নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছিল
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছিল

মতামত

ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার বা রোকনউদ্দৌলাদের তারকা হওয়া যে কারণে বিপজ্জনক

কর্তব্য পালন করা এ দেশে একটা গুণ। আর সরকারি কর্মকর্তা (সংবিধান অনুসারে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী) হলে তো আর কথাই নেই, আমরা ভীষণ খুশি হয়ে যাই, শ্রদ্ধা জানাই সে মানুষকে। জনগণের করের টাকায় যাঁদের বেতন হয়, সেই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ঠিকঠাক কর্তব্য পালন করারই তো কথা। কর্তব্য পালনে সমস্যা হলে সেটার সমালোচনা নিশ্চয়ই করব, কিন্তু কর্তব্য পালন করার জন্য কাউকে প্রশংসার কি কিছু আছে? এ দেশ অধঃপতনের কতটা চরম সীমায় গিয়েছে, সেটার প্রমাণ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ঠিকঠাক কর্তব্য পালন করতে দেখে জনগণের উচ্ছ্বসিত হওয়া।

আপাতদৃষ্টে মনে হয়, সারওয়ার আলম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। অনেকগুলো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নানা ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ভেজালবিরোধী অভিযানে অনেককে জেল-জরিমানা করেছিলেন তিনি। এতে আমরা উচ্ছ্বসিত হলাম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার কয়েক দিন আগেই দেশের সব সংবাদমাধ্যমের খবর হলেন। বছরখানেক আগে প্রশাসনের ৩৩৭ সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার, কিন্তু পদোন্নতিবঞ্চিত হন সারওয়ার। এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘চাকরিজীবনে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই চাকরিজীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন এবং এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়।’ তাঁর এই স্ট্যাটাস ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ পরিপন্থী হওয়ায় ‘তিরস্কার সূচক লঘুদণ্ড’ দেওয়া হয় সম্প্রতি। এটুকু লিখলাম প্রেক্ষাপটটুকু স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য, আমার লেখার বিষয় এ শাস্তির ন্যায্যতা কিংবা অন্যায্য নিরূপণ করা নয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের প্রশাসনে কাজ করা আমলারা একটি আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে কি ন্যূনতম ধারণা রাখতেন না কিংবা দেশের সংবিধানের খুব প্রাথমিক ধারণাও কি ছিল না তাঁদের? সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ (রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন) আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশ। সুতরাং এত দিন যে প্রশাসনের অংশ হয়ে তাঁরা বিচারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন, সেটা অসাংবিধানিক ছিল এবং বন্ধ হওয়া উচিত ছিল আরও অনেক আগেই।

প্রথম আলোতে সারওয়ারের এ-সংক্রান্ত খবর দেখে আমি যা অনুমান করেছিলাম, ঘটেছে ঠিক তা-ই। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই সংবাদটি প্রথম আলোর সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদের তালিকায় এক নম্বরে চলে যায়। প্রথম আলোর ফেসবুক পাতায় ১৭ হাজার রিঅ্যাকশন ও ১ হাজার ৩০০ মন্তব্য দেখা যায় খবরটিতে। অনুমিতভাবেই ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সরকারকে তীব্র তুলাধোনা করছেন ‘সৎ, কর্তব্যপরায়ণ মানুষকে পুরস্কৃত না করে শাস্তি দেওয়ার কারণে’। সারওয়ারের প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে তাঁকে একজন তারকা বলেই ফেলা যায়। এটা সমর্থন করবে সম্ভবত এ তথ্যও—‘সারওয়ারের সমর্থক গোষ্ঠী’ নামের কয়েক লাখ অনুসারীর পেজ ও গ্রুপ আছে ফেসবুকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এত বাড়বাড়ন্ত ছিল না বলে আরেকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকনউদ্দৌলার নামে পেজ কিংবা গ্রুপ তৈরি হয়নি। তবে সারওয়ার এর আগে বিশেষত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সূত্রে তারকায় পরিণত হয়েছিলেন। সত্যি বলতে মানুষ প্রথম তাঁকেই ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নায়কে পরিণত হতে দেখেছে।

শুধু অর্পিত দায়িত্ব ঠিকঠাকভাবে পালন করে এ দেশে নায়কে পরিণত হওয়ার মধ্যে নিশ্চয়ই আশঙ্কার কারণ আছে, কিন্তু এ কলামে আমি সেটাকে আশঙ্কার ব্যাপার বলছি না। কারণটা ভিন্ন এবং সেটা অনেক বেশি ভয়ংকর।

২০০৭ সালের ১ নভেম্বরের কয়েক দিন আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকনউদ্দৌলা আলোচনায় আসেন। ১ নভেম্বর দিনটিতে দেশের বিচার বিভাগ প্রশাসন থেকে পৃথক করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। দিনটিকে সামনে রেখে বিচারিক ক্ষমতা হারাবার আশঙ্কায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সেমিনারের মাধ্যমে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন। সেদিন সবচেয়ে ‘জ্বালাময়ী’ বক্তৃতা দেন রোকনউদ্দৌলা। বক্তব্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তাঁদের ক্ষোভ-উষ্মা প্রকাশ, ১ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতিসহ অন্যান্য কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তাঁরা। সে সময়কার তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসবকে প্রশ্রয় না দেওয়ায় পিছিয়ে আসেন তাঁরা।

প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের প্রশাসনে কাজ করা আমলারা একটি আধুনিক রাষ্ট্র সম্পর্কে কি ন্যূনতম ধারণা রাখতেন না কিংবা দেশের সংবিধানের খুব প্রাথমিক ধারণাও কি ছিল না তাঁদের? সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ (রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন) আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অংশ। সুতরাং এত দিন যে প্রশাসনের অংশ হয়ে তাঁরা বিচারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন, সেটা অসাংবিধানিক ছিল এবং বন্ধ হওয়া উচিত ছিল আরও অনেক আগেই।

প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তো বটেই, কাগজে-কলমেও বিচার বিভাগ এখনো পুরোপুরি পৃথক হয়নি। বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় হয়নি। এ ছাড়া সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে নিম্ন আদালতে সরকারের সরাসরি কর্তৃত্ব আছে। এ বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনায় ঢুকছি না আজ। আমি বরং আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়েই।

বিচারিক এজলাসে বসে বিচার করার অধিকার সেই সময়ে হারালেও প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য একটা ‘সান্ত্বনা পুরস্কার’ রাখা হয়েছিল—মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার ক্ষমতা। নিশ্চিতভাবেই এটাও অসাংবিধানিক।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছিল। রিটের রায়ে ২০১৭ সালের ১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ২০০৯ সালের আইনের ১১টি ধারা ও উপধারা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া সংবিধানের লঙ্ঘন এবং তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এটি ক্ষমতার পৃথক্‌করণ নীতিরও পরিপন্থী।

এ রায়ের পরও প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালিত মোবাইল কোর্ট চলতে পারছে। কারণ, সরকার আপিল করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার কি জানে না যে বিচার বিভাগ পুরো স্বাধীন করা সাংবিধানিকভাবেই অত্যাবশ্যক? জেনেও তাহলে তারা আপিল করেছে কেন? আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, সেই আপিলের শুনানি হয়ে ব্যাপারটা সর্বশেষ সুরাহা হয়ে যাচ্ছে না কেন?

মজার ব্যাপার হচ্ছে, দেশের উচ্চ আদালত প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণার পরও বর্তমানে সরকার ফৌজদারি অপরাধ আছে, এমন যতগুলো আইন করছে, তার প্রতিটিতে ২০০৯ সালের মোবাইল কোর্ট আইন এর অন্তর্ভুক্ত করা যাবে বলে ধারা রাখছে। আমরা বুঝতে পারছি তো সরকার কী চায়? কারা কলকাঠি নাড়ছে?

আমি জানি, ভ্রাম্যমাণ আদালত জনপ্রিয়। আমাদের এটাও স্মরণ রাখা দরকার, জনপ্রিয় জিনিসও ভীষণ ক্ষতিকর হতে পারে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরুর দিকে মিষ্টি বিতরণ করে উদ্‌যাপনের মতো তুমুল জনপ্রিয় ছিল। এখন খানিকটা কমলেও প্রচুর মানুষ এখনো এটা সমর্থন করেন। এই জনপ্রিয় চর্চা এ দেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে ফেলে আসলে। চোর-ডাকাত-পকেটমারকে বাগে পেলে নিজেরাই পিটিয়ে মেরে ফেলার চর্চাও এ দেশে জনপ্রিয়। এ চর্চাও দেশকে মধ্যযুগে নিয়ে যায়।

কোনো অশুভ চর্চাকে নাগরিকদের সমর্থন করার একটা ভয়ংকর দিক আছে। সরকার সেই জনপ্রিয়তাকে সম্বল করে সেই ভয়ংকর চর্চা চালিয়ে যেতে থাকে। এ কারণেই সংসদের ভেতরে-বাইরে বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা ধর্ষণ, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, এমনকি পেঁয়াজ কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তিদের ‘ক্রসফায়ারে দেওয়ার’ কথা বলেন। আবার সম্প্রতি একজন ‘আইনপ্রণেতা’ হাতের কাছে দুষ্কৃতকারীদের পেলে পিটিয়ে মেরে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন।

১২১৫ সাল। ব্রিটেনের রাজা জন ক্রুসেডে অংশগ্রহণ আর ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে বিপুল ব্যয় জোগাতে গিয়ে ক্রমাগত আর্থিক চাপে পড়ছেন। তাই তিনি ব্যারনদের (আমাদের জমিদারদের সঙ্গে তুলনীয়) প্রদেয় করের হার ক্রমাগত বাড়াতে থাকেন। কেউ সেটায় যদি রাজি না হয়, তাহলে তাঁর জমি নিয়ে নেওয়া থেকে শুরু করে জেলে পাঠানোসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন। তখনকার বিশ্বের আর সব রাজার মতো জন নিজেই আইন বানান, নিজেই সেটা প্রয়োগ করেন এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিচার করে শাস্তিও দেন তিনিই।

তীব্র অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যারনরা সংগঠিত হন এবং তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। ব্যারনরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, রাজার এই সর্বশক্তিমান অবস্থা কোনোভাবেই রাখা যাবে না। রাজা নিজে আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারবেন না। রাষ্ট্রে এমন আইন থাকতে হবে, যেটা রাজাকেও মেনে চলতে হবে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, রাজা তাঁদের দাবি না মানলে তাঁরা দরকার হলে একটা আলাদা সেনাবাহিনী তৈরি করে রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবেন।

এরপর আরও অনেক ঘটনা আছে, তবে আমরা শেষ অংশে চলে যাই। ব্যারন রবার্ট ফিজওয়াল্টারের নেতৃত্বে ব্যারনরা লন্ডন ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা হন। খবর পেয়ে প্রথম দিকে জন পাত্তা না দিলেও একপর্যায়ে জানতে পারেন, ব্যারনরা লন্ডনে আসার সঙ্গে সঙ্গে লন্ডনবাসী তাঁদের পক্ষে চলে গেছে; রাজা বাধ্য হন ব্যারনদের সঙ্গে আলাপে বসতে। ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপের খসড়া করা একটি দলিলে লিখিত শর্তগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কিছুটা এদিক-সেদিক করে মেনে নিতে বাধ্য হন রাজা।

অতিমাত্রায় কর ধার্য করা নিয়ে শুরু হওয়া অসন্তোষ শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে নানা ক্ষেত্রের ৬০-এর বেশি ধারায়। এসব ক্ষেত্রে রাজার যাচ্ছেতাই করার ক্ষমতা রহিত করা হয়। রাজাকেও আইনের অধীন আসতে হয়। পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের ইতিহাসে এই অমূল্য দলিল ‘ম্যাগনা কার্টা’ নামে পরিচিত, আমরা অনেকেই জানি সেটা। সঠিকভাবে বলতে গেলে এটা প্রথম ম্যাগনা কার্টা। নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্য দিয়ে এটা কার্যকর করার সমস্যা হয় এবং পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি ম্যাগনা কার্টা হয়েছিল, সে আলোচনা এখানে আর দরকার নেই।

আট শতাব্দীর বেশি সময় আগে ম্যাগনা কার্টা এভাবেই রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন, প্রশাসন ও বিচারিক অঙ্গগুলোর পৃথক্‌করণের (সেপারেশন অব পাওয়ার) ভিত্তি তৈরি করে। আমরা যে প্রশাসনের মানুষের হাতে বিচার করার ক্ষমতা তুলে দিচ্ছি, সেই প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিকেও বিচারের আওতায় আনার ক্ষমতা আছে বিচার বিভাগের। বিচার বিভাগ হওয়ার কথা ছিল এ রকমই পৃথক, স্বাধীন।

বর্তমান বাংলাদেশে ম্যাজিস্ট্রেট রোকনুদ্দৌলা কিংবা সারওয়ার আলমের মতো মানুষদের তারকা হওয়া এ কারণে আতঙ্কের যে এটা নাগরিকদের রাষ্ট্রের মৌলিক ধারণা না বোঝাকে কিংবা বুঝেও প্রতিবাদী না হওয়াকে নির্দেশ করে। আমাদের স্মরণ রাখা জরুরি, ওয়াকিবহাল, সচেতন নাগরিকই একটা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের মূল ভিত্তি। ভাবাবেগ দিয়ে আধুনিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব নয়।

জাহেদ উর রহমান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষক