মোদি হতাশ, বিশ বাঁও জলে জিএসটি

ন্যাশনাল হেরাল্ড–এর মামলায় আদালতে হাজির হয়েছিলেন সোনিয়া ও রাহুল
ন্যাশনাল হেরাল্ড–এর মামলায় আদালতে হাজির হয়েছিলেন সোনিয়া ও রাহুল

শেষ পর্যন্ত কী হবে বলতে পারি না, তবে আপাতত সব ঘোলাটে হয়ে গেছে। এবং এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অসহায় যাঁকে মনে হচ্ছে, তিনি এই বহু বিভাজিত বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশের প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদি।
সবকিছু আচমকা ঘোলাটে হয়ে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ সেটাই, ২৮ বছর আগে যাঁকে হাতিয়ার করে উত্তর প্রদেশের মান্ডা নামক এক অখ্যাত জনপদের সাবেক রাজা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং দিল্লিতে গান্ধী পরিবারের মসনদ টলিয়ে দিয়েছিলেন। ইন্দিরা হত্যার প্রবল আবেগ ও জনসমর্থনে ভর দিয়ে রাজীব গান্ধী ক্ষমতায় বসলেও তিন বছরের মধ্যেই টলমল করে উঠেছিল তাঁর গদি। দুই বছর পর ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে অপদস্থ রাজীবকে ‘চোর’ অপবাদ মাথায় নিয়ে সরে যেতে হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। রাজীব-বধে সেদিন তাঁর হাতিয়ার ছিল বোফর্স।
ভারতের রাজনীতিতে দুর্নীতি সেই যে একটা মোক্ষম ‘ইস্যু’ হয়ে দেখা দিল, আজও তা বড় অনুঘটক হয়ে রয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতি আজ হঠাৎই যে এমন ঘোলাটে হয়ে গেল, তার কারণও এই দুর্নীতি। সংসদ সচল হয়েও অচল হয়ে রইল, অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ থমকে গেছে, জরুরি বিলগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে, ফলে গড়গড় করে চলতে থাকা নরেন্দ্র মোদির রথের গতি শ্লথ হয়ে গেল।
দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম ওঠে কিন্তু মোদির দলের বিরুদ্ধেই। আর সেই অভিযোগের কেন্দ্রে ছিলেন যিনি, তিনিও অন্য এক মোদি। আইপিএলের বিগ বস ললিত মোদি, দেশে এলে গ্রেপ্তার হতে হবে বলে যিনি বিলেতে বসে বেশ কিছুদিন ধরেই এ দেশের রাজা-উজির মারছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে সে সময় অভিযোগটা ছিল প্রধানত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বিরুদ্ধে। তিনি ও তাঁর পরিবার ললিতের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত, তাঁর স্বামী ও কন্যা ললিতের হয়ে প্রকাশ্যে ওকালতি করেন এবং ললিতকে তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বিশেষ ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট পাইয়ে দিতে তিনি ব্রিটিশ সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন। একজন ফেরার, যাঁর বিরুদ্ধে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নয়–ছয়ের অভিযোগ রয়েছে, যাঁকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে (অবশ্য সেইভাবে তেড়েফুঁড়ে চেষ্টা হয়েছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক আছে), তাঁকে কিনা সাহায্য করছেন সুষমা স্বরাজ? কংগ্রেস রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় এ নিয়ে। রাজনীতিও হয়ে ওঠে চনমনে।
সুষমার পাশাপাশিই বিতর্কে ঢুকে পড়েন বিজেপির আরও দুই কৃতী মুখ্যমন্ত্রী। রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে ও মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান। বসুন্ধরা ও ললিতের বহুদিনের বন্ধু। দুজনেই রাজস্থানের বাসিন্দা। তা ছাড়া বসুন্ধরার সাংসদ-পুত্র দুষ্মন্ত সিংয়ের ব্যবসায় ললিত বিস্তর টাকা ঢেলেছেন। অতএব, সুষমার মতো তিনিও সমান অপরাধী। কারণ, তাঁরা অপরাধী ললিতকে আগলে রেখেছেন! তাঁকে রক্ষা করছেন!
কংগ্রেসের হাতে ঠিক এই সময়েই আরও একটি অস্ত্র উঠে আসে মধ্যপ্রদেশ থেকে। ব্যাপক দুর্নীতি। রাজ্যে শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বহমান এই দুর্নীতি এবং তাকে ঘিরে পরতে পরতে রহস্যের জাল বিষয়টিকে আকর্ষণীয় করে তোলে। রহস্যটা আবার ভয়াবহ। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে, যাঁরা এর তদন্তে সাহায্য করছেন, তাঁদের অনেকেরই একে একে রহস্যজনক মৃত্যু হচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকার নির্বিকার। অভিযোগ, দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যোগসাজশই নাকি এর কারণ।
মোদি সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এ দুই দুর্নীতি কংগ্রেসের হাতে আচমকাই একটা বড় অস্ত্র তুলে দেয়। দুই মুখ্যমন্ত্রী ও এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অপসারণের দাবিতে কংগ্রেস সংসদ অচল করে রাখে দিনের পর দিন। গোঁ ধরে থাকেন প্রধানমন্ত্রীও। সরকার, দল ও সংঘ পরিবার এককাট্টা হয়ে যায়। দল ও সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনজনের একজনকেও বরখাস্ত করা হবে না। ৩১ বছর পর লোকসভার ভোটে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ার প্রধান কারিগর নরেন্দ্র মোদি দলকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে কংগ্রেস এভাবে বেশি দিন টানতে পারবে না। কিছুদিনের মধ্যেই তারা দম হারাবে।
হলোও ঠিক তাই। কিন্তু আমরা দেখলাম, বিতর্ক শুরু হতেই সুষমা কালো চশমা পরতে শুরু করলেন। সংবাদমাধ্যমকে ধারে-কাছে ঘেঁষতে দিলেন না। প্রথম প্রথম নিজের সমর্থনে খান কয়েক টুইট করা ছাড়া প্রকাশ্যে একটা মন্তব্যও কোথাও করলেন না। একই রকম আচরণ করতে লাগলেন বসুন্ধরা রাজে ও শিবরাজ সিং চৌহান। কংগ্রেসের ফানুসের হাওয়াও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করল। সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার পর কাউকে আর তেমন ফোঁস-ফাঁস করতে শোনা গেল না।
লোকসভায় চিন্তা না থাকলেও মোদির বরাবরের দুশ্চিন্তা রাজ্যসভাকে নিয়ে। সেখানে কংগ্রেস অমিত শক্তিধর। তার সঙ্গে হাত মেলানো অন্য দলগুলো অর্থনৈতিক সংস্কারের জরুরি বিলগুলো আটকে দিচ্ছে। জমি অধিগ্রহণ বিল পাসের আশা মোদি সরকার ছেড়ে দেয়। রিয়েল এস্টেট বিলের আশাও। এমনকি কিশোর অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার বিলটি নিয়েও সরকার নিরাশ হয়ে পড়ে। মাছের চোখের মতো মোদির দৃষ্টিতে ঘুরতে থাকে শুধু অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা (জিএসটি) বিল। কংগ্রেস আমলে যে বিলের জন্ম, অনেক পরিমার্জনের মধ্য দিয়ে, অনেক রাস্তা হেঁটে যে বিল এখন আইন হওয়ার চৌকাঠে দাঁড়িয়ে, যে বিল চালু হলে দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাবে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে বিদেশি পুঁজির কাছে ভারত আরও অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, যার ছোঁয়ায় মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান কার্যকর হবে, সেই বিলটি পাস করাতে কংগ্রেসের সঙ্গে সন্ধির সাদা পতাকা নেড়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। চায়ের আমন্ত্রণ জানালেন সোনিয়া গান্ধী ও মনমোহন সিংকে।
ঐতিহাসিক সেই চা-চক্রের পর বরফ গলার লক্ষণও দেখা যাচ্ছিল। সংসদ দিন কয়েক নিস্তরঙ্গ দিঘির মতো স্থির হয়ে রইল। যেন শান্তি স্বস্ত্যয়ন হয়ে গেছে। কিন্তু একেবারে আচমকাই সেই বহু পঠিত গোয়েন্দাকাহিনির অতি বিখ্যাত ‘কোথা হতে কী হইল, দস্যু মোহন পলাইয়া গেল’ বাক্যটির মতোই সবকিছু কী অদ্ভুতভাবে ভণ্ডুল হয়ে গেল! রে রে করে উঠল কংগ্রেস ও তার সহযোগীরা। বিজেপি-কংগ্রেস মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল যে যার অস্ত্রে শাণ দিয়ে। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল রাজনীতির সন্ধি-কৌশল। সৌজন্যে সেই দুর্নীতি।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলাটা যে ঠিক কী, প্রথম আলোর পাঠকেরা এত দিনে মোটামুটি তার একটা আঁচ পেয়েছেন। খুবই সংক্ষেপে বলতে গেলে, এটা হলো প্রাচীন কংগ্রেসের একটা সম্পত্তি নবীন কংগ্রেসের হাতে রেখে দেওয়ার গল্প। ১৯৩৮ সালে জওহরলাল নেহরুসহ কংগ্রেসের ৭৬১ জন সদস্য এজেএল নামে এক কোম্পানি সৃষ্টি করেন ন্যাশনাল হেরাল্ড ও কৌমি আজাদ নামে ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় দুটি খবরের কাগজ বের করার জন্য। উদ্দেশ্য, পরাধীন ভারতে কংগ্রেসের আদর্শ ও ভাবধারার প্রচার। সেই কাগজ খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তার অফিস গড়ে ওঠে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও বৃদ্ধি পায়। তবে কালের নিয়মে ক্রমে ক্রমে কাগজ দুটির ধার ও ভার কমতে থাকে। সংস্থাকে বাঁচাতে কংগ্রেস তার তহবিল থেকে ৯০ কোটির কিছু বেশি টাকা বিনা সুদে ধার দেয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ২০০৮ সালে প্রকাশনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে কংগ্রেস ওয়াইআইএল নামে আর একটি কোম্পানি খোলে এজেএল অধিগ্রহণের জন্য। এই নতুন কোম্পানির ৭৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী। বাকিটা কংগ্রেসের অন্য নেতাদের। এই অধিগ্রহণ আইনসম্মত নয় বলে মামলা ঠোকেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ, সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ন্যাশনাল হেরাল্ড–এর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার এটা একটা চক্রান্ত। নিম্ন আদালত সোনিয়া-রাহুলদের ব্যক্তিগত হাজিরার জন্য সমন জারি করেন। সোনিয়ারা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। হাইকোর্ট আবেদন নাকচ করে দিলে ১৯ ডিসেম্বর নাটকীয়ভাবে কংগ্রেস নেতারা পাটিয়ালা হাউসে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে হাজিরা দিয়ে জামিন পান।
ন্যাশনাল হেরাল্ড–এর সম্পত্তি হাতানোর অপরাধে সোনিয়া-রাহুল অপরাধী কি না, তা আদালত ঠিক করবেন। কিন্তু কংগ্রেস এই আইনি সক্রিয়তার জন্য সরাসরি দায়ী করেছে নরেন্দ্র মোদিকে। তাদের কথায়—স্বামী আসলে মুখোশ, মুখ্য মোদিই। জামিনের আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পর যে একটা সপ্তাহ সংসদ চলল, প্রতিদিনই কংগ্রেস ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার’ অভিযোগ তুলে তা বানচাল করে দিয়েছে। আইনের এই লড়াইকে তারা রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে এসে ম্রিয়মাণ দলকে চাঙা করতে চাইছে। কংগ্রেস-বিজেপির এই সংঘাতে বাড়তি হাওয়া দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর সরকারের প্রধান সচিবের অফিসে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআইয়ের হানা দেওয়াকে তিনি বিজেপির ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলে অভিযোগ এনেছেন। কংগ্রেস বলছে, ন্যাশনাল হেরাল্ড হলো তাদের বিরুদ্ধে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অপচেষ্টা। কেজরিওয়াল বলছেন, তাঁর সরকারকে কাজ করতে না দিতে কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআইকে কাজে লাগাচ্ছে।
কেজরিওয়াল এক কদম এগিয়ে লড়াইয়ে আবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে শামিল করেছেন। বলেছেন, সিবিআইয়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দিল্লি ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (ডিডিসিএ) সাবেক সভাপতি অরুণ জেটলির আমলের দুর্নীতির তদন্তে সরকারের ফাইল হাতিয়ে নেওয়া। এ নিয়ে এখন ধুন্ধুমার চলছে। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির সাঁড়াশি আক্রমণের মোকাবিলায় বিজেপি এখন ব্যস্ত। জামিন পাওয়ার পর সোনিয়া-রাহুল যেভাবে মোদি ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন (রাহুল তো আবার সরাসরি মোদির নাম করে), তাতে স্পষ্ট, সহযোগিতা দূর অস্ত, সরকারের সঙ্গে চরম সংঘাতের পথেই আপাতত তাঁরা হাঁটতে চলেছেন।
এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে কী করে স্বস্তিতে থাকতে পারেন নরেন্দ্র মোদি? বড় আশা ছিল তাঁর, এই অধিবেশনে জিএসটি বিল পাস করিয়ে আগামী অর্থবছর (১ এপ্রিল) থেকে সারা দেশে চালু করে দেবেন। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী নামের এক ‘ওয়ানম্যান ডেমোলিশন স্কোয়াড’ তাঁর সেই আশা ও স্বপ্নকে খান খান করে দিতে চলেছে। শুধু কি তাই? কংগ্রেস এই ধারণাটা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে যে স্বামী নন, আসল খলনায়ক ও নাটের গুরু নরেন্দ্র মোদিই। স্বামী যখন বুক বাজিয়ে বলেন, আসছে বছরেই সোনিয়া-রাহুলকে তিনি জেলে ঢোকাবেন; কংগ্রেস তখন বলে, ঠোঁট নড়ছে স্বামীর, আওয়াজটা আদতে মোদির।
ভারতীয় রাজনীতির ‘আনগাইডেড মিসাইল’ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে সোনিয়া-রাহুল ঘায়েল হবেন কি না পরের কথা, আপাতত চরম হতোদ্যম নরেন্দ্র মোদি। আজ তিনি বড়ই অসহায়। জিএসটি নিয়ে তিনি বড় আশার জাল বুনেছিলেন।
সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রথম আলোর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি।