ক্রিকেট, মুভি স্টার বা মোদিজিকে ডিঙিয়ে ভারতের মিডিয়ায় ঘন ঘন হেডলাইন হওয়া কঠিন। দীর্ঘ সময়ের জন্য এ রকম নজির কম। প্রশান্ত কিশোরকে (পি কে) এ ক্ষেত্রে ভালো নম্বর দিতেই হবে।
গত মার্চ-এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন শেষ হওয়ার পর শুরু এ কারবার। প্রশান্তকে নিয়ে মিডিয়া জল্পনা-কল্পনা-আশা-প্রত্যাশা-সন্দেহ ছড়াচ্ছে হামেশা। এ রকম হরেক নিউজে ‘হিট’ হচ্ছে তুমুল। এক কাগজের দেখাদেখি অন্য কাগজও ‘নিউজ’ করছে নিয়মিত। বলা যায়, রাজনীতিমনস্ক চলতি ভারতে সর্বগ্রাসী এক বুদ্বুদের নাম এখন ‘প্রশান্ত কিশোর’। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন সবই ‘সংবাদ’। প্রশান্তও বেছে বেছে কেবল জাতীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গেই আড্ডা দিচ্ছেন। তাঁর আগ্রহ কেবল রাজনীতিতে। এভাবেই ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ‘পি কে’ নামে নতুন এক চরিত্র যুক্ত হলো, যাঁর নির্বাচনী এলাকা নেই, দলও নেই। কিন্তু আলোচনায় আছেন প্রবলভাবে।
পি কে ও আই–প্যাক যে কারণে আলোচনায়
মিডিয়ার ভালো জ্বালানি হলেও প্রশান্ত তাদের সঙ্গে কথা বলেন কম। ব্যক্তিগত কথাবার্তা আরও কম। চলাফেরায়ও সাদাসিধে। দক্ষতা ও অর্জনই তাঁকে এগিয়ে রাখছে সবার কাছে। কেউ বলছে তিনি ‘সুপার ইন্টেলিজেন্ট’। কেউ বলছে ‘সুপার অ্যামবিশাস’।
বছরের শুরুতে সারা ভারত বলছিল বিজেপি আসছে পশ্চিমবঙ্গে। মমতা ‘আন্ডারডগ’। প্রশান্তের প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছিল, তারা ডবল ডিজিটের বেশি আসন পাবে না। মে মাসে হতবিহ্বল ভারত দেখতে পায় সেটাই ঘটেছে। নির্বাচনী ভবিষ্যদ্বাণী মোটেই জাদুবিদ্যা নয়; প্রশান্তও কোনো জাদুকর নন। ভোটারের পছন্দ-অপছন্দ বুঝতে পারা যে এরই মধ্যে প্রযুক্তিশাস্ত্রের ‘বিগ ডেটা অ্যানালাইসিস’–এ পরিণত হয়েছে, সেটাই কেবল বোঝালেন প্রশান্ত পশ্চিমবঙ্গে।
প্রশান্তর কাছে আদর্শ ও অনুমানের চেয়ে নির্বাচনে গুরুত্ব পায় কেবল ‘গ্রাউন্ড রিপোর্ট’। প্রশান্ত জানেন, প্রতিটি ‘গ্রাউন্ড’-এর ‘রিপোর্ট’ আলাদা হতে পারে। সে রকম রিপোর্ট বদলাতে হলে নানান ছক কাটতে হয়। দরকার আলাদা আলাদা গবেষণা। নির্মোহ চোখ। পরিষ্কার কান। ডেটা বিশ্লেষক ছাড়াও দুর্দান্ত অনেক ‘ক্রিপ্ট রাইটার’ আর ‘ক্যাম্পেন ম্যানেজার’ আছে প্রশান্তের জিম্মায়। তাঁদের অনেকের বয়স ত্রিশের নিচে। ভারতের কোন প্রদেশের নির্বাচনে পোস্টারে কী রং ব্যবহার হওয়া উচিত, এ নিয়েও প্রশান্তের টিম ‘আই-প্যাক’–এর বিস্তর বিশ্লেষণ আছে। বিহারের গরিবরা মিছিলের ব্যানারে যে রং পছন্দ করবে, কলকাতা-দিল্লির সুশীল মধ্যবিত্ত সেটা নাও করতে পারে। আপাতত তুচ্ছ বিষয় হলেও পি কের কাছে রং থেকে ছাপার হরফ—সবই ভোটারের মন পেতে গুরুত্বপূর্ণ। এসব নিয়ে ভাবনাচিন্তা–গবেষণায় গভীর যোগ-বিয়োগ ঘটান তিনি স্থানীয় সংস্কৃতি-রুচি-পছন্দের সঙ্গে। ‘পাবলিক মুড’ বুঝতে চাওয়া বহুকাল তাঁর বড় কাজ।
