মহামারি ও সাহিত্য

প্রচ্ছদ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
প্রচ্ছদ: সব্যসাচী মিস্ত্রী

‘কোনো শহরের সঠিক পরিচয় পেতে হলে খোঁজ রাখতে হয় সেখানকার মানুষ কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ভালোবাসে, আর কেমন করেই বা তারা মরণকে বরণ করে।’ আলবেয়ার ক্যামুর প্লেগ উপন্যাসের একেবারে প্রথমেই আছে এই বাক্যটি। আপনি চাইলে এই বাক্যের দিকে চেয়ে থাকতে পারেন কয়েক সেকেন্ড। ভাবতে পারেন যে কেন ক্যামু মরণের কথাই বললেন, জীবনযাপনের কথা নয়! একটা শহরের জীবনের উচ্ছলতা, আনন্দ আর উৎসবের মধ্যে কেন তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না? কেন পথেঘাটে রোজকার প্রাণচাঞ্চল্য, হাসি-আনন্দ আর বেঁচে থাকার সংগ্রামের গল্প সেই শহরের ভেতরকার গল্প হয়ে ওঠে না?

ভেবে দেখুন, ক্যামুর এই বাক্যটি একটা অমোঘ সত্যের মতো কি মনে পড়ে যায় না, যখন চকবাজারের আগুনমুখো রাস্তায় প্রবেশের আগমুহূর্তে রিকশায় বসা দুই হাস্যোজ্জ্বল বান্ধবীর ছবি আমাদের চোখের সামনে ভাসে? যখন সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে এক মা এই নগরের রাজপথে রক্তাক্তমুখে এলোমেলো চুলের ভেতর দিয়ে কারও ক্যামেরার দিকে চেয়ে শেষবারের মতো জীবনের নিষ্ঠুরতাকে প্রত্যক্ষ করেন? কিংবা এক সন্তানকে সমাহিত করে মা–বাবা কবরখানা থেকে ছুটে আসেন মরণাপন্ন আরেক সন্তানের কাছে, কোনো শোক পালন না করেই?

হ্যাঁ, এই আমাদের শহর। এখানে মানুষ এভাবেই মরণকে বরণ করে। ক্যামু ঠিকই বলেছেন। বলেছেন, ‘এমন একটা শহরের কথা কি কেউ ভাবতে পারে যেখানে পায়রা নেই, যেখানে গাছপালা বা বাগান বলতে কিছু চোখে পড়ে না, যেখানে কেউ কখনো পাখির ডানার ঝটপটানি বা গাছের পাতার শনশনানি শোনেনি—যে শহর বলতে গেলে এসব দিক থেকে একেবারে নিঃস্ব?’ ক্যামুর বর্ণিত অভিশপ্ত বিবর্ণ ওরান শহরের সঙ্গে কেন যেন আজকাল আমার শহরের মিল খুঁজে পাই। বড় বেশি নিঃস্ব, রিক্ত, শূন্য মনে হয় শহরটাকে। যে শহরে জন্ম, বেড়ে ওঠা, তারুণ্য, প্রেম আর সংসার, কেন যেন তাকে আর ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না।

ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন নাজমুল আলম। স্বামী-স্ত্রী মিলে অনাগত সন্তানের জন্য কিনেছেন ছোট ছোট জামা, জুতো, পুতুল। হয়তো খুনসুটি করেছেন মেয়েটি কার মতো দেখতে হবে তা নিয়ে বা তার নাম নিয়ে। তারপর এল প্রত্যাশিত সেই ক্ষণটি, কিন্তু সন্তান জন্মের সময় নাজমুল আলম চলে গেছেন অনেক দূরে। হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) ডেঙ্গু আক্রান্ত অচেতন পিতার কানে পৌঁছায়নি সন্তানের জন্মসংবাদ। মেয়ের জন্মের পরপরই তিনি পাড়ি জমিয়েছেন অজানার উদ্দেশে। পত্রিকায় এই খবর পড়তে পড়তে যখন গোটা শহরটাকে অভিশাপ দিতে ইচ্ছে করে, তখন আলবেয়ার ক্যামুর প্লেগ পড়ি। যেখানে ডাক্তার রিও বলছেন, ‘এত লোকের মৃত্যু দেখেও আমি আজও মৃত্যুতে অভ্যস্ত হতে পারিনি, মৃত্যু আমার কাছে সেই রহস্যই রয়ে গেছে।’

