব্যবসায়ীদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের তুলনায় অভিযোগের সংখ্যা খুবই কম। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইনে বেচাকেনার ফলে প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে।
তাই বলা যায়, ভোক্তা–অধিকার আইন সম্বন্ধে দেশের মানুষের বড় অংশের অজ্ঞতাই হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীদের প্রতারণার মূল হাতিয়ার।
২০০৯ সালের ২৬ নম্বর আইন হিসেবে এটি রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। এই আইন অনুযায়ী যেসব কাজ ‘ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কাজ’ হিসেবে বিবেচিত হবে, সেগুলো হলো সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত আদায়, বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন না থাকা, নোংরা পরিবেশে মানহীন ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও পরিবেশন, পণ্যে ভেজাল, ওজনে কম, বেশি দাম নেওয়া, ত্রুটিপূর্ণ পণ্য, ক্রেতার সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও মজুতদারি।
ভোক্তা–অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯–এর আলোকে গঠিত ‘জাতীয় ভোক্তা–অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’ একটি আধা বিচারিক সরকারি সংস্থা, যা পণ্য ও পরিষেবার ওপর ভোক্তাদের অভিযোগ গ্রহণ ও তা নিষ্পত্তি এবং অধিকার সংরক্ষণে কাজ করে। এর সদর দপ্তর ঢাকায় এবং প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা শহরে তাদের স্থানীয় দপ্তর আছে। ভোক্তাদের প্রতারণা থেকে রক্ষায় সরকার ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়নের ফলে একজন বিক্রেতা তাঁর পণ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সব তথ্য ক্রেতাকে দিতে বাধ্য থাকবে।
পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ দায়ের করতে হবে, তা অবশ্যই লিখিত হতে হবে। ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে, অভিযোগের সঙ্গে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রসিদ যুক্ত করতে হবে। অভিযোগ অনলাইন ও সরাসরি দুই ভাবেই করা যায়। এর ফরম অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেই আছে। অভিযোগ যথাযথভাবে দায়ের করলে অধিদপ্তর থেকেই শুনানির তারিখ জানানো হয় দুই পক্ষকে। এরপর একজন কর্মকর্তার সামনে শুনানি হয়। এসব বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভোক্তা–অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিতে পারে।
বর্তমানে বিদ্যমান শাস্তির ব্যবস্থায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদায় করা জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে প্রদানের বিধান রয়েছে। আবার ফৌজদারি ব্যবস্থায় (ধারা-৫৭) মামলা দায়েরের মাধ্যমে অপরাধীর সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে।
ভোক্তাস্বার্থবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে সময়ে–সময়ে বিভিন্ন বাজার, আড়ত, মুদিদোকানসহ নিত্যপণ্য বিক্রয়কারী পাইকারি ও খুচরা প্রতিষ্ঠান কারখানা, হোটেল রেস্টুরেন্ট, শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছে এবং করছে ভোক্তা–অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ইচ্ছেমতো বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রির অভিযোগসহ মানহীন ভেজাল খাদ্যপণ্য, ক্ষতিকর উপাদান মিশ্রিত পণ্য তৈরি, ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণে পণ্য নজরকাড়া করতে হরেক রকম অসততা, অনিয়ম ও অনৈতিক কাজের দায়ে জরিমানা করা হয়েছে অভিযুক্তদের।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন সংশোধনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এতে শাস্তির ব্যাপ্তি আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে দণ্ড ও জরিমানা বাড়ানো ছাড়াও ই-কমার্সকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯–এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামে একটি পরিষদ রয়েছে, যা নিম্নরূপ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত—
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএসটিআইয়ের ডিজি, শিল্প, কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বরাষ্ট্র, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মর্যাদার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রয়েছেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি, ক্যাবের সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক, সরকার কর্তৃক মনোনীত তিনজন বিশিষ্ট নাগরিক, সরকার কর্তৃক মনোনীত বাজার অর্থনীতি, ব্যবসায় শিল্প ও জনপ্রশাসনে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনন্য দুজন নারী সদস্যের সমন্বয়ে চারজন সদস্য, সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, শ্রমিক, কৃষক এবং ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যিনি এই পরিষদেরও সচিব হবেন।
এই ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’–এর সভা প্রতি তিন মাসে একবার অনুষ্ঠিত হয় বলে অভিযোগ শাখায় ফোন করে জানা গেছে।
বর্তমানে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সুবাদে এবং জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর প্রচার–প্রচারণার ফলে দিনে দিনে জনগণ তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন। ভোক্তারা এখন জানতে শুরু করেছে যে তাঁদেরও অভিযোগ জানানোর একটি জায়গা তৈরি হয়েছে। ফলে অধিকার আদায়ে অভিযোগের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ সফলভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
প্রতিটি মার্কেট প্লেসে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে সংক্ষুব্ধ ভোক্তার অভিযোগ জানানোর জন্য দৃশ্যমান স্থানে প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত ডিসপ্লে বোর্ড থাকবে। ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অনলাইন অভিযোগ জানানোর লিংক: http://dncrp.com ভোক্তা বাতায়ন হটলাইন নম্বর ১৬১২১, email: nccc@dncrp.gov.bd এবং ফোন নম্বর ০২-৫৫০১৩২১৮, ০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮ লেখা থাকবে তাতে।
সম্প্রতি ঈদুল আজহার প্রাক্কালে কোরবানির পশুর বাজারে পশুর অস্বাভাবিক দামের দরুন সীমিত আয়ের অনেক আগ্রহীর পক্ষে কোরবানি করা সম্ভব হয়নি। তাই ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ঈদের পশুর উপযুক্ত দাম নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে, যেহেতু এই পরিষদে বাজার অর্থনীতি, ব্যবসায় শিল্প ও জনপ্রশাসনে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গসহ সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা আছেন।
প্রয়োজনে ক্রেতা ও বিক্রেতা, ব্যাপারী, খামারি সব পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষণে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা যেতে পারে, যেখানে প্রশাসনের প্রতিনিধির পাশাপাশি ইজারা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ-সিটি করপোরেশন কিংবা পৌরসভা বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি, বাজারবিশেষজ্ঞ এবং ব্যবসায়ীদের যোগ্য প্রতিনিধি মিলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পশুর উপযুক্ত দাম নির্ধারণ করবেন এবং সব পশু বিক্রি হতে হবে ওজনের ভিত্তিতে। ঈদের পশুর বাজার যাঁরা ইজারা নেবেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক ওজন স্কেলের ব্যবস্থা করতে হবে তাঁদের।
কমিটির নির্ধারিত দরে ওজন স্কেলে ওজন পরিমাপের মাধ্যমে পশুর দাম নির্ধারিত হলে তা হবে সবার জন্য মঙ্গলজনক। প্রতিটি বাজারে ডিসপ্লে বোর্ডে পশুর শ্রেণিভেদে ভিন্ন ভিন্ন দাম উল্লেখ থাকবে। তাতে বিক্রেতার ইচ্ছেমতো দর হাঁকানোর সুযোগ থাকবে না।
ক্রেতা যেমন পূর্বধারণার সঙ্গে আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে যেতে পারবেন, বিক্রেতারাও তার পশুর দাম সম্পর্কে আগেই জেনে যাবেন। তাতে কোনো পক্ষেরই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না। বাজারে নজরদারির মাধ্যমে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে ঈদের পশুর বাজারে ভালো একটা শৃঙ্খলা আসতে পারে। অদৃশ্য সিন্ডিকেটের কারসাজি করার আর সুযোগ থাকবে না। বাস্তবায়ন করা গেলে উদ্যোগটি প্রশংসিত হবে।
প্রতিটি বাজারে ডিসপ্লে বোর্ডে পণ্যের মূল্য দেওয়া থাকবে, ব্যত্যয় হলে দায় বর্তাবে মার্কেট কমিটির ওপর। প্রতিটি বাজারে প্রস্তাবনা অনুযায়ী শৃঙ্খলা তৈরি হলে তাতে ক্রেতা–বিক্রেতা উভয় পক্ষ সচেতন ও সতর্ক হবে। জনমনে স্বস্তি আসবে।
নানা অনাচারে এমনিতেই সাধারণ জনগণের জীবন অতিষ্ঠ। তার ওপর নিত্যপণ্য নিয়ে সিন্ডিকেটের নৈমিত্তিক কারসাজি, পণ্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ভোক্তার জীবন দুর্বিষহ। ভোক্তারা এখন অধিকার সংরক্ষণের চেয়ে জীবন বাঁচাতে মরিয়া। আজ কাঁচা মরিচ তো কাল আলু, পরশু চিনি তারপর ডিম—সিন্ডিকেটের খেলা চলছেই। বাণিজ্যমন্ত্রীও যেখানে এ বিষয়ে নিজের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
ভোক্তা–অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান সত্ত্বেও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নানামুখী অপতৎপরতা থেমে নেই। নিত্যনতুন কৌশলে কারসাজি চলছে পালাক্রমে। দাম দিয়েও উপযুক্ত মান ও পরিমাণের পণ্য পাবেন না; আর এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে পার পেয়ে যাবেন অপরাধীরা, জনগণ ঠকবেন দিনের পর দিন, এটা কোনো সভ্য দেশে চলতে পারে না।
যেহেতু বিষয়টি জাতীয় জীবনের জন্য স্পর্শকাতর, তাই বৃহত্তর স্বার্থে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অতি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয়ে উন্নীত করে একজন প্রতিমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রণালয়টি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ন্যস্ত করা হোক। শুল্ক গোয়েন্দা, নারকোটিকস গোয়েন্দা উইংয়ের মতো ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের চৌকস সদস্যদের নিয়ে একটা শক্তিশালী গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করা হোক। যারা বিভিন্ন বাজার, বিপণিবিতান, আড়ত ও কারখানার ওপর গোপন নজরদারি রাখবে। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক অভিযানের ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা যাবে। তাতে সর্বত্র মেসেজ পৌঁছে যাবে। পণ্যে ভেজাল, নকল ও কারসাজি রোধ করা সম্ভব হবে। সরকারের ওপর ভোক্তা জনগণের আস্থা বাড়বে।
ভারতের রাজ্যগুলোতে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত আছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তো আছেনই। বিচারের জন্য আছে আলাদা আদালতও। পাশের দেশ ভারত তাদের ভোক্তাদের অধিকার অনেকটাই নিরাপদ করতে পারলেও বাংলাদেশে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে সে রকম কার্যকর ব্যবস্থা তেমন কিছুই এখনো করা হয়নি। ভারতের মডেল অনুকরণে ভোক্তা-অধিকার আদালত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ–সংক্রান্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি উক্ত আদালতে সম্পন্ন করা যেতে পারে। তাতে দেশে বিদ্যমান আদালতের ওপর চাপ কমবে, অভিযোগকারী প্রতিকার পাবেন, অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসবে, ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠায় ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
ভোক্তা-অধিকার সুরক্ষার সঙ্গে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ জড়িত। এটা অবশ্যই জাতীয় জরুরি সেবা পর্যায়ের ইস্যু, তাই সরকারি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিষয়টি আরও গুরুত্ব পাওয়া উচিত।
মুহাম্মদ লুৎফুল হায়দার, ব্যাংকার