বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) কিছুটা উপেক্ষিত হয়। স্বাধীনতাসংগ্রামের সময় শ্রীলঙ্কার মতো বার্মাও দৃশ্যত পাকিস্তানের পরোক্ষ সহযোগিতা করে। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বার্মার স্বীকৃতি পাওয়া গেলেও আরাকান প্রদেশের আকিয়াবে কোনো কূটনৈতিক বা কনস্যুলার মিশন বাংলাদেশ স্থাপন করেনি। যদিও পাকিস্তান আমলে ওখানে একটি সক্রিয় মিশন সব সময়ই ছিল এবং ওখানে পোস্টিং জুনিয়র লেভেলে হলেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হতো। কায়সার রশীদ, আতাউল করিম, মুরাদ খায়েরীর মতো প্রতিশ্রুতিমান কূটনীতিকেরা ওখানে পদায়ন পেয়েছিলেন।
স্বাধীনতা-উত্তরকালে রাষ্ট্রদূত খাজা মোহাম্মদ কায়সারের মতো ঝানু ও বিচক্ষণ রাষ্ট্রদূতকে রেঙ্গুনে (বর্তমান ইয়াঙ্গুন) নিযুক্ত করা হলেও তাঁর মূল লক্ষ্য ও দায়িত্ব ছিল চীনের আস্থা অর্জন ও সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা। আরাকানের ঘনায়মান রোহিঙ্গা ও বাংলা-বার্মা সীমান্ত সমস্যাগুলোর তীক্ষ্ণ নজরদারি হয়তো তাঁর জন্য সম্ভব হয়নি। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপিত হলেও যেমনটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক সম্পর্কের গুরুত্ব উভয় দেশের পররাষ্ট্রনীতির কার্যকরীকরণে প্রতিফলিত হয়নি। ভারতের কাছে বাংলাদেশের মূল প্রদেয় ছিল উত্তর-পূর্ব এলাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ট্রানজিট এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি সক্রিয় অসহযোগিতা। এবং তা তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় অবশ্যই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি তাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন ছিল না। বাংলাদেশের জন্য ওই ধরনের সম্পর্ক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেদিকে আমরা যথাযথ নজর দিইনি।
পাকিস্তান আমলে শিলং-এ সব সময়ই একটি সহকারী হাইকমিশন ছিল। এটা শুধু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য পাকিস্তান সরকারের মনিটরিং পোস্ট ছিল তা নয়, এলাকার জনগণের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ প্রচেষ্টা (যা তখন ভারতীয় সরকার সুনজরে দেখত না) চলমান রাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল। সেই সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল এবং তার পাঠানো কয়েকটি রিপোর্টে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এমনকি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও অধিকতর সম্পর্ক উন্নয়নের ইতিবাচক দিকটি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। স্বাধীনতা-উত্তরকালে প্রয়োজনীয়তা না থাকায় এবং ভারত সরকারের অনুরোধে পাকিস্তান শিলংয়ে তাদের উপদূতাবাস গুটিয়ে নেয়, কিন্তু বাংলাদেশ শুধু শিলংয়ে নয়, সারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কোনো কূটনৈতিক অবস্থান স্থাপন করেনি। শুধু আগরতলায় একটি ভিসা অফিস স্থাপিত হয়।
সম্প্রতি ভারত সরকারের অনুমোদনক্রমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ রাজ্য আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে (রাজধানী এলাকার সরকারি নাম দিসপুর) উপদূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নিয়েছে। অবশ্য বিনিময়ে সিলেট ও খুলনায় দুটি উপ বা সহকারী দূতাবাস স্থাপনের অনুমতি বাংলাদেশ ভারতকে দিয়েছে। বিলম্বিত হলেও গুয়াহাটিতে উপদূতাবাস স্থাপন বাংলাদেশের জন্য একটি অভিপ্রেত এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে। গুয়াহাটি থেকে এলাকার অন্য রাজ্যগুলো যেমন—অরুণাচল, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও মণিপুরের সঙ্গে যোগাযোগ এবং স্বার্থ সংরক্ষণ তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।
আসামে বাংলাভাষীর সংখ্যা অনেক। ১৯৪৭ সালের গণভোটে পাকিস্তানে যোগদানের পক্ষে রায় দিয়ে সিলেট আসাম থেকে বিযুক্ত হয়ে (খণ্ডিত করিমগঞ্জ বাদে) পূর্ববঙ্গের সঙ্গে যোগ দেয়। তা না হলে বর্তমান আসামে বাংলাভাষী এবং ধর্মাবলম্বী হিসেবে মুসলমানরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে বেশি হতো। তাই ভারতের বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য সিলেটের গণভোট এবং তার ফলে আসাম থেকে বিযুক্ত হয়ে পাকিস্তানে যোগদানের তাৎপর্য অনেক এবং বহুধাবিস্তৃত।
