>৫ নভেম্বর ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু রোধে আমাদের অঙ্গীকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১২ নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।
আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম
বর্তমানে বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার ৪ শতাংশ। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা হলো ২০২৫ সালের মধ্যে এ হার ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা। দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি ১ হাজার জীবিত–জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে মৃত্যু হয় ৩০ জনের। (সূত্র: ইউএনআইজি ২০১৯)
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট হলো এই সংখ্যা ২৫–এ নামিয়ে আনা। প্রতিকারের ব্যবস্থা করলে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
স্বাস্থ্য খাতে আমাদের অনেক সাফল্য রয়েছে। আশা করছি নিউমোনিয়া রোধেও আমরা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারব এবং এটি বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ হবে।
নিউমোনিয়া রোগের টিকার ব্যবস্থা রয়েছে। সবাইকে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে পারলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমে যাবে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের চ্যালেঞ্জ ও করণীয় কী, তা আজকের আলোচনায় আসবে।
রুহুল আমিন
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংক্রামক মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো নিউমোনিয়া। বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শিশুর নিউমোনিয়া সেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না।
জন্ম নেওয়া প্রতি এক হাজার জীবিত শিশুর মধ্যে চারটি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর নিউমোনিয়া অ্যান্ড ডায়রিয়ার (জিএপিপিডি) লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি এক হাজার জীবিত–জন্ম শিশুর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা তিনে নামিয়ে আনা।
কম খরচে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসা করা সম্ভব। ২০১৮ সালে নিউমোনিয়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী ১২ হাজার শিশু মারা গিয়েছিল।
২০০৯ সালে জিএপিপিডি চালু হয়। এর লক্ষ্য হলো সুরক্ষা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সমন্বয়ের মাধ্যমে নিউমোনিয়া নিয়ন্ত্রণের গতি বাড়ানো।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিশ্চিতকরণ, সুপেয় পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা এবং অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ কমাতে হবে। সুরক্ষার জন্য শিশু জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
ছয় মাস পর পর্যাপ্ত পরিপূরক খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট খাওয়াতে হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে ১০ বছর সময় আছে। এই লক্ষ্য অর্জনে স্বাস্থ্যবিষয়ক এজেন্ডায় নিউমোনিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।
আ এ মো. মহিউদ্দিন ওসমানী
নিউমোনিয়া ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। আমাদের সাফল্যের খাত হিসেবে ইপিআই কার্যক্রম (শিশুদের টিকা নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যক্রম) বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শিশুমৃত্যুর হার কমানোর জন্য আমাদের কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে হবে। এ জন্য আমরা মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য (এমএনসিএইচ অপারেশন প্ল্যান), ম্যাটারনাল, চাইল্ড, রিপ্রোডাকটিভ অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ (এমসিআরএএইচ) অপারেশন প্ল্যান ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (এনএসএস অপারেশন প্ল্যান)—এ তিনটি জায়গায় আমরা যথেষ্ট জোর দিয়েছি।
আমরা চাই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চেষ্টা যেন অব্যাহত থাকে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ হলো নিউমোনিয়া।
তৃণমূল পর্যায় থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া গেলে শিশুমৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং জেলা হাসপাতালকে পুরোপুরি সম্পৃক্ত করতে হবে।
মো. জিয়াউল মতিন
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। শুধু নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করলেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার কমিয়ে
আনা যাবে না। এখানে আরও অনেক বিষয় রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে তিনটি দিক রয়েছে। এগুলো হলো প্রতিরোধ, সুরক্ষা ও চিকিৎসা। নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে হলে এর তিনটি দিকেই সমানভাবে কাজ করতে হবে।
১৯৯০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুর হার ৬৭ শতাংশ কমে এসেছে। এটি খুবই উৎসাহদায়ক। এ ক্ষেত্রে টিকাদান কার্যক্রমের অনেক বড় অবদান রয়েছে।
নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে শিশুপুষ্টি একটা ফ্যাক্টর। সমস্যার সমাধান আমাদের হাতেই আছে।
এটা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটা ঠিক করতে হবে। বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির আওতা খুব ভালো। তবু অনেক জায়গা টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসেনি।
অভিভাবকেরা নিউমোনিয়ার বিপদচিহ্নগুলো জানেন কি না, কখন তাঁরা শিশুকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে নিয়ে আসবেন, এ বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সেই সঙ্গে সেবাদানকারী যাঁরা আছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। এ–সংক্রান্ত ডব্লিউএইচও প্রটোকল পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত প্রটোকল অনুযায়ী তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কি না?
