নয়াদিল্লির নতুন সরকার বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যেখানে আছে সেখান থেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়৷ ঢাকা সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ অভিমত প্রকাশ করেন৷ এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত প্রটোকল, ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’, বািণজ্য বৈষম্য, ট্রানজিট ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, ভারতে ক্ষমতার পালাবদল, বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ইত্যাদি৷ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও রাহীদ এজাজ
প্রথম আলো আপনার মতে বাংলাদেশ সফরের প্রাপ্তি কী?
সুষমা স্বরাজ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এটাই আমার প্রথম বিদেশ সফর৷ আমি ভারতের নবনির্বাচিত সরকারের তরফ থেকে বন্ধুত্বের বারতা নিয়ে এসেছিলাম৷ এ সফরে আমি বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি৷ বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে আমার আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে৷ আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আমাদের আলোচনা হয়েছে, এ আলোচনা থেকে আমরা ভবিষ্যৎ সহযোগিতার িভত রচনা করতে পারি৷ আমাদের আলোচনার ভিত্তিতে দুই দেশের বাণিজ্য, সংযোগ, বিদ্যুৎ খাতের সহযোগিতা ও জনগণের সঙ্গে জনগণের আরও যোগাযোগ বাড়বে বলে আশা করছি৷
আমার মনে হয়, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুণগত পরিবর্তন আনার সময় এসেছে৷ আমরা এ অঞ্চলে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হই, সে প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতা আরও দৃঢ় হওয়া উচিত: দারিদ্র্য দূরীকরণ, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, সন্ত্রাস, চরমপন্থা ও মৌলবাদ মোকাবিলায়৷
প্রথম আলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ কিছু অগ্রগতি হলেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ও সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়ন এখনো হয়নি৷ গত ইউপিএ সরকারের দোদুল্যমান রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে তা হয়েছে৷ কেন্দ্রে এবার বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে৷ বাংলাদেশ কি তাহলে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান আশা করতে পারে?
সুষমা স্বরাজ ভারতের বিগত সরকারের আমলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যে জায়গায় ছিল, আমরা সেটাকে শুধু বজায় রাখতে চাই তা নয়, সেটাকে আমরা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই৷ তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে আমরা আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ ঐকমত্য গড়ে তুলতে চাইছি৷ স্থল সীমানা চুক্তি করার জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধনীর জন্য রাজ্যসভায় বিল পেশ করা হয়েছে৷ এ মর্মে রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্যও আলোচনা হচ্ছে৷
প্রথম আলো লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় বিজেপি ভারতে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে খুব সোচ্চার ছিল৷ বিজেপির নেতারা এখনো এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন৷ অন্যদিকে, বিজেপি সরকার ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী৷ এটা কি স্ববিরোধিতা নয়? এ ক্ষেত্রে কোনো একটি দেশ যদি তার প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে এরূপ কঠোর অবস্থান নেয়, তাহলে কি তা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না?
সুষমা স্বরাজ অবৈধ অভিবাসন যেকোনো দেশের জন্যই খুবই স্পর্শকাতর একটি সমস্যা, খুব সতর্কতার সঙ্গে এটা সামলানো উচিত৷ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এ সমস্যা মোকাবিলা করতে চাই৷ এর মধ্য দিয়ে সীমান্তের উন্নততর ব্যবস্থাপনার দিকটিও উঠে এসেছে, এটা নিশ্চিত করা উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব৷ যে কয়টি দেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গেই তার সীমান্ত দীর্ঘতম৷ এ সীমান্ত নিশ্ছিদ্র নয়৷ এ সীমান্তে বসবাসকারী মানুষ দরিদ্র, পুরো এলাকা খুবই ঘনবসতিপূর্ণ৷ সে কারণে এখানে অনেক অবৈধ কাজ হয়৷ আমরা মনে করি, ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা একই সূত্রে গাঁথা৷ দুই দেশেরই উচিত একত্রে কাজ করে সীমান্ত এলাকায় এসব অবৈধ কাজের রাশ টেনে ধরা৷ নিরাপদ হলেই আমাদের সীমান্ত এলাকা সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে, তার জন্য আইনের শাসন জোরদার করতে হবে৷ অসহায় ও নির্দোষ মানুষদের বিবেকহীন কাজের শিকার হতে দেওয়া যাবে না৷
প্রথম আলো অনেকের মতে, ভারত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছে, কিন্তু প্রতিদানে তেমন কিছু দেয়নি৷ এ সম্পর্ক ছিল মূলত একপক্ষীয়৷ আপনার বক্তব্য কী?
সুষমা স্বরাজ এ ধারণা ঠিক নয়৷ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক দ্বিমুখী সড়ক৷
আমাদের সম্পর্কের কিছু ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি হয়েছে৷ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই আমরা এগিয়েছি৷ বাণিজ্য, বাজার সুবিধা, বিদ্যুৎ, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন সহযোগিতা, অবকাঠামো, তরুণদেরসহ দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক, সংবাদকর্মীদের মধ্যকার যোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমরা নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছি৷ কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা যাক:
প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নত করেছি: সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, বন্দী বিনিময় চুক্তি, সীমান্ত হাট স্থাপন, ডিসি/ডিএম পর্যায়ের আলোচনা পুনরায় শুরু, সীমান্ত অবকাঠামোব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি৷
বাণিজ্য-ঘাটতি মোকাবিলায় ২৫টি পণ্য ছাড়া আর সব বাংলাদেশি পণ্যের জন্য ভারতীয় বাজার উন্মুক্ত করা হয়েছে৷ গত বছর বাংলাদেশ ভারতে রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি করেছে৷ আর ভারতীয় বিনিয়োগের জন্যও বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হয়ে উঠছে৷
বাণিজ্য অবকাঠামোয় সুনির্দিষ্ট উন্নতি হয়েছে৷ নতুন যৌথ চেকপোস্ট গড়ে তোলা হচ্ছে৷
নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে সড়ক ও রেল ট্রানজিটের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর-সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে৷
বাংলাদেশকে দেওয়া এক বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণের আওতায় ১৫টিসহ আরও নানা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে৷ এর মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ঋণ সাহায্যে রূপান্তরিত হয়েছে৷
সামাজিক ক্ষেত্র, যেমন: আইটি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পে গৃহীত নতুন পদক্ষেপ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে৷
এই প্রথমবারের মতো ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযুক্ত গ্রিডের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে৷ এটা কার্যকর রয়েছে৷ আরও কিছু বিদ্যুৎ ও জ্বলানিসংক্রান্ত উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, কিছু কিছু বাস্তবায়নাধীনও রয়েছে৷
উপাঞ্চলিক সহযোগিতাসংক্রান্ত আলোচনাও শুরু হয়েছে৷
রেলওয়েতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক সংহত হয়েছে৷ মৈত্রী এক্সপ্রেস যোগাযোগ সহজতর করেছে, আরও নানা আয়োজনের মাধ্যমে তা আরও সহজ করার চেষ্টা চলছে৷
উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে জাহাজ যোগাযোগ স্থাপনে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ আর বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর ও ভারতের পূর্বাঞ্চলের বন্দরগুলোর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে৷
জনগণ-জনগণ পর্যায়ের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে৷ এটা অনেকটা সাধারণ হয়ে এসেছে৷ প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়নসংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছে৷ সাংস্কৃতিক বিনিময়ও বেড়েছে, দ্বিপক্ষীয়ভাবে৷
আমি জানি, আরও অনেক কিছু করার আছে৷ যা হয়েছে, তা নিয়ে আত্মসন্তুষ্টির কোনো সুযোগ নেই৷
প্রথম আলো বিভিন্ন সময় নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য-ঘাটতি মোকাবিলায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়নি৷ এ ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা ছাড়া মনস্তাত্ত্বিক বাধাও একটি বড় বাধা৷ ভারতের নতুন সরকার কি এ প্রেক্ষাপটে কোনো পদক্ষেপ নেবে?
সুষমা স্বরাজ বাণিজ্য-ঘাটতি নিয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আমরা সংবেদনশীল৷
২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্ক অঞ্চলে বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তর বাণিজ্য সহযোগীতে পরিণত হয়েছে৷ আগের বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলারে৷
জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ট্রেড, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন কাস্টমসসহ আরও নানা আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বাধা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এসব কমিটি বছরে একবার বসে৷ সাম্প্রতিক সময়ে এসব বৈঠকের কিছু ফলাফল দেখা যাচ্ছে, যেমন বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত ও আগরতলা-আখাউড়া স্থলবন্দরে সাত দিনব্যাপী বাণিজ্য হওয়া৷ আরও ১৬টি স্থলসীমান্ত বন্দরে এরূপ বাণিজ্যের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ এদিকে, আমরা বিএসটিআইয়ের সঙ্গে কাজ করছি সংস্থাটির পরীক্ষা ও মানদণ্ড নির্ধারণের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে৷
বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি৷ ভারত থেকে বাংলাদেশে যেসব পণ্য রপ্তানি হয়, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷
এদিকে ভারত তার বাংলাদেশ সীমান্তের ১৬টি প্রধান স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়ে সেগুলোকে সমন্বিত চেকপোস্টে উন্নীত করতে চায়৷ সেখানে কাস্টমস থেকে শুরু করে অভিবাসন, পার্কিং, হিমাগার, অসুস্থদের জন্য পৃথক নিবাসসহ নানা ধরনের সুবিধা একটি স্থানেই পাওয়া যাবে৷ আগরতলায় এই যৌথ চেকপোস্টের কাজ ২০১৩ সালের নভেম্বরে শেষ হয়েছে, সেখানে এখন কাজও হচ্ছে৷
মেঘালয় সীমান্তে দুটি সীমান্ত হাট রয়েছে৷ এটা শুনে আমি খুশি হয়েছি যে এরূপ আরও দুটি হাট ত্রিপুরা সীমান্তে শুরু হতে যাচ্ছে৷ আর এ বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ট্রেডের বৈঠকে আরও চারটি হাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
বাংলাদেশ যাতে আরও রপ্তানি উদ্বৃত্ত তৈরি করতে পারে, সে মর্মে ভারত মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী৷ এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ভান্ডারে আরও পণ্য যুক্ত হবে৷ আর বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী ও অন্যান্য দেশের বাজারে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে৷
প্রথম আলো বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, আওয়ামী লীগ ও কংগ্রেসের মধ্যে এক ‘বিশেষ সম্পর্ক’ রয়েছে৷ ভারতের সরকার পরিবর্তন হওয়ায় এ দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে কি কোনো গুণগত পরিবর্তন ঘটবে?
সুষমা স্বরাজ সেটা আপনাদের ধারণা৷ আমাদের সরকার বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করবে৷ দুটি দেশের মধ্যকার সম্পর্ক নির্ভর করে দুই দেশের জনগণ ও সরকারের মধ্যকার সম্পর্কের ওপর৷ আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ব্যাপকভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারত্ব তৈরি করার ইচ্ছা রাখি, আর সেটা সমাজের সবাইকে নিয়েই আমরা করতে চাই৷
প্রথম আলো বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিনিধিত্বমূলক ছিল না৷ তবু ইউপিএ সরকার সেটাকে সমর্থন করেছিল৷ বিজেপি সরকার কি এটাকে ঠিক মনে করে?
সুষমা স্বরাজ দেখুন, বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর আমাদের রায় দেওয়ার কিছু নেই৷ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এই দেশের জনগণই নির্ধারণ করবেন৷ আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভবিষ্যৎমুখী৷ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এই দুই দেশের ভবিতব্য নির্ধারণে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ করি৷
প্রথম আলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যকার নৈকট্য খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু অভিযোগ আছে যে বাংলাদেশিরা ভারতে ভ্রমণ করতে চাইলে ভিসা সমস্যার মুখোমুখি হন৷ ভিসা-প্রক্রিয়া সহজ করতে আপনারা কি কোনো পদক্ষেপ নেবেন?
সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু ও প্রতিবেশী৷ জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করতে আমরা তরুণদের মধ্যকার ভাবনা বিনিময়, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, সংবাদকর্মীদের আসা-যাওয়া, সুশীল সমাজের প্রিতনিধিদের আসা-যাওয়া প্রভৃতি বাড়াতে চাই৷
ভিসার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে কী সমস্যা হচ্ছে, আমরা তা খতিয়ে দেখব৷ ইতিমধ্যে ভারত ভ্রমণে আসা পর্যটকদের মধ্যে বাংলাদেশিরা সংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গেছে৷
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ৷
সুষমা স্বরাজ ধন্যবাদ৷