হররোজ, হাসপাতালের গণ্ডি পেরোবার সময়, স্বজনহারাদের আর্তনাদ কানে এলে কি কফিন নিয়ে ছুটে চলা অ্যাম্বুলেন্স চোখে পড়লে মনে বাজে ডাক্তার রিওর কথা। এত এত মৃত্যু, কিন্তু মৃত্যু এখনো বিব্রতকর, অস্বস্তিকর। মনে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির কথা, সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় বাপের বাড়ি থাকবে বলে যে ঢাকা ছেড়ে গিয়েছে জয়পুরহাটের উদ্দেশে। কিন্তু তার রক্তে যে এই শহর ডেঙ্গু ভাইরাস বুনে দিয়েছে, তা সে জানত না। তবে সূদূর প্রবাসে বসে মেয়েটির স্বামী জানতে পেরেছে, এ নির্দয় শহর কেড়ে নিয়েছে তার প্রিয়তমা পত্নীর জীবনের আলো।

আলবেয়ার ক্যামুর প্লেগ–এর প্রচ্ছদ

এই নগরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পাহাড়ি মেয়ে ইউ খেইন নু। যদি কখনো দেখা হতো, ইউ খেইন নুকে বলতাম, কেন এসেছিলে এখানে? ভেবেছিলে বুঝি এ নগর তোমায় সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে? ভুল, এ শহর কেবল মৃতদের। ওকে মনে করিয়ে দিতাম ওরান শহরবাসীকে নিয়ে ক্যামুর সেই নির্মম সত্য বাক্য, ‘ভবিষ্যতের সমস্ত চিন্তাকে মুছে দেয়, মানুষের সমস্ত গতিবিধিকে পঙ্গু করে দেয়, তার সমস্ত আলাপ–আলোচনাকে নিরর্থক করে তোলে এমন এক ভয়াবহ মহামারির চিন্তা সত্যিই তাদের মনে আসবে কি করে? নিজেদের মুক্ত–স্বাধীন বলেই তারা ধরে নিয়েছিল, কিন্তু মহামারি কোনো দিন মানুষকে মুক্ত বা স্বাধীন থাকতে দেয় না।’

সত্যি, এই শহরে আমরা কি ভয়ানক এক পরাধীনতার শৃঙ্খলে আটকে যাইনি? আমাদের কি মুক্তি আছে, এক মৃত্যু ছাড়া? তা–ও যদি সেটি সম্মানজনক মৃত্যু হতো!

আলবেয়ার ক্যামু ছাড়াও মহামারি নিয়ে কালজয়ী উপন্যাস লিখেছেন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস—লাভ ইন দ্য টাইম অব কলেরা। এ উপন্যাসও শুরু হয়েছে একটি সদ্য মৃত্যুদৃশ্যের বর্ণনা দিয়ে। ডা জুভেনাল উরবিনো সেই বিবর্ণ মৃত্যুদৃশ্যে উপস্থিত থেকে ভাবছেন, ‘একটা সম্মানজনক মৃত্যুর জন্য এ রকম একটা জায়গা কিছুতেই পবিত্র ও কাম্য বলে গণ্য হতে পারে না!’ এই মৃত্যুদৃশ্য পাঠ করার সময় পাঠক কল্পনাও করেন না যে এই ডা উরবিনোরই মই থেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে বিশ্রী রকমের অসম্মানজনক মৃত্যু ঘটতে চলেছে আর সামান্য পরেই, আর তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে তার শোকাতুর বাহাত্তর বছর বয়সী স্ত্রী ফারমিনা ডাজা মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তার কৈশোরের প্রেমিক ফ্লোরেনটিনো আরিজার, যে কিনা এতগুলো বছর ধরে এই মাহেন্দ্রক্ষণটির অপেক্ষায়ই ছিল। মার্কেসের এ উপন্যাস যত না মহামারি নিয়ে, তার চেয়ে বেশি এক আশ্চর্য জীবন্ত ভালোবাসার গল্প বলে চলে। বৃদ্ধ ফারমিনা ডাজার স্মৃতিতে ভাসমান একটা গোটা জীবনের ছবি, ভালোবাসা আর দাম্পত্যের অদ্ভুত জটিলতার গল্প, কিংবা ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের কলেরা উপদ্রুত বন্দরনগরের মানুষগুলোর সহজ গতানুগতিক জীবনের কাহিনি অসাধারণ নৈপুণ্যে এবং জাদুময় ভাষায় বর্ণনা করে চলেন ঔপন্যাসিক। উপন্যাসের উপান্তে এক ব্যর্থ প্রেমিকের তিপ্পান্ন বছর সাত মাস এগারো দিনের আশ্চর্য এক অপেক্ষার প্রহর গোনার পর অবশেষে আসে সেই দিন, যখন জীবনসায়াহ্নে উপনীত দুজন নর-নারী একদিন হলুদ ‘কলেরা ফ্ল্যাগ’ লাগানো নিউ ফিডেলিটি নামের জাহাজে চেপে নিরুদ্দেশে জমায়। ফ্লোরেনটিনো আরিজা হুকুম দেয় জাহাজের কাপ্তানকে, ‘বেশ, চলো এবার, আমরা চলতেই থাকি, চলতেই থাকি, চলতেই থাকি...’। কাপ্তানের যেন বিশ্বাস হয় না এমন হঠকারী বক্তব্য, সে জানতে চায়, ‘এই ক্রমাগত আসা-যাওয়ার বেকুবি কদ্দিন ধরে চলতে থাকবে?’ ফ্লোরেনটিনোর উত্তর, ‘চিরকাল!’ এ সময় কাপ্তানের মনে জাগে সন্দেহ, জীবন, আসলে বুঝি মৃত্যুর চেয়ে বেশি সীমাহীন!

মোহাম্মদপুর মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইয়ানের গল্প পড়তে পড়তে মার্কেসের কথা মনে পড়ে যায়। হাসপাতালের সাততলায় আইসিইউতে মৃত্যুর নিস্তব্ধ শীতলতাকে যখন কাছ থেকে দেখছিল রাইয়ান, ১১ তলায় তারই শূন্য করে আসা কেবিনে সে সময় শুয়েছিল ওর বোন মালিহা। হতভাগ্য মা–বাবা কবরখানার ঘোর অন্ধকারে ছোট্ট রাইয়ানকে শুইয়ে দিয়ে শোক করবার সময়টুকুও পাননি, বেঁচে থাকা আরেক সন্তানকে প্রবল শক্তি দিয়ে আঁকড়ে রাখার জন্য ছুটতে ছুটতে আবার এসেছেন হাসপাতালে। মার্কেস বেঁচে থাকলে কি এই আসা-যাওয়া নিয়ে আরেকটা কালোত্তীর্ণ উপন্যাস লিখে ফেলতেন? কবরস্থান আর জীবনের মধ্যকার এই পথটিতে ক্রমাগত আসা-যাওয়ার বেকুবি ঠিক কত দিন ধরে চলবে, প্রশ্ন করতেন কি তিনি আমাদের শহরের কর্ণধারদের? আজকাল এসব প্রশ্ন করতেও আর মন চায় না।

গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের লাভ ইন দ্য টাইম অব কলেরা ও ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিটিউড–এর প্রচ্ছদ

য়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিটিউড উপন্যাসেও মার্কেস এমন অদ্ভুত মারির গল্প বলেন। এখানে মাকোন্দো গ্রামের সবাই আক্রান্ত হতে থাকে ভুলে যাওয়া রোগে। তারা প্রতিটি জিনিসের গায়ে নাম লিখে রাখতে শুরু করে—চেয়ার-টেবিল, থালা-বাসন, দরজা-জানালা—কোনটা কী! তারা কখনো ঘুমাতে পারে না। এ সময় ভিজিতাঁসিয়া নামের চরিত্রটি সবাইকে বুঝিয়ে বলে যে রোগাক্রান্তকে সর্বদাই জেগে থাকতে হয় বলে ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে তার স্মৃতি। তারপর বিভিন্ন জিনিসের নাম, সেগুলো সম্পর্কে ধারণা, শেষ পর্যন্ত নিজের পরিচয় এমনকি আপন সত্তাও ভুলে যায় সে।

গোটা উপন্যাসে এভাবে মার্কেস এক আশ্চর্য স্মৃতিহীনতা আর অতীতহীনতার মহামারির জাদুবাস্তব গল্প বলেন। এখন আমরাও তো এমন এক ভয়ানক মহামারিতে আক্রান্ত। এই যে এই শহরে দালান ধসে পড়ে কয়েক শ গার্মেন্টসকর্মী কয়েক মুহূর্তে থেঁতলে যায়; এ শহরে যে চলন্ত বাস রাস্তার পাশে স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের গায়ে অবলীলায় উঠে পড়ে; এই যে একটা সামান্য পতঙ্গ প্রতি বর্ষা মৌসুমে রাইয়ানের মা–বাবার কোল একলহমায় খালি করে দেয়, আমরা নির্বিবাদে এত সহজে সবকিছু ভুলে যাই কীভাবে? কী করে এরপরও হাসিমুখে শপিং করি, কফি শপে কফি খেতে খেতে সেলফি তুলি, আবার সেই ছবি আপলোড করে হাজারো লাইক পাওয়ার আশায় বসে থাকি, এরপরও এখানে কেন জীবনের জয়গান গাই আমরা? এ-ও কি একধরনের জাদুবাস্তবতা নয়?

মহামারি নিয়ে আরেক বিখ্যাত উপন্যাস হোসে সারামাগোর ব্লাইন্ডনেস। উপন্যাসের প্রথম দিকে এক অন্ধ মানুষ স্বপ্ন দেখে সে অন্ধ হয়ে যাচ্ছে! তারপর সত্যিই অন্ধ হয়ে যায় সে। অন্ধ মানুষগুলোকে শহরের কোণে ‘অ্যাসাইলাম’–এ আটকে ফেলার পরও ছড়াতে থাকে মহামারিটি, আরও নতুন নতুন মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে থাকে প্রতিদিন। কীভাবে একটা অন্ধ চোখ, যা দেখতে পায় না, সেটি অন্য কারও চোখকে সংক্রমিত করে, তা বুঝতে পারে না কেউ। এ অবস্থায় কূলকিনারা করতে না পেরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সাহায্য চায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। শেষ অবধি এক কর্নেল এ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে যেহেতু অন্ধ চোখই কেবল রোগটা ছড়াতে পারে, তাই সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো অন্ধ হওয়ামাত্র সেই চোখটাকে লক্ষ করে গুলি ছোড়া। অন্ধ মানুষের চেয়ে বরং মৃত মানুষ ভালো! কী ভয়ানক আর নিদারুণ পরিহাস সারামাগোর!

হোসে সারামাগোর ব্লাইন্ডনেস–এর প্রচ্ছদ

সারামাগোর আশ্চর্য অবিশ্বাস্য এই গল্প ক্রমাগত উপহাস করতে থাকে মানুষের গড়ে তোলা সভ্যতাকে। উপন্যাসের একেবারে অন্তিমে অবশ্য দৃষ্টি ফিরে পেতে শুরু করে শহরবাসী, আনন্দে নেচে-গেয়ে ওঠে তারা। তখনই পাঠকের কাছে শেষ পরিহাসটি ছুড়ে দেন সারামাগো।উপন্যাসের বর্ণনাকারী ‘ডাক্তারের স্ত্রী’ নামে পরিচিত এক মধ্যবয়সী নারী এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে আসলে তারা কেউ কখনো অন্ধ হয়ে যায়নি, বরাবর তারা অন্ধই ছিল, অন্ধ কিন্তু দেখতে পায় এমন আর কি। আর অন্ধ, যারা দেখতে পায়, তারা আসলে কিছুই দেখে না!

ক্যামুর প্লেগ-এর শেষেও সুদিন আসে। দুঃসময় কেটে যায়। উল্লাসে মেতে ওঠে মানুষ। কিন্তু ডাক্তার রিও নিশ্চিন্ত হতে পারে না। কেননা, ‘এ কথা ডাক্তার জানেন যে এই কাহিনি মানুষের চরম জয়ের বৃত্তান্ত হতে পারে না। সেই দুঃসময়ে মানুষের কী করণীয় ছিল তারই একটা ইতিহাসের শুরু এ আখ্যায়িকার পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে; সন্দেহ নেই, মানুষকে ভবিষ্যতে আবার সেই একই জিনিস (সংগ্রাম) সাধন করতে হবে। তিনি জানেন হয়তো আবার এমন দিন আসবে যখন দুর্ভাগা মানুষগুলোকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই মারি ঘুম থেকে জেগে উঠে তার বাহন ইঁদুরগুলোকে জাগিয়ে তুলে আবার কোনো আনন্দমুখর শহরের পথেঘাটে মরতে পাঠাবে।’

এসব উপন্যাসের পাতায় চোখ বুলিয়ে কেন যেন মন পুনরায় প্রশ্নাকুল হয়ে ওঠে। মনে হয়, চিৎকার করে শেষ প্রশ্নটি করেই ফেলি: হে অন্ধ নগরী, হে মৃত নগরী, এখানে কি সত্যি কোনো দিন সুদিন আসবে? সম্মানজনক মৃত্যুর অধিকার কি মিলবে নগরের অধিবাসীর? নাকি আমরা—এই নগরবাসীও অন্ধই ছিলাম, যারা দেখতে পাই কিন্তু আসলে কিছুই দেখতে পাই না!