বর্তমান আসামের ১২৬টি আসন সমন্বিত বিধানসভায় প্রায় সব নির্বাচনেই গড়পড়তা ২৫-২৬ জন মুসলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে নির্বাচিত হন এবং এঁদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাভাষী। তবে বর্তমানে অনেকেই অসমীয়া ভাষা রপ্ত করে আসামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে একাত্ম হতে আগ্রহী। আসামের বিধানসভায় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো হচ্ছে বর্তমানে কংগ্রেস, বিজেপি, অগপ (অহোম গণপরিষদ) এবং মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল প্রতিষ্ঠিত এ-ইউ-ডি-এফ। বদরুদ্দিন আজমল বর্তমানে লোকসভারও সদস্য এবং বিধানসভায় তাঁর দলের ১৭-১৮ জন মনোনীত সদস্য আছেন। বদরুদ্দিন আজমলের পূর্বপুরুষ সিলেট থেকে গিয়ে আসামে অভিবাসী হয়েছিলেন। তিনি অবশ্য সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় এবং সংখ্যালঘু সমন্বিত ভারতীয় স্বার্থের একজন অন্যতম প্রবক্তা। আসামে বর্তমানে তরুণ গগৈয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসি মন্ত্রিসভা। লোকসভায় বিজেপি আসাম থেকে সাতটি আসন পেয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে অহোম গণপরিষদের প্রভাব ক্ষীয়মাণ। বদরুদ্দিন আজমলের এ-ইউ-ডি-এফ বেশ কয়েকটি আসন বিধানসভায় পেয়েছে।
১৯৪৭ সালের গণভোটের আগে প্রস্তুতির সময় খুব অল্প ছিল। তবু সিলেটের মুসলিম লীগ নেতারা খুব অল্প সময়েই সংঘবদ্ধ হয়ে ওঠেন, এবং আবদুল মতিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আইনজীবী আবদুল হাফিজকে মহাসচিব করে একটি শক্তিশালী গণভোট পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। কংগ্রেসপন্থী জাতীয়তাবাদী কয়েকজন মুসলিম নেতা ছাড়া আর সবাই নিবেদিতপ্রাণ ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিচালনা কমিটিকে সক্রিয় সহযোগিতা প্রদান করেন। বেঙ্গল থেকেও বহু মুসলিম লীগ ও তরুণ নেতা এসে নিঃস্বার্থভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ আছে।
বস্তুতপক্ষে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল আইনমন্ত্রী এবং সম্ভাব্য পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ সমন্বিত পাকিস্তানের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। পরবর্তীকালে যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা জিন্নাহ ১১ আগস্ট পাকিস্তানের গণপরিষদের প্রথম সভায় দিয়েছিলেন। নিম্নবর্ণের বা তফসিলি সম্প্রদায় হিন্দুদের প্রতি মণ্ডলের মূল বক্তব্য ছিল, নিম্নবর্ণের হিন্দুরা হাজার হাজার বছর ধরে বর্ণহিন্দু কর্তৃক নিগৃহীত। তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকার অস্বীকৃত। অথচ মুসলমানদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সমতা ও পারস্পরিক মর্যাদাদানের ভিত্তিতে। তাদের কাছে কে মুখার্জি আর কে মণ্ডল, কে বামুন, কে কৈবর্ত, কে কায়েত আর কে শূদ্র, তার কোনো বাছবিচার বা পার্থক্য বোধ নেই। এই আবেদন খুবই কার্যকরী হয়। বস্তুতপক্ষে পাকিস্তানের পক্ষে অমুসলমান ভোটের সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার ৭৬৭, যা অমুসলমানদের সর্বমোট ভোট ২ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৮-এর ২২ শতাংশ। যেহেতু সিলেটে জমিয়তে হিন্দু পার্টির লোকজন (যার দুজন প্রতিনিধি কংগ্রেসি প্রাদেশিক সরকারে ছিলেন), মাওলানা হোসেন আহমদ মাদানীর অনুসারীরা, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেসি মুসলমানরা এবং আসামের অন্যত্র সম্পত্তির মালিক মুসলমানদের মধ্যে প্রভাবশালী কেউ কেউ ভারতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। বহুসংখ্যক হিন্দু ভোট না পেলে সিলেটে পাকিস্তানপন্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে বিজয় অর্জন দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াত। সিলেটের জনগণ মাত্র ৫৫ হাজার ৫৭৮ ভোটের ব্যবধানে পাকিস্তানে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা বসন্ত কুমার দাস (পরবর্তীকালে পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী) যুগ শক্তি পত্রিকায় উল্লেখ করেছিলেন, ‘যোগেন্দ্র মণ্ডলকে সিলেটে প্রচারের জন্য প্রেরণ ছিল জিন্নাহর একটি বিশেষ চালাকি।’ পাকিস্তানের বিরোধিতায় মুসলমানদের প্রতি কংগ্রেসের যুক্তি ছিল, আসামে মুসলমানরা বিশেষ করে সিলেটিরা খুবই সুপ্রতিষ্ঠিত। গভর্নর স্যার আকবর জায়দারী, জ্যেষ্ঠতম সিভিল সার্ভেন্ট এ এন কিদোয়াই আইসিএম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমদ, বহু উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি খাসিয়া জৈন্তা হিলসের (যার কেন্দ্র ছিল শিলং) প্রথম ভারতীয় ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ নবাব আলী—সবাই ছিলেন মুসলমান। বিশেষ করে সিলেটি মুসলমানরা তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট প্রতিপত্তিশালী ছিলেন। এমতাবস্থায় অনিশ্চিত এবং অপরিচিত পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেওয়া সিলেটের মুসলিমদের জন্য মোটেই স্বার্থানুকূল হবে না, এই ছিল তাঁদের যুক্তি। তা ছাড়া আসামে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। তবে অসমীয়া হিন্দুরা, বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী বরদলই ও জ্যেষ্ঠ নেতা বিষ্ণুরাম মেধী (কিন্তু অপ্রকাশ্যে) চেয়েছিলেন, সিলেট পাকিস্তানে চলে যাক। তা হলেই শুধু আসাম অসমীয়া হতে পারে। না হলে আসাম হয়ে যাবে বাংলাভাষী ও মুসলিমপ্রধান। ভোটবাক্সের প্রতীক হিসেবে লীগ নেতারা ‘দ্বিতীয়ার চাঁদ’ চাইলেও দেওয়া হয় ভাঙন ও আঘাতের প্রতীক ‘কুড়াল’ এবং ভারতের পক্ষে ভোটদানের নির্ধারিত বাক্সের প্রতীক দেওয়া হয় আবেদনসিক্ত ‘কুঁড়েঘর’।
দুই প্রধান দলের সম্মতিক্রমে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয় ২৩৯। দুই দিন (৭ ও ৮ জুলাই) ভোটের জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে দুজন প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১ হাজার ৪৩৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যা ছিল বিশেষ কষ্টকর। তা ছাড়া হিন্দু-মুসলমান সমতা রক্ষারও একটা ব্যাপার ছিল। যাহোক, এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে ব্যক্তিগত তীব্র মতামত থাকা সত্ত্বেও আরোপিত দায়িত্ব সম্পাদনে কর্মকর্তারা যথাসম্ভব নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করেন। আজকে অবিশ্বাস্য মনে হবে, জাতি-ধর্মনির্বিশেষে কোনো দরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই পক্ষপাতিত্ব বা দায়িত্বে অবহেলার কোনো অভিযোগ কেউ আনতে পারেনি। চার মহকুমার জন্য চারজন ব্রিটিশ মেজর পর্যায়ের সামরিক অফিসার নিয়োগ এবং সিলেটে শিখ লে. কর্নেল মহিন্দর সিংকে সিলফোর্স নামক বাহিনীর অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়। সামগ্রিক চার্জে ছিলেন ডেপুটি কমিশনার ব্রিটিশ ডামব্রেক। এখন শুনলে অবাক লাগে, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ২৩৯টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে তিনজন করে নিরস্ত্র কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়। শুধু ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত ৫০টি ভোটকেন্দ্রে অতিরিক্ত একজন এনসিও এবং ছয়জন সশস্ত্র কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়।
নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী ভোট গ্রহণ হয়। লে. কর্নেল পিয়ারসনের নেতৃত্বে সঠিত ভাইসরয়ের প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনে একে শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য বলে উল্লিখিত হয় এবং তা গৃহীত হয়। গণভোটের ফলাফল ১২ জুলাই টেলিগ্রামযোগে দিল্লিতে পাঠানো হয়। সমালোচকের ভাষায় গণভোটের ফলাফলের খবর জেনে অসমীয়া মুখ্যমন্ত্রী বরদলই তাঁর আনন্দ চাপতে না পেরে বলেই ফেলেছিলেন, ‘ভালাই হৈল। সিলট চলি গৈল।’ আসাম এখন প্রকৃতপক্ষে অসমীয়াদের হওয়ার সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচিত হলো। সিলেট পাকিস্তানে এবং ঘটনাপ্রবাহে বাংলাদেশে এল বটে, তবে অঙ্গহানি হয়ে। সিরিল র্যা ডক্লিফের একান্ত সচিব সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর স্মৃতিচারণায় মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন, রোয়েদাদে সংযোজিত র্যা ডক্লিফের দেশ বিভাগের মানচিত্রের কিছু সূক্ষ্ম কারচুপি ভারতের আনুকূল্যে দিল্লিতে করা হয়েছিল।
যা হয়ে গেছে তা অতীত এবং পরিবর্তনাতীত। ভবিষ্যতের কাঠামো তৈরি করার জন্যই অতীতের ঘটনাবলি এবং প্রেক্ষাপটের সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। যাতে বাস্তবতার ভিত্তিতে সবকিছু বিবেচনা করে আমরা এগোতে পারি। আমাদের রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় স্বার্থ অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। তবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, ঐতিহাসিক দিক থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, অধিকতর যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে ফলপ্রসূ করে তোলা বাঞ্ছনীয়। এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রতিফলন অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক, এমনকি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও অবশ্যই পড়বে।
ইনাম আহমদ চৌধুরী: অর্থনীতিবিদ ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা।