অমর্ত্য সেন
অমর্ত্য সেন

গুজব কীভাবে তৈরি হয়, অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর গুজব যেভাবে ছড়ানো হলো

১০ অক্টোবর বিকেলে চাউর হয় একটি খবর—নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন মারা গেছেন। এরপর তাঁর মেয়ে নন্দনা দেব সেন নিশ্চিত করেন, মারা যাননি, ভালো ও সুস্থ আছেন তাঁর বাবা। কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ছড়ানো হয়েছিল অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর গুজব? মাঝেমধ্যেই কেন বিখ্যাত ব্যক্তিদের মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়?

মৃত্যুর গুজবে এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নাম। গতকাল সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সয়লাব হয়ে যায় তাঁর মৃত্যুর খবরে। বাদ যায়নি মূলধারার কিছু গণমাধ্যমও। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য অনেকেই জানিয়েছেন শোকবার্তা। এর মধ্যে আছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নামও। অতঃপর ৮৯ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ীর দুই কন্যা শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত করেছেন, না, তিনি মারা যাননি; বরং সুস্থ আছেন। মৃত্যুসংক্রান্ত গুজবে অমর্ত্য সেনের নামই প্রথম নয় এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর নামটিও শেষ নাম নয়।

লক্ষ করলে দেখা যাবে, অমর্ত্য সেনের এই মৃত্যুর গুজবের সঙ্গে ক্লডিয়া গোলডিন নামের এক ব্যক্তির নাম জড়িত। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। বলা হচ্ছে, ক্লডিয়া তাঁর টুইটার (এক্স) অ্যাকাউন্ট থেকে অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবরটি জানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ‘ক্লডিয়া গোলডিন’-এই নামই কেন? তাঁর সঙ্গে এ তথ্যের প্রাসঙ্গিকতাই–বা কী?

অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোলডিনের নামে খোলা এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল বিকেলে প্রথম অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর গুজবটি ছড়ানো হয়

উল্লেখ্য, ক্লডিয়া গোলডিন অমর্ত্য সেনের মতোই আরেক নোবেলজয়ী। দেশের মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নাম এখন বেশ আলোচিত। কারণ, তিনি সম্প্রতি, অর্থাৎ ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন। ৯ অক্টোবর দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর এ পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা জানানো হয়। মূলত এর পরেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশিত হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, অমর্ত্য সেন ও ক্লডিয়া গোলডিন দুজনই হার্ভার্ডের অধ্যাপক, দুজনই নোবেল বিজয়ী; শুধু তা–ই নয়, তাঁরা দুজনই অর্থনীতিতেই নোবেল পেয়েছেন। একজন নোবেল বিজয়ী আরেকজন নোবেল বিজয়ীর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ করছেন—সূত্র হিসেবে সেটি বেশ প্রাসঙ্গিক বলেই মনে হচ্ছে। এ সুযোগই এখানে নেওয়া হয়েছে। ক্লডিয়া গোলডিন পরিচয়ে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর গুজবটি ছড়ানো হয়। এর পর থেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়েছেন গণমাধ্যমের জনপ্রিয় ব্যক্তিরা। কেউ একবারের জন্য সেই টুইটার অ্যাকাউন্টটিকে প্রশ্ন করেননি। ‘ফেক অ্যাকাউন্ট’ বা ভুয়া অ্যাকাউন্ট যে একটা বিষয়, তা সবাই প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন।

একটু চোখ বোলালে দেখা যেত, এ সূত্রেই রয়েছে একাধিক অসংগতি। এটি ক্লডিয়া গোলডিনের ভেরিফায়েড কোনো অ্যাকাউন্ট নয়। শুধু তা–ই নয়, এই অ্যাকাউন্টের বয়সও অনেক কম। এখান থেকে প্রথম পোস্টটি করা হয়েছিল মাত্র সপ্তাহখানেক আগে। ‘বুম ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে চলতি বছরের মে মাসে। এ ছাড়া বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটে এই মৃত্যুর গুজব প্রকাশের ঠিক এক ঘণ্টা পর একই অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি পোস্টে বলা হয়, ‘এই অ্যাকাউন্ট ভুয়া।’

তখন এর ইউজারনেম পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়। আর এ মুহূর্তে অ্যাকাউন্টটির কোনো অস্তিত্বই টুইটারে নেই। অর্থাৎ, এমন একটি টুইটার অ্যাকাউন্টের ওপর ভিত্তি করে গুজবটি ছড়ানো হলো, যার বয়স ছয় মাসের কম। পোস্টের দিক থেকে দেখলে এর বয়স ১৫ দিনের কম। ‘প্রিম্যাচিউর’ সূত্রের ওপর ভিত্তি করে ‘ম্যাচিউরড’ এক মানুষকে মেরে ফেলা হলো।

এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন ক্লডিয়া গোলডিন। তাই তাঁর নামে খোলা ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর গুজবটি ছড়ানোর ফলে এটি বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে

তবে শুধু অমর্ত্য সেনই নন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের ভুয়া মৃত্যুর সংবাদ ছড়ানোর কৌশলটি বেশ পুরোনো। ওবায়দুল কাদের, এ টি এম শামসুজ্জামান, আবুল হায়াত, হানিফ সংকেত, তসলিমা নাসরিন, মাহাথির মুহাম্মদ, মিঠুন চক্রবর্তী, মিশা সওদাগর, মমতাজসহ আরও অনেকেই আছেন এ তালিকায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জীবিত ব্যক্তিদের মৃত দাবি করার পেছনের উদ্দেশ্য আসলে কী?

একটু চোখ বোলালে দেখা যেত, সূত্রটিতেই রয়েছে একাধিক অসংগতি। এটি ক্লডিয়া গোলডিনের ভেরিফায়েড কোনো অ্যাকাউন্ট নয়। শুধু তা–ই নয়, এই অ্যাকাউন্টের বয়সও অনেক কম। এখান থেকে প্রথম পোস্টটি করা হয়েছিল মাত্র সপ্তাহখানেক আগে। ‘বুম ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে চলতি বছরের মে মাসে। এ ছাড়া বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটে এই মৃত্যুর গুজব প্রকাশের ঠিক এক ঘণ্টা পর একই অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি পোস্টে বলা হয়েছে, এই অ্যাকাউন্ট ভুয়া। তখন এর ইউজারনেম পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়। আর এ মুহূর্তে অ্যাকাউন্টটির কোনো অস্তিত্বই টুইটারে নেই। অর্থাৎ, এমন একটি টুইটার অ্যাকাউন্টের ওপর ভিত্তি করে গুজবটি ছড়ানো হলো, যার বয়স ছয় মাসের কম। পোস্টের দিক থেকে দেখলে এর বয়স ১৫ দিনের কম। ‘প্রিম্যাচিউর’ এ সূত্রের ওপর ভিত্তি করে ‘ম্যাচিউরড’ এক মানুষকে মেরে ফেলা হলো।

এককথায় এর উত্তর দেওয়া কঠিন। ক্ষেত্রবিশেষে কারণ ভিন্ন হয়। কিন্তু অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে, গণমাধ্যমে সাক্ষরতার অভাব। যার একটি দিক হচ্ছে, সূত্র যাচাই-বাছাই না করে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়া। এর দায়ভার আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমের ওপরেই অনেকখানি বর্তায়।

আরেকটি দিক হচ্ছে, সাধারণ নেটিজেনদের মধ্যে তথ্য বিকৃতির প্রবণতা। এ কারণে দেখা যায়, যখন কোনো জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব অসুস্থ অবস্থায় থাকেন, তখন তাঁকে নিয়ে মৃত্যুর গুজব পাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কারণ, গুজবটি তখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিকতা পেতে থাকে এবং যেহেতু সে সময়ে ওই ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে নানা খবর প্রকাশিত হয়, সেই সুযোগে নেটিজেনদের অনেকেই মূল তথ্য বিকৃত করতে করতে তা মৃত্যুতে পরিণত করেন।

তবে এর মানে এই নয় যে এই গুজবগুলো শুধুই ‘মিসইনফরমেশন’ বা ভুল তথ্য, যা মানুষ না জেনেবুঝে ছড়াচ্ছে; বরং অনেক ক্ষেত্রেই সেটি ‘ডিজইনফরমেশন’ বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা হিসেবে গণ্য হতে পারে। আসলে এর পেছনে রয়েছে বিশাল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ। অর্থাৎ এ ধরনের গুজবগুলো আমি আর আপনি হয়তো না জেনেবুঝেই শেয়ার দিচ্ছি, কিন্তু সেগুলো যাঁরা তৈরি করছেন, তাঁরা সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই সেটি প্রচারে লিপ্ত।

মৃত্যুর আগে অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছিল একাধিকবার

অর্থনৈতিক কারণ বিশ্লেষণ করলে একদল উদ্যোক্তা খুঁজে পাওয়া যায়, যাঁরা এই আবেগের মধ্যেও বের করে নিয়েছেন কর্মসংস্থান। একলাইনে বললে আবেগের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করছেন তাঁরা। আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জমিনে এটি নতুন কিছু নয়। উদাহরণ হিসেবে আর্থিক প্রতারণার গুজবগুলো লক্ষ করা যেতে পারে; যেখানে কোনো এক অসুস্থ মানুষের ছবি ইন্টারনেট থেকে নিয়ে, তাঁর নাম-পরিচয় পাল্টে দিয়ে, জুড়ে দেওয়া হয় একটি বিকাশ/নগদ নম্বর এবং সেগুলোতে সরাসরি গ্রহণ করা হয় অর্থসহায়তা। এর প্রমাণ পাওয়া যায় তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ‘ফ্যাক্টওয়াচ’-এর একাধিক প্রতিবেদন থেকে।

এ ছাড়া মৃত্যুর গুজব ইউটিউবে প্রকাশ করার মাধ্যমেও অর্থ উপার্জন করছেন অনেকেই। ‘ডিসমিসল্যাব’-এর একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জনের একটি উপায় হচ্ছে এড সেন্স। ভিডিওতে দেখানো স্বয়ংক্রিয় এসব বিজ্ঞাপন থেকে অর্জিত মুনাফার একটি অংশ পেয়ে থাকেন এই চ্যানেলের মালিকেরা। স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুর খবর মানুষকে আকৃষ্ট করে বেশি, সেই সুবাদে ভিউও হয় অনেক।

অন্যদিকে অর্থনীতির পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটিও উল্লেখযোগ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মৃত্যুর গুজব দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে যদি কেউ হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তবে তো আর কথাই নেই। বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবাহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যখন হাসপাতালে ছিলেন, তখন আমরা দেখেছি, তাঁকে নিয়েও এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়েও এমন গুজব পাওয়া যাচ্ছে। এসব গুজবের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রতিপক্ষকে কিছুটা বিব্রত করা যায়, তেমনি অনেক সময় মানসিকভাবে বড়সড় একটা ধাক্কাও দেওয়া সম্ভব হয়।

এ রকম গুজব ছড়ানোর আরেকটি ভয়ংকর কারণ হচ্ছে ঘৃণা। এটিকে রাজনৈতিক ও সামাজিক দুই জায়গা থেকেই দেখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে এ গুজব ছড়িয়ে মানুষ দুঃখী নয়, বরং উল্লসিতই হয়। বিশেষত বিতর্কিত ব্যক্তিদের মৃত্যুর গুজবে বিষয়টি লক্ষ করা যায়। এই গুজবগুলো একটি জনগোষ্ঠীর ‘কগনিটিভ বায়াস’কে সমর্থন করে। অর্থাৎ মোটাদাগে তাঁরা ওই ব্যক্তিদের মৃত্যুই কামনা করেন। নির্দিষ্ট ওই ব্যক্তির প্রতি কিংবা তাঁর মতাদর্শের প্রতি ঘৃণা থেকেই এই গুজবগুলো ছড়ানো হয়।

অভিনেতা ফারুক যখন বিদেশে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন ছড়ানো হয় তাঁর মৃত্যুর গুজব

স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের কাছে এ ধরনের গুজব খুবই বিব্রতকর ও বেদনাদায়ক। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ ফারুকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর স্ত্রী বলেছিলেন, ‘যে মানুষটা ভালো আছে, তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়ানো হলে সেই পরিবার কী পরিমাণ মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যায়, এটা কে কাকে বোঝাবে। ১৩ মাস ধরে বিদেশের একটি হাসপাতালে আছি আমরা। হাসপাতাল যে মোটেও শান্তির জায়গা নয়, এটা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয়। তারপরও কেন যে মানুষ গুজব ছড়ায়! এর আগেও ফারুকের মৃত্যুর সংবাদ ছড়ানো হয়। কেউ কেউ তো দায়িত্ব নিয়ে ফেসবুকে এমনভাবে লিখেও দেয়, বিশ্বাস না করে উপায় থাকে না। এগুলো যে একটা পরিবারের জন্য কতটা বিরক্তিকর, বিব্রতকর ও কষ্টের, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। আমি সত্যিই খুবই কষ্ট পেয়েছি ও বিরক্ত হয়েছি।’ বলা দরকার, অভিনেতা ফারুক এ বছর মে মাসে মৃত্যুবরণ করেন। এ ছাড়া হানিফ সংকেত তাঁর নামে ছড়ানো এ ধরনের গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অনৈতিক এবং এভাবে মানুষকে আতঙ্কিত করার কোনো মানে হয় না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এগুলোকে নোংরামি বলে অভিহিত করেছিলেন।

কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিককে নিয়েও এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছিল। গুজব প্রকাশের এক মাসের মধ্যেই অবশ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হিথ স্ট্রিক মারা যান।

ভেবে দেখার বিষয়, গুজবগুলো আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের মনোজগতে আসলে কী ধরনের প্রভাব ফেলে?

যাহোক, মর্ত্যেই আছেন অমর্ত্য সেন, মারা যাননি তিনি। গুজবটি নিশ্চয়ই তাঁর পরিবারের জন্য একটি মানসিক আঘাত। আর এ খবর ছড়ানোর পেছনে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক—যেকোনো উদ্দেশ্যই থাকতে পারে। তবে উদ্দেশ্য যা-ই থাকুক, আমার ধারণা তা খুব একটা সফল হয়নি। এ মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসন্ধান করলে, অমর্ত্য সেনের মৃত্যুর খবরের চেয়ে বরং এটা যে গুজব ছিল, এই সংবাদই বেশি চোখে পড়বে। এ পর্যায়ে মূলধারার গণমাধ্যম একটি ধন্যবাদ পেতেই পারে। বেশ কিছু মূলধারার গণমাধ্যম সরাসরি তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিংবা নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র থেকে নিশ্চিত হয়ে গুজবটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও ছিল চোখে পড়ার মতো। আবারও সেই কথা বলেই লেখাটির ইতি টানি, মৃত্যুসংক্রান্ত গুজবে অমর্ত্য সেনের নামই প্রথম নয় এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর নামটিও শেষ নয়।