হাম ভাইরাসজনিত মারাত্মক একটি সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ অতি দ্রুত ছড়ায়। যেকোনো বয়সে হাম হতে পারে। তবে শিশুদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ, জটিলতা ও মৃত্যু বেশি দেখা যায়। জটিলতাগুলোর মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অপুষ্টি, এনকেফালাইটিস, অন্ধত্ব ও বধিরতা অন্যতম। হামের মতো রুবেলাও ভাইরাসজনিত অত্যন্ত সংক্রামক একটি রোগ। এটিও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। গর্ভবতী মায়েরা গর্ভের প্রথম তিন মাসে রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে মা থেকে গর্ভের শিশু আক্রান্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গর্ভপাত, এমনকি গর্ভের শিশুর মৃত্যু হতে পারে অথবা গর্ভজনিত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে শিশু জন্ম গ্রহণ করে, যা কনজেনিটাল রুবেলা সিনড্রোম নামে পরিচিত। এসব রোগ থেকে শিশুকে বাঁচানোর উপায় হচ্ছে সঠিক সময়ে তাকে টিকা দেওয়া।
এ রোগের প্রকোপ থেকে শিশুকে বাঁচানোর জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে নয় মাস বয়সী শিশুদের জন্য এক ডোজ এমআর টিকা যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি হাম দূরীকরণ ও রুবেলা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আগে হাম বা এমআর টিকা পেয়ে থাকলেও হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে নয় মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সব শিশুকে এক ডোজ এমআর (হাম-রুবেলা) টিকা দেওয়া হচ্ছে। গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিদ্যালয় পর্যায়ে চলেছে এ টিকাদান কার্যক্রম। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত টিকাদানকেন্দ্রে এমআর টিকা ও শূন্য থেকে ৫৯ মাস বয়সের সব শিশুকে দুই ফোঁটা পোলিও টিকা খাওয়ানো হচ্ছে। আসুন, শিশুবান্ধব এ কর্মসূচিতে সবাই এগিয়ে যাই। হাম-রুবেলা ও পোলিওমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।
শ্যামল চৌধুরী
স্বাস্থ্য পরিদর্শক, নেত্রকোনা।