শাইখ সিরাজ, একজন জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত ব্যক্তিত্ব, যাঁর বহুবিধ পরিচয় আছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিবর্তনের একটি বিশেষ মুহূর্তে তাঁর আবির্ভাব। দেশজ আয়ে কৃষি খাতের অবদান যখন কমে আসছে, এমন একটি সময়ে এই খাতের অপার সম্ভাবনাকে তিনি জাতির সামনে নবরূপে উন্মোচন করেছেন। কৃষির বহুমুখীকরণ, অপ্রচলিত পণ্যকে জনপ্রিয়করণ, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে দেশে আত্তীকরণ, নগরজীবনের সঙ্গে প্রকৃতির সহযোগ সাধনসহ আরও বহু বিষয়ে জ্ঞানের সম্প্রসারণ ও সামাজিক সচেতনতার জন্য তিনি পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এসব কাজের মাধ্যমেই তিনি কৃষি খাতে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে তিনি তরুণ সমাজকে আধুনিক কৃষিকাজে যুক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং তাঁদের উপযুক্ত সামাজিক সম্মান পাওয়ার দাবিকে সোচ্চার করেছেন। একই সঙ্গে তিনি গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখা ও জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ফলপ্রসূভাবে ব্যবহার করেছেন।
শাইখ সিরাজ জাতীয় নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন। কৃষক সমাজের প্রত্যাশা ও প্রাপ্যগুলোকে নজরে আনতে তিনি অব্যাহতভাবে বাজেটের আগে ও পরে উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে গণসংলাপ করেছেন। এসব আলোচনার প্রামাণ্য দলিলগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছেন।
শাইখ ভাইয়ের সঙ্গে আমার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বয়স প্রায় তিন দশক। আমরা একসঙ্গে জবাবদিহিসম্পন্ন উন্নয়নপ্রক্রিয়া গড়ার লক্ষ্যে নাগরিক উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি আমাকে বাংলাদেশের কৃষির নব্য উত্থানকে মাঠে নিয়ে গিয়ে সম্যকভাবে পরিচয় করিয়েছেন।
শাইখ ভাই সাধারণত গণমাধ্যমে সবাইকে প্রশ্ন করে উত্তর জানেন। অথচ আমার সুযোগ হয়েছিল তাঁকে খোলা আকাশের নিচে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করার, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানের ১৭তম বর্ষপূর্তিতে (২০২০)।
আমার অনুরোধে তিনি কষ্ট স্বীকার করে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় ‘বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্য ও চিত্রা ভট্টাচার্য, এমপি স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অন্য একসময়ে তিনি টাঙ্গাইলের বন্যাপীড়িত লোকজনের জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছিলেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে, গণমাধ্যমের বিকাশে সফল অগ্রণী হিসেবে এবং কৃষিনীতির প্রভাবক হিসেবে তিনি জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রেখে চলেছেন। ব্যক্তি পর্যায়ে তাঁর সঙ্গে সখ্য থাকায় আমি অনুপ্রাণিত বোধ করি।
শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিনে তাঁর কর্মময় দীর্ঘায়ু কামনা করছি।