নিউমোনিয়া ব্যবস্থাপনায় অক্সিজেন থেরাপি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই অক্সিজেন থেরাপি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যথাযথভাবে আছে কি না?
এখন ডব্লিউএইচও পালস অক্সিমেট্রি (রক্তে অক্সিজেন স্তর পরিমাপ করতে ব্যবহৃত পরীক্ষা) রাখারও সুপারিশ করে। এসব বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে।
মোহাম্মদ শরীফ
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে আমরা যা করছি তা বলতে চাই। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি একটি সফল কর্মসূচি।
আজ নগর স্বাস্থ্য (আরবান হেলথ) নিয়ে একটা বৈঠক ছিল। সেখানে দুটো বিষয় এসেছে। বিষয়গুলো হলো শিশুস্বাস্থ্য ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে
সন্তান প্রসব।
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সন্তান প্রসবের সঙ্গে শিশুর চিকিৎসার বিষয় এসে যায়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সন্তান প্রসবের সংখ্যা বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী
কমিউনিটি ক্লিনিক করেছেন, যেটা একটা দারুণ ব্যাপার।
এসব ক্লিনিক অত্যন্ত সুন্দর ও ভালো। আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ ইউনিয়ন সেন্টার তৈরি হবে। যেখানে তিনটি রুম শীতাতপনিয়ন্ত্রিত থাকবে। এটা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন সেন্টার আমরা নতুনভাবে সাজাচ্ছি। এ জন্য মাঠপর্যায়ের সেবাদাতাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
গত দেড় বছরে প্রায় ৪ হাজার ৫৩২ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আমরা এ–সংক্রান্ত ওষুধও কিনে দিয়েছি। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এসব কাজ পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সমন্বয় করে করছে।
দেশ যেহেতু আমাদের, কাজও আমাদের মিলেমিশে করতে হবে।
আমি প্রতিটি ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সেন্টারে পালস অক্সিমেট্রি রাখার চিন্তা করছি।
সাবিনা আশরাফী
নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুরোধে আইএমসিআইয়ের (ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব চাইল্ডহুড ইলনেস) বরাদ্দ খুবই স্বল্প। প্রয়োজনের ১৯ শতাংশ বরাদ্দ নিয়ে আমরা কাজ করছি।
আমরা গত বছর প্রায় সাড়ে তিন হাজার সেবাদাতার দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সম্প্রতি আমরা আইএমসিআই প্রটোকল হালনাগাদ করেছি।
আগামী অর্থবছরে আমরা আরও সাড়ে চার হাজার সেবাদাতার দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দিতে পারব।
ইউনিয়ন উপকেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় পর্যন্ত আইএমসিআই কর্নারের মাধ্যমে আমরা সেবা দিয়ে থাকি।
গত বছর প্রায় ৪৩ লাখ অ্যামোক্সিসিলিন ডিটি (অ্যামোক্সিসিলিন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়) প্রক্রিয়া করে সারা দেশে বিতরণ করা হয়েছে।
আগামী বছর প্রায় ৭০ লাখ অ্যামোক্সিসিলিন ডিটি প্রক্রিয়া করব। সেবাদাতাদের মধ্যে মাত্র ৪৬ শতাংশ প্রশিক্ষণ নিয়ে, নিউমোনিয়াকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারছেন।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর অর্ধেকের বেশি শিশু স্বীকৃত সেবা প্রতিষ্ঠানে আসে না। শিশুরা অসুস্থ হলে অভিভাবকেরা প্রায়ই স্বীকৃত সেবা প্রতিষ্ঠানে না এসে নিকটবর্তী ওষুধের দোকান বা হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
আবার সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুবিধা নেই। এসব দিক ঠিক করতে পারলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার কমে যাবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সাবাইকে আরও কাজ করতে হবে।
সাব্বীর আহমেদ
নিউমোনিয়া কমিয়ে আনার জন্য বৈশ্বিক কৌশল এসেছে ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফ থেকে ২০০৯ সালে। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে কাজের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে।
সে জন্য এখনো প্রতিদিন বিশ্বে দুই হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন করতে হলে নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যুর হার কমাতে হবে।
২০১৯ সালে দুটো জরুরি বৈশ্বিক বৈঠক হয়েছে। এগুলোর একটি ছিল সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজের বিষয়ে।
আরেকটি ছিল যে দেশগুলোয় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি, তাদের নিয়ে।
এ বৈঠক থেকে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বার্সেলোনায় গ্লোবাল ফোরাম অব নিউমোনিয়া হবে। সেখানে আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকবেন।
বৈশ্বিকভাবে নিউমোনিয়া কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে সেখানে একটা কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি, গ্লোবাল ফোরাম অব নিউমোনিয়া থেকে একটা দিকনির্দেশনা পাব।
মো. আবদুল মান্নান
নিউমোনিয়াকে দুটি দিক থেকে বিবেচনা করি। একটা হলো প্রতিরোধের দিক, অন্যটি হলো ব্যবস্থাপনার দিক। আলোচনায় এসেছে অপুষ্ট শিশু নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়।
এ ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু কোন জায়গায় হাত দিলে আরও উন্নতি করা সম্ভব? একটি দিক হলো ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করানো।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করানোর হার ৫৫ শতাংশ। এ বিষয়ে সবার মধ্যে আরও সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। যেন অধিকাংশ মা–ই তাঁদের শিশুসন্তানকে জন্মের ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ান।
কিছু প্রতিরোধব্যবস্থা রয়েছে। এগুলোর একটি হলো এসটিএস (স্কিন টু স্কিন কেয়ার)।
সন্তান প্রসবের পরপরই তাকে মায়ের ত্বকের সঙ্গে দুই ঘণ্টা রাখলে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করানোর হার বাড়ে। এ ছাড়া শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু অনেকেই এই নীতিমালা অনুসরণ করছেন না। সব ধরনের নিউমোনিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই।
ভাইরাল ও ফাঙ্গাসের কারণে নিউমোনিয়া হতে পারে। অর্ধেকের বেশি নিউমোনিয়া হয় ভাইরাসের কারণে।
এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন নেই। অথচ যেসব শিশুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে অথবা দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে, তাদের আমরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছি।
প্রয়োজন নেই, তারপরও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। এটা স্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার বন্ধ করার জন্য নীতিমালা করতে হবে।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা—এ দুটি দিক ঠিক রাখতে পারলে নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যুর হার কমবে।
মুহাম্মদ যোবায়ের চিশতী
১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা অনেক সংগ্রাম করে এসেছি। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে আমাদের করণীয় চিহ্নিত হয়েছে। সেসব জায়গায় নতুন করে জোর দিলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। ২০১৩ সালে এ বিষয়ে নতুন দিকনির্দেশনা এসেছে। এসব নির্দেশনা আমরা অনুসরণ করছি।
হাসপাতালে আসা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত যেসব শিশুর অক্সিজেনের স্বল্পতা থাকে, তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা অক্সিজেনের স্বল্পতা না থাকা শিশুদের থেকে ছয় গুণ বেশি।
১৯৯০ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) কিছু ঝুঁকির কারণ চিহ্নিত করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদের টিকা সহজলভ্য করতে হবে।
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ ও অপুষ্টি ঝুঁকির কারণ চিহ্নিত হয়েছিল। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ সরকারও এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।
তাই টিকা নিশ্চিতকরণ, অপুষ্টি রোধ ও অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ কীভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতা পেয়েছি। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার ১২ দশমিক ৭ মিলিয়ন থেকে ৫ দশমিক ৬ মিলিয়নে নেমে এসেছে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন। এখন সেটা দশমিক ৯ মিলিয়ন। ডায়রিয়াসংক্রান্ত মৃত্যুহার কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যুর হার ৬৭ শতাংশ কমলেও এখনো নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যুর হার বেশি। এটা কমিয়ে আনতে হবে।
শামস এল আরেফিন
বাংলাদেশে শিশু নিউমোনিয়া চিকিৎসকের মধ্যে ৪২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক এবং ৫১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। আবার এই ৪২ শতাংশের বেশির ভাগই বেসরকারি খাতে। ২০ বছর ধরে আমি এ কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি।
তখন থেকেই এটা একই রকম রয়েছে। এর কোনো পরিবর্তন হয়নি। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে সরকারি খাতের খুব একটা প্রভাব নেই। ওষুধ কোম্পানির কিছুটা প্রভাব রয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বেসরকারি খাতে কিছু নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বেসরকারি খাতকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বেসরকারি খাতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বাড়ছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বেসরকারি খাতকে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে সন্তান প্রসবে অস্ত্রোপচার কমবে এবং নিউমোনিয়ার সঠিক চিকিৎসা হবে। আমরা জটিল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে হেলথ কমপ্লেক্স, জেলা হাসপাতাল ইত্যাদিতে পাঠাতে বলছি।
কিন্তু সেখানে সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোকে আরেকটু নজর দিতে হবে। শিশু যে হাসপাতালেই যাক না কেন, সেখানে যেন তার সেবার ব্যবস্থা থাকে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।
সব নিউমোনিয়ায় শিশু মারা যায় না। সব নিউমোনিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা জরুরি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা হাসপাতালে শিশুদের সময়মতো অনেন না। এটা অনেক সময় ঝুঁকি তৈরি হয়। সময় মতো হাসপাতালে আনলে শিশুমৃত্যু কম হবে।
মো. ইমদাদুল হক
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের অসুস্থতা ও মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ হলো নিউমোনিয়া। এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। সুরক্ষার জন্য আমরা সেবাদাতাদের মাধ্যমে শিশুদের ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য বলছি। ছয় মাস পরে পর্যাপ্ত পরিপূরক খাবার দেওয়ার কথা বলছি।
শিশুর বয়স ছয় মাস পূর্ণ হলে ভিটামিন ‘এ’ সাপ্লিমেন্ট খাওয়ানোর জন্য মায়েদের বলা হচ্ছে। প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যেসব অর্গানিজম দ্বারা নিউমোনিয়া হয়, সেসবের টিকা দিচ্ছি।
পাশাপাশি সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করছি। উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য ডব্লিউএইচও অনুযায়ী অ্যামোক্সিসিলিন ডিটি সরবরাহ করেছি।
২০১৭-১৮ সালে আমরা ৪৪ লাখ ১১ হাজার ৭০০ অ্যামোক্সিসিলিন সরবরাহ করেছি। ২০১৮-১৯ সালের জন্য অ্যামোক্সিসিলিন ডিটি সরবরাহসংখ্যা ধরা হয়েছে ৭০ লাখ। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে।
এ বিষয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একটি চ্যালেঞ্জ হলো সেবাদানকেন্দ্রে প্রশিক্ষিত সেবাদাতা পাওয়া। আমরা সেবাদাতাদের প্রশিক্ষণ দেব,
যেন প্রতিটি সেবাকেন্দ্রে একজন অথবা দুজন প্রশিক্ষিত সেবাদানকারী থাকেন। নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিলেই আমরা হাসপাতালে আসতে বলছি। মাত্র ৪৬ শতাংশ সঠিক সেবাদানকারীর কাছে আসছে।
আহমেদ আহসানুর রহমান
নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও সুরক্ষায় বাংলাদেশের অনেক অর্জন আছে। প্রতিরোধ ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে আরও কিছু কাজ রয়েছে। সেগুলো হলো সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিশ্চিত করা, অপুষ্টি সমস্যা ঠিক করা এবং বায়ুদূষণ রোধ করা।
এটা কারও একার পক্ষে করা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে অনেক খাতের সমন্বিত চেষ্টা প্রয়োজন। নিউমোনিয়া চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুটো বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
একটা হলো বহির্বিভাগ রোগী ব্যবস্থাপনা, অন্যটি হাসপাতালের আবাসিক রোগী ব্যবস্থাপনা। নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়া রোগীদের দুই-তৃতীয়াংশ মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
আইএমসিআই কর্মসূচি অনেক সফল হলেও আমরা গতি হারিয়ে ফেলেছি।
মারাত্মক নিউমোনিয়া চিহ্নিত করার জন্য পালস অক্সিমেট্রি একটা ভালো উদ্যোগ হতে পারে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন নিউমোনিয়া চিহ্নিত করতে পারেন, সে জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
মায়া ভেন্ডেনেন্ট
গত দুই সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর মাত্র অর্ধেক সেবা নেওয়ার জন্য এসেছে। সে জন্য সেবা গ্রহণের ধরন উন্নয়নে আমাদের এখনো অনেক কিছু করণীয় রয়েছে।
আমাদের দেখতে হবে মায়েরা নিউমোনিয়ার বিপদ চিহ্নগুলো জানেন কি না। আমরা যদি কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিবিএইচসি) মাধ্যমে বাড়িতে গিয়ে পাক্ষিক বৈঠক করতে পারি, তাহলে এ ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
শিশু জন্মের পর প্রয়োজনীয় সেবার অংশ হিসেবে আমরা এখন এটা করছি। আমার মনে হয় নিউমোনিয়ার বিপদচিহ্ন সম্পর্কে অতটা গুরুত্ব দিতে পারিনি।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর অর্ধেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবার জন্য যায়। এর মানে সরকারি খাতে গুণগত মান বাড়ানোর চেষ্টা কেবল অর্ধেক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সেবা নিশ্চিত করতে পারবে।
বেসরকারি খাতে আমরা কী করতে পারি? সুবিধামতো সময়ে খোলা থাকায় অনেক মা–ই বেসরকারি খাতে যান। যদিও এর জন্য তাঁদের বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।
