প্রবাসীদের মেধা ও দক্ষতাকে সরকার কীভাবে ব্যবহার করবে

কয়েক দশক ধরে দেশ থেকে মেধা পাচার বেড়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছে। মেধাবীরা দেশ ছাড়ায় দেশের সর্বত্র আজ মেধাশূন্য। বিপ্লব–পরবর্তী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ সংস্কার শুরু করছে। ঠিক এই কাজে আমাদের প্রবাসীদের কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, তা নিয়ে লিখেছেন নাদিম মাহমুদ

করোনাকালে নানা অব্যবস্থাপনা ও অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গিয়েছিল বিগত সরকারকে। প্রায় ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা থেকে আমরা যারা প্রবাসে থাকি, তারা অনেকই উৎকণ্ঠায় ছিলাম। ওই সময় প্রবাসী গবেষক, একাডেমিশিয়ানরা মিলে একটি স্বেচ্ছাসেবী টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাল্টি-ডিসিপ্লিনিয়ারির এই কমিটিতে কানাডা, জাপান, কাতার, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার এক ঝাঁক তরুণ গবেষক, বিজ্ঞানী ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিল, যাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কোভিড নিয়ে গবেষণা করছিল। বেশ কয়েকবার বৈঠক করে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের করণীয় ঠিক করা হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলো, আমরা এই বিষয়গুলো সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানাব।

তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক ব্যক্তিগত সচিবকে আমাদের পরিকল্পনার কথা যখন জানাতে গেলাম, তখন অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হলো। তিনি তখন আমাকে বললেন, ‘আমারে কনভেন্স করতে চাচ্ছে যে তোমরা সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী। আমরা যখন দু টাকার সাংবাদিকতা করি, তখন তুমি পিএইচডি করতে গেছ। এত দিন পর এসে তোমার মনে হলো সরকারকে জ্ঞান দিতে হবে। তোমার পরামর্শ সরকারের কর্মকর্তারা নেবে কেন?’

এই দুই-বাক্য এমনভাবে হৃদয়টাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিল, আমাদের দল আর বিষয়টি নিয়ে আর সামনে যেতে রাজি হলো না। আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার প্রবাসীদের সক্ষমতাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের চোখে দেখার পাশাপাশি এই সব স্ব-উদ্যোগে দেশসেবা করতে আসা প্রবাসীদের রাজনৈতিক মেরুকরণে ফেলায় এভাবে অনেকের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়। নিজেদের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও দেশের দুর্দিনে আমরা পাশে দাঁড়াতে পারিনি, এর চেয়ে বেদনার আর কী আছে।

এবার ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান আমরা দেখলাম, তাতে সত্যিই আমরা একটি অন্যরকম প্রতিশ্রুতিশীল বাংলাদেশ গড়ার দ্বার প্রান্তে। এই আন্দোলনের সময় দেশের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রবাসীরা যেভাবে সরব ভূমিকা পালন করেছে তা সত্যিই প্রশংসাজনক।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ‘রিভার্সব্রেনড্রেনবিডি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত প্রবাসী গবেষক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতি, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা দেশে ফিরে দেশটাকে নিজেদের মতো গড়ার অঙ্গীকার করেছিল। যাঁদের একাডেমিক প্রোফাইল দেখলে যেকোনো দেশ তাঁদের লুফে নিবে।

গত কয়েক দশক যেভাবে একমুখী মেধাপাচার হয়েছে, তাতে দেশে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তার খেসারত দেশ দিয়েছে। তৎকালীন সরকার প্রধান বিভিন্ন সময় সরাসরি টেলিভিশনে বলেছে, আমাদের তো লোকের অভাব নেই, যাঁরা দেশ ত্যাগ করেছে, তাতে দেশের কোনো ক্ষতি হয়নি বরং রেমিট্যান্স আসছে, দেশ উপকৃত হয়েছে। সরকার প্রধানের এইরকম বক্তব্যের খেসারত ক্ষমতার পতনের মধ্য দিয়ে হয়েছে। যাই হোক, এখনই উপযুক্ত সময়, দেশের বাইরে থাকা এক ঝাঁক মেধাবীদের দেশে ফেরানোর। আন্তর্জাতিক মানের বেতনের দরকার নেই, শুধু নিরাপত্তা ও সচ্ছলভাবে চলাফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে হাজারো প্রবাসী দেশে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

যাই হোক এই লেখার উদ্দেশ্যে ছিল, আমরা কীভাবে আমাদের প্রবাসীদের মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করা যাক।

অভিজ্ঞদের তালিকা প্রণয়ন

দেশের বাইরে এইমূহুর্তে ঠিক কতজন প্রবাসী আছেন, তার হিসেব সরকারের কাছে কাগজে কলমে থাকলেও ঠিক কে কোন পেশায় আছেন কিংবা কে কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাঁর কোন ডেটাবেইস সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে বলে জানা নেই। বিষয়টা এমন হয়ে গিয়েছে যে সরকারের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্কটা কেবলই পাসপোর্ট নবায়ন আর রেমিট্যান্স আদায়। অথচ দেশে একটি প্রবাসীদের জন্য একটি মন্ত্রণালয়ই আছে। যা হোক সেই প্রসঙ্গে না যাই। 

প্রবাসীদের অভিজ্ঞতা ও মেধাকে কাজে লাগাতে চাইলে সবার আগে প্রয়োজন কে কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ তার তথ্য সমাহার। সরকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের সেবা করার মানসিকতায় থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আহ্বান জানাবেন। প্রবাসীদের সরকার ঠিক কোন কোন কাজগুলোতে সহায়তা নেবেন, তার তালিকা প্রণয়ন করে আগ্রহী বিশেষজ্ঞদের তথ্য সংগ্রহ করবেন।

এই ক্ষেত্রে সরকার তাঁর দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে যেমন এই তথ্যগুলো সংগ্রহ রাখতে পারেন, তেমনি রিভার্সব্রেনড্রেন হ্যাশট্যাগে দেওয়া শত শত প্রবাসী বিশেষজ্ঞদের ডেটা একটি ওয়েবসাইটে সন্নিবেশিত করতে পারেন। ক্যাটাগরি করে তালিকা প্রণয়ন করে সেখান থেকে সরকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে দেশ গঠনে সহায়তা চাইতে পারেন। মনে রাখবেন, দেশের বাহির যাঁরা আছেন, তাঁরা হয়তো দেশে ফিরবেন না, তবে তাঁদের মেধা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে কোনো সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না।

বিভাজনের রাজনীতি নয়

প্রত্যকটা মানুষের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শ থাকতে পারে। আমরা এর বাইরে কেউ নয়। পূর্ববর্তী সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভেদের কারণে দেশের ভেতরে এবং বাইরে অনেক অভিজ্ঞ ও মেধাবী মানুষদের কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসবোধের কারণে অনেকেই আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলস্বরূপ দেশের বাইরে রয়েছে হাজারো গ্রুপিং। যার কারণে আমরা একটি দ্বিধান্বিত জাতি। ঐকমত্যে পৌঁছাতে আমাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে সাম্প্রতিক এই বিপ্লবে যে ঐক্যতা আমরা দেখেছি, তাকে কাজে লাগানোর উপযুক্ত সময় এখন। 

সরকার যে যদি সত্যিই আমাদের প্রবাসীদের দেশ গঠনে সহায়তা নেন, তাহলে সর্ব প্রথম কাজ হবে কোনো ব্যক্তিরই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শকে গুরুত্ব না দেওয়া। আমাদের সবার পরিচয় হবে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। এই পরিচয়ে এগিয়ে আসা প্রবাসীদের নিয়ে সরকার সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতে পারে। কেবল মেধা ও অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন সাপেক্ষে আমাদের এই তরুণ ও প্রবীণদের অভিজ্ঞ-দক্ষ প্রবাসী মানবসম্পদকে ব্যবহার করা যেকোনো দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি

বর্তমানে দেশের শিক্ষাক্রম ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্কের শেষ নেই। সীমাহীন দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি আর অযোগ্যদের দাপটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তা সংশ্লিষ্ট উপাদান ধ্বংস হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই মেয়াদে আমরা চাই শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন।

দেশের বাইরে বেশ নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক বাংলাদেশি গবেষনা ও শিক্ষকতা করছেন। তাঁরা নানা দিক থেকে বিশেষজ্ঞ, যাদের গবেষণাও বিশ্বনন্দিত। অনেকে বিদেশের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা গবেষণায় নিযুক্ত। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা ও কারিকুলাম প্রণয়নে জড়িত।

একটি মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে হলে আমাদের এই মুহূর্তে তাঁদের সহায়তা প্রয়োজন। এই সব মানুষের সঙ্গে আমাদের দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদের নিয়ে সমন্বিত শিক্ষা কমিটি গঠন করা যেতে পারে। বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে মাতৃভূমির টানে এই মানুষগুলো নিশ্চয় সাড়া দেবেন। পরামর্শের পাশাপাশি তাঁদের হাত ধরে আসুক পাঠ্যপুস্তক। আন্তর্জাতিকমানের কারিকুলাম প্রণয়নে তাঁদের পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

একই সঙ্গে গবেষণায় যা পেয়েছে, যে অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে তাঁর আলোকে তাঁরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য গণিত, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা লিখবেন। ব্যবসা প্রশাসন ও কলাবিদ্যায় বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা গবেষক-শিক্ষকেরা পাঠ্যপুস্তক লিখবেন। প্রায় ভেঙে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বমানের হিসেবে গড়তে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের পরামর্শ ও নতুন নতুন আইডিয়াকে সন্নিবেশিত করা যেতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে ঠিক কোন কোন বিষয়গুলোতে হাত দিতে হবে তার একটি নির্দেশনা তৈরি করা যেতে পারে এবং সেই অনুযায়ী সরকার পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারে। গবেষণার দিক থেকে আমরা কীভাবে সাহস দেখিয়ে এগিয়ে যেতে পারি, তা নিয়ে বিস্তর পরিকল্পনা তৈরি করা যেতে পারে। আমরা যাঁরা গবেষণার সঙ্গে জড়িত এই কাজটি আমরা করে দিতে পারব।

বিশ্ব যেভাবে প্রযুক্তির দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই দিক থেকে আমরা আমরা এখনো শিশু। বিশেষ করে কৃত্রিম প্রযুক্তি ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো দেশ প্রযুক্তিগতভাবে প্রস্তুতি না রাখলে যেকোনো সময় বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।

ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে গোপন তথ্য নিরাপত্তায় প্রযুক্তিবিদদের সহায়তা যেমন প্রয়োজন তেমনি মেশিন ল্যানিং বিষয়ক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিভাগ স্থাপন সময়ের দাবি। আমাদের অনেক প্রবাসী আছেন, যাঁরা এই বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁদের কাজে লাগানো সরকারর বড় সফলতা হবে।

দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে

গত কয়েক দশক দেশে নানার ধরনের মেগা প্রকল্প হয়েছে। এই সব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের যেমন বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা রাখে তেমনি ভিনদেশি কোম্পানি কিংবা প্রকৌশলীদের ডিজাইনকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেনা হয়। অথচ আমাদের দেশের অনেক ছেলে-মেয়ে প্রবাসে বসে বড় বড় সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

দেশের প্রকৌশল বিদ্যা শেষ করে বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার পর বড় বড় কোম্পানিগুলো তাঁদের পরামর্শক কিংবা চাকরি দিচ্ছে যাঁরা ভিনদেশে রাস্তা-সেতু কিংবা শহরায়নে ভূমিকা রাখছে। আমাদের এই সব সোনার ছেলে-মেয়েদের দিয়ে দেশের বড় বড় রাস্তা, সেতু কিংবা আইকোনিক ট্রাওয়ার তৈরিতে তাঁদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।

অর্থনৈতিক বিনিয়োগ

প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। কিন্তু আফসোসের বিষয় দেশের শাসকগোষ্ঠীর দিনের পর দিন সেই টাকাগুলো রিভার্স করে ভিনদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। অনেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশের আবাসন খাতে ব্যয় করছে, নানার ধরনের ব্যবসা করছে। অথচ দেশে আমাদের তরুণেরা চাকরি না পেয়ে কোটা আন্দোলন করে শত শত প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চাই।

আমাদের অনেক প্রবাসী ভাই-বোন বিদেশেই বড় বড় কোম্পানি, প্রতিষ্ঠানের মালিক। দেশের নিরাপদ বিনিয়োগ ব্যবস্থা না থাকায় কিংবা ব্যবসার জন্য রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দেওয়ায় অনেক ভালো মনের ব্যবসায়ী দেশে বিনিয়োগ করতে চান না। যেহেতু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ অর্থনীতিবিদ, আমার মনে হয় প্রবাসী ব্যবসায়ীদের নিয়ে তাঁরা বসতে পারেন। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে, কীভাবে তাঁরা দেশে সুষ্ঠু বিনিয়োগ করতে পারে, ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারে সেই বিষয়ে যুগান্তরকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। সেইসব প্রবাসীদের হাত ধরে বিদেশিদের বিনিয়োগ কীভাবে আকৃষ্ট করা যেতে পারে তা নিয়ে কথা বলা যেমন জরুরি তেমনি তাঁদের প্রফেশনাল অ্যাম্বাসেডর করা যেতে পারে।

দূর প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার

কোভিডকালিন সময়ে দারুণ সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। শারীরিক উপস্থিতি না থাকলেও হাজার হাজার মাইল দূরে বসে ওয়ার্কফ্রম হোম কিংবা মিটিং করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। দূর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরামর্শ ও মিটিং করা সহজতর করেছে নানার ধরনের অ্যাপ ও সফটওয়্যার। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অভিজ্ঞ প্রবাসীদের জ্ঞান ও কাজলব্ধ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা যেতে পারে। এমনকি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরামর্শক হিসেবেও তাঁদের রাখা যেতে পারে।

আসুন সবাই মিলে দেশটাকে আমাদের স্বপ্নের মতো গড়ে তুলি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভুলে গিয়ে, দেশটাকে বসবাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শামিল হই। 

  • ড. নাদিম মাহমুদ  গবেষক, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।  nadim.ru@gmail.com