>১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে এবং ইন্টারন্যাশনাল কোড কাউন্সিল, স্মার্ট ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স (এসডিই) ও রাজউকের সহযোগিতায় ‘বিল্ডিং কোড প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন কৌশল’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।
যাঁরা অংশ নিলেন
জামিলুর রেজা চৌধুরী: জাতীয় অধ্যাপক, উপাচার্য, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়
আবদুল লতিফ হেলালী: প্রকল্প পরিচালক, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, রাজউক
এস কে ঘোষ: টিম লিডার, প্রকল্প এস-৯, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রকল্প (ইউআরপি), সদস্য, ইন্টরন্যাশনাল কোড কাউন্সিল
এফ আর খান: ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড
স্বর্ণা কাজী: সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট, টাস্ক টিম লিডার, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ঢাকা অফিস
খান মাহমুদ আমানত: অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
মোহাম্মদ আবু সাদেক: নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ (এইচবিআরসি)
তানভীরুল হক প্রবাল: সাবেক সভাপতি, রিহ্যাব, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বিল্ডিং ফর ফিউচার
জালাল আহমেদ: সভাপতি, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি)
আলী আহম্মদ খান: সাবেক মহাপরিচালক, ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্স
সালমা এ শাফি: আর্কিটেক্ট প্ল্যানার, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ
মো. এমদাদুল ইসলাম: সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার, রাজউক
সুমায়া ইসলাম: ফাউন্ডার অ্যান্ড প্রিন্সিপাল আর্কিটেক্ট, ক্রিয়েটো ডিজাইন রিসার্চ ল্যাব
ধন্যবাদ জ্ঞাপন
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো
সঞ্চালক
ফিরোজ চৌধুরী: সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো
আলোচনায় সুপারিশ
• ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে
• অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের প্রমাণস্বরূপ ভবনের সামনে একটি করে কিউআর কোড টাঙাতে হবে
• রাজউক অথবা গণপূর্ত বিভাগ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষা–পরবর্তী সনদ প্রদান করবে
• ভবন নির্মাণকারীদের নির্মাণ বিধিমালার প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে মেনে চলা জরুরি
• নির্মাণবিধির নতুন কোড দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে
• অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক আছে কি না, সেটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করা প্রয়োজন
• প্রকৌশল শিক্ষার ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন
• প্রত্যেক ভবনমালিকের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে
• ভবন নির্মাণের সময় নিয়ম অনুযায়ী জায়গা ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি
• ভবন নির্মাণের সময় সঠিকভাবে তদারক করা প্রয়োজন
আলোচনা
ফিরোজ চৌধুরী
আমাদের রাজধানী ঢাকা মহানগর পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। সঠিকভাবে বিল্ডিং কোড প্রয়োগ করতে পারলে ঢাকাকে আরও সুন্দর নগর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। শুধু ঢাকা নয়, অন্যান্য শহরও বিল্ডিং কোডের আওতাভুক্ত। আজকের আলোচনার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক সমাধান আসবে বলে আশা করি। এ বিষয়ে এখন আলোচনার সূত্রপাত করবেন জামিলুর রেজা চৌধুরী।
জামিলুর রেজা চৌধুরী
আমাদের বিল্ডিং কোডের নাম বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)। সুতরাং এই কোড শুধু ঢাকায় প্রয়োগের জন্য নয়, বরং সারা দেশেই এই কোড প্রয়োগ করে ভবন নির্মাণ করতে হবে।
তাই কোড প্রয়োগের কৌশল শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে ছোট শহর, এমনকি গ্রামেও ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। কারণ, বর্তমান সময়ে গ্রামেও অনেক উঁচু ভবন নির্মিত হচ্ছে।
আমাদের দেশে এখনো ১৯৯৩ সালের বিএনবিসি অনুসরণ করে বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে। একটি দেশ ২৬ বছর যাবৎ একই বিল্ডিং কোড সরকারিভাবে ব্যবহার করছে।
২০১৭ সালের আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশ করার প্রক্রিয়া চলছে। ২০২০ সালে এটি চূড়ান্ত করা হতে পারে। এটা আশার আলোও বটে। এটি গেজেটে খুব দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। বিল্ডিং কোড প্রণয়ন তো করা হলো, এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো এই কোড বাস্তবায়ন করা। সরকার বিল্ডিং কোড প্রয়োগ করেছে; কিন্তু কে এটাকে বাস্তবায়ন করবে, সেটাই মূল ভাবনার বিষয়। সে জন্য বাংলাদেশ রেগুলেটরি অথরিটিকে (বিআরএ) শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
এস কে ঘোষ
১৯৯৩ সালের বিল্ডিং কোডের এখন অনেক কিছুই বদলে গেছে। যেসব নথিপত্রের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৩ সালের কোড প্রণয়ন করা হয়েছিল, তার অনেকগুলোরই কখনো ৭টি, কখনো ১০টি করে সংস্করণ বের হয়ে গেছে।
সবাই কোড মেনে চলছে কি না, সেটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নতুন কোড হলে বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি দ্রুত তৈরি করতে হবে।
নিকট ভবিষ্যতে রাজউকের এলাকায় রাজউকই কোড প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বাস্তবায়ন কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেদিকে জোর দেওয়া।
বাস্তবায়নের দুটি অংশ আছে। ভবনের নকশা অবশ্যই কোড মেনে করতে হবে এবং ভবন নির্মাণ শেষে নিরীক্ষকদের কাছ থেকে একটি অকুপেন্সি (দখলিস্বত্ব) সনদ নিতে হবে।
রাজউকের নিরীক্ষা শুধু স্থাপত্যবিষয়ক, গঠনগত নয়। রাজউকের এলাকায় বেশির ভাগ ভবন অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেয় না। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সনদ ছাড়া কোনো বাড়ি ক্রয় করা, ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করা যেন সম্ভব না হয়, সেটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
রাজউককে তৃতীয় পক্ষ পর্যবেক্ষক হিসেবে এ বিষয়গুলো কঠোরভাবে দেখতে হবে। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট ছাড়া বাড়ি ক্রয় ও বিক্রয়—দুটোই
অবৈধ। এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাড়ানো দরকার।
এফ আর খান
একজন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) আমরা মেনে চলি। বিএনবিসিতে কী বলা আছে এবং এগুলো মানলে কী ধরনের সুরক্ষা বা সুবিধা পাওয়া যাবে, সেটি অনেকেই জানে না।
অনেকে মনে করে, এই কোড এড়িয়ে গেলে ভবন নির্মাণে খরচ কমে আসবে। বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটির ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের নজরদারি প্রয়োজন।
এই তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কয়েকটি ফার্ম, কয়েকটি সংস্থা অথবা রাজউকের অন্তর্ভুক্ত কিছু সংগঠন এখানে থাকতে পারে। তাদের স্থাপত্যবিদ্যার চর্চা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা ও কোনো বিষয়ে দ্বিমত থাকলে সেটা সমাধান করার ক্ষমতাও তাদের থাকবে।
তাদের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে। বিএনবিসি ব্যবহারকারীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে একটি র্যাঙ্কিংও থাকা উচিত। সেটা ব্যক্তি নির্মাণকারী বা কোনো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান—সবার জন্যই।
মোহাম্মদ আবু সাদেক
বিল্ডিং কোড বিধিমালা বাস্তবায়নে আমাদের কোনো বাস্তবায়ন নীতিমালা নেই। যেগুলো আছে, সেগুলো অনেকটাই অসংগত নীতিমালা। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমরা ২০০৮ সালের বিধিমালা অনুসরণ করি। সারা দেশে অনুসরণ করা হয় ১৯৯৬ সালের বিধিমালা।
ঢাকার বাইরে বহু জায়গায়, এমনকি বিভাগীয় সদর দপ্তরের পেশাদার ব্যক্তিরাও কোন বিধিমালাটি বৈধ এবং কোন বিধিমালা তাঁরা অনুসরণ করবেন, সেটি জানেন না।
১৯৯৬ সালের বিধিমালা অনুসারে একজন ব্যক্তি ১২ ফুট রাস্তা রেখে বাড়ি তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু ২০০৮ সালের বিধিমালা অনুসরণ করে ২০ ফুট রাস্তা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে দুই দিক থেকে রাস্তা ছাড়তে হবে, না হলে বাড়ির পরিকল্পনা অনুমোদিত হবে না।
সে ক্ষেত্রে এ ধরনের বিধিমালায় অভিন্নতা থাকা অবশ্যই জরুরি। সারা দেশে বিল্ডিং কোডের একই বিধিমালা প্রয়োগ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজউকের দায়িত্ব হলো ঢাকায় বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন করা।
রাজউক হলো ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। একটি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কখনো রেগুলেটরি অথরিটিতে পরিণত হতে পারে না।
সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ (রেগুলেটরি অথরিটি) না হলে এ প্রবিধান তৈরি বা বাস্তবায়ন—কোনোটাই সম্ভব হবে না।
সুতরাং আমাদের সঠিক নীতিমালা অনুসরণ করে সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজউক নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, না উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে, সেটা নির্ধারণ করতে হবে।
সঠিকভাবে গঠনগত নকশা, ইলেকট্রোমেকানিক্যাল নকশা রাজউক বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে জমা নিতে হবে। সেই সঙ্গে তৃতীয় পক্ষকে সেগুলো পরীক্ষা করতে হবে। তবেই বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
সালমা এ শাফি
২০১১-১২ সালে ‘মিউনিসিপ্যাল সার্ভিসেস প্ল্যানিং’ নামে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে বেশ কিছু শহর, যেমন ফেনী, চান্দিনা, দাউদকান্দিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল।
বিল্ডিং অ্যান্ড প্ল্যানিংয়ে তারা কী ধরনের পরিকল্পনা দেয় ও অনুমোদন করে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে ১০-১২ তলা ভবনও হয় এবং সেই পরিকল্পনা অনুমোদন করেন একজন চেয়ারম্যান বা মেয়র। তাঁর সঙ্গে থাকা একজন স্থপতি পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করে দিতেন।
২০০৯ সালের বিধিমালায় আমরা সিটি করপোরেশন আইন ও পৌরসভা আইনের ভালো বাস্তবায়ন দেখেছি। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের আইনে ২০০৯ সালের বিধিমালা প্রয়োগ করা হয়।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের বিধিমালার প্রয়োজনীয় অংশগুলো বাংলা করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। তবেই দ্রুত এই কোডের বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
কারণ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড শুধু শহরের জন্য নয়, সারা দেশের জন্য। আবার সারা দেশের ভূমির গঠন এক রকম নয়। কোথাও পাহাড়, কোথাও সমতল অথবা কোথাও প্লাবনভূমি। এই কোড যেখানে যেমন দরকার, সেভাবে প্রয়োগ করতে হবে। সেই সঙ্গে জনগণের কাছেও প্রচার করা দরকার।
সুমায়া ইসলাম
বিএনবিসি বিধিমালায় সবকিছু সুন্দরভাবে লেখা আছে। এখন এই বিধিমালা বাস্তবায়নে কী পরিমাণ ত্রুটি আছে, সেটি নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। দেখা যায় আমার বয়োজ্যেষ্ঠ যাঁরা আছেন, তাঁরা যেভাবে অনুশীলন করছেন, আমিও সেভাবেই এগোচ্ছি। সে ক্ষেত্রে তাঁদের অনুসরণ করা ছাড়া আসলেই কিছু করার থাকে না।
নকশা করার পর সেটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভবনমালিকের হস্তক্ষেপ থাকে। ভবনমালিক যদি ক্ষমতাবান হন, তবে নকশায় অনেক পরিবর্তন আসে।
রাজউকের এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশিকা আছে কি না, সেটি দেখা দরকার। নির্মাণকাজ করার পেছনে আমাদের একটি সময়সীমা থাকে। কাজ শুরু করার আগে কর্মপরিকল্পনা করতে হয়।
এ কর্মপরিকল্পনায় আমাদের সবকিছু দেখতে হয়, যেমন প্লাম্বিং, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, সিভিল—সব কটি স্তরেই নকশা করতে হয়। আবার মালিকের সময়সীমা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে না পারলে সেখানে একধরনের মতবিরোধ দেখা দেয়।
বিল্ডিং নকশার একটা নিয়ম আছে। পাঁচ বছরের মধ্যে নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মিত না হলে সেটা বাতিল হয়ে যাবে।
আমাদের দেশে আগুন লাগলে তাপে যে মৃত্যু হয়, তার থেকে বেশি মৃত্যু হয় ধোঁয়ায়। সে ক্ষেত্রে মেকানিক্যাল স্মোক ভেন্টিলেশন পদ্ধতিটি আমাদের জানা দরকার। আমাদের যত উঁচু ভবন হচ্ছে, সেখানে এই মেকানিক্যাল স্মোক ভেন্টিলেশন সিস্টেম আছে কি না, সেটি যাচাই করতে হবে। এই জায়গাগুলোতে যাঁরা ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আছেন, তাঁদের এদিকে নজর দিতে হবে।
জালাল আহমেদ
যেকোনো বিল্ডিং কোডের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বর্তমান বিল্ডিং কোড বিধিমালাটি পরবর্তী সময়ে বাস্তবায়ন করাই মূল লক্ষ্য।
বর্তমান সংস্করণটি সারা দেশের জন্যই প্রয়োগযোগ্য করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিতে হবে। ২০০৬ সালে যে বিএনবিসি করা হয়েছিল, সেটি থেকে আংশিক নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের নির্মাণ বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে।
সারা দেশের জন্য নতুন করে কোনো বিধিমালা তৈরি করতে হলে আগের বিধিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করতে হবে।
রাজউকে তিনটি পর্যায়ে ভবনের নকশা অনুমোদন করা হয়। এক. নকশা তদারক, দুই. পরিদর্শন, তিন. প্রত্যয়ন। নকশা তদারকের ক্ষেত্রে যে কর্মকর্তারা যুক্ত থাকেন, তাঁরা বিধিমালাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য থাকে না। এ জন্য প্রায় সময়ই ভবনের নকশা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না। কারণ, নিরীক্ষা ঠিকভাবে হচ্ছে না।
নিরীক্ষকেরা অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। বিএনবিসি যে রকমই থাকুক না কেন, সেটার প্রয়োগ ঠিকভাবে হচ্ছে না। বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি করা হলে তার মূল কাজ হওয়া উচিত কোড প্রয়োগ করার ব্যাপারে কঠোর হওয়া এবং সেটাকে বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করা। ভবনের কর্মকর্তা, স্থাপতি, নির্মাতাসহ সবার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।
বিল্ডিং কোড কোনো স্থির বিষয় নয়। এটাকে প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করতে হবে। বাজারে যেসব নির্মাণসামগ্রী আছে, সেগুলোর ব্যবহারও ঠিকভাবে করতে হবে।
তানভীরুল হক প্রবাল
অকুপেন্সি সার্টিফিকেট না দিলে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি সংযোগ দেওয়া উচিত নয়। এই সনদের সঙ্গে নিবন্ধন আটকে থাকতে পারে কিন্তু একটি ভবন চালু করতে গেলে এই অকুপেন্সি সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
আর যেসব নিরীক্ষক অকুপেন্সি সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে একটি অকুপেন্সি সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয়, তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে সেটি জানেন না। একজন স্থপতি তাঁর নকশায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই তাঁরা আর অকুপেন্সি সার্টিফিকেট প্রদান করেন না। প্রায় প্রতিটি ডেভেলপারই এই সমস্যায় ভুগছে। বিল্ডিং কোড প্রয়োগ করতে গেলে অবশ্যই ডেভেলপার, কনট্রাক্টর, ডিজাইনার—সবাইকে নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করতে হবে।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের পেশাদারদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করতে হবে। রাজউক যেহেতু ভূমি উন্নয়ন ও নির্মাণের সঙ্গে জড়িত, এ জন্য তার পক্ষে আবার তদারক করা সম্ভব নয়। তাই একটি আলাদা কর্তৃপক্ষের দরকার আছে, যাদের কাজ হবে শুধু নির্মাণকাজ তদারক করা।
বিল্ডিং কোড ও সব ধরনের বিধিবিধান মেনে একটি ভবন নির্মাণ করার পর সেটি অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যায়। আবার সঠিক বিধিবিধান না মেনে ভবন তৈরি করার পর খরচ কম হওয়ার কারণে সেটি আগে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনটা ভালো ও কোনটা খারাপ, সেটা চিহ্নিত করা জরুরি।
আলী আহম্মদ খান
আমাদের নগরায়ণ বা শিল্পায়ন হচ্ছে অপরিকল্পিত। কোনো রকম বিল্ডিং কোড মানা ছাড়াই ভবন নির্মিত হচ্ছে। ফলে ঝুঁকির মাত্রাও বাড়ছে।
শহুরে বিপর্যয় দেখা দেওয়ার ফলে প্রচুর অরক্ষিত বৈদ্যুতিক তারের ব্যবহার, তড়িৎ–সামগ্রীর ব্যবহার, এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে।
কোনো ধরনের জরুরি অবস্থায় আমাদের যেন বড় ধরনের ক্ষতি না হয়, সেভাবেই কোড করা হয়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। যত ধরনের দুর্যোগ হচ্ছে, সেগুলো কিন্তু কোড ভঙ্গ করার কারণেই হচ্ছে।
বিভিন্ন কোড, যেমন ইলেকট্রোমেকানিক্যাল, অগ্নিনিরাপত্তাজনিত ইত্যাদি কোডগুলোতে কোনো রকম অসংগতি আছে কি না, সেটি দেখতে হবে। মালিক নিজের মতো করে রাজউক থেকে অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারছে না।
আমাদের দেখতে হবে কোডের মধ্যে কোনো ধরনের অসংগতি আছে কি না। আর সব প্রক্রিয়া দেখভাল করার জন্য আলাদাভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে।
যেমন রাজউক কী দেখবে, অগ্নিনিরাপত্তার দিকটি কে দেখবে, এটার দায়িত্বটা ভাগ করে দিতে হবে। সবার যদি এক দায়িত্ব হয়, তাহলে কোনোটাই ভালোভাবে পালন হবে না। এটা একটা বড় সমস্যা।
যে দালানগুলো নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে, সেগুলোতে শূন্যসহনশীলতার পর্যায়ে থাকতে হবে। আর কোড বাস্তবায়নের জন্য সব নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থাসহ সবাইকে জোরালো ও শক্তিশালী হতে হবে।
সব নিয়ম ও লিখিত আইনগুলোর অসংগতি দূর করতে হবে। একটি বাড়ি নির্মাণ কমিটি থাকতে হবে, সেখানে তারা সব নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে আইনগুলোর সামঞ্জস্য ঘটাবে এবং আইনের সংশোধন করবে।
পেশাদার তৃতীয় পক্ষকে আস্থাভাজন হতে হবে। ভবন ব্যবহারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো খুবই জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে এই বিধিমালা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
স্থপতিদের বা নকশাকারদের পেশাদারি বাড়াতে হবে। আমরা এখন ধীরে ধীরে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছি। তাই টেকসই উন্নয়নের জন্য এই কোডগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি।
মো. এমদাদুল ইসলাম
বিল্ডিং কোড প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি বিষয়। রাজউক ডেভেলপমেন্ট, না রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ, সেটি একটি বিতর্কের বিষয়। দুটি মাস্টারপ্ল্যান ঢাকা মহানগর উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) ও সিটি রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানেও (সিআরডিপিতে) বলা হয়েছে রাজউকের কাছ থেকে উন্নয়ন অংশটি সরিয়ে ফেলার জন্য।
রাজউকে পরিকল্পনার বিষয়টি এখনো পেছনে পড়ে আছে। রাজউকে এখন সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে উন্নয়ন, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ ও পরিকল্পনার বিষয়ে।
১৯৯৩ সালে বিধিমালা করা হলেও সেটি জারি করা হয়নি। ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে অনেক ইমারতধসের ঘটনার পরই মূলত বিল্ডিং কোড প্রণয়নের বিষয়টি সবার নজরে আসে।
২০০৬ সালের বিল্ডিং কোড বিধিমালার একটি ত্রুটি হলো, সেখানে রাজউকের প্রশাসনিক দিক এবং বাস্তবায়নের দিকটি আলাদা করা নেই।
২০১০ সালে বুয়েটকে দায়িত্ব দেওয়া হয় এটা হালনাগাদ করার জন্য। সারা বিশ্বে প্রতিবছর কোড হালনাগাদ হয়। আমরা সেদিক থেকে পিছিয়ে আছি।
বিশ্বব্যাংক ইউআরপি প্রজেক্টের মাধ্যমে বিএনবিসি প্রয়োগে আমাদের সাহায্য করেছে। সারা দেশে অনতিবিলম্বে একটি রেগুলেটরি কমিটি হওয়া দরকার ও উপযুক্ত অথরাইজড কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া দরকার।
কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা অনুসারে কাজের ক্ষেত্র ভাগ করে দিতে হবে। ইমারত নির্মাণ আইনটি দ্রুত সংশোধন করা উচিত। রাজউকের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে আরও শক্তিশালী করা দরকার।
একটি ভবন ইমারত কোড মেনে হয়েছে কি না, সেটা শ্রেণিবিন্যাস করার জন্য প্রতিটা ইমারতে লাল, হলুদ, সবুজ রঙের স্টিকার লাগিয়ে দিতে হবে। এতে মানুষ বুঝতে পারবে কোনটা বিপজ্জনক, কোনটা সুরক্ষিত।
স্বর্ণা কাজী
একটি টেকসই ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ফল কী হবে, নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হলে কী কী কাজ করা সম্ভব হবে, সেটা নীতিনির্ধারকদের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক ক্ষেত্রে কঠিন।
বিশেষ করে নগরায়ণ পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই জটিলতা দেখা দেয়। এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। এখন জলবায়ু পরিবর্তন এ জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাসের জন্য বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন অনেক জরুরি।
বাংলাদেশে ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা কীভাবে নিশ্চিত করা হয় এবং কোনটি আসলেই নিরাপদ, সেটি দেখার বিষয়। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ সরকার ও রাজউক অনেক দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করছে। আমি তাদের সে জন্য ধন্যবাদ জানাই।
খান মাহমুদ আমানত
রাজউক বা অন্যান্য সিটি করপোরেশনের স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে। বারবার রাজউকের কথা বলার আগে আমাদের প্রথমে চিন্তা করা উচিত সারা দেশ নিয়ে।
বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি সারা বাংলাদেশের জন্য গঠন করতে হবে। প্রতি জেলায় এর একটি করে অফিস বা শাখা থাকবে। সারা দেশের সব নির্মাণ তারা দেখভাল ও নিরীক্ষা করবে। তখন রাজউক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ সঠিকভাবে করতে পারবে।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিল্ডিং কোডের প্রয়োগ কয়েকটি ধাপে হতে পারে। প্রথমেই নকশা পর্যায়ে হতে হবে। যাঁরা ভবনের নকশা করছেন, তাঁরা কোড সম্পর্কে অবগত কি না বা সেটা তাঁর নকশায় বাস্তবায়ন করেছেন কি না, তা যাচাই করতে হবে।
রেগুলেটরি অথরিটিই হোক বা আউটসোর্স করা কোনো এজেন্সিই হোক, নকশার বিষয়টিতে তাদের একটা সনদ প্রদান করতে হবে যে এই নকশা কোড মেনে করা হয়েছে।
আমাদের দেশে ভবন নির্মাণ পদ্ধতির ব্যাপারে কোথাও সে রকম বলা নেই। যেকোনো জায়গায় যেকোনো ভবন উঠছে।
জমি থাকলেই সেখানে রাজমিস্ত্রি দিয়ে বাড়ি বানানো যায় না। একটি ভবন অবশ্যই একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ঠিকাদার দিয়ে তৈরি করা উচিত।
বাড়ির উচ্চতার ক্ষেত্রে কোড মেনে চলতে হবে। আর যে ঠিকাদার দিয়ে বাড়ি তৈরি করা হবে, তার বিল্ডিং কোড সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে কি না, সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে।
অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের মেয়াদ আজীবন রাখা যাবে না। একে একটি সময়সীমার মধ্যে আনতে হবে। সাধারণত ভবন ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন দিকে কিছু পরিবর্তন আসে।
আবদুল লতিফ হেলালী
২০১১ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আর্থকোয়েক রিজিলিয়েন্স ওয়ান ও টু নামে দুটি কারিগরি সহযোগিতামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের ফলে মূলত বিল্ডিং কোড নিয়ে কথা হয়েছে।বিল্ডিং কোড সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে ৮০ শতাংশ সমস্যার সমাধান হবে।
আরবান রিজিলিয়েন্স প্রকল্পের সার্বিক উদ্দেশ্য হলো নির্মাণকাজের আরও উন্নতি সাধন করা।
ইউআরপি প্রকল্পের ৪টি অংশ, রাজউক, ঢাকা সিটি করপোরেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং মনিটরিং। আরবান রিজিলিয়েন্সে রাজউক অংশের ছয়টি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের একটি হলো ভালনারেবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট অব ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এসেনশিয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার যেমন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাংলাদেশ ব্যাংক, এয়ারপোর্ট, ইলেকট্রিসিটি বিল্ডিং, টিঅ্যান্ডটি বিল্ডিং, পুলিশ স্টেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স—এই প্যাকেজের ভেতরে সারা ঢাকা শহরের পাঁচ হাজার বিল্ডিং অ্যাসেসমেন্টের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
ভূমিকম্পপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। আগের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে ভূমিকম্প ঝুঁকির ব্যাপারটি দেখা
হয়নি।
আমরা সারা ঢাকা শহরের মাটি পরীক্ষার কাজটি করছি। মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরামর্শকেরা মাইক্রো জোন মানচিত্র তৈরি করবেন। এই মানচিত্র আমাদের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিকল্পনায় বাস্তবায়িত হবে।
এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে বিনবিসির বাধ্যতামূলক প্রয়োগ চালু হবে। বিএনবিসি প্রয়োগ নিয়ে দেশি–বিদেশি পরামর্শক কাজ করছেন এবং যত দ্রুত সম্ভব তাঁরা একটি প্রয়োগ কৌশল প্রদান করবেন। এটা সারা বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে।
আব্দুল কাইয়ুম
আমাদের ভবিষ্যতের দিকে সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়া দরকার। বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বাড়ি নির্মাণকারীদের সনদের আওতায় আনতে হবে।
ইতিমধ্যে পুরোনো নিয়মে যাঁরা বাড়ি করেছেন, তাঁদের কিছু সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এসব সমস্যার কীভাবে সমাধান করা যায়, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
পুরোনো নিয়মের সঙ্গে নতুন নিয়মের সামঞ্জস্যের বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনায় নিতে হবে। সবার সুবিধার কথা চিন্তা করেই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।