বিজেপির জন্ম থেকেই তিনটি দাবি—‘অযোধ্যায় রামের জন্মভূমির মুক্তি, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’। প্রথম দুই দাবি তাদের পূরণ হয়েছে। বাকি আছে অভিন্ন দেওয়ানি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম রাজ্যসফর মধ্যপ্রদেশ। বছর শেষে সেখানে বিধানসভার ভোট।
প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। লড়াই কঠিন। রাজধানী ভোপালে বিজেপির কর্মিসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজনীয়তা নতুনভাবে ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবারে আলাদা আলাদা নিয়ম থাকলে যেমন সংসার চালানো যায় না, তেমনই ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা জারি থাকলে দেশ শাসনও কঠিন। সবার জন্য এক ব্যবস্থা তাই জরুরি।’
শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, একই সময়ে ভোট রাজস্থান, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মিজোরামে। তার ছয় মাস পর লোকসভা নির্বাচন। জয়ের হ্যাটট্রিক করে জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড ছুঁতে চান মোদি। ধর্মীয় বিভাজন বাড়াতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির জিগির তোলা সেই লক্ষ্য পূরণের তাগিদ কি না, তা নিয়ে এখন তুমুল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে বিজেপির জন্ম ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল। তার আগে দলের নাম ছিল জন সংঘ। জন্ম থেকেই জন সংঘ অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে। কিন্তু জবরদস্তি নয়, তারা মনে করত, তাগিদটা আসা দরকার সমাজের ভেতর থেকে।
পরবর্তী সময়ে তিনটি দাবি বিজেপিকে অন্যান্য দলের চেয়ে আলাদা করে—অযোধ্যায় রামের জন্মভূমির মুক্তি, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। তিন চাহিদা পূরণে সংসদে যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন, ২০১৪ সালের আগে বিজেপি তা অর্জন করতে পারেনি। নরেন্দ্র মোদির কৃতিত্ব এখানেই। সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে রামের জন্মভূমিতে মন্দির তৈরি শুরু করেছেন। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে খারিজ করেছেন সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। এবার লক্ষ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। সরকার চায় বিয়ে, বিবাহ বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার ও দত্তক গ্রহণের ক্ষেত্রে ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সারা দেশে এক আইন চালু করতে।
সেই লক্ষ৵ পূরণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ২২তম আইন কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান কর্ণাটক হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থি। হিজাব মামলার রায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘হিজাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়।’
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে অবস্থি ধর্মীয় সংগঠন, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চেয়েছেন। সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা বলা আছে।
সুপ্রিম কোর্টও তার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছিলেন ১৯৯৫ সালে। যদিও সব দিক বিবেচনা করে ২১তম আইন কমিশন জানিয়েছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এখনই কাঙ্ক্ষিত নয়, প্রয়োজনও নেই।
সত্যিই কি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োজনীয়? অভিন্নতা ছাড়াই তো দেশটা ৭৫ বছর গড়গড়িয়ে চলছে? উন্নতি করছে। শক্তিশালী হচ্ছে। বিশ্বের সমীহ পাচ্ছে। তা হলে এই অভিন্নতার প্রয়োজন কোথায়?
তা ছাড়া, তাগিদটা অভ্যন্তরীণ নাকি বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারীদের? বিরোধীদের অনুমান, সরকার চাইছে ধর্মীয় বিভাজনরেখা স্পষ্টতর ও প্রবল করতে, যাতে ভোট–রাজনীতিতে তাদের লাভ হয়?
দেশের রাজনৈতিক চালচিত্রে বিপুল পরিবর্তন ঘটিয়েছিল শাহ বানো মামলা ও কংগ্রেসের দোদুল্যমানতা।
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে ইন্দোরের দূরত্ব মাত্র ২০০ কিলোমিটার। শাহ বানো ছিলেন ইন্দোরের এক সাধারণ গৃহবধূ। তাঁর স্বামী মহম্মদ আহমেদ খান নামী আইনজীবী। একদিন তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ঘরে আনেন। নাখোশ শাহ বানো পরিস্থিতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। গোল বাধে বছর কয়েক পর। ১৯৭৮ সালে ৬২ বছর বয়সী শাহ বানোকে তালাক দেন স্বামী। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি খোরপোশের দাবিতে ফৌজদারি মামলা ঠোকেন ইন্দোরের নিম্ন আদালতে।
আইনজীবী স্বামীর যুক্তি—ইসলাম ধর্মমতে যা দেওয়ার দেবেন, বাড়তি কিছু নয়। নিম্ন আদালত কিন্তু শাহ বানোর পক্ষে রায় দেয়। হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রাখেন। আহমেদ খান যান সুপ্রিম কোর্টে। ১৯৮৫ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের (বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাবা) নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে খোরপোশের দাবিকে মান্যতা দেন। শুরু হয় ভারতীয় রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রগতিশীল মনে করেছিলেন। কিন্তু ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’ ও ‘জামায়াত উলেমা–ই–হিন্দ’ বেঁকে বসে। তারা আন্দোলনের ডাক দিলে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারা রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ রাজীবকে পিছু হটতে বাধ্য করেন।
মুসলমান সমর্থন হারানোর ভয়ে রায় অকার্যকর করতে রাজীব পাস করান ‘মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ডিভোর্স) আইন’। সেটিই হয়ে ওঠে বিজেপির অস্ত্র। শুরু হয় কংগ্রেসের ‘মুসলমান তোষণের রাজনীতির’ বিরুদ্ধে বিজেপির সক্রিয় প্রতিরোধ। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনের ইশতেহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন তাদের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি।
গত সাড়ে ৯ বছরে প্রধানমন্ত্রী একবারের জন্যও এ নিয়ে সরব হননি। প্রথম পাঁচ বছরে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দ্বিতীয় দফায় খারিজ করেছেন সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। সেই সঙ্গে জম্মু–কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানিয়েছেন। তৃতীয় দফার শাসনের ছাড়পত্র পেতে তাঁর হাতিয়ার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি।
তিন প্রতিশ্রুতির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে প্রধানত মুসলমানদের স্বার্থ। মোদি তাঁর শাসনকালে যা যা করেছেন ও করতে চাইছেন, প্রতিটির লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করে সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়া। উত্তর প্রদেশের গেরুয়াধারী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এটাকেই ‘৮০ বনাম ২০–এর লড়াই’ বলে জাহির করেছেন।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলতে সরকার ঠিক কী করতে চায়, এখনো সে বিষয়ে কারও নির্দিষ্ট ধারণা নেই। কারণ, আলোচনা বা বিতর্কের জন্য সরকারের কোনো রূপরেখা এখনো প্রকাশ্য নয়। শুধু বলা হচ্ছে, সরকার অভিন্ন বিধি চালু করতে চায়। আইন কমিশনের ফরমান ও মোদির ভাষণের পর তাই শুরু হয়েছে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ।
প্রত্যাশিতভাবে সবচেয়ে ক্ষুব্ধ মুসলমান সমাজ। বিজেপির কাছে সেটি কাঙ্ক্ষিতও। তারা জানে, মুসলমান সমাজ যত প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধে নামবে, ততই জমাট বাঁধবে হিন্দু সমর্থন। ‘মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’ জরুরি বৈঠক করে জানিয়েছে, সব ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে এই বিধির আওতার বাইরে রাখা দরকার।
কারণ, সংবিধানের ২৫, ২৬ ও ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকারের কথা বলা আছে, তা ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন দেওয়ানি বিধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। অভিন্ন বিধি চাপানোর অর্থ সেই অধিকার হরণ করা। তা ছাড়া সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদ বিভিন্ন ধর্মীয় রীতি বা ‘কাস্টমস’কে আইনের মর্যাদা দিয়েছে। সংগত প্রশ্ন তাই, অভিন্ন বিধি ধর্মীয় রীতির বিলোপ ঘটালে তা কি অসাংবিধানিক হবে না?
বিয়ে, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার ও দত্তকের ক্ষেত্রে অভিন্ন আইন চালুর বিষয়টি শুনতে যত সহজ, রূপায়ণ ততটাই জটিল। সাবধানের মার নেই। সেই কথাই শুনিয়েছিল ২১তম আইন কমিশন। তারা বিস্ময়কর এক তথ্যও জানিয়েছিল। তারা বলেছিল, বহুবিবাহ ইসলামে জায়েজ।
শঙ্কিত শিখ সমাজও। আম আদমি পার্টি ‘নীতিগতভাবে’ পক্ষ নিলেও পাঞ্জাবে সেই দলের মুখ্যমন্ত্রী তীব্র বিরোধিতায় নেমেছেন। পাঞ্জাবে বিজেপি নতুন করে যাদের পাশে চাইছে, সেই শিরোমণি অকালি দল ও একাধিক শিখসংগঠন ‘শিখ পার্সোনাল ল বোর্ড’ গঠনের দাবি জানিয়েছে।
জরুরি বৈঠক করেছে শিখ গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটিও। শিখধর্মে বিয়ে হয় তাঁদের নিজস্ব ‘আনন্দ বিবাহ আইন’ মেনে। ওই আইনে বিবাহ বিচ্ছেদের বিধান নেই। বিচ্ছেদ হয় হিন্দুমতে। তাদের আশঙ্কা—অভিন্ন আইন হলে তাদের প্রথা বাতিল হয়ে যাবে।
গোয়া ছিল পর্তুগিজদের দখলে। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় সেনারা সেটি মুক্ত করেন। সেই রাজ্যের আইন অনুযায়ী, ৩০ বছর বয়সী কোনো জওয়ানকে তাঁর স্ত্রী সন্তান দিতে না পারলে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন। অভিন্ন বিধি নিয়ে অসন্তোষ সেখানেও।
আলোড়ন উঠেছে হিন্দু সমাজেও। ‘হিন্দু আনডিভাইডেড ফ্যামিলির’ (এইচইউএফ) অস্তিত্ব থাকবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সনাতন ধর্মে উত্তরাধিকার ও দত্তক গ্রহণের ভিন্ন ভিন্ন প্রথা ও রীতি বিদ্যমান। বৈবাহিক নিয়মেরও বহু রকমফের রয়েছে। হিন্দু বিবাহ আইনের কোনো কোনো ধারায় বলা আছে, প্রথাগত রীতি ও আচার পালনের অভ্যাস বিধানের ওপর স্থান পাবে। অভিন্ন আইন তো সেই ছাড় দেবে না।
‘পার্সি বিবাহ ও বিচ্ছেদ আইন’ অনুযায়ী কোনো নারী ভিন্ন ধর্মের পুরুষকে বিয়ে করলে পার্সি রীতিনীতি ও আচার অনুষ্ঠানের অধিকার হারাবেন। এই ধর্মে দত্তক মেয়ের অধিকার দত্তক ছেলের সমান নয়।
খ্রিষ্টধর্মে উত্তরাধিকার আইনও লিঙ্গভেদে অসম। সব ধর্মে কিছু না কিছু স্বতন্ত্রতা রয়েছে, রীতি রয়েছে। জৈনধর্মের নিজস্ব রীতিও সংবিধান অনুযায়ী আইন। এসব রীতি অনন্তকাল ধরে বিন্দুমাত্র জটিলতা ছাড়া পালিত হয়ে আসছে। অভিন্ন বিধির দরুণ অহেতুক জটিলতা ও অশান্তি ডানা মেলবে কি না, সেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
আদিবাসী সমাজের মাথাব্যথাও কম নয়। পুরো উত্তর–পূর্বাঞ্চলে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। এই তল্লাটের আটটি রাজ্যে মোট লোকসভা আসন ২৫। জবরদস্তি করলে একটি আসনও বিজেপি পাবে না। আগেভাগেই তাই বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে অভিন্ন বিধির আওতায় আনা হবে না। ঠিক যেমন গরুর মাংস নিয়ে বিজেপি ওই রাজ্যগুলোয় রা কাড়ে না।
কিন্তু আদিবাসী–উপজাতিদের বাস অন্যত্র। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও গুজরাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাঁদের বসবাস। দেশের ৪৭টি লোকসভা আসন উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত।
এই বিপুল জনগোষ্ঠী কীভাবে আওতামুক্ত থাকবে, কেউ জানে না! কারণ, সরকারি কোনো রূপরেখাই তৈরি হয়নি! উত্তরাখন্ডের বিজেপি সরকার একটা খসড়া তৈরি করেছে; কিন্তু প্রকাশ করেনি। তাই বিতর্ক চলছে স্রেফ অনুমানের ভিত্তিতে।
অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘সরকার একটি কঠিন জিনিসকে খুবই অপ্রতিষ্ঠিতভাবে সহজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’ সেই চেষ্টায় ঐকমত্যে পৌঁছানোর কোনো ইচ্ছা সরকার এখনো প্রকাশ করেনি।
তবু কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বামপন্থীসহ অধিকাংশ বিজেপিবিরোধী শক্তি বিরোধিতায় সরব। সরকারের সহযোগী দলগুলোও বিভ্রান্ত। এ অবস্থায় প্রমাদ গুনছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। বিজেপিকে সাবধান হতে বলে তাদের পরামর্শ—শিয়রে ভোট। এখন এমন কিছু করা ঠিক হবে না যাতে হিতে বিপরীত হয়।
বিয়ে, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার ও দত্তকের ক্ষেত্রে অভিন্ন আইন চালুর বিষয়টি শুনতে যত সহজ, রূপায়ণ ততটাই জটিল। সাবধানের মার নেই। সেই কথাই শুনিয়েছিল ২১তম আইন কমিশন। তারা বিস্ময়কর এক তথ্যও জানিয়েছিল। তারা বলেছিল, বহুবিবাহ ইসলামে জায়েজ।
কিন্তু সেই সুযোগ মুসলমানদের চেয়ে বেশি নেয় এ দেশের হিন্দুরা। হাতের কাছে উদাহরণ—অভিনেত্রী হেমা মালিনীকে বিবাহিত ধর্মেন্দ্রর বিয়ে। দুজনেই বিজেপির সম্পদ। ধর্মেন্দ্র সাবেক, হেমা বর্তমান সাংসদ।
আরএসএস সাবধান হতে বলেছে। তা করতে গিয়ে একের পর এক সমঝোতা ও ছাড়ের বন্যা বইলে দেওয়ানি বিধির চরিত্র কি আদৌ ‘অভিন্ন’ থাকবে? শেষ পর্যন্ত তা স্রেফ ইসলাম বিরোধিতার নতুন আখ্যান হবে না তো? প্রশ্নটা আলোচিত হচ্ছে।
তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছে, সবার আগে অভিন্ন হিন্দুবিধি আসুক। দলিত, অনগ্রসর ও আদিবাসীরা এখনো বহু হিন্দুমন্দিরে ঢুকতে পারেন না। সেই বৈষম্য আগে দূর করুন। তারপর না হয় অন্য কিছু ভাবা যাবে।
সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম আলোর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি