নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ফ্রাংকো মডিগ্লিয়ানি ১৯৯৮ সালে উত্তর ইতালির ইজেও শহরে ‘ইনস্টিটিউট ফর স্টাডিজ অন ইকোনমিকস ও অকুপ্যাশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ফ্রাংকো মডিগ্লিয়ানির মৃত্যুর পর তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করেন আরেক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ রবার্ট সোলো। যাঁর প্রণীত গ্রোথ মডেল অর্থনীতি—পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকটা প্রাতঃস্মরণীয়। এই প্রতিষ্ঠানে প্রতি গ্রীষ্মে ‘সামার স্কুল’ নামের কিছু কোর্স পড়ানো হয়। প্রফেসর মডিগ্লিয়ানির সম্মানে সেখানে মূলত অর্থনীতিতে নোবেলপ্রাপ্ত অধ্যাপকেরা ক্লাস নেন বিনা পারিশ্রমিকে। ২০১৩ সালের জুনে আমি সেখানে যাওয়ার দুর্লভ সুযোগ পেয়েছিলাম। ২২ জুন কোর্স শেষ হওয়ার দিন সন্ধ্যায় গালা ডিনার খ্যাত নৈশভোজে আমি বসেছিলাম ১৯৯০ সালে অর্থনীতিতে নোবেলপ্রাপ্ত মার্কিন অধ্যাপক উইলিয়াম শার্পের ঠিক ডান পাশে। শিক্ষক হিসেবে সেখানে ছিলেন আরও চার নোবেল বিজয়ী—জর্জ অ্যাকারলফ, এরিক মাস্কিন, ডেইল মরটেনসন ও মাইকেল স্পেন্স। ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উপদেষ্টা ড. রবার্ট ওয়েস্কট। তাঁরা প্রত্যেকেই বসেছিলেন ছাত্র পরিবেষ্টিত ভিন্ন ভিন্ন খাবার টেবিলে, যাতে ছাত্ররা বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করার সুযোগ পায়।
তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই আলাপচারিতায় আমি একপর্যায়ে উইলিয়াম শার্পকে প্রশ্ন করলাম, ‘প্রফেসর, ২০০৮ সালে ইরাকে সংবাদ সম্মেলনে ইরাকি সাংবাদিক মুনতাদর আল জাইদি, জর্জ ডব্লিউ বুশের মুখে জুতা ছুড়ে মেরেছিলেন। বিষয়টি আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?’ উত্তরে অধ্যাপক শার্প বললেন, ‘জুতাটা ডব্লিউ বুশকে লক্ষ করে মারলেও, আসলে সেটা সারা মার্কিন জাতির উদ্দেশেই নিক্ষেপ করা হয়েছিল।’ তাঁর ব্যাখ্যা থেকে অল্প কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা যাক, ‘মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের স্বার্থের প্রতিকূলে প্রণীত। আসলে একে সারা মানবজাতির স্বার্থের প্রতিকূলে বলাই ভালো।’ তিনি দাবি করলেন, ‘আমরা এই মার্কিন সমাজের অধিকাংশ নাগরিক মার্কিন রাজনীতিকদের রাজনীতির ধরন, সরকারের পররাষ্ট্রনীতি অনুমোদন করি না। আরও পরিষ্কার করে বললে, আমরা এ দেশের বুদ্ধিজীবী ও শান্তিকামী সাধারণ মানুষ মার্কিন রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি পছন্দ করি না।’
আমি তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, ‘কিন্তু মিথ্যা অভিযোগে ইরাক আক্রমণের পরও ডব্লিউ বুশকে দ্বিতীয়বার আরও বেশি ভোটে নির্বাচিত করেছিল তো আমেরিকার জনগণই। নয় কি?’এবার তাঁর চোখে-মুখে আঁধারের যে ছায়া দেখা দিল, তা ছিল বেদনা ও অপমানের মিশ্রণে তৈরি এক গভীর ক্ষতের চিহ্ন, যেটা অন্তর থেকে ক্ষণিকের জন্য বাইরে চলে এসেছিল। তিনি বলেই ফেললেন, ‘আসলে এ প্রশ্ন আমাকে ভীষণভাবে বিব্রত করে। এ ঘটনা আমার নিজের কাছেই এক চরম বিস্ময়।’
মার্কিন ইতিহাসবিদ, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক রোক্সান দুনবার-অর্তিজ তাঁর ‘অ্যান ইন্ডিজিনাস পিপলস হিস্ট্রি অব ইউনাইটেড স্টেটস’ গ্রন্থে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন চমৎকারভাবে। তিনি নিজেও আইরিশ বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ নারী। তাঁর পূর্বপুরুষও বসতি স্থাপনকারী যাঁরা উড়ে এসে জুড়ে বসে রেড ইন্ডিয়ানদের জায়গাজমি কেড়ে নিয়ে বসতি গড়েছিল। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মার্কিনিদের এই সর্বগ্রাসী মনোভাব উপনিবেশবাদী মনোভাব থেকে উদ্গত।
প্রফেসর উইলিয়াম শার্পের কথা একেবারে মিথ্যা নয়। বাথ ইউনিভার্সিটিতে আমার আমেরিকান বান্ধবী কেটি হ্যালেটের সঙ্গে প্রথম আড্ডায়ই আমাকে বলতে হয়েছিল, ‘আমি তোমাদের পছন্দ করি (পড়ুন: খুব একটা পছন্দ করি না। কারণ, আমাকে ভদ্রতা বজায় রাখতে হয়), কিন্তু তোমাদের পররাষ্ট্রনীতি আমি একদম পছন্দ করি না।’ এ কথায় কেটি দ্বিমত করেননি। তারপর দুই বছর পর ২০১৬ সালের নভেম্বরে আমি জাপানের বেপু শহরে নিমন্ত্রিত হয়ে এশিয়া প্যাসিফিক কনফারেন্সে প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গেছি। শেষ দিন ক্লান্তি কাটাতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে অনেক রাত করে ঘুমিয়েছি। সকালে বারবার মেসেঞ্জারে রিং বেজেছে, কিন্তু উঠে ধরার সাধ্য ছিল না। দুপুরের দিকে উঠে দেখি, কেটি ফোন করেছে। আমি আবার ফোন করলাম কেটিকে। তখন তিনি আমেরিকায় তাঁর নিজের শহরে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। হয়তো অভিমান করেছেন। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকলাম। দেখি তাঁর স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘আই অ্যাম অন সেইল’ অর্থাৎ ‘আমি বিক্রি হইব।’ এর কারণ বুঝতে আমার দেরি হলো না। কারণ, সেদিনই ডোনাল্ড ট্রাম্প সারা বিশ্বকে চমকে দিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর স্ট্যাটাসের নিচে আমি এক দীর্ঘ সান্ত্বনা বাক্য লিখলাম, কিন্তু তিনি তার কোনো জবাব দিল না। বেদনার এই গল্প আজ এখানেই শেষ করি।
শুধু কি প্রফেসর উইলিয়াম শার্প, আর আমার বান্ধবী কেটি হ্যালেট? আরও অনেক মার্কিন নাগরিকের নাম করা যায়, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচক। যেমন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, নোয়ম চমস্কি, মার্কিন অ্যাম্বাসেডর জ্যাক মাটলক, কূটনীতিবিদ জর্জ কেনান, সাবেক ডিফেন্স সেক্রেটারি উইলিয়াম পেরি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ জন মার্শেইমার, মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট ব্রিজ, প্রফেসর জেফ্রি স্যাক্স, প্রফেসর পল ক্রুগম্যান, প্রফেসর জন লিস্ট প্রমুখ।
রবীন্দ্রনাথ ১৯১২ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত মোট সতেরো মাস যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। মার্কিন সমাজকে গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করেছেন। নিমন্ত্রিত হয়ে অসংখ্য বক্তৃতাও করেছেন হার্ভার্ড, শিকাগোসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও প্রতিষ্ঠানে এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, হোয়াইট হাউসে। এর মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তাঁর বক্তৃতার অধিকাংশ জায়গাজুড়ে ছিল জাতীয়তাবাদবিরোধীতা। জাতীয়তার শ্রেষ্ঠত্বের ধারণা বা উগ্র জাতীয়তা যে কী রকম নিষ্ঠুর হতে পারে, বক্তৃতাগুলোতে ছিল তার চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেকটা মার্কিনিদের উদ্দেশ করেই এক দিন এক বক্তৃতায় তিনি বলেই ফেললেন, ‘আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের বর্বর লোভ এবং তা থেকে নিষ্ঠুরতার যে চিত্র আমরা আজ দেখতে পাই, আমি তার নিন্দা জানাই।’ রবীন্দ্রনাথের এই জাতীয়তাবাদবিরোধী বক্তব্য মার্কিন সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব পত্রিকায় এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মিনিয়াপলিস জার্নাল সম্পাদকীয়তে লিখেছিল, ‘জাতীয়তাবাদই আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় শক্তি...জাতি হিসেবে আমাদের উগ্র জাতীয়তাবাদের চাষ করতে হবে...ভারতীয়দের কোনো জাতীয়তাবাদ নেই, আর সে জন্যই তাঁরা অন্যের দ্বারা বিজিত।’
শুধু খবরের কাগজের বিদ্রূপই নয়, রবীন্দ্রনাথ এক জায়গায় বলেছেন, ‘আমি এখানে এসে তাঁদের কাছে উপহাসের পাত্র হয়েছি।’ ১৯৩০ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘বর্তমান যুগ পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির যুগ এবং তার জন্য আমরা বিশ্ববাসী আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ; কিন্তু আপনারা তো তৃতীয় বিশ্বের অসহায় মানুষকে শোষণ করছেন এবং বিজ্ঞানের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত এসব মানুষকে অপমান করছেন।’ বক্তৃতার শেষ অংশে তিনি মার্কিন কবি হুইটম্যান ভারতীয়দের সম্বন্ধে কী লিখেছেন, তা জানার জন্য তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া’ পড়ে দেখতে উপদেশ দেন।
মার্কিন মুলুকের সবচেয়ে প্রভাবশালী কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান আত্মসমালোচনা করে বলেছেন, ‘আমরা মার্কিনিরাই প্রথম জাতি, যাঁরা জাতীয়তাবাদ বিনির্মাণের নিরীক্ষায় গভীরভাবে ব্রতী হয়েছি। আমরাই প্রথম জাতি, যাঁরা ঈশ্বরের চেয়েও নিজেদের তুষ্ট করতে বেশি চেষ্টা করি। আমরা ঈশ্বরের জায়গায় নিজেদের বসিয়েছি।’ বলা হয়, কবিরা তাঁদের দিব্য চোখে ভবিষ্যৎকে দেখতে পান। কবি হুইটম্যানও সামনের দিনগুলোতে জাতি হিসেবে মার্কিনিদের আচরণ অন্য দেশের সঙ্গে কী রকম হবে, সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এভাবে—‘আমাদের অস্তিত্বই আমাদের সারবত্তা। ভবিষ্যতের গর্ভে অনন্তকালের জন্য নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা নিশ্চিত করাই জাতি হিসেবে আমরা আমাদের প্রধান কাজ হিসেবে বেছে নিয়েছি। অন্য সব জাতি যেখানে ঈশ্বরের কাছে স্তোত্র হিসেবে নিজেদের সঁপে দেয় ঈশ্বরেরই জয়গানে, সেখানে আমরা ঈশ্বরকে নিজেদের মতো সংজ্ঞায়িত করি ভবিষ্যতের প্রয়োজনে।’
হুইটম্যান মারা যান ১৮৯২ সালে, কিন্তু যে ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করে দিয়ে গেছেন, তা অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী সময়ের সব কর্মকাণ্ডে। তিনি ‘লিভস অব গ্রাস’ লিখেছিলেন ১৮৫৫ সালে, যেখানে তিনি আদর্শ গণতন্ত্রের মধ্যে সমষ্টির সঙ্গে ব্যক্তির যুগলবন্দী ঘটবে—এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন এক রাষ্ট্রের, যার কেন্দ্রে থাকবে মানুষ, যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। কিন্তু যখন দেখি আজও কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের হাতে নির্যাতিত, কৃষ্ণাঙ্গরা বেকার, পুষ্টিহীনতায় ভোগে, গড় আয়ুর নিচে থাকে, একই পদে চাকরি করেও কম বেতন পায়, তখন এই মার্কিন কবির সেই স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়।
অন্য জাতিকে দাবিয়ে রাখার মনোভাব মার্কিন জাতির মধ্যে কী করে হলো, তার একটা সমাজ মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দরকার। কারণ, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র তার কোনো চেষ্টা করেনি শুধু নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্যই। নিজের দেশে তেলের বিশাল মজুত সত্ত্বেও অন্য দেশের তেল সম্পদ কুক্ষিগত করার রণকৌশল এবং কোনো দেশকে স্বাধীনভাবে স্বনির্ভর হতে না দেওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বিস্ময়কর ঠেকে।
মার্কিন ইতিহাসবিদ, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক রোক্সান দুনবার-অর্তিজ তাঁর ‘অ্যান ইন্ডিজিনাস পিপলস হিস্ট্রি অব ইউনাইটেড স্টেটস’ গ্রন্থে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন চমৎকারভাবে। তিনি নিজেও আইরিশ বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ নারী। তাঁর পূর্বপুরুষও বসতি স্থাপনকারী যাঁরা উড়ে এসে জুড়ে বসে রেড ইন্ডিয়ানদের জায়গাজমি কেড়ে নিয়ে বসতি গড়েছিল। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মার্কিনিদের এই সর্বগ্রাসী মনোভাব উপনিবেশবাদী মনোভাব থেকে উদ্গত। যাঁরা, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে, উত্তর আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছেন, তাঁরা আদিবাসীদের ভূমি কেড়ে নিয়ে তাঁদের নিঃস্ব করে দিয়েছেন। সেটা করতে গিয়ে তাঁদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার চালিয়েছেন।
কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই যুদ্ধ সমর্থন করতে পারেন না। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পেছনে কী শুধুই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দায়ী, না মার্কিন পুঁজিপতিদের অস্ত্র ব্যবসার একটা স্থায়ী জোগানের ব্যবস্থা সৃষ্টির অদম্য আকাঙ্ক্ষা দায়ী—এটা গভীরভাবে চিন্তা করে দেখা দরকার। ঠান্ডা যুদ্ধ অবসানের পরও ন্যাটোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা, রাশিয়ার পুনঃ পুনঃ অনুরোধ সত্ত্বেও রাষ্ট্রটিকে ন্যাটোর সদস্য হতে না দেওয়া এবং ন্যাটোর ক্রমাগত সম্প্রসারণ আমাদের কী বার্তা দিয়ে যায়, তা বোঝার চেষ্টা করা দরকার। যিনি দায়ী নন, তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর বিষয়টি একসময় রবীন্দ্রনাথের কাব্য-ভাবনার কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে উঠেছিল। কারণ, এ বিষয়ে তিনি অনেকগুলো কবিতা লিখেছেন। এমন একটা কবিতা আমাদের কানে আর্তনাদের মতো করে বেজে ওঠে:
যে দণ্ডবেদনা
পুত্রেরে পার না দিতে সে কারে দিয়ো না ;
যে তোমার পুত্র নহে তারো পিতা আছে,
মহা অপরাধী হবে তুমি তার কাছে
বিচারক!
ড. এন এন তরুণ রাশিয়ার সাইবেরিয়ান ফেডারেল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির ভিজিটিং প্রফেসর ও সাউথ এশিয়া জার্নালের এডিটর অ্যাট লার্জ। nntarun@gmail.com