বলছি এক জঙ্গলের কথা। এমন এক জঙ্গল, যেখানে সবাই আধুনিক। এখানে বাঘ হরিণকে দেখলে ধাওয়া করে না। সেখানে খরগোশ-কচ্ছপের লড়াই হয় না।
শুরু করি একটা পাখির পরিবার নিয়ে। এই পরিবারে রয়েছে মা পাখি, বাবা পাখি ও তিনটি বাচ্চা। সকালবেলা মা পাখির শিকারে যেতে হয় না। তিনি ফোনের ইন্টারনেটে ঢুকেই খাবার অর্ডার করে ফেলেন। অন্যদিকে ছোট্ট বাচ্চাগুলো তখন ফেসবুকিংয়ে ব্যস্ত থাকে। আরেকদিকে বাবা তখন অফিসের জন্য রেডি হন। তার ঠিক পাশের গাছেই থাকে দুই কাঠবিড়ালি ভাই। তারা অবশ্য এখনো ঘুমাচ্ছে। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত গেম খেলে কি আর এত সকালে সজাগ থাকা যায়! এই গাছটির ঠিক ডানদিকেই আছে একটা পুকুর। এই পুকুরে থাকে মাছদের যৌথ পরিবার। দাদা মাছ, দাদি মাছ, চাচা মাছ, চাচি মাছ, মা মাছ, তাদের ১০টা বাচ্চা আবার একটি কাজের লোকও আছে। বাড়ির বড়রা যখন ই-বুকে সংবাদপত্র পড়তে ব্যস্ত, তখন ছোটরা ভাইবারে চ্যাট করছে।
এবার আসি বাঘের কথায়। এই জঙ্গলের বাঘগুলো বেশ ভদ্র। ক্ষুধা না লাগলে শিকার করে না। এখানে ছোট বাঘগুলো যখন ইউটিউব দেখে শিকার করা শেখে, তখন মা বাঘ দেখে টিভি সিরিয়াল। এই জঙ্গলে কচ্ছপ-খরগোশে লড়াই না হলেও ঝগড়াটা এখনো শেষ হয়নি। পূর্বপুরুষের হেরে যাওয়ার দুঃখ এখনো ভোলেনি খরগোশ। তাই তো কচ্ছপের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ‘কনফার্ম’ করে না তারা।
আর হাতি? তার কথা আর না-ই বললাম। বেচারার বিশাল দেহের ছবি আপলোড করতে এত সময় লাগে যে কেউ আর তার ছবিই তুলতে চায় না।
এই হলো এক বিচিত্র জঙ্গল। এখানে সবাই যেন ভাই ভাই।
জঙ্গলের ঠিকানাটা কি বলব? থাক নাহয়।
সপ্তম শ্রেণি, বিয়াম মডেল স্কুল