এ জন্য বেসরকারি খাতে নীতিমালা অনুসরণ করানো জরুরি। যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না। এখানে চিকিৎসাসেবার মানের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করা দরকার। বায়ুদূষণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়ে। নিউমোনিয়ার অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। ফলে শিশুদের সুরক্ষা ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করতে হবে।
নাসিমা সুলতানা
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। পাঁচ বছরের কম বয়সী অনেক শিশুই এখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এটা হতে দেওয়া যায় না। আলোচনায় প্রায় সব বিষয়ে বিস্তারিতভাবে এসেছে। আমি আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করতে চাই। টিকাদান কর্মসূচিতে ভালো করেছি।
কিন্তু এখনো অনেক জায়গা আমাদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসেনি। সবাইকে টিকাদান কর্মসূচির মধ্যে আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে আমার দুর্গম এলাকার সবাইকে এ কর্মসূচির অধীনে আনতে পারব বলে আশা করছি।
পার্বত্য অঞ্চলেও ছয় হাজার মানুষের জন্য একটা কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু এসব এলাকায় বসবাসের ধরন অন্যান্য এলাকার মতো নয়। এখানে বেশ দূরে এক একটা পরিবার বাস করে।
একজন ইপিআই টেকনিশিয়ান সকালে বের হয়ে রাতে ফিরলেও খুব কমসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারেন।
এসব অঞ্চলে সেবা নিশ্চিত করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। একজন মা আটবার প্রসব–পূর্ব সেবা (অ্যান্টিনেন্টাল কেয়ার) নিলে মা ও শিশুস্বাস্থ্য অনেকটাই নিশ্চিত করা যায়।
প্রসব–পূর্ব সেবা নিশ্চিত করতে পারলে অপুষ্টিসহ নানা সমস্যার সমাধান করা যাবে। এতে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ সহজ হবে। আমরা একটা জনসম্পৃক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও কাজ করি।
সেখানে নিউমোনিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। জনসম্পৃক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নিউমোনিয়া অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
বার্সেলোনায় গ্লোবাল ফোরাম অব নিউমোনিয়া কনফারেন্স হবে। সেখান থেকে আমাদের জন্য একটা দিকনির্দেশনা আসবে।
যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কথা এসেছে। এ ক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে যেন নিবন্ধিত চিকিৎসক ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না হয়।
ফিরোজ চৌধুরী
আজকের গোলটেবিল বৈঠকে নিউমোনিয়ায় শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে করণীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক সুপারিশ এসেছে।
সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারলে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন করা সম্ভব হবে।
আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য সম্মানিত অতিথিদের প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
যাঁরা অংশ নিলেন
নাসিমা সুলতানা: অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
আ এ মো. মহিউদ্দিন ওসমানী: যুগ্ম প্রধান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়
মোহাম্মদ শরীফ: পরিচালক (মা ও শিশুস্বাস্থ্য), পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর
মায়া ভেন্ডেনেন্ট: চিফ অব হেলথ, ইউনিসেফ
রুহুল আমিন: সাবেক অধ্যাপক, শিশু ও বক্ষব্যাধি বিভাগ, ঢাকা শিশু হাসপাতাল
মো. ইমদাদুল হক: প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত), এনএনএইচপি অ্যান্ড আইএমসিআইএমসিআই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
সাবিনা আশরাফী: ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ট্রেইনিং অ্যান্ড চাইল্ড ইনজুরি, এনএনএইচপি অ্যান্ড আইএমসিআই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
মো. আবদুল মান্নান: অধ্যাপক, নবজাতক বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)
শামস এল আরেফিন: সিনিয়র ডিরেক্টর, এমসিএইচডি, আইসিসিডিডিআর’বি
মুহাম্মদ যোবায়ের চিশতী: জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী, আইসিডিডিআরবি
সাব্বীর আহমেদ: অ্যাডভাইজার, নিউমোনিয়া সেন্টেনারি কমিটমেন্ট, সেভ দ্য চিলড্রেন
আহমেদ আহসানুর রহমান: সহযোগী বিজ্ঞানী, ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশন, আইসিডিডিআরবি
মো. জিয়াউল মতিন: হেলথ ম্যানেজার, ইউনিসেফ
সূচনা বক্তব্য
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো
সঞ্চালক
ফিরোজ চৌধুরী: সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো