অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান
অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

বলা না–বলার ইশারা–আভাসে

দেশ উত্তাল। কারফিউ আর ইন্টারনেটের সংযোগহীনতায় সবাই বিচ্ছিন্ন। উৎকণ্ঠায় ভরা রুদ্ধশ্বাস এক সময়। কথাসাহিত্যিকের কলমে এই সময়ের দিনলিপি

কাগজে-কলমে সন্ধ্যা হলেও চারদিকে এখনো দিনের মতোই আলো। জুলাই মাসজুড়েই এমন অবস্থা। সন্ধ্যা সাতটা-সাড়ে সাতটা অবধি আলো জেগে থাকে চরাচরজুড়ে।

কয়েক ঘণ্টা শিথিল থাকার পর আবার বলবৎ হয়েছে কারফিউ। গত কয়েক দিনের মতো আজ আর গোলাগুলি হচ্ছে না। শুধু বড় রাস্তায় বের হলে ধাওয়া দিচ্ছে। এদিকটা বড় রাস্তা থেকে অনেক ভেতরে।

কারফিউ জারি থাকলেও এখানে লোকজনের মধ্যে ঘরে ফেরার তাড়া নেই। ঘরে ফিরেই বা কী করবে? কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেট নেই। গত ২০ বছরে ইন্টারনেটের সঙ্গে নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলেছে মানুষ। ইন্টারনেট ছাড়া সময় কাটানোর সব উপায় বেমালুম ভুলে আছে। গতকাল কয়েকজন রাজমিস্ত্রি জটলা করে দাঁড়িয়ে ছিল একটা সবজির দোকানের সামনে। তারাও জিজ্ঞেস করল, ‘ইন্টারনেট কবে খুলবে?’

বারান্দায় দাঁড়িয়ে খানিক আগে দেখলাম, পাশের বাসার অপ্রশস্ত বারান্দায় ক্যারম বোর্ড পেতে একই পরিবারের চার সদস্য খেলছে। ফোনে এক বন্ধুকে বলছিলাম, বহু বছর পর এমন দৃশ্য দেখলাম। বন্ধু বললেন, তাঁদের বাসায়ও একই অবস্থা। তাঁরা লুডু বোর্ড বের করেছেন। কেউ–বা দাবার বোর্ড পেতে খেলতে শুরু করেছেন।

দুই দিন ধরে হতাহত হওয়ার ঘটনা নেই। ভয় কেটে যাওয়ায় মানুষ এখন বারান্দায় আসছে। কয়েক দিন বারান্দায় আসতেও ভয় পেত, কখন কোথা থেকে গুলি এসে লাগে।

প্রতি সন্ধ্যায়ই দেখছি, কারফিউর মধ্যেও গলি-উপগলিজুড়ে অনেক মানুষ জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকছে। ছোট ছোট জটলা ভবনগুলোর সামনে।

বড় রাস্তায় নামতে মানা বলে খানিকটা দূরে গিয়েও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করার উপায় নেই। নিজেদের গলি বা পাশের গলিতে থাকা বন্ধুবান্ধবকে খুঁজে নিয়েছে অনেকেই। আমার বেলায়ও একই ঘটনা ঘটেছে। কীভাবে কীভাবে যেন আশপাশের গলিতে বসবাসরত সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের একটা দলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে গেছে। পাড়ার চায়ের দোকানে কারফিউর সন্ধ্যাগুলোয় নিয়মিত দেখা হচ্ছে তাদের সঙ্গে। অথচ কয়েক দিন আগেও জানতাম না আমরা এত কাছাকাছি থাকি।

কিছুটা দূর থেকে এক বন্ধু আমাদের আড্ডায় আসছেন। বড় রাস্তা পার হতে হচ্ছে না তাঁকে, কিন্তু ঝুঁকি মোকাবিলা করেই আসতে হচ্ছে। তিনি বললেন, ঘরে আর কতক্ষণ থাকা যায়? কোভিড-১৯-এর লকডাউনের সময়ও এমন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি ছিল। সে সময় মৃত্যুভয়টা ভেতর থেকে তৈরি হয়েছিল। এবার উল্টো। কোভিডের সময় ইন্টারনেট ছিল। কতভাবে যোগাযোগ করা যেত। এবার ইন্টারনেট নেই, বাসায় বসে যে টিভি দেখব, তার উপায়ও নেই। যাঁরা স্যাটেলাইট ডিশ অ্যানটেনা সংযোগ নিয়েছেন, তাঁরা টিভি দেখতে পারছেন না। সাধারণ সংযোগে টিভি দেখা যাচ্ছে বটে, কিন্তু বন্ধুর মতে, চ্যানেলগুলো সব ‘বিটিভি’ হয়ে গেছে।

টিভিনির্ভরতার যুগ পেছনে ফেলে এসেছিল লোকে। খবরের জন্য ইন্টারনেট মাধ্যমে লাইভ আপডেটে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। অস্বাভাবিক এই পরিস্থিতিতে কয়েক ধাপ পিছিয়ে আবারও ছাপা কাগজের সংবাদপত্রের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে বারবার দেখছি, পত্রিকা দিয়ে গেল কি না। যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোটিফিকেশন চেক করছি। শেষ কবে এমন অধীর হয়ে সংবাদপত্রের জন্য অপেক্ষা করেছি, মনে পড়ে না।

বিদেশি চ্যানেলগুলোয় পুরোনো দিনের সিনেমা চলছে, অধিকাংশই দেখে ফেলা। টুকটাক খবর দেখার বাইরে সময় কাটানোর কোনো উপায় নেই। মুঠোফোনে সাধারণ কল যাচ্ছে-আসছে। কিন্তু ফোনে কথা বলার অভ্যাসও চলে গেছে অনেকের। জর্জ অরওয়েলের নাইন্টিন এইটি-ফোর উপন্যাসের মতো ভয় জেগে থাকে ফোনে কথা বলার সময়। কেউ না কেউ হয়তো শুনছে। তবু কথা যা হচ্ছে তা ফোনেই। প্রথম প্রথম শুরু হয়েছিল বলা না–বলার ইশারা–আভাসে। পরে ধীরে ধীরে কিছুটা বলতে শুরু করে মানুষ। কে কোথায় কী দেখেছে, কী শুনেছে সেসব ফোনে ফোনে দেশের সব মানুষই কমবেশি জেনে নিয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরের খবর একদমই অজানা। হয়তো বাইরের লোকেরাও জানে না দেশের খবর। স্মরণকালের ইতিহাসে এমন রুদ্ধদ্বার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি কি আমরা হয়েছিলাম?

চরিত্রটা যেমন হঠাৎ করে জানালা খুলেছিল, তেমনি হুট করে বন্ধ করে দেয় জানালাটা। কিন্তু ওটুকুতেই যা বোঝার বোঝা হয়ে যায়। আমরা বুঝতে পারি, প্যারিস শহরে ১৯৬৮ সালের ছাত্র বিক্ষোভ চলছে।

অনেক বছর আগে দেখা একটি ফরাসি সিনেমার কথা মনে পড়ছে। সিনেমাটির নাম মনে করতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, মস্তিষ্কের সঙ্গে ইন্টারনেটের কী গভীর এক নির্ভরতার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। নিজেদের অজান্তে স্মৃতির একটা বড় অংশ ইন্টারনেটে জমা রাখতে শুরু করেছি আমরা। যে তথ্য গুগলে সার্চ দিলে মুহূর্তে বের করে ফেলতে পারি, সে তথ্য আর মাথায় রাখতে চাই না এখন; কিংবা আমাদের মাথাই পরিণত হয়েছে একটা পোর্টেবল হার্ড ড্রাইভে। কম্পিউটারে বা স্মার্টফোনের ইন্টারনেট সংযোগ না পেলে সে হার্ড ড্রাইভ সক্রিয় হতে পারে না। ইন্টারনেট জীবনযাপন ও চিন্তাপদ্ধতি হয়ে উঠেছে। আমাদের মতো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য যদি এত জরুরি হয়ে ওঠে ইন্টারনেট সেবা, তাহলে যাঁরা এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও পরিষেবা পরিচালনা করেন, তাঁদের বেলায় কত গভীর ও সুদূরপ্রসারী অভিঘাত সৃষ্টি হয়েছে, তা কিছুটা অনুভব করার চেষ্টা করছি।

কয়েক দিন ফোনে বিরামহীনভাবে কল আসতে শুরু করলেও একসময় যেন থিতিয়ে এল। গুরুতর কিছু কি কোথাও ঘটল? না, সবার ফোনেই ব্যালান্স শেষ হয়ে আসছে। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে নতুন ব্যালান্স যে যোগ করা হবে, সে ব্যবস্থা তখনো চালু হয়নি। সবাই হিসাব করে কল টাইম খরচ করতে শুরু করেছেন। খবর পাচ্ছি, এ বাসা ও বাসায় বিদ্যুতের মিটারে ফুরিয়ে এসেছে টাকা। পানি ওঠানো যাচ্ছে না। বিল রিচার্জ করতে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে এক প্রতিবেশী দেখে এসেছেন, হাজার হাজার মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে ছিল কয়েকটা দিন, এটিএম বুথে টাকা নেই। মানুষের পকেটও ফাঁকা হয়ে আসছে দ্রুত।

জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে হু হু করে। কেনাকাটার জন্য বেশি দূরে যাওয়ার উপায় নেই। রাস্তার বিক্রেতারা কষ্ট করে যা আনছেন তা-ই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান থেকে। কাছেপিঠের পাইকারি বাজার থেকে ঝুঁকি নিয়ে জিনিসপত্র আনতে হচ্ছে তাঁদেরও। তবে বিক্রি হচ্ছে দেদার। গলির মোড়ে ফলমূল-শাকসবজি যা আসছে, মুহূর্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

ফরাসি সেই সিনেমার গল্পে ফিরে আসি। একটা বাড়িতে কয়েকজন তরুণ-তরুণীর পারস্পরিক সম্পর্কের জটিলতা নিয়েই মূলত সিনেমার গল্প। পরিচালক পরিপ্রেক্ষিতটা দেখাচ্ছেন না অনেক সময়জুড়ে। কোন সময়ের গল্প, কোন শহরের গল্প, কিছুই জানা যাচ্ছে না। এটুকু শুধু বোঝা যাচ্ছে, ছেলেমেয়েগুলো অবস্থাপন্ন ঘরের। তাদের মধ্যে নতুন চিন্তাভাবনার চর্চা চলছে সম্পর্ক নিয়ে। কাহিনি যখন জটিল বাঁক নিতে থাকে, তখন সিনেমারই এক চরিত্র হঠাৎ করে বাড়ির দোতলার জানালা খুলে দেয়। মুহূর্তে যেন খুলে যায় প্যান্ডোরার বাক্স। আমরা দেখতে পাই, বাইরে প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলছে। ছাত্ররা ঢিল ছুড়ছে পুলিশের উদ্দেশ্যে। বিরামহীন তীব্র সাইরেন বাজছে দূরে। গুলি চলছে মুহুর্মুহু। একজনকে ধরে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে কয়েকজন পুলিশ। রাস্তায় নিহত বা অজ্ঞান একজন মানুষ পড়ে আছে। সতর্কতামূলক বাঁশি বেজে চলেছে। পরিচালক দৃশ্যটা দেখান খুব কম সময়ের জন্য। চরিত্রটা যেমন হঠাৎ করে জানালা খুলেছিল, তেমনি হুট করে বন্ধ করে দেয় জানালাটা। কিন্তু ওটুকুতেই যা বোঝার বোঝা হয়ে যায়। আমরা বুঝতে পারি, প্যারিস শহরে ১৯৬৮ সালের ছাত্র বিক্ষোভ চলছে। বাইরের এই বিক্ষোভের কারণে অবস্থাপন্ন পরিবারের এই ছেলেমেয়েরা এই বাড়িতে আটকা পড়ে আছে।

সংকটের মধ্যে ওই সিনেমার কথা বারবার মনে পড়ছে। আমাদের আপাতত শান্তিকল্যাণ হয়ে থাকা জীবনের জানালাটা কে যেন হঠাৎ করে খুলে দিল! আমাদের জীবনে যে সংকট ছিল না, তা নয়। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে। অল্প রোজগারে আর কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। রাজকোষ খালি হয়ে যাচ্ছে। চারদিকে মন্দার বাতাস। ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। কোথাও কোনো নিশ্চয়তা নেই। শত দুশ্চিন্তায় কাবুই হয়ে ছিলাম আমরা সবাই। কিন্তু জানালাটা বন্ধ ছিল। হঠাৎ খুলে গেল। আর আমরা দেখলাম ১৯৬৮ সালের প্যারিস—পারি। শুধু পারি কেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদে সে সময় সারা দুনিয়ার ছাত্ররা নেমে এসেছিল রাস্তায়। দুনিয়া–কাঁপানো ছাত্র আন্দোলনের সময় ছিল সেটা।

কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছিল, পৃথিবীতে আবারও ১৯৬৮ সাল ফিরে এসেছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় জোরদার ছাত্র আন্দোলন ও প্রতিবাদ দেখে মনে হচ্ছিল, পৃথিবীতে পুরোনো দিন ফিরে এসেছে কয়েক দশক পর। তবে এবার নতুনরূপে। ইউক্রেনের যুদ্ধের বিপক্ষেও রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ। কিন্তু তখন কি বুঝেছিলাম, বাংলাদেশেও ১৯৬৮-৬৯ ফিরে আসবে?

অনেক কিছু পরিবর্তিত হলেও আমাদের দেশে এখনো একটা রেওয়াজ আছে। পরিবারের সন্তানেরা বড় হয়ে পরিবারের ভার গ্রহণ করে। তারা চাকরি পায়, ব্যবসা করে, নতুন সংসার পাতে। মা–বাবার বানানো পুরোনো বাড়িঘর নতুন করে সংস্কার করে। সম্ভব হলে, নতুন বাড়িঘর ওঠায়। নতুন চিন্তাভাবনা ও নতুন সম্ভাবনা পরিবারগুলোকে নতুন জীবন দেয়। দেশের বেলায়ও এমনটা ঘটে। নতুন একেকটা প্রজন্ম আসে অনেক বছর পরপর। তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার আগেই পড়াশোনার সময়েই নতুন চিন্তার বিস্ফার ঘটায়। বলে, যেভাবে চলছে, সেভাবে আর চলবে না। রক্তের অক্ষরে লেখে নতুন ইতিহাস। আমাদের দেশের ইতিহাসও প্রতিটি রূপান্তরের বাঁকে এমনই ঘটনাবলির মুখোমুখি হয়েছে। ছেলেমেয়েরা পাস করে যেভাবে পরিবারের দায়িত্ব তুলে নেয়, সেভাবে ক্যাম্পাসে–ক্যাম্পাসে গিয়ে দেশের দায়িত্বও তুলে নেয়। ১৯৫২, ১৯৬৯ ও ১৯৯০ সালের কথা আমাদের সবার জানা। কিন্তু ইতিহাসের অর্জন আমরা মনে রাখলেও বিসর্জন মনে রাখি না।

চেক কথাসাহিত্যিক মিলান কুন্ডেরা বলেছিলেন, ভুলে যাওয়ার বিরুদ্ধে মনে রাখার লড়াই হলো ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম উপাদান। কিন্তু মনে রাখা কষ্টকর। আসলেই কি কষ্টকর? আমি আমার একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছি ১৪ মাস হলো। বেঁচে থাকলে নিভৃত অনুরণনের বয়স এই ২০ জুলাইয়ে ১৪ বছর হতো। সন্তান হারানোর বেদনা কেমন? যিনি সন্তান হারাননি তিনিও আমাকে বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টকর অভিজ্ঞতা এটা। আমি মুখে কিছু বলি না। কিন্তু মনে মনে বলি, তারও চেয়ে বেশি।

গাজায় শত শত শিশুর লাশ যখন সারি সারি কবরে নামাতে দেখি, বুঝতে পারি, এই মা–বাবার প্রত্যেকে তাঁদের পুরো জীবনে কখনো ভুলতে পারবেন না এ স্মৃতি। এই অনুভূতি অনেকটা শরীরের অদৃশ্য, কিন্তু অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ কেটে নিয়ে যাওয়ার মতো। রক্তপাতের ব্যথাটা যায় না কিছুতে। আমার সন্তান চলে গেছে রোগাক্রান্ত হয়ে। কিন্তু যাঁদের সন্তানকে ইচ্ছাকৃতভাবে কেড়ে নেওয়া হয়, তাঁরা কী ভাবেন? তাঁরা কি ভুলে যেতে পারেন? আজ যারা গাজায় মারা যাচ্ছে, যারা বাংলাদেশে মারা গেল, তারা তো আমার সন্তানেরই বয়সী। হয়তো কিছুটা ছোট বা বড়। তাদের প্রস্থান প্রত্যেক মা–বাবার মনে যে অমোচনীয় ও বিয়োগান্ত স্মৃতি তৈরি করে দিয়ে গেল, তা নিশ্চিতভাবে তাঁরা কখনো ভুলতে পারবেন না। কিন্তু ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়তে হলে অন্যদেরও মনে রাখতে হবে তাঁদের কথা। কেননা স্মৃতির মিনারে রক্তের অক্ষরে লেখা বর্ণগুলোই নতুন ইতিহাসের দিকে নিয়ে যায়।

এই লেখা শেষ করছি ভোরে। সূর্য উঠছে। আলো ক্রমে আসিতেছে…