কুইক রেন্টাল, পাতালরেল আর ‘বিপর্যয়কেন্দ্রিক পুঁজিবাদ’

এরপর এই আইনের অধীন একের পর এক ভাড়াভিত্তিক তরল জ্বালানিনির্ভর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হতে থাকে
ছবি : প্রতীকী

বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ডোনাল্ড ইউইন ক্যামেরন একটি কুখ্যাত পরীক্ষা করেছিলেন ১৯৬০–এর দশকে। কিছু মানুষের মগজে অনেক কম বিরতিতে খুব শক্ত ইলেকট্রিক শক আর কিছু ড্রাগ (বিশেষ করে এলএসডি এবং কিউরারে) দিয়ে দিনের পর দিন একটানা কোমার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে মানুষের মগজ থেকে স্মৃতি মুছে ফেলার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন তিনি। ক্যামেরনের হাইপোথিসিস ছিল, সিজোফ্রেনিয়াসহ বড় বড় মানসিক রোগের ক্ষেত্রে মগজকে খালি করে ফেলার এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে মানুষের অতীত অভিজ্ঞতা মুছে যাওয়ার ফলে সব মানসিক রোগ থেকে মুক্ত হবে। পরে সেখানে নতুন করে আবার সবকিছু ঢোকানো যাবে।

ক্যামেরনের এই বৈজ্ঞানিক গবেষণার সঙ্গে পরে যুক্ত হয় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। ক্যামেরনের কাছে তারা মানসিক নির্যাতনের একটা পদ্ধতি চেয়েছিল, যেটার মাধ্যমে যে কারও মানসিক শক্তি পুরোপুরি ভেঙে দেওয়া যায়। তেমন মানসিক অত্যাচারের পর যেন কোনো ব্যক্তি যেকোনো ক্ষেত্রে সিআইএর সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা করে। মনোবিজ্ঞানী ক্যামেরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে ফিরে আসব কলামের পরের দিকে।

সুপার টাইফুন হায়ান ফিলিপাইনে আঘাত হেনেছিল ২০১৩ সালের নভেম্বরে। ফিলিপাইনের অনেক জায়গায় এটা অনেক ক্ষয়ক্ষতি করলেও সবচেয়ে ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছিল লেইতে প্রদেশে।

এই টাইফুনের পর ফিলিপাইন সরকার নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, এই প্রদেশে সমুদ্র উপকূল থেকে ৪০ মিটার দূরত্বের মধ্যে কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। ফলে ওই সীমার মধ্যে থাকা সাধারণ মানুষকে তাদের বসতভিটা ছেড়ে চলে যেতে হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন পর সাধারণ মানুষকে উচ্ছেদ করা সমুদ্রতীরবর্তী স্থান বরাদ্দ দেওয়া হয় সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কিছু বড় কোম্পানিকে। তারা সেখানে হোটেল, রিসোর্টসহ বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করে। বড় কোম্পানিদের দেখে সাধারণ মানুষ যখন সমুদ্রের নিকটবর্তী জমিতে নিজেদের বাড়ি বানাতে যান, তখন সেটা করতে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।

টাইফুনে যাঁরা বাড়ি হারিয়েছিলেন এবং সমুদ্রের ৪০ মিটারের মধ্যে যাঁদের আর বাড়ি করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের জন্য সরকার ভিন্ন এলাকায় দুই লক্ষাধিক বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর পরও দেখা যায়, বাড়ি তৈরি হয়েছিল মাত্র এক তৃতীয়াংশের মতো।

বাংলাদেশ এখন বিপর্যয়কেন্দ্রিক পুঁজিবাদের এক অসাধারণ উদাহরণ। এখানে আগে থেকে থাকা দীর্ঘ (বিদ্যুৎ ঘাটতি) কিংবা হঠাৎ আসা স্বল্পমেয়াদি (করোনার সময় টিকা) দুর্যোগের সুযোগ যেমন নেয় ক্ষমতাসীনরা, তেমনি দুর্যোগ তৈরি করে (ঢাকার যানজট) তাতে মানুষকে ফেলে তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আরেকটি কথা, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘পুঁজিবাদ’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে ‘বিপর্যয়কেন্দ্রিক লুটপাট’ বললেও খুব বেশি আপত্তি শোনা যাবে না নিশ্চয়ই।

এসব বাড়ি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছিল সরকারের ঘনিষ্ঠ প্রাইভেট কোম্পানি। বাড়িগুলোর মান ছিল অত্যন্ত খারাপ। শুধু সেটাই নয়, সেসব মানুষকে কেন্দ্র করে গাড়িতে করে ভ্রাম্যমাণ পানি সরবরাহব্যবস্থাসহ নানা পরিষেবার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল কতগুলো বেসরকারি কোম্পানির হাতে।

ফিলিপাইনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আসা যাক মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কথায়। এবারের ঘটনাস্থল বাংলাদেশ। দুর্যোগটি আবার হঠাৎ ঘটে যায়নি, ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে। ২০০১ সালের বিএনপি সরকারের সময় ক্রমাগত চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সীমাহীন ব্যর্থতা এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। শিল্প-ব্যবসার চরম ক্ষতি তো হয়েছিলই, মানুষের ব্যক্তিগত জীবনও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।

এই পরিস্থিতি চলে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এমনকি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরও আরও বছর দুয়েক। জনজীবনে যখন নাভিশ্বাস উঠে গেল, তখন আমরা দেখলাম, ক্ষমতায় আসার প্রায় দুই বছর পর একটা আইন করা হলো ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ নামে। গালভরা পোশাকি নামটি সরিয়ে রেখে এটুকু জানলেই হবে যে এটাই বিদ্যুতের কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন। দরপত্র আহ্বান করা এবং সরকারি ক্রয়প্রক্রিয়ায় অন্য সব পদক্ষেপকে বাদ দিয়ে যে কারও সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সরকারকে।

এরপর এই আইনের অধীন একের পর এক ভাড়াভিত্তিক তরল জ্বালানিনির্ভর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হতে থাকে। উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে তাদের দিতে হয় নির্দিষ্ট ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ)। এই ভাড়া দিয়ে যাওয়ার চুক্তি হয়, এমনকি কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও। এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও হাজার হাজার হাজার কোটি টাকা কুইক রেন্টাল কোম্পানির মালিকদের (ক্ষমতাসীনদের অলিগার্ক) হাতে তুলে দেওয়ার গল্প আমরা জানি। দুই বছরের কথা বলে আইনটি করা হলেও এর মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তার সর্বোচ্চ চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেলেও এই আইনের মেয়াদ বাড়তে বাড়তে ১৬ বছরে এসে ঠেকেছে।

শুরুতে বলা মনোবিজ্ঞানী ক্যামেরনের সেই কুখ্যাত পরীক্ষার কথা নওমি ক্লেইন ব্যবহার করেছেন তাঁর অত্যন্ত আলোচিত ‘দ্য শক ডকট্রিন; দ্য রাইজ অব ডিজাস্টার ক্যাপিটালিজম’ বইতে। বইটিতে নওমি বলতে চেয়েছেন, কোনো দেশে যদি প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট কোনো দুর্যোগ হয় বা থাকে, তাহলে সেটার সুযোগে সেখানে নানা অর্থনৈতিক তত্ত্বের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা যায়। এ ছাড়া নেওয়া যায় নানা প্রকল্প। নওমি বলেন, এসব তত্ত্ব ও প্রকল্প সাধারণ অবস্থায় মানুষ গ্রহণ করত না; তীব্র প্রতিবাদ করত। এটাকেই তিনি বলছেন ‘ডিজাস্টার ক্যাপিটালিজম’ অর্থাৎ ‘বিপর্যয়কেন্দ্রিক পুঁজিবাদ’।

ডিজাস্টার ক্যাপিটালিজম সাম্প্রতিক কালে খুবই আলোচিত বিষয়। প্রতিটি দুর্যোগ—হোক সেটা প্রাকৃতিক (ভূমিকম্প, টাইফুন) কিংবা মানবসৃষ্ট (নাইন–ইলেভেন, ইরাক যুদ্ধ), সেটা কিছু মানুষের জন্য এক বিরাট অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করে।

ফিলিপাইনে টাইফুন হায়ানের বিপর্যয় ঘটেছিল বলে সেখানে উপকূলীয় এলাকা থেকে সাধারণ মানুষদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছিল। পরে সেটা বিরাট ধনীদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া নানা রকম ব্যবসা করতে পেরেছিল সরকারের ঘনিষ্ঠ ধনীরা।

বিদ্যুতের চরম বিপর্যয়ে এ দেশের মানুষ পড়ে গিয়েছিল বলেই রীতিমতো ইনডেমনিটি দিয়ে সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত কিছু মানুষকে অকল্পনীয় লাভের প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলে যখন মানুষ বিদ্যুৎ খাতের এই লুটপাট নিয়ে প্রশ্ন করেছিল, তখন তাদের শোনানো হয়েছিল, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের বোঝানো দরকার, আমরা আগে কী পরিস্থিতিতে ছিলাম।

বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আর দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকার এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দেশে তীব্র গরমের মধ্যে এখন আবার দীর্ঘ লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা এখন প্রশ্ন তুলছি, কেন দীর্ঘকাল অলিগার্কদের হাতে এভাবে অকল্পনীয় পরিমাণ অর্থ ভর্তুকির নামে তুলে দেওয়া হয়েছে? কেন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আরও অনেক আগেই বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়নি? জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য কেন দেশের স্থলভাগে এবং সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধান করে উত্তোলন নিশ্চিত করা হয়নি?

আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, বিদ্যুৎহীনতার পরিস্থিতিটা দীর্ঘ সময় চলতে থাকলে সেটা আমাদের ওপর যে নানামুখী প্রভাব ফেলবে, তাতে ‘ডিজাস্টার ক্যাপিটালিজম’ তত্ত্ব অনুযায়ী, আমরা যারা প্রশ্ন তুলছি, তাদের কণ্ঠস্বর ক্রমাগত ম্রিয়মাণ হতে থাকবে এবং সরকার বিদ্যুতের দাম অনেকটা বাড়ানোর মাধ্যমে সংকট সামাল দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আমরা সেটা মেনে নেব। নিশ্চয়ই মানুষ বিদ্যুৎহীন থাকার চেয়ে অনেক বেশি দাম দিয়েও বিদ্যুৎ কেনার পক্ষেই থাকবে।

ঢাকার যানজট নিয়ে কী কী করা উচিত, সেটা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। বিশেষজ্ঞরা মিলে ঢাকার জন্য একটা স্ট্রাকচারাল প্ল্যান তৈরি করেছিলেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকার মানুষের যাতায়াতব্যবস্থা যে গণপরিবহননির্ভর হতে হবে, সেটা খুব স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। এই সেক্টরে কাজ করা দেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় এবং দক্ষ বিশেষজ্ঞদের একজন অধ্যাপক শামসুল হক, কিছুদিন আগেই প্রথম আলোকে তাঁর একটা সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন।

অধ্যাপক শামসুল হক বলেছেন, শুধু একটা বাস র‍্যাপিড ট্রান্সপোর্ট তৈরি করে নগর পরিবহনের বাসগুলোকে একটিমাত্র কোম্পানির অধীন এনে দখলমুক্ত করে, শৃঙ্খলা তৈরি করে মানুষের হাঁটার ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের এই শহরের যাতায়াতের সংকট অনেক কমে যেত। কিন্তু যানজট যখন আমাদের বীভৎস অবস্থা তৈরি হলো, তখন ফ্লাইওভার তৈরি হলো, মেট্রোরেল তৈরি হলো। ফ্লাইওভার একটা শহরের ভেতর হওয়ারই কথা ছিল না আর মেট্রোরেলে বিপুল ব্যয়ের পরও ঢাকা শহরের খুব স্বল্পসংখ্যক মানুষকেই পরিবহন করতে পারবে।

কৌশলগত পরিপত্রের সমীক্ষায় দেখানো হয়েছে, ১৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে পাঁচটি এমআরটি চালু করার পরও সেগুলো পুরো পরিবহনের মাত্র ১৭ শতাংশের চাপ নিতে পারবে। তখনো ৪০ শতাংশ চাপ নেবে গণপরিবহন। কিন্তু আমাদের আশপাশে খুব দ্রুত বাস র‍্যাপিড ট্রান্সপোর্ট তৈরি হয়ে গেলেও আমাদের হচ্ছে না।

এর মধ্যেই নেওয়া হয়েছে পাতালরেলের প্রকল্প। এই সেপ্টেম্বরে শুরু হবে এর প্রথম রুটের কাজ। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত এই প্রকল্পের খরচ এখনই ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি। আমরা জানি, এ দেশে প্রকল্পের খরচের প্রাথমিক প্রাক্কলন ঠিক থাকে না কোনোকালেই, বেড়ে যায় অনেক; হয় বিশাল দুর্নীতি। আর এটা তো মাত্র একটা রুটের ব্যয়; মোট ব্যয় নিশ্চয়ই পৌঁছাবে অকল্পনীয় উচ্চতায়। কিন্তু এসব আলাপ বাদ দিলেও আমরা কি এই প্রশ্ন করছি, তুলনামূলকভাবে অতি সামান্য ব্যয়ের বাস নিয়ে কাজ না করে আকাশচুম্বী ব্যয়ের মেট্রোরেল কিংবা পাতালরেল বানাচ্ছি কেন? আসলে সরকার চাইছে, আমরা যানজটে একেবারে নাকাল হয়ে পড়ি।

দুর্যোগ ও বিপর্যয় মানুষকে প্রচণ্ড ধাক্কা দেয়, তাঁদের মানসিকভাবে পাল্টে ফেলে। এর ফলে তাঁদের পক্ষে আগের মানুষটার থাকা আর সম্ভব হয় না। মনোবিজ্ঞানী ক্যামেরনের প্রদর্শিত পথে সিআইএ যেমন দেখেছিল কিছু মানসিক নির্যাতনের পর মানুষ তাদের সব কথা মেনে নেয় বিনা বাক্যব্যয়ে, তেমনি স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ বা বিপর্যয়ে যখন মানুষ থাকে, তখন তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে খুব বেশি বাধা তৈরি করার মানসিকতা রাখে না কিংবা সেই শক্তিও তাদের থাকে না।

বাংলাদেশ এখন বিপর্যয়কেন্দ্রিক পুঁজিবাদের এক অসাধারণ উদাহরণ। এখানে আগে থেকে থাকা দীর্ঘ (বিদ্যুৎ–ঘাটতি) কিংবা হঠাৎ আসা স্বল্পমেয়াদি (করোনার সময় টিকা) দুর্যোগের সুযোগ যেমন নেয় ক্ষমতাসীনেরা, তেমনি দুর্যোগ তৈরি করে (ঢাকার যানজট) তাতে মানুষকে ফেলে তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আরেকটি কথা, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘পুঁজিবাদ’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে ‘বিপর্যয়কেন্দ্রিক লুটপাট’ বললেও খুব বেশি আপত্তি শোনা যাবে না নিশ্চয়ই।

ডা. জাহেদ উর রহমান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক