মানুষের মৃত্যু বন্ধে কোনো চেষ্টা চলছে না, মানুষ মারার খেলা চলছে। নতুন আইন হয়েছে কিন্তু এর প্রয়োগ হচ্ছে না। ফিটনেস ছাড়াও বিভিন্ন গতির যানবাহন একই রাস্তায় চলছে, যথাযথভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্সও দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে কীভাবে?
নতুন সড়ক পরিবহন আইন হওয়ার পর বড় গাড়ির চালক-মালিকেরা দাবি করেছেন, তাঁদের জুন মাস পর্যন্ত ছাড় দিতে হবে। জুন মাসের পর আবার রাস্তায় যখন ম্যাজিস্ট্রেটরা নামবেন, তখন বলা হবে যে আরও ছয় মাস থেকে এক বছরের সময় দেন, আমরা এর মধ্যে করে নেব। এই তো চলছে।
আর আমাদের দেশে ফিটনেস নবায়ন হয় শুধু কাগজের। গাড়ি ঠিক আছে কি না, যন্ত্রাংশ ঠিক আছে কি না, রাস্তায় চলার উপযোগী আছে কি না, সেই পরীক্ষা হয় না। কিন্তু সারা পৃথিবীতে গাড়ি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। এ সময় দেখা হয় গাড়িতে কোনো সমস্যা আছে কি না, সমস্যা থাকলে সেগুলো ঠিক করার পর ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স দেওয়া হয়, সেটিও ঠিক নেই। বিশেষ করে বড় গাড়ি (ভারী যানবাহন) চালানোর লাইসেন্স সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। সারা পৃথিবীতে নিয়ম হলো, তিন বছর হালকা গাড়ি ও তিন বছর মাঝারি গাড়ি চালানোর পর বড় গাড়ি চালাবেন। কিন্তু আমাদের দেশে ১৮-২২ বছরের ছেলেরা বাস-ট্রাক চালাচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব!
দুর্ঘটনা হ্রাসে সরকারের সংস্থাগুলোও ঠিকমতো কাজ করছে না। সংস্থাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি, জানা ও সততার ব্যাপার আছে। এসব সংস্থায় অনেক অসৎ মানুষ কাজ করছে। এই অসৎ মানুষগুলো যদি কাজ করে, তাহলে অসৎ উপায়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স হবে, ফিটনেস হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে।
দুর্ঘটনা কমাতে হলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। সড়কের ত্রুটি দূর করতে হবে, চালকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, ফিটনেস ছাড়া কোনো যানবাহন রাস্তায় চলতে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি পথচারীদের শিক্ষিত করতে হবে এবং সচেতন করতে হবে। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সড়কের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত শিক্ষা দিতে হবে, স্কুল-কলেজে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে পড়ালেখা করাতে হবে। আইনের ঠিকমতো প্রয়োগ করতে হবে। নতুন আইন হয়েছে কিন্তু প্রয়োগ হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন আইনের প্রয়োগ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন আসবে না। এই আইন যথাযথভাবে কার্যকর ও প্রয়োগ করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমত।
চিত্রনায়ক ও চেয়ারম্যান, নিরাপদ সড়ক চাই