তবে প্রশান্ত একাই কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় এ রকম কারবার করছেন না; ভারতে এ রকম সংস্থা বাড়ছে, কারণ সেখানে বিশ্বাসযোগ্য ভোট হয়। এখানে রাজনীতিবিদেরা জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে আই-প্যাকের মতো সংস্থাগুলোর সার্ভিস পেতে। গত নির্বাচনে লোকসভার এক আসনে এক রাজনৈতিক-পরামর্শক তিন লাখ ডলার পর্যন্ত নেন বলে রিপোর্ট হয়েছিল। তবে এদের মধ্যে আই-প্যাক ও প্রশান্ত কিশোর রাজনৈতিক পরামর্শকের চেয়েও বেশি কিছু।
নতুন রাজনৈতিক ভূমিকা খুঁজছেন পি কে
জীবনের শুরুতে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে চাকরি করেছেন প্রশান্ত। কিছুদিন জন্মস্থান বিহারে জনতা দলে রাজনীতিও করেছেন। সেসব ছেড়েছুড়ে গত এক দশক নির্বাচনী কৌশলবিদদের কাজ করছেন। সোজাসাপ্টা বললে রাজনীতিবিদদের নির্বাচনে জেতাতে ভাড়া খাটতে শুরু করেন প্রশান্ত। বিভিন্ন দল ও প্রার্থীকে বিজ্ঞানভিত্তিক কৌশল প্রণয়নে সহায়তা দেন তিনি।
রাজনীতিমনস্ক চলতি ভারতে সর্বগ্রাসী এক বুদ্বুদের নাম এখন ‘প্রশান্ত কিশোর’। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন সবই ‘সংবাদ’। প্রশান্তও বেছে বেছে কেবল জাতীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গেই আড্ডা দিচ্ছেন। তাঁর আগ্রহ কেবল রাজনীতিতে। এভাবেই ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ‘পি কে’ নামে নতুন এক চরিত্র যুক্ত হলো, যাঁর নির্বাচনী এলাকা নেই, দলও নেই।
বিশ্বের অন্যত্র পেশা হিসেবে ‘পলিটিক্যাল কনসালটেন্সি’র বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছর হয়ে গেছে। উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে এল কেবল। এ কাজে প্রশান্তের রেকর্ড ভালো। সর্বশেষ, ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ও তামিলনাড়ুতে এম কে স্তালিনের ডিএমকে দলকে জিতিয়েছেন। আগেও ক্ষমতায় এনে দিয়েছেন অনেককে। বিহারে নিতীশ কুমার, অন্ধ্র প্রদেশে জগন মোহন রেড্ডি, দিল্লিতে আম আদমি পার্টিসহ এই তালিকা বেশ দীর্ঘ। কার কী আদর্শ, সেদিকে মনোযোগ নিতান্তই কম ছিল তাঁর। কিন্তু কোন নেতার হয়ে কাজ করবেন, সেটা প্রশান্তই ঠিক করেন।
অনেক সহযোগী মিলে কাজ করছেন পি কে ও তাঁর টিম। প্রায় এক দশক এভাবে বিভিন্ন রাজ্যে দক্ষতায় শান দিয়ে সর্বশেষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে তাঁরা ভারত মাত করেছেন। কিন্তু এরপরই প্রশান্ত ঘোষণা দেন, তিনি আর রাজনীতিবিদদের হয়ে নির্বাচনী কৌশল তৈরির কাজ করবেন না। আই-প্যাক থাকবে। তিনি মুক্ত। এটা শুনে ভারতের মিডিয়া আরও অনুসন্ধানী হয়ে ওঠে। সবাই জানে, প্রশান্ত নতুন কিছু করবেন। এই মেধা থামার নয় আপাতত। মনে হচ্ছে তিনি রাজনীতিতে ‘রাজনৈতিক পরামর্শক’-এর চেয়েও বেশি কোনো ভূমিকায় নিজেকে দেখতে পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু কী সেটা?
বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। প্রবল প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ‘বাংলার মেয়ে’র ক্ষমতায় বসানোর দুমাস পরই প্রশান্তকে পাওয়া গেল মহারাষ্ট্রে। সেখানে ঝানু রাজনীতিবিদ ন্যাশনাল কংগ্রেসের শারদ পাওয়ারের সঙ্গে পরপর তিনটি বৈঠক করেন প্রশান্ত। প্রচারমাধ্যমে তুমুল খোরাক তৈরি করে এই বৈঠক। মিডিয়া যখন এই বৈঠক নিয়ে বিশ্লেষণে ব্যস্ত, ঠিক তখনই প্রশান্তকে দেখা যায় গান্ধী পরিবারের সঙ্গে। রাহুল, প্রিয়াঙ্কা ও সোনিয়া তিনজনের সঙ্গে একত্রে বসেন তিনি। এরপর ভারতজুড়ে রব ওঠে, প্রশান্ত কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। যদিও এসবই এখনো অনুমানমাত্র, তবে সব মিলে মনে হচ্ছে প্রশান্ত রাজনীতি করবেন। অন্তত রাজনীতির জগতেই থাকবেন তিনি এবং সেটা হবে কেন্দ্রীয় রাজনীতি। সেটা হতে পারে বিজেপিবিরোধী শিবিরে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে।
মগজের জোর ছাড়া আর কিছু নেই তাঁর
ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতি মানেই মেগাস্টারদের জগৎ। সেখানে ৪৪ বয়সী এই প্রশান্তকে নিয়ে উত্তেজনা এক অর্থে বেমানান। যাঁর পারিবারিক শক্ত ছায়া নেই, বিশেষ কোনো মতাদর্শও নেই, অর্থবিত্তও সামান্য, এমন একজন ভারতের রাজনীতিতে কী করতে পারবেন? আদৌ কিছু করতে পারবেন কি?
এসব প্রশ্নের চটজলদি উত্তর দিচ্ছে না কেউ। কারণ, মগজের জোরে ব্যক্তি প্রশান্ত ইতিমধ্যে ভারতের রাজনীতির এক প্রধান চরিত্র। এটা খুবই অদ্ভুত। কিন্তু এটাই বাস্তবতা। তাঁর কোনো অনুসারী নেই। চুম্বকের মতো আকর্ষণ করার মতো দর্শন নেই। কিন্তু দেশটির গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের বড় অংশ তাঁর অনুরাগী এ মুহূর্তে। বাকিরাও তাঁকে প্রকাশ্যে অবজ্ঞা করেছেন বলে দেখা যায় না। তাহলে প্রশান্তের শক্তির জায়গাটা কোথায়? সেই ‘শক্তি’ ভারতকে সঠিক দিশা দেবে তো?
প্রশান্তকে রাজনীতির জন্য ক্ষতিকরও বলছেন অনেকে
নরেন্দ্র মোদি থেকে সোনিয়া গান্ধী পর্যন্ত প্রায় সবাই প্রশান্ত কিশোরকে দরকারি ভাবলেও এমন লোকও ভারতে আছেন, যাঁরা এই মধ্যবয়সীকে বিপজ্জনক বলছেন। এ রকম তালিকা ছোট। কিন্তু আছে। তাঁদের মতে, প্রশান্ত গণতন্ত্রের স্বাভাবিক বিকাশ ও পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করছেন। নির্বাচনী গণতন্ত্রে দলগুলো দীর্ঘদিনের আদর্শ ও তৎপরতার মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তা পাবে, জনপ্রিয়তা হারাবে—এটা স্বাভাবিক নিয়মে নদীর স্রোতের মতো চলতে দেওয়া উচিত। এ ধারাকে প্রভাবিত করে মানুষের মনোভাব কৃত্রিমভাবে বদলে দেওয়ার কাজটি রাজনীতিবিরোধী। জনসংযোগের নানান কৌশল ব্যবহার করে কোনো বিশেষ রাজনীতিবিদকে কৃত্রিমভাবে দেবতায় পরিণত করার কাজটি দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর।
রাজনৈতিক পরামর্শকদের বিরুদ্ধে সমালোচকদের আরও অনুযোগ-অভিযোগ আছে। বিশেষ করে প্রশান্ত কিশোর পার্লামেন্টারি ধাঁচের বহুদলীয় এবং বহু প্রার্থীর নির্বাচনকে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির দুব্যক্তির নির্বাচনে রূপ দেন। এতে ভারতীয় রাজনীতির বহুত্ববাদী চরিত্রের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দলীয় ব্যবস্থাপনা অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। দলগুলোর স্বাভাবিক সাংগঠনিক বিকাশ হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। সর্বশেষ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনেও তাই হয়েছে। কয়েক ডজন সামাজিক ইস্যু থাকলেও প্রশান্তের পরামর্শে তৃণমূল লড়াইটিকে মমতা বনাম অমিত শাহ দ্বন্দ্বযুদ্ধে পরিণত করে। এতে মমতা জিতলেও হেরেছে নির্বাচনের সামাজিক ইস্যুগুলো। যেন মমতাকে এক পবিত্র চরিত্র হিসেবে দেখিয়ে আই-প্যাকের কর্মীরা চুরি করে নিল নির্বাচনী ফল! তামিলনাড়ুতেও ডিএমকের স্ট্যালিনের পক্ষে আই-প্যাক তাই করেছে। কোনো রাজনৈতিক দল না হয়েও তারা হারজিতের পক্ষ হয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, প্রশান্তের এই কৌশলের মধ্যেই কি রয়েছে তাঁর সর্বশেষ উচ্চাকাঙ্ক্ষার সমাধি? দু–তিন মাসের আবহাওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, প্রশান্ত মোদিকে মোকাবিলার পথ খুঁজছেন। যেকোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষী নির্বাচনী পরামর্শকের জন্য একটা দারুণ চ্যালেঞ্জ এটা। কিন্তু ২০২৪ সালে সে রকম যেকোনো লড়াই ‘মোদি বনাম অন্য কেউ’ রূপ নিতে বাধ্য। অর্থাৎ সেটা হবে পার্লামেন্টারি ভারতে ছদ্ম এক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মাত্র। লড়াইয়ের এ রকম সমীকরণ বিজেপি শিবিরের জন্য বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। বিশেষ করে যখন তারা জানে রাহুল বা সোনিয়া বা অন্য কেউ আপাতত জাতীয় পরিসরে মোদিকে মোকাবিলার মতো শক্ত ইমেজে নেই। লোকপ্রিয়তায় মোদির চেয়ে রাহুল অনেক পিছিয়ে। সোনিয়া আরও পিছিয়ে। তাহলে পি কে কাকে দিয়ে মোদি মোকাবিলা করাবেন?
একসময় এও বলা হতো প্রশান্ত বেছে বেছে জয়ী হওয়া যাবে, এমন ম্যাচ খেলেন। বাংলার নির্বাচনের পর সেই অপবাদের সমাধি হয়েছে। ভারতের প্রধান ইস্যু বিজেপি এবং এই ইস্যু মোকাবিলার মতো ভোটবিদ্যা আছে কেবল প্রশান্ত কিশোরের থলিতে।
পি কের ফোনের পেগাসাস যে বার্তা দেয়
বিজেপিবিরোধী প্রধান দল কংগ্রেসের দুর্দশার পাশাপাশি ভারতীয় অন্য দলগুলো আঞ্চলিক ধাঁচের। মতভেদের বিস্তর টানাহেঁচড়া আছে তাদের। এমন কোনো নেতা নেই, যিনি বিজেপিবিরোধী আঞ্চলিক দলগুলোকে এক ছাতায় আনতে পারেন। এ রকম কাজের জন্য বিশাল যে প্রচার সম্পদ এবং কর্মী বাহিনী দরকার, সেটাও আরএসএস পরিবার ছাড়া কারও নেই। এসব কারণেই ভারতজুড়ে টিম মোদিকে চ্যালেঞ্জ করার কথা আপাতত কেউ ভাবে না। কিন্তু একজনকে দেখা যাচ্ছে এই দৃশ্যে ব্যতিক্রম। তিনিই প্রশান্ত। অজ্ঞাত এক ভরসায় বিজেপিবিরোধী শিবিরে ঘোরাঘুরি করছেন তিনি। তাতে বিজেপির কোটি কোটি সংগঠকও নীরবে নজর রাখছে। কেউই আজেবাজে কোনো মন্তব্য করছে না। তাদের এটা অজানা নেই, একদা গুজরাটে মোদিকে জিততে সহায়তা করেছিলেন পি কে এবং সেটাই ছিল ভোটবিদ্যায় কিশোরের প্রথম ম্যাচ। যার ফল সবার জানা। গুজরাটের সেই মোদি বহুগুণ শক্তি নিয়ে এখন কেন্দ্রে দ্বিতীয় মেয়াদ পার করছেন। স্বভাবত প্রশ্ন উঠছে, প্রশান্তের কাছে নতুন কী অস্ত্র অবশিষ্ট আছে, যা এমনকি আএসএস বধেও সক্ষম?
এর একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতীয় ভাষ্যকার শিভাম বিজ। তাঁর মতে, অনেকে ভাবছে মোদি অপরাজেয় এবং অমিত শাহই রাজনৈতিক স্মার্টনেসের শেষ কথা। একসময় এও বলা হতো প্রশান্ত বেছে বেছে জয়ী হওয়া যাবে, এমন ম্যাচ খেলেন। বাংলার নির্বাচনের পর সেই অপবাদের সমাধি হয়েছে। ভারতের প্রধান ইস্যু বিজেপি এবং এই ইস্যু মোকাবিলার মতো ভোটবিদ্যা আছে কেবল প্রশান্ত কিশোরের থলিতে।
কিন্তু এ উত্তরেও স্পষ্ট হচ্ছে না কিশোর কোন দল বা জোটকে আশ্রয় করে ‘প্রজেক্ট ২০২৪’ নিয়ে নামবেন। অগোছালো রাজবংশ গান্ধীরাই কি তবে তাঁর নতুন বাজি হবেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে খোদ ভারতের শাসক দলও। যে কারণে গোয়েন্দা সফটওয়্যার পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতা হতো প্রশান্ত কিশোরের ফোনেও। সে রকমই জানা গেল এই কেলেঙ্কারির বিবরণ থেকে। এই একটি তথ্য থেকে অন্তত স্পষ্ট প্রশান্তকে নিয়ে ‘অপরাজেয়’ ইমেজের আড়ালে মোদি শিবিরও নার্ভাস। পি কের পরবর্তী পরিকল্পনা জানতে চাইছে তারাও।
আলতাফ পারভেজ দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক