ম্যাজিস্ট্রেট, ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম সম্বোধন না করা কোনো কোনো প্রশাসনিক আমলার কাছে বড় অপরাধ। এর জেরে তীব্র তিরস্কার থেকে শুরু করে সঙ্গে থাকা লোকজন দিয়ে পিটিয়ে আহত করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে সাম্প্রতিক অতীতেই। একটা ন্যূনতম গণতান্ত্রিক দেশে আমলাদের এসব বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে আলোচনার বিষয় হওয়ার কথা নয়। সাংবিধানিক এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে নীরবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার কথা। কিন্তু না, শুরুতে বলা এ রকম বিষয় থেকে শুরু করে এমন অসংখ্য বিষয়ে এই দেশের আমলারা, বিশেষ করে প্রশাসনের আমলারা সংবাদ হতেই থাকেন। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা স্পষ্ট করবে প্রশাসনিক আমলারা (অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) নিজেদের কোনোভাবেই আর সংবিধানে উল্লিখিত ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’ বলে মনে করেন না।
আমির হামজার স্বাধীনতা পুরস্কার
কিছুদিন আগেই দেশে ঝড় তুলেছিল আমির হামজা নামের এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়া। তাঁর ‘বাঘের থাবা’ কিংবা ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ নামের কবিতা এবং পালাগানের সংকলনের দুটি বই পড়া দূরেই থাকুক, সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অতিমনোযোগী সর্বভুক কোনো পাঠকও এগুলোর নাম শুনেছেন বলে মনে হয় না।
সাহিত্যের মানদণ্ড নিয়ে আলাপ চলতে পারে। বিতর্ক হতে পারে কোনটি ভালো, কোনটি মাঝারি কিংবা কোনটি একেবারে সাধারণ মানের সাহিত্য, সেটি নিয়ে। এমনকি যে মানদণ্ডে কোনো সাহিত্যকে উঁচু বা নিচু তকমা দেওয়া হয়, সেই মানদণ্ডকেই চ্যালেঞ্জ করা যায়। তাই মানদণ্ডসংক্রান্ত বিতর্ক সরিয়ে রেখে এটুকু অন্তত বলাই যায় যে সরকার এবং পুরস্কার কমিটির আমলারা পুরস্কার দেওয়ার সময় এটা বিশ্বাস করেছেন যে আমির হামজার সাহিত্যকর্ম অন্য অনেকের চেয়ে উঁচু মানের।
আমির হামজার এই পুরস্কারপ্রাপ্তি ভীষণভাবে সমালোচিত হওয়ার কারণে আমাদের সামনে নতুনভাবে নিয়ে এসেছে আমলাতন্ত্রের আধিপত্যের বিষয়টি। স্বাধীনতা পদকের জন্য প্রস্তাবিত নামগুলো ১৬ সদস্যের ‘প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত’ সচিব কমিটির মাধ্যমে যাচাই–বাছাই করা হয়। যাচাই–বাছাইয়ের পর প্রস্তাবগুলো মন্ত্রিসভা কমিটির মাধ্যমে চলে যায় প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনা এবং সিদ্ধান্তের জন্য। অর্থাৎ এত বড় এই পুরস্কার পাওয়ার কে যোগ্য আর কে যোগ্য নয়, তা যাচাই করার মূল ক্ষমতা থাকে সচিবদের হাতে। আমির হামজার নাম প্রস্তাব করেন তাঁর পুত্র, যিনি বর্তমান সরকারের একজন উপসচিব। প্রস্তাবিত সেই নাম সমর্থন করেন সরকারের আর একজন সিনিয়র সচিব। ওনার পুরস্কারের রহস্য বোঝার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।
দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কারটির প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য যোগ্য, নিরপেক্ষ মানুষের সমন্বয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকা উচিত—সঠিকভাবেই বলছেন অনেকেই। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সরকারের ১৬ জন সচিবের এটুকু বোঝার কাণ্ডজ্ঞান কি নেই যে জনাব হামজা এই পুরস্কারের ন্যূনতম বিবেচনায় আসতে পারেন না? এটুকু কাণ্ডজ্ঞান কি নেই সে সচিবের, যিনি এই নামটি সমর্থন করেছিলেন? ২০২০ সালে রইজ উদ্দিনকে পুরস্কার দিয়ে তীব্র সমালোচনার পর এখনই আবারও একই কাণ্ড কীভাবে করলেন তাঁরা? আমি বিশ্বাস করি, এই কাজটি তাঁরা করেছেন একেবারে ঠান্ডা মাথায়, পরিকল্পনা করে, আমাদের সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়ার জন্য—তাঁরা চাইলে যে কাউকে যেকোনো বিবেচনায় কিংবা কোনো বিবেচনা না করেই যেকোনো পুরস্কার দিতে পারেন, করতে পারেন যেকোনো কিছু।
সরকারি কর্মকর্তারা একদিকে যেমন নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছেন, তেমনি নিজেকে জড়াচ্ছেন নানা ধরনের ব্যবসার সঙ্গেও। কিন্তু যেহেতু হিসাব না দিলে কী সাজা হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই এবং আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির নেই, তাই এগুলো মানার ন্যূনতম দায়ও নেই আমলাদের।
সম্পত্তি লুকাতে চান কেন আমলারা?
যেকোনো বিষয়ে জবাবদিহির মধ্যে থাকতে আমলাদের ভীষণ অনীহা। অথচ প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা দিতে হয়। এরপর পাঁচ বছর অন্তর সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির বিবরণী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে জমা দেওয়ার নিয়ম। দুর্নীতি রোধ এবং চাকরিজীবীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এমন নিয়ম থাকলেও কাগজের এই নিয়ম মানছেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অভিযোগ আছে, সরকারি কর্মকর্তারা একদিকে যেমন নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছেন, তেমনি নিজেকে জড়াচ্ছেন নানা ধরনের ব্যবসার সঙ্গেও। কিন্তু যেহেতু হিসাব না দিলে কী সাজা হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই এবং আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির নেই, তাই এগুলো মানার ন্যূনতম দায়ও নেই আমলাদের।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর ১১ ও ১২ ধারামতে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করতে হলে বিভাগীয় প্রধান বা সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কোনো কর্মচারী কেনাবেচা, দান, উইল বা অন্যভাবে বিদেশে কোনো স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। কোনো বিদেশি নাগরিক, বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কোনো প্রকার ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারবেন না। ১২ ধারার তথ্য বলছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীর নিজে বা আবাসন প্রতিষ্ঠানের (ডেভেলপার) মাধ্যমে ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট ইত্যাদি নির্মাণ বা কিনতেও মানা। এসব নিয়মকানুনের সঙ্গে আমাদের দেশের আমলাদের মিলিয়ে থমকে যেতে হয় আমাদের।
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি বক্তব্য আমলাদের অবৈধ সম্পত্তির কিছু প্রমাণ দেয়। গত বছরের নভেম্বরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের যে গুঞ্জন আছে, তার কিছুটা সত্যতা আমরা পেয়েছি। মনে করেছিলাম রাজনীতিবিদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু দেখা গেল, রাজনীতিবিদ চারজন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া ২৮টি ঘটনার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীই বেশি।’ রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত আর হিংসার কারণে তাঁদের কথা যেমন প্রচারিত হয়, আমলাদের ক্ষেত্রে তেমনটি নয়। তাঁদের গড়া সম্পদের পাহাড় আড়ালেই থাকে সব সময়। আমলারা যে অবৈধ পথে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বানিয়েছেন, সম্পত্তির হিসাব দিতে অনীহা সেটারই এক স্পষ্ট প্রমাণ।
আমলারা আইনের চোখে ‘বেশি সমান’
সরকারি চাকরি আইন ২০১৮–এর ৪১(১) ধারা অনুযায়ী, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’ এটা স্পষ্টতই সংবিধানের আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের নিশ্চয়তার (অনুচ্ছেদ ২৭) সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মজার ব্যাপার, দুদক আইনে ২০১৩ সালের সংশোধনীতে সরকারি চাকরি আইনের ৪১(১)–এর অনুরূপ ধারা রাখা হয়েছিল, যা এক রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করে, যার বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেনি।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের বিরোধী এমন আইনের ধারা ২০১৫ সালে বাতিল করলেও সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার হুবহু একই রকম ধারা রেখে ২০১৮ সালে আইন তৈরি করেছে সরকার। ওদিকে ফৌজদারি কার্যবিধিতেও আছে তাঁদের জন্য রক্ষাকবচ—১৯৭ ধারা অনুসারে সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেলে অভিযোগপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের অনুমোদন লাগবে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য আইনের এসব সুবিধা মনে করিয়ে দেয় জর্জ অরওয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য অ্যানিমেল ফার্ম’–এর প্রাণীগুলো সম্পর্কে লেখা বিখ্যাত বাক্যটি, ‘সব প্রাণীই সমান, কিন্তু কিছু প্রাণী অন্য প্রাণীদের চেয়ে বেশি সমান।’
আমলা দিয়েই যদি পরিপূর্ণ করা হবে, তবে কমিশন কেন?
প্রশাসনিক আমলাদের দৌরাত্ম্য এখন সর্বত্র। দুদকের মতো স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানেও নিজস্ব জনবল ছাপিয়ে সুবিধাভোগী হচ্ছে প্রেষণে আসা সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। দুদকের উচ্চপর্যায়ের ৪৩টি পদের ২৩টিতে আছেন প্রেষণে আসা কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত মহাপরিচালক পদে থাকা সাতজনই প্রেষণে জনপ্রশাসন থেকে আসা। বর্তমানে আটটি অনুবিভাগের মধ্যে কেবল আইন বিভাগ ছাড়া বাকি সাতটিতেও আছেন জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা। দুদকে বর্তমানে ৩২ জন পরিচালকের মধ্যে ১২ জন জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে আসা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত এক দশকে দুদকের চেয়ারম্যান, কমিশনার ও সচিব নিয়োগে জনপ্রশাসনের প্রাধান্য ক্রমেই বাড়ছে। যেহেতু দুদকের কাজের একটা বড় অংশ হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে, তাই দুদকে একজনও সরকারি কর্মচারী থাকা দুদকের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, সেটা বোঝার জন্য সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানই যথেষ্ট।
এমনকি এখানেও প্রশাসনিক আমলারা দুদকের নিজস্ব কর্মীদের চেয়ে ‘বেশি সমান’। সম্প্রতি দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দীনকে চাকরিচ্যুত করার পর দেখা গেল দুদকের কর্মচারী চাকরিবিধির ৫৪(২)বিধি যে কাউকে কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে চাকরি থেকে অপসারণের ক্ষমতা দেয়। এই অসাংবিধানিক এবং বৈষম্যমূলক বিধি কেবল দুদকের নিজস্ব লোকবলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, প্রেষণে আসা আমলাদের ক্ষেত্রে নয়। একই জায়গায় চাকরি করলেও দুজনের ক্ষেত্রে দুই আইন যে কেবল বৈষম্যমূলক তা–ই নয়, বরং আইনের শাসনের মূল চেতনারও পরিপন্থী।
জনগণের টাকায় প্রমোদভ্রমণে আমলারা
দেশোদ্ধার করতে করতে ক্লান্ত আমলারা প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণে যান নিয়মিত। মন্ত্রণালয়ের কাজ শিকেয় তুলে প্রায় সব ক্ষেত্রে অকারণে বিদেশ ভ্রমণ তাঁদের নিত্যকার রুটিন। বিদেশ সফরের কারণ দেখে যে কারও চক্ষু চড়কগাছ হবে নিশ্চিত। খিচুড়ি রান্না শিখতে, পুকুর খননে দক্ষতা অর্জন করতে, লিফট কিনতে, বিল্ডিং দেখতে, গরুর কৃত্রিম প্রজনন উন্নয়ন কার্যক্রম দেখতে, ট্যাংরা-পাবদার মতো দেশি মাছ চাষের বিদেশি প্রশিক্ষণ নিতে, তেলজাতীয় ফসলের চাষ শিখতে ও মৌ পালনে প্রশিক্ষণ নিতে, বোয়িংয়ের একটি বিমান ডেলিভারি আনতে, ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন, নলকূপ খনন শিখতে পর্যন্ত বিদেশ গেছেন আমলারা।
‘সুলতানা সরোবর’–কাণ্ড এবং অতি লঘুদণ্ডেরও ক্ষমা
মনে আছে সুলতানা পারভিনের কথা? কুড়িগ্রামের সাবেক এই জেলা প্রশাসক ছোট্ট একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, চেয়েছিলেন কাবিখার টাকায় পুকুর সংস্কার করে সেটার নতুন নাম নিজ নামে ‘সুলতানা সরোবর’ নামকরণ করতে। একজন জেলা প্রশাসকের জন্য সেই ‘সামান্য’ চাওয়াতেও বাদ সাধলেন বেরসিক সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। অবশ্য জেলার দণ্ডমুণ্ডের কর্তার স্বপ্নে বাধা দেওয়ার ‘অপরাধে’ আরিফুল ইসলামকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বিবস্ত্র করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ আনা হয় তাঁর বাড়িতে মদ ও গাঁজা পাওয়ার।
এ ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও করা হয়। তবে দুই বছর পার হলেও ফৌজদারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুলতানা পারভিনের দুই বছরের বেতন স্থগিত করা হয়। আর আরডিসি নাজিমকে এক ধাপ পদাবনতি দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ডিসি সুলতানা এবং এনডিসি নাজিম শাস্তি থেকে অব্যাহতি পান রাষ্ট্রপতির ক্ষমায়।
নিজের বিভাগ তদন্ত করে তাঁদের অপরাধের প্রমাণ পেয়ে শাস্তি দিয়েছিল, যা তখন অতি লঘুদণ্ড বলে সমালোচিত হয়েছিল। কিন্তু এই সামান্য শাস্তিও ভোগ করতে প্রস্তুত নন তাঁরা। তাই শেষমেশ রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় অব্যাহতি। এ ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় প্রশাসনে থাকা কর্তাব্যক্তিদের ক্ষমতার দাপট এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। তাঁদের কোনো অন্যায়–অপকর্মের সঠিক শাস্তি দূরেই থাকুক, ‘আইওয়াশ’ দেওয়ার জন্য হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
রুমিন ফারহানা বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ও হুইপ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী