মতামত

জীবিকার জন্য জীবন দেওয়া আর কত দিন

হাশেম ফুডে আগুন লাগার পর আটকে পড়া শ্রমিকদের জন্য কারখানার বাইরে স্বজনদের আহাজারি। রূপগঞ্জ, ৯ জুলাই।
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

শিল্পকারখানায় আবারও ঘটল বড় ধরনের দুর্ঘটনা। হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুন লেগেছিল, আর সেখানে আটকে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ জন শ্রমিক (শিশু-কিশোরসমেত)। মালিকপক্ষ বলছে, আমরা তো আগুন লাগাইনি। তা স্বীকার করা যেতে পারে। তবে দাহ্য পদার্থ কর্মস্থলে রাখা, দরজায় তালা লাগিয়ে রাখা—এগুলো কি অন্য কেউ করেছিল? এসব প্রশ্নের জবাব খোঁজার জন্য যথানিয়মে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দোষী ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এ ধরনের কথা এখনো শুনিনি। হয়তো শুনব।

বিশ্বায়নের যুগে উৎপাদনব্যবস্থার মূলমন্ত্র হচ্ছে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা, তা আন্তর্জাতিক বাজারেই হোক বা অভ্যন্তরীণ বাজারেই হোক। এর অর্থ হচ্ছে ভোক্তার কাছে যথাসম্ভব কম খরচে পণ্য পৌঁছাতে হবে। পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম অনেক সময়ই উদ্যোক্তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না বলে খরচ কমানোর জন্য তাঁরা দৃষ্টি দেন শ্রমের মজুরি, কারখানার ভবনের ভাড়া বা দাম ইত্যাদি বিষয়ের দিকে। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে শ্রমিকের অভাব নেই এবং কারখানার নিরাপত্তাজনিত অবস্থা আর কর্মপরিবেশের ন্যূনতম মান নিশ্চিত করার ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ, সেখানে উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য নেওয়া পদক্ষেপের ফল শেষ পর্যন্ত শ্রমিকের ওপরই পড়ে। কী হয় তার ফলে?

একদিকে শ্রমিকের মজুরির ওপর থাকে চাপ, যাতে সে অংশের খরচ যথাসম্ভব কম রাখা যায়। এটি শুধু যে বাংলাদেশেই হচ্ছে, তা নয়, সারা বিশ্বেই কয়েক দশক ধরে মূল্য সংযোজনে শ্রমের অংশ কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের শিল্প খাতে শ্রমের প্রকৃত মজুরি (অর্থাৎ অর্থ মজুরি এবং ভোগ্যপণ্যের দাম বিবেচনায় নিয়ে যা দাঁড়ায়) কোনো কোনো বছর বাড়লেও ২০২০ সালে ছিল নিম্নমুখী।

প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য শুধু যে মজুরি কম রাখা হয়, তা-ই নয়, কারখানার নিরাপত্তাজনিত মান এবং কর্মপরিবেশের দিকও অবহেলিত হয়। ভবনের নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে ওঠানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নিতে হয়, তার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয় বলে সেগুলোকে দেখা হয় প্রতিযোগিতার সক্ষমতার পরিপন্থী হিসেবে। আর তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চালানো হয় উৎপাদন কর্মকাণ্ড। ফলে, ঘটে যাচ্ছে একের পর এক দুর্ঘটনা। তাজরীন ফ্যাশনস আর রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনার কথা এখনো মনে রাখা হয়, কারণ সেগুলো ঘটেছিল রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে। কিন্তু এ ছাড়া আরও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে এবং এখনো ঘটছে, যেগুলোর কথা কিছুদিন গণমাধ্যমে থাকে, তারপর হারিয়ে যায়।

তবে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর একটি বড় পরিবর্তন ঘটেছে—তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলোয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকার, কারখানার মালিক, ক্রেতা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কারখানাগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে একটি কর্মপন্থা গৃহীত হয়। একদিকে গঠিত হয় একটি জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কমিটি, অন্যদিকে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতারা দুটি দল গঠন করে কারখানা পরিদর্শন করা, তাদের নিরাপত্তার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ পরিদর্শন করার দায়িত্ব নেয়। তাদের কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অসম্পূর্ণ কাজের দায়িত্ব এখন জাতীয় কমিটির ওপর রয়েছে।

ওপরে বর্ণিত কাজের ফলে তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলোয়, বিশেষ করে আনুষ্ঠানিক খাতগুলোয় নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়; যদিও সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হয়েছে—এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না। ২০১৩ সালের পর বড় দুর্ঘটনা (পাঁচজনের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে এমন) অনেক কমেছে ঠিকই, কিন্তু ছোটখাটো দুর্ঘটনার সংখ্যা একেবারে কম নয়।

হাসেম ফুডসের ঘটনার পর থেকে গণমাধ্যমের খবরে দেখা যায়, শিল্পকারখানা পরিদর্শনে এবং ছাড়পত্র দেওয়ায় নিয়োজিত সরকারি সংস্থাগুলো একে অপরের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে যে প্রশাসনিক ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং সুশাসনের একটি ব্যাপার রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এ তো গেল তৈরি পোশাক খাতের কথা। নিরাপত্তার প্রশ্ন এবং দুর্ঘটনা কি সেখানেই সীমাবদ্ধ? বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের খবর থেকে দেখা যায় যে অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী কারখানাগুলোতেও এই সমস্যা রয়েছে। আসলে বিশ্বায়নের যুগে শুধু যে রপ্তানিমুখী শিল্পকেই প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে, তা নয়, অভ্যন্তরীণ বাজারেও রয়েছে প্রতিযোগিতা। আর সে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপায় হিসেবে উদ্যোক্তারা গ্রহণ করছেন একই ধরনের পদক্ষেপ। তা ছাড়া তাঁদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার এবং বিদেশি ক্রেতা সম্পৃক্ত না থাকায় তাঁরা কিছুটা হলেও দৃষ্টির আড়ালে; যদিও কাগজপত্রে সরকারের নজরদারি তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়ার কথা।

হাসেম ফুডসের ঘটনার পর থেকে গণমাধ্যমের খবরে দেখা যায়, শিল্পকারখানা পরিদর্শনে এবং ছাড়পত্র দেওয়ায় নিয়োজিত সরকারি সংস্থাগুলো একে অপরের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে যে প্রশাসনিক ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং সুশাসনের একটি ব্যাপার রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এ কথাও ভুললে চলবে না যে হাসেম ফুডসের দুর্ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধি অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে এ ধরনের দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য কাহিনি। অর্থনীতি এবং সমাজের বৈষম্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি এক শ্রেণিকে করছে বিত্তশালী, যারা প্রাথমিক দায়িত্বের প্রতিও উদাসীন। আর জীবিকার জন্য আরেক শ্রেণির মানুষকে দিতে হচ্ছে জীবন।

শ্রমিকের ওপর চাপের আর একটি দিক হলো তাঁদের সংগঠনে যোগ দেওয়া এবং যৌথভাবে দর-কষাকষি করার মতো মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত রাখা। একটা সময় ছিল, যখন বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য বাংলাদেশের সরকারি বিজ্ঞাপনে বলে হতো যে এ দেশে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া যায় এবং ইপিজেডগুলোয় ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ। এখন হয়তো সে বিজ্ঞাপনের ভাষায় কিছু পরিবর্তন হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের চাপের মুখে ইপিজেডগুলোতেও কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার স্বাধীনতা এখনো দেওয়া হয়নি। আর তার বাইরে কাগজে-কলমে সংগঠনের অধিকার স্বীকৃত হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন।
বাংলাদেশের শিল্প খাতের শ্রমিকদের কত অংশ সংগঠিত, অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য, সে বিষয়ে কোনো সরকারি উপাত্ত আছে বলে আমার জানা নেই। তবে একটি উদাহরণ থেকে অবস্থাটি সম্পর্কে কিছুটা আন্দাজ করা যায়।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে, ২০১১ ও ২০১২ সালে ট্রেড ইউনিয়নের জন্য যথাক্রমে ১০ ও ১২টি আবেদনপত্র জমা হয়েছিল এবং অনুমোদিত হয়েছিল একটি করে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে আবেদনের সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৮ ও ৩৯২। স্মরণ করা যেতে পারে, সে সময় কারখানার নিরাপত্তার পাশাপাশি শ্রমিকের অধিকারের বিষয়টিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উঠে আসে, আর তারই ফলে চাপ সৃষ্টি হয় শ্রমিকদের এই মৌলিক অধিকারটি নিশ্চিত করতে। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকেই আবেদন ও অনুমোদনের সংখ্যা কমতে থাকে। ২০১৭ সালে আবেদন আসে ৭৮টি আর অনুমোদিত হয় ৫৭টি। স্পষ্টতই, আন্তর্জাতিক চাপ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ক্রমে আবার আড়ালে চলে যায়। আর যেখানে সে ধরনের কোনো চাপ বা নজরদারি নেই, সেসব খাতে অবস্থা কেমন হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।

জীবিকা অর্জনের জন্য এসে জীবন হারানোর ঘটনা বন্ধ হতে হবে। অন্যথায় উন্নয়নের রোল মডেল, মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া অথবা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বের হওয়ার মতো বুক চাপড়ানো কথা থেকে যাবে কাগজপত্রে।

বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তা অর্জনের জন্য শ্রমিককে চরম মূল্য দিতে হবে, এটি গ্রহণযোগ্য নয়। উদ্যোক্তাদের বুঝতে হবে, শুধু মজুরি কম রেখে এবং কারখানার নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ অবহেলা করে খরচ কমানোর চেষ্টা স্বল্প মেয়াদে কিছু ফল দিতে পারে; কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর ফল ইতিবাচক হয় না। প্রতিযোগিতার সক্ষমতার জন্য শ্রমের উৎপাদন সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তা বাড়াতে হলে যথাযথ মজুরি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন কারখানাকে নিরাপদ করা এবং সেখানে মানসম্মত কর্মপরিবেশ বজায় রাখা। অনিরাপদ, অস্বাস্থ্যকর এবং নিম্নমানের পরিবেশ শ্রমের উৎপাদিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রতিযোগিতার সক্ষমতা সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি এবং আলোকিত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করলে উদ্যোক্তাদের উচিত হবে এ বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া।

জীবিকা অর্জনের জন্য এসে জীবন হারানোর ঘটনা বন্ধ হতে হবে। অন্যথায় উন্নয়নের রোল মডেল, মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া অথবা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বের হওয়ার মতো বুক চাপড়ানো কথা থেকে যাবে কাগজপত্রে।

তবে তাঁদের হাতে ছেড়ে দিলে যে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করা যাবে না, তা তাজরীন, রানা প্লাজা এবং হাসেম ফুডসের মতো ঘটনাগুলো থেকে পরিষ্কার। সুতরাং সরকারকে এ ব্যাপারে আরও অনেক সতর্ক এবং সক্রিয় হতে হবে। প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা যেন অধোগতির প্রতিযোগিতায় পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর তার জন্য প্রয়োজন হবে অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে পদক্ষেপ।

প্রথম যে ক্ষেত্রে কোনো রকম আপস করা বা ছাড় দেওয়া চলবে না, তা হচ্ছে জীবনের নিরাপত্তা এবং কর্মস্থলে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। হাসেম ফুডসের ঘটনা যেন আমাদের জন্য শেষ জেগে ওঠার ঘণ্টা হিসেবে কাজ করে, তা যেকোনো ধরনের কর্মক্ষেত্রই হোক। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা বর্তমান নিবন্ধের পরিসরে সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলা যেতে পারে যে সরকারের প্রশাসনিক যন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় (অর্থাৎ সরকার, মালিক ও শ্রমিকের সম্মিলিত) উদ্যোগের কথা ভাবা যেতে পারে। আর তা করতে হলে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিত্ব তথা শ্রমিকের সংগঠনের কথাও বিবেচনায় নিতে হবে।

দ্বিতীয় যে দিকে উন্নতি দরকার, তা হচ্ছে শ্রমিকের মজুরি ও ভাতা। কাগজে-কলমে বিভিন্ন খাতের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং নিয়মিত ব্যবধানে তার হালনাগাদের ব্যবস্থা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু বাস্তব অবস্থার দিকে তাকালে বোঝা যায় যে এ বিষয়ে অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতের মতো খাতেও (যেখানে সারা বিশ্বের দৃষ্টি থাকে) মজুরি নির্ধারণের সময় দর-কষাকষিতে প্রায় প্রতিবারেই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। আর সেই ন্যূনতম মজুরি এবং ভাতা পাওয়ার জন্য অনেক সময় শ্রমিককে নামতে হয় রাস্তায়। সুতরাং দেশের অন্যান্য খাতে, অর্থাৎ লোকচক্ষু কম পড়ে এমন খাতগুলোর অবস্থা কেমন তা বিস্তারিত বলার অপেক্ষা রাখে না।

উন্নতির তৃতীয় ক্ষেত্রটি হচ্ছে শ্রমিকের মর্যাদা এবং মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। উন্নয়ন-সম্পর্কিত আলোচনায় এ বিষয় আনতে হবে, তা উন্নয়নের যেকোনো পর্যায়ে হোক অথবা উৎপাদনের যেকোনো খাতই হোক। শ্রমিকের কাজের জায়গা, পরিবেশ এবং শর্তাবলি সম্পর্কে তার বক্তব্য প্রকাশ করার অধিকার একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। সে অধিকার প্রয়োগ করার জন্য প্রয়োজন তার প্রতিনিধি বা সংগঠনের মাধ্যমে মতো প্রকাশের সুযোগ। সে সুযোগ না থাকলে তাকে রাস্তায় নামতে হয় এবং বিকল্প পন্থা প্রয়োগ করতে হয়, যা বাঞ্ছনীয় নয়।

রিজওয়ানুল ইসলাম অর্থনীতিবিদ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার এমপ্লয়মেন্ট খাতের সাবেক বিশেষ উপদেষ্টা। তাঁর অতি সাম্প্রতিক বই ‘করোনাঘাতে অর্থনীতি ও শ্রমবাজার’ ২০২১ সালের মার্চে প্রকাশিত হয়েছে।