মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে সার্থক করে তুলতে হবে

বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারলেই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সার্থক হবে
বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারলেই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সার্থক হবে

ডিসেম্বর আমাদের জাতির বিজয়ের মাস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী, সামরিক বাহিনী এবং তাদের সহযোগীরা পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। বিশ্বের বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের মহানায়ক হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের ‘মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা-বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু’ এই শব্দগুলো অবিচ্ছেদ্য।
পাকিস্তানি শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের অবসান, গণতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন, জাতীয় অধিকার, শিক্ষার জন্য সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণের অভূতপূর্ব রায় প্রদান এক নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জনগণের রায় অনুসারে বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা দিয়ে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে না দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া-ভুট্টো মিলে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। নির্বাচিত ‘জাতীয় পরিষদে’র অধিবেশন ৩ মার্চ আহ্বান করেও ১ মার্চ তা স্থগিত করে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে স্বাধীনতার স্লোগান নিয়ে। বঙ্গবন্ধু তাৎক্ষণিকভাবে পূর্বাণী হোটেলে আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির চলমান সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু যেসব দিকনির্দেশনা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন, সেই অনুসারে ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী চলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি।
একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে তৎকালীন জটিল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, নতুন করণীয় নির্ধারণ, স্বাধীনতার প্রস্তুতি ও সংগ্রামের নির্দেশনা দেন। ইতিহাসের এই অতুলনীয় ভাষণে তিনি ঘোষণা দেন: ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এটাই ছিল প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে এবং জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত অধিকাংশ সদস্যের নেতা (প্রধানমন্ত্রী, যা সামরিক শাসকেরা হতে দেয়নি) হিসেবে বৈধভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জনগণের রায়ের ফলে তা আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধতা লাভ করেছিল। ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে বন্দী করে রাখে। তাঁকে তারা হত্যার চেষ্টা করেও আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু বন্দী থাকায় আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয় ছিল অসম্পূর্ণ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি শাসকেরা তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় এবং তিনি ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামকে নস্যাৎ করে পরাধীন করে রাখার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের আন্তর্জাতিক সহযোগী শক্তির সমর্থনে এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের একটি বিশেষ মহল সব ধরনের হত্যা, লুট, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, মা-বোনের ইজ্জত লুটে নেওয়ার সঙ্গে সর্বাধিক সক্রিয় ছিল। এদের মধ্যে প্রধান শক্তি ছিল জামায়াতে ইসলামী ও তার সহযোগী ইসলামী ছাত্রশিবির (তখন নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ) এবং মুসলিম লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীসহ সাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতাবিরোধী কিছু শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের শেষ ভাগে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির পরিকল্পিতভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক এবং সব ধরনের মেধাবীকে হত্যা করেছিল। এই অপরাধীদের অনেকের বিচার হয়েছে, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বব্যাপী বিরাট প্রভাব সৃষ্টি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে পরাজিত করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে গণচীনও পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল। কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা ছিল আমাদের জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। তারা এক কোটি মানুষকে আশ্রয় ও সেবা দিয়েছিল। ভারত সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ, সমর্থন ও সাহায্য করেছিল। বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য সম্ভব সবকিছুই করেছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ, কংগ্রেস পার্টি, সিপিআইসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতের সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন।
আন্তর্জাতিকভাবে আরেকটি বড় উপাদান ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন অবস্থান নিয়ে সরাসরি আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন ও সাহায্য না করলে আমাদের জন্য পরিস্থিতি আরও অনেক জটিল, দীর্ঘসূত্রী ও বিপজ্জনক হতে পারত। ১৯৭১-এর ২৯ মার্চ সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পোদগর্নি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে একটি পত্র লিখে গণহত্যা বন্ধ করতে বলেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চিঠিতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিখেছিলেন। জাতিসংঘে পাকিস্তান ও আমেরিকার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ভেটো প্রদান, বঙ্গোপসাগরে পাঠানো মার্কিন সপ্তম নৌবহর ফিরিয়ে নেওয়া ইত্যাদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করেছিল। আমরা আন্তর্জাতিক জনমত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতের ভূমিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার জন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞ ও ঋণী।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ষাটের দশকের শুরু থেকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে সব সংগ্রামে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার ফলে একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে লড়াই করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তৎকালীন অন্যতম বৃহৎ ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে পৃথক গেরিলা বাহিনী গঠন করার জন্য ভারত সরকারের সাহায্য আদায় করা ও কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। ইন্দিরা গান্ধী, ডি পি ধর, পি এন হাকসার প্রমুখ যাঁরা ভারতের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন, আমাকে সন্তানতুল্য স্নেহ ও সাহায্য করেছিলেন।
একাত্তরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিস্লাভায় (তখন চেক ও স্লোভাকিয়া এক রাষ্ট্র ছিল) আন্তর্জাতিক ছাত্র ইউনিয়নের দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। এর আগে অনুমতি না পাওয়ার কারণে পাকিস্তান থেকে কোনো ছাত্রনেতা আন্তর্জাতিক কোনো ছাত্র সম্মেলনে যোগদান করার সুযোগ পাননি। আন্দোলনের চাপের মুখে পাকিস্তান সরকার শেষ মুহূর্তে আমাকে এক মাসের জন্য পাসপোর্ট দিতে বাধ্য হয় (কেবল চেকোস্লোভাকিয়া যাওয়ার জন্য)। এই সুযোগ গ্রহণ করে গোপনে আমি যাতায়াতের পথে নয় দিন মস্কোতে থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার সুযোগ গ্রহণ করি। এই ঘটনা তখন বঙ্গবন্ধু ও সিপিবির নেতা কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ—এই দুজন ছাড়া আর কেউ জানতেন কি না, তা আমি জানি না বা কখনো জানতে চাইনি। আমি তখন বয়স ও অভিজ্ঞতায় অনেক ছোট। কিন্তু সোভিয়েতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা আমার আবেগ ও বাস্তব অবস্থার বর্ণনা, জনগণের মতামত, দৃঢ়তা, বিভিন্ন সংগ্রামে তাঁদের অবস্থান, অতীতের বিভিন্ন ঘটনা প্রভৃতি ছাত্র–তরুণদের মতামত বোঝার ও জানার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা সংগ্রামের একজন তরুণ কর্মীর কাছ থেকে প্রত্যক্ষভাবে যথাসম্ভব বোঝার চেষ্টা করেন সাফল্যের সম্ভাবনার দিকগুলো। আমি মরিয়া হয়ে আমার আবেগ ও বাস্তবতা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
ব্রাতিস্লাভায় আন্তর্জাতিক ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে আমি খুবই সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের ছাত্রনেতারা আমাকে খুবই সাহায্য-সমর্থন দেন। ফলে নির্বাহী কমিটিতে আমি নির্বাচিত হই। আমাদের পক্ষে সমর্থন করে প্রস্তাব গ্রহণ, সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দুনিয়ার সব দেশের ছাত্র-যুব সংগঠনের কাছে ১ মে ১৯৭১ আমার চিঠি (সূত্র: ১০ মে ১৯৭১, লেখা আমার চিঠি ১৫ খণ্ডে প্রকাশিত স্বাধীনতাযুদ্ধ ও দলিলপত্র) আমাদের পক্ষে যে ইতিবাচক সমর্থন ও সাহায্য লাভে সহায়ক হয়েছিল, তা পরবর্তীকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক নেতাই আমাকে বলেছেন। পরে ওই সময়ের ছাত্র-যুবনেতা অনেকের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়, তাঁরা আমাকে বলতেন, ‘তুমি কী করে গেছ, তা তুমি নিজেও বুঝো নাই।’ বিষয়টি আমি পূর্বে কখনো লিখিনি বা বলিনি, যদিও অনেকেই জানেন। সম্মেলনে যোগদানের বিষয়টি পত্রিকায়ও তখন ছাপা হয়েছে। কিন্তু মস্কোতে থাকার বিষয়টি ছিল গোপন।
আজ অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য ও আদর্শের পথে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করার অগ্রগতি দৃশ্যমান। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নত হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমরা নতুন প্রজন্মকে আধুনিক উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০১০ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ নতুন প্রজন্মের জন্য বর্তমান যুগের উপযোগী গুণগত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। এ জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষক। সমগ্র জাতিকে তা উপলব্ধি করে শিক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা, সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষকদেরও ‘নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক’ হিসেবে প্রকৃত শিক্ষাদান, ভালো মানুষ হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও শ্রদ্ধাবোধ, নৈতিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই শিক্ষকদের জীবনাচরণ এবং সার্বিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।
আমরা আশা করি, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা দায়িত্ব পালনে আরও অনেক বেশি সচেতন হবেন এবং লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লক্ষ্য ও আদর্শ এবং সব শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করে জাতির ইতিহাসে নিজের মর্যাদার আসন স্মরণীয় করে রাখবেন।
আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বর্তমান যুগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তিতে দক্ষ এবং সততা, নিষ্ঠা, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও শ্রদ্ধাশীল, নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি করার মহান কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছি। এ পথেই আমাদের দেশকে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে আমাদের সফল হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি সেই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সার্থক হবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
নুরুল ইসলাম নাহিদ: শিক্ষামন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।