প্রথম আলো গোলটেবিল

মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা মানসম্মত শিক্ষার ভিত্তি

>

গত ২০ জানুয়ারি ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা: মানসম্মত শিক্ষার ভিত্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* গবেষণার মাধ্যমে পঠনদক্ষতার মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে

* গবেষণার মাধ্যমে শিশুদের ভাষা শেখানোর উপযুক্ত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ঠিক করা দরকার

* বেশি করে পঠন–সহায়ক বই শিশুদের পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে

* শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে

* প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়াকে পুনর্বিবেচনা করা দরকার

* প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষাকে আরও আনন্দদায়ক করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন

* আইসিটির ব্যবহার বাড়িয়ে শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তোলা প্রয়োজন

* মাতৃভাষায় শিশুর পঠনদক্ষতা বাড়াতে পারিবারিক সচেতনতা ও সহযোগিতা অত্যাবশ্যক

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম: প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় শেখানো ও পড়ানো হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের শিক্ষার প্রধান ভাষা বাংলা হলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই এই ভাষায় পড়তে পারার কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা নেই। তাই আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার পর্যায় থেকে শিশুদের মাতৃভাষায় দক্ষ করে তুলতে হলে কী করা উচিত, তা নিয়ে আজকের আলোচনা। এখন আলোচনার সূচনা করবেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল: আমি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করছি, যার আওতায় আমাদের দেশের প্রায় সোয়া দুই কোটি শিক্ষার্থী আছে। আর আজ আলোচনার প্রতিপাদ্য তাদের নিয়েই। আশা করি এই আলোচনা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিখতে ও জানতে পারব, যা পরবর্তী সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারব।

মঞ্জুর আহমেদ

মঞ্জুর আহমেদ

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতি দুই বছর অন্তর একটি মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে, যেখানে দেখা হয় শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে বাংলা ও গণিত বিষয়ে কী শিখছে। যা শিখছে, তা কতটা দক্ষতার সঙ্গে শিখছে।

২০১৫ সালের মূল্যায়নে দেখা যায় যে বাংলা বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৩৫ শতাংশ এবং পঞ্চম শ্রেণির ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্ধারিত দক্ষতার চেয়ে পিছিয়ে আছে। আর গণিত বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণির ৫৯ শতাংশ এবং পঞ্চম শ্রেণির ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্ধারিত দক্ষতার চেয়ে পিছিয়ে আছে।

ফলে দেখা যাচ্ছে যে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ বাংলা ও গণিত বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।

কিন্তু গত বছরও আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ পাসের হার ছিল। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষ না হয়েও পরীক্ষায় পাস করে যাচ্ছে। ভালো ফলের পাশাপাশি তারা যেন ভাষা শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারে, সে িবষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।

বর্তমানে যেভাবে আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেটি তাদের মুখস্থের প্রবণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মূল্যায়নের পদ্ধতিকে বিদ্যালয়ভিত্তিক করতে হবে।

পঠনদক্ষতা হচ্ছে মৌলিক দক্ষতা, যা প্রতিটি শিক্ষার্থীর থাকা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হলে বাংলায় পড়তে পারার দক্ষতা বাড়াতে হবে। আর এটি করতে হলে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রম নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

শাহীন ইসলাম

শাহীন ইসলাম

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহায়তায় ইউএসএআইডির অর্থায়নে সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকে আমাদের দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য রিড নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। ২০১৩ সাল থেকে এ প্রকল্পটি ধাপে ধাপে বাংলা ভাষায় শিশুদের পঠনদক্ষতা বাড়াতে ৫১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করেছে। বর্তমানে ২১৫৬টি বিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করছে।

রিড প্রকল্পটি পড়ার পাঁচটি উপাদান নিয়ে কাজ করছে। ধ্বনিসচেতনতা, বর্ণজ্ঞান, শব্দভান্ডার, সাবলীলতা ও বোধগম্যতা। মূলত শিক্ষকদের শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় এ পাঁচটি উপাদানের অন্তর্ভুক্তি ও সমন্বিত কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য এ প্রকল্পটি কাজ করছে।

রিড প্রকল্পে আমরা যে বিদ্যালয়গুলোতে কাজ করছি, সেখানে উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি লক্ষ করেছি। রিড প্রকল্পের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকল্পের আওতাভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী নিজে পড়তে পারছে। ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা পড়ে বুঝতে পারছে। শিক্ষার্থীরা ৮৯ শতাংশ বহুল ব্যবহৃত বাংলা শব্দগুলো চিনতে পারছে।

কে এম এনামুল হক

কে এম এনামুল হক

আমরা এডুকেশন ওয়াচের একটি গবেষণায় দেখেছি যে পিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মঘণ্টার বাইরে বিভিন্ন কোচিং ও প্রাইভেট টিউটরের কাছে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ৪৯০ ঘণ্টার মতো পড়ছে। তার মানে আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিতে যে ঘাটতি রয়েছে, সেটি একধরনের ছায়া শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে।

সর্বজনীনভাবে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর যে অনুপাত রয়েছে, তা সুবিধাজনক নয়। ফলে আন্তরিকতা থাকলেও শিক্ষক ঠিকমতো পড়াতে পারছেন না।

আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পাঠাগারের প্রতি আকৃষ্ট করে তাদের মাঝে বই পড়ার প্রবণতা তৈরি করার চেষ্টা করা জরুরি। একটি শিশু যেন তার প্রাথমিক শিক্ষার পাঁচ বছরে অন্তত ১০০টি গল্পের বই পড়ে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

মো. মনোয়ার হোসেন খন্দকার

মো. মনোয়ার হোসেন খন্দকার

শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই—এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত। কিন্তু মাতৃভাষায় কীভাবে পঠনদক্ষতা বাড়ানো যায়, সেটি ঠিক করতে হলে এ বিষয়ে ভালো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।

আমরা ব্র্যাক থেকে দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সেভ দ্য চিলড্রেন, আহ্ছানিয়া মিশনসহ অনেক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের কাছে বিপুল পরিমাণে তথ্য–উপাত্ত সংগৃহীত ও সংরক্ষিত আছে।

এই তথ্য–উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে আমরা গবেষণার মাধ্যমে মাতৃভাষায় শিশুদের কীভাবে দক্ষ করে তোলা যায়, সেই পদ্ধতি ঠিক করতে পারি।


মো. আফজাল হোসেন সারওয়ার

মো. আফজাল হোসেন সারওয়ার

পঠনদক্ষতাকে আমি অনেকটা দৃষ্টিশক্তির মতোই মনে করি। আমরা যেমন কোনো বিষয় স্পষ্ট দেখতে না পেলে সেটি সম্পর্কে বুঝতে পারি না, ঠিক তেমনি আমাদের পঠনদক্ষতা যদি বোধগম্য পর্যায়ের না হয়, তাহলে আমরা কোনো বিষয় পড়ে স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারব না।

পঠনদক্ষতার বিষয়টিতে আমাদের প্রথম শ্রেণি থেকেই গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু প্রথম শ্রেণিতে কাঙ্ক্ষিত পঠনদক্ষতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়; তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনদক্ষতা অর্জন করতে পারে না। আমি মনে করি, পঠনদক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুর অনুশীলনের সুযোগ রাখতে হবে। এর জন্য আমাদের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সম্পূরক পঠন–উপকরণ শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নপদ্ধতি শিশুদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক কি না, সেটি বিবেচনা করতে হবে। আমাদের বর্তমান মূল্যায়নব্যবস্থা শিশুদের প্রকৃত দক্ষতা মূল্যায়ন করতে পারছে না বলে আমি মনে করি। এটি করতে হলে গঠনমূলক মূল্যায়নের ওপর জোর দিতে হবে।

কেট মেলনি

কেট মেলনি

পঠনদক্ষতার উন্নয়ন যে শুধু শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা নয়। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে লক্ষ্য বাংলাদেশ সরকার নির্ধারণ করেছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হলেও শিক্ষার্থীদের পঠনদক্ষতার উন্নতি সাধন করা জরুরি।

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে একটি শিশু প্রথম শ্রেণিতে কাঙ্ক্ষিত পঠনদক্ষতা অর্জন করতে না পারলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সে এটি অর্জন করতে পারে না। ফলে এ বিষয়টি তার ভবিষ্যৎ কর্মদক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে। কর্মক্ষেত্রে গিয়ে সে একটি বিষয় দ্রুত শিখতে পারবে না।

বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। আর এই মানবসম্পদের উন্নয়নপ্রক্রিয়াটি একটি শিশু বিদ্যালয়ে আসার প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়ে যায়। ফলে প্রথম শ্রেণি থেকেই শিশুর মানসম্মত শিক্ষার দিকে জোর দিতে হবে।

বিশ্বব্যাপী গবেষণায় আমরা দেখেছি, দক্ষতার সঙ্গে পড়তে পারা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে সেটি দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যও আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়, অর্থাৎ মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মো. হাবিবুর রহমান

মো. হাবিবুর রহমান

আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অনেকগুলো বিষয়ে শিশুদের পড়াতে হয়। সরকারের প্রণীত পাঠ্যক্রমানুসারে বর্তমানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ২৪টি আনুষ্ঠানিক বিষয় রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অনানুষ্ঠানিক বিষয় তো আছেই।

বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ই চার বা পাঁচজন শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। ফলে এই ২৪টি বিষয় পড়াতে গিয়ে দেখা যায়, একই শিক্ষককে কোনো শ্রেণিতে বাংলা পড়াতে হচ্ছে আবার কোনো শ্রেণিতে গণিত পড়াতে হচ্ছে। ফলে কোনো একজন শিক্ষক নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারছেন না। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষকদের নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষাদানের সুযোগ করে দেওয়া দরকার।

মাতৃভাষায় শিশুদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য ‘রিড’ প্রকল্পটি অত্যন্ত ইতিবাচক সুফল নিয়ে আসছে। এই প্রকল্পের আওতায় আমাদের বিদ্যালয়ে রিডিং কর্নার গঠন করা হয়েছে। এর ফলে শিশুদের মাঝে সাবলীলভাবে বাংলা পড়ার দক্ষতা তৈরি হচ্ছে।

শিশুরা যা শিখছে তা আমরা প্রতি তিন মাস পরপর মূল্যায়ন করছি। এই মূল্যায়নকে যথাযথভাবে নথিভুক্ত করে যেসব শিশু পিছিয়ে পড়ছে, তাদের চিহ্নিত করে তাদের প্রতি আলাদা যত্ন নিচ্ছি।

জ্যোতি আক্তার

জ্যোতি আক্তার

আমার দুই ছেলে। এদের একজন পঞ্চম শ্রেণিতে, আরেকজন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। বাংলা পঠনদক্ষতা দুই ছেলের দুই রকম। আমার বড় ছেলে যখন প্রথম শ্রেণিতে পড়েছে, তখন রিডের প্রকল্পটি শুরু হয়নি। ফলে তার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। কিন্তু আমার ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণি থেকেই রিড প্রকল্প পেয়েছে। ফলে সে এখন বাংলা পড়ায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে।

রিড প্রকল্পের মাধ্যমে মজার মজার গল্পের বই পড়ার মাধ্যমে আমার ছোট ছেলের জড়তা কেটে গেছে। বিভিন্ন গল্প পড়ে এবং কবিতা আবৃত্তি করার ফলে তার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে।

সে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কারও জিতেছে। আমার ছেলের মাঝে রিড প্রকল্পের সুফল প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ করেছি। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি শুরু করা দরকার।

সৈয়দা তাহমিনা আক্তার

সৈয়দা তাহমিনা আক্তার

মাতৃভাষায় পড়া বা লেখার দক্ষতা শিক্ষণপ্রক্রিয়ার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গেও জড়িত। কারণ, বিদ্যালয়গুলোতে গণিতসহ অন্য প্রায় সব বিষয়ই বাংলায় পড়ানো হয়ে থাকে।

বাংলা পড়া ও লেখায় শিশুদের দক্ষ করে তুলতে শিক্ষকদের অনেক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর সময় তাঁদের এই প্রশিক্ষণগুলোর সঠিক প্রয়োগ করতে পারেন না। এর প্রধান কারণ আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ঠিক নেই।

প্রথম শ্রেণিতে একটি শিশুকে বাংলা ভাষা শেখানোর সময় আমরা সাধারণত বর্ণানুক্রমিক শুরু করি। অর্থাৎ আমরা শিশুকে প্রথমে বর্ণ শেখাই, তারপর শব্দ শেখাই। কিন্তু অনেক সময় শব্দানুক্রমিক শুরু করলে অনেক সহজে এবং দ্রুত শিশুদের শেখানো যায়। শিশুদের ভাষা শেখানোর প্রক্রিয়াটি কার্যকর কি না, সে বিষয় নিয়ে আমাদের গবেষণা করে দেখা দরকার।

বিশেষ পদ্ধতিতে আমাদের পিছিয়ে পড়া শিশুদের ভাষাজ্ঞান বৃদ্ধি করা যেতে পারে। অর্থাৎ বাংলা পড়তে ও লিখতে গিয়ে যে শিশুটি অন্য শিশুদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছে, তাকে পৃথক ও নিবিড়ভাবে শিখিয়ে অন্য শিশুদের সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।

শাহ আলম

শাহ আলম

সেভ দ্য চিলড্রেনের রিড প্রকল্পের মাধ্যমে একটি গবেষণা হয়ে গেছে, যা থেকে আমরা কিছু ফলাফল ও কিছু সমস্যা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এবং চিহ্নিত সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ইউএসএআইডি এবং সেভ দ্য চিলড্রেন আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে যে বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করেছে, সে বিদ্যালয়গুলোতে আমরা ইতিমধ্যেই ভালো ফল পেতে শুরু করেছি। এখন এই প্রকল্পকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সারা দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যেতে হবে।

শুধু নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেই চলবে না, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সমন্বয়ে এই প্রকল্পকে কার্যকর করতে হবে। সব পক্ষের সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

বিদ্যালয়গুলোতে রিডিং কর্নার তৈরির পাশাপাশি আইসিটি ব্যবহার করে শিশুদের জন্য বই পড়াকে মজাদার করে তুলতে হবে।

আমরা সিসিমপুর প্রকল্পের মাধ্যমে টেলিভিশনমাধ্যম ব্যবহার করে শিশুদের মাঝে বই পড়াকে উৎসাহিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

হাবিবুর রহমান

হাবিবুর রহমান

একটি শিশুর মধ্যে মাতৃভাষার গাঁথুনি তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। ফলে শিশুর ভাষাগত দক্ষতা বাড়াতে হলে আমাদের পারিবারিকভাবেও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

শিশুদের পঠনদক্ষতা বাড়াতে হলে তারা যা পড়ছে, তা তাদের কাছে মজাদার ও আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে।

আমাদের প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত যে পাঠ্যবইগুলো পড়ানো হয়, তা শিশুদের জন্য সাবলীল ও মজাদার করে রচিত হয়নি। শিশুরা এই বইগুলো পড়তে আনন্দ পাচ্ছে না। আমাদের পাঠ্যবইগুলো ঢেলে সাজাতে হবে।

একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে আমাদের দেশের মাত্র ১৪ শতাংশ শিশু নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। এর একটি বড় কারণ হলো আমাদের পাঠ্যবইগুলোর দুর্বোধ্যতা এবং শিক্ষার্থীদের পঠনদক্ষতার অভাব। আমাদের বিজ্ঞান বইগুলো এমন জটিল ভাষায় লেখা যে শিক্ষার্থীদের কাছে তা সহজে বোধগম্য হচ্ছে না।

আমরা যদি আমাদের শ্রেণিকক্ষে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে একটি পঠনোপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে পারি, তাহলে শিশুরা নিজেরাই বই পড়ার দিকে আকৃষ্ট হয়ে উঠবে। এর জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণে সাবলীল ভাষায় রচিত বই।

নাজমুল হক

নাজমুল হক

শিশুর মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা বাড়ানোর জন্য তার জন্মের পর থেকেই তাকে ভাষার সঙ্গে পরিচিত করানো উচিত। একটি ৬ মাস বা ১ বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে যদি মা নিয়মিত মাতৃভাষায় কথা বলেন এবং তাকে বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকেন, তাহলে সেই শিশুটি তখন থেকেই মায়ের ভাষাটি বোঝার চেষ্টা করতে থাকে। আর আমাদের শিশুদের পঠনদক্ষতা কতটুকু হবে অর্থাৎ কোন শ্রেণির শিশু মিনিটে কতটি শব্দ পড়ে, তার অর্থ বুঝতে পারলে তাকে দক্ষ বলে গণ্য করা হবে, সেই মাপকাঠি আমাদের যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে।

প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকেরা সেই মাপকাঠি অনুসারেই শিশুদের পঠনদক্ষতার মূল্যায়ন করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকেরা যদি বই পড়ানোর সময় শিশুদের কাছে প্রতিটি বাক্য এবং প্রতিটি শব্দের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন, তাহলে সেটি শিশুদের জন্য বুঝতে সহজ হবে এবং তারা শব্দের সঙ্গে এবং বাক্য গঠনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে।

কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় সব পর্যায়ে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা প্রচলিত থাকার ফলে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা এই কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় ভালো ফলের দিকে মনোযোগ দেন। শিশু কতখানি দক্ষ হলো, সেই বিষয়ে তাঁরা কোনো চিন্তা করেন না।

ইফফত আরা নাসরিন মজিদ

ইফফত আরা নাসরিন মজিদ

বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা যে সফলতার গল্পগুলো শুনছি, তা শুধু প্রকল্পের আওতায় থাকা কিছু বিদ্যালয়ে, যেখানে প্রশিক্ষিত শিক্ষকেরা রয়েছেন সেখানকার চিত্র। কিন্তু সার্বিকভাবে গোটা বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চিত্র এক নয়।

একটি শ্রেণিতে ৫০ বা ৬০ জন শিক্ষার্থীর চাপের পাশাপাশি পরীক্ষার চাপের ফলে শিক্ষকেরা বাধ্য হয়ে শিক্ষার মানের চেয়ে পরীক্ষার ফলাফলের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। আমাদের দেশের বেশির ভাগ অভিভাবকের শিশুদের বাসায় পড়ানোর মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই।

ফলে শিশুদের বাসা থেকে যে সহায়তাটা পাওয়ার দরকার, সেটি পাচ্ছে না। আবার বিদ্যালয়ে বিভিন্ন চাপের কারণে শিক্ষকেরা শিক্ষার মানের প্রতি মনোযোগ দিতে পারছেন না। আর এর ফলে তাদের পঠনদক্ষতা এবং বোধগম্যতার ক্ষমতার ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। আর এটি তাদের উচ্চশিক্ষায় প্রভাব ফেলছে।

জীনাত ইমতিয়াজ আলী

জীনাত ইমতিয়াজ আলী

ভাষা শিক্ষার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বর্তমানে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক আধুনিক ও নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে।

আমাদের শিশুদের মাতৃভাষায় দক্ষ করে তুলতে হলে প্রথমে গবেষণার মাধ্যমে দক্ষতার একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। এই মানদণ্ড নির্ধারণের পর সেটি অর্জন করার লক্ষ্যে শিক্ষক, অভিভাবক, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মিলে সরকারকে কাজ করতে হবে।

শিশুদের ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই প্রমিত উচ্চারণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, ভাষার মূল উপাদান ধ্বনি। ধ্বনিগুলোকে নির্দেশ করা হয় বিভিন্ন বর্ণ দিয়ে। ফলে বর্ণ শেখানোর আগে শিশুদের ধ্বনি এবং ধ্বনির প্রমিত উচ্চারণের সঙ্গে পরিচিতি ঘটাতে হবে।

আর এই পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটি হলো আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য তাঁদের পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রশিক্ষণ দিতে হবে আর শ্রেণিকক্ষে সেই প্রশিক্ষণ কাজে লাগানোর জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ ও সময় দিতে হবে।

বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতিতে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে, সেই জন্য সরকার অবশ্যই প্রশংসার প্রাপ্য। তবে আমাদের আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা খাতে আমাদের বিনিয়োগ আরও অনেক বাড়াতে হবে। শিক্ষকদের যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পারিশ্রমিক প্রদান করা না হয়, তাহলে তিনি কখনোই শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানের দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন না। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমি আশা করি।

মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল

মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল

বর্তমানে আমাদের প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কেন্দ্র আছে, যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কেন্দ্রের শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ, যার মধ্যে ৪ লাখ সরকারি শিক্ষক রয়েছেন।

২০১০ সালে আমাদের দেশে অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। এ শিক্ষানীতিতে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩০ নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর এই অনুপাত খুব দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। ২০০৯ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষক নতুনভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আমরা তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) মাধ্যমে অনেকগুলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ধ্বনিসচেতনতা, বর্ণজ্ঞান এবং শিক্ষা–সহায়ক পঠন–উপকরণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।

প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য একটি উপযুক্ত প্রক্রিয়া আমাদের তৈরি করা প্রয়োজন। আর এটি তৈরি করতে মানসম্মত গবেষণার প্রয়োজন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গবেষণা সম্পর্কে সব সময় অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়ে এই গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি। এটিকে আরও বর্ধিত ও গতিশীল করা হবে।

আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বিস্তৃত পরিসরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার ইতিমধ্যেই আরও দুটি বড় প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে ৬৫ হাজার শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করছে। সারা দেশের সব পুরোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন মেরামতের জন্য ব্যাপক কর্মসূচির বাস্তবায়ন চলছে।

আমরা সফলতার সঙ্গে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে। টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আব্দুল কাইয়ুম: মাতৃভাষায় শিশুদের দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও ভূমিকা রয়েছে। প্রথম আলো সেই ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম আলো প্রতিবছর বর্ণমেলা নামে ভাষার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রথম অলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

যাঁরা অংশ নিলেন

মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল:মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), ডিরেক্টরেট অব প্রাইমারি এডুকেশন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

জীনাত ইমতিয়াজ আলী:মহাপরিচালক, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট

মঞ্জুর আহমেদ:ইমেরিটাস অধ্যাপক, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

সৈয়দা তাহমিনা আক্তার:অধ্যাপক ও পরিচালক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা িবশ্ববিদ্যালয়

ইফফত আরা নাসরিন মজিদ:অধ্যাপক, অাধুুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কেট মেলনি:টিম লিডার, শিক্ষা, ইউএসএআইডি

শাহীন ইসলাম:চিফ অব পার্টি (অ্যাক্টিং), রিড প্রকল্প, সেভ দ্য চিলড্রেন

নাজমুল হক:নির্বাহী সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ফোরাম ফর এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট                 

মো. আফজাল হোসেন সারওয়ার:পলিসি স্পেশালিস্ট, (এডুকেশন ইনোভেশন) অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন

কে এম এনামুল হক: ডেপুটি ডিরেক্টর, ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই)

হাবিবুর রহমান: সিনিয়র এডুকেশন অ্যাডভাইজার,সেভ দ্য চিলড্রেন

মো. মনোয়ার হোসেন খন্দকার:  হেড অব পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রজেক্টস,ব্র্যাক এডুকেশন প্রোগ্রাম, ব্র্যাক

শাহ আলম: কান্ট্রি ডিরেক্টর, সিসিমপুর

মো. হাবিবুর রহমান: সহকারী শিক্ষক, কাসুন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাগুরা সদর

জ্যোতি আক্তার: অভিভাবক, হরগজ, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো