তাঁর মৃত্যুর পর পার হয়েছে এক যুগের বেশি। কিন্তু এখনো তিনি প্রবলভাবে সরব, পাঠক কেন বারবার ফেরেন তাঁর কাছে?
১৩ নভেম্বর নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন সামনে রেখে এ প্রশ্নের অনুসন্ধান
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর এক যুগের বেশি সময় পার হয়েছে। এখনো প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রসঙ্গে তাঁর কথা মনে আসে। তাঁর নাটকের সংলাপ আমাদের প্রাত্যহিকতার অংশ। এখনো তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন লেখা পাঠক আগ্রহ নিয়ে পড়েন। তাঁর না থাকার এত বছর পরও বাংলাদেশে তাঁর জায়গা নেওয়ার মতো নতুন কেউ আসেননি। বইমেলায় তাঁর বইয়ের নতুন নতুন সংস্করণ আসে, ‘হুমায়ূন আহমেদকে যেমন দেখেছি’ ধরনের লেখার বিক্রিও ভালো। তাঁর পুরোনো নাটক আবার রিমেক হচ্ছে। তিনি কত রকমের ভর্তা খেতে ভালোবাসতেন, সেই বিষয়েও বই আছে। তাঁকে ঘিরে মোটামুটি একটা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। এর থেকে এটুকু অন্তত বুঝতে পারা যায়, এত বছর পরও হুমায়ূন আহমেদ প্রাসঙ্গিক।
আমরা তো সব ভুলে যাই, তিন মাস আগের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের কবরে ঠিকমতো ঘাস জন্মানোর আগেই তাঁদের ভুলে গিয়ে আমরা আবার বিভেদের রাস্তায় হাঁটছি। এ কারণেই আমাদের মনে, চিন্তায় হুমায়ূন আহমেদের থেকে যাওয়াটা বেশ উল্লেখ করার মতো বিষয়।
জনপ্রিয় বনাম মানসম্পন্ন লেখার সেই চিরাচরিত তর্ক ঘুরেফিরে আসে তাঁর প্রতি জন্মদিন আর মৃত্যুবার্ষিকীতে। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতার উচ্ছিষ্ট হিসেবে যে বাইনারি ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর কবলে এখন সারা দুনিয়া, এ বিষয়কেও তার থেকে আলাদা মনে হয় না আমার। যেন একটা হলে আরেকটা হতে পারবে না। ভালো সাহিত্য কাকে বলে? খুব প্রাথমিক একটা প্রশ্ন হয়তো। কিন্তু এ সম্পর্কে আমার ধারণা খুব আবছা। কেন একটা লেখা পড়তে ভালো লাগে? কেন মনে গেঁথে যায়? গল্পের চরিত্ররা কীভাবে আমাদের কাছে সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠে? এসব নিজের মতো করে বুঝতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি। যেকোনো শিল্পই তো শেষ পর্যন্ত একরকম অভিব্যক্তি। যা নিশ্চিতভাবে কোথাও পৌঁছে যায়, তাকে আমার শিল্প মনে হয় না, কোনো কিছুর হয়ে উঠতে থাকার মধ্যেই শিল্পের বসবাস। সাহিত্যও এর বাইরের কিছু নয়। আমার মনে হয়, গন্তব্যের চেয়েও পথ চলাটাই এখানে দামি।
১৯৮৬ সালে শাকুর মজিদের নেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন, ‘একটা সার্থক উপন্যাসে সমাজ ও কাল উঠে আসবে, লেখক একটি দর্শন দিতে চেষ্টা করবেন। উপন্যাস মানে তো শুধু গল্প নয়, গল্পের বাইরেও কিছু।’ উপন্যাসকে তিনি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন, জানতে চাইলে বলেছিলেন, ‘কোনোভাবেই করব না, আমি যদি জানতাম উপন্যাস কী, তাহলে তো নিজেই লিখতাম। যা লিখেছি তার কোনোটিই কি সত্যিকার অর্থে উপন্যাস হয়েছে?’
একটা সার্থক গল্পে সমাজ ও কাল উঠে আসতেই হবে কি না, সে সম্পর্কে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আসলে একটা ভালো লেখা আমাদের প্রশ্ন করতে শেখায়। যা দেখতে দেখতে আমাদের চোখ সওয়া হয়ে গেছে, তার পরত খুলে খুলে দেখায়। যে সত্য আমাদের আশপাশে ছড়িয়ে আছে, কিন্তু খালি চোখে দেখতে পাই না, তা চোখের সামনে তুলে ধরে।
হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে থেকেই অনেক সামাজিক মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দেখি। রাবেয়ার মৃত্যুদৃশ্য মনে পড়ছে। পারিবারিক সম্মান বাঁচানোর জন্য ঘরেই তার গর্ভপাত করানো হয়। ঘরময় নষ্ট রক্তের গন্ধে দম আটকে আসছে, তার মধ্যে নিস্তেজ রাবেয়া বলে উঠছে, ‘আমার বুকটা খালি খালি লাগছে কেন?’ কিছুক্ষণ পর শীতকালের ঝকঝকে আলোময় একটা দিনে তাদের পলাতক কুকুর পলার কথা বলতে বলতে চুপচাপ মারা গেল রাবেয়া। ঠিক তখনই খোকার মনে পড়েছিল তার বড় খালার সন্তানসম্ভবা মেয়ের কথা। তিনি প্রসন্ন গর্বিত ভঙ্গিতে হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে অনাগত সন্তানের নাম ঠিক করছিলেন। শুধু একটা সামাজিক সনদের কারণে একই পরিস্থিতি কখনো গর্বের, কখনো অপমানের। পাশাপাশি এ দুটি বর্ণনার মাধ্যমে কি লেখক একটা প্রচ্ছন্ন প্রশ্নও রাখেননি?
খোকা আর তার মা–বাবার ঘরের মাঝখানে একটা বাঁশের বেড়ার ব্যবধান। খোকা ইনসমনিয়াক। গভীর রাতে তার ঘরে ভেসে আসে মা–বাবার আদরের শব্দ। সেই শব্দে একই সঙ্গে খোকার অস্বস্তি, উত্তেজনা ও পাপ বোধের কথা বলা হয়েছে খুব স্বাভাবিক ও নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত একটা বইয়ে এই রকম বর্ণনা নিঃসন্দেহে সাহসী।
হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাসটা প্রথমে পড়েছিলাম, তার নাম শঙ্খনীল কারাগার। আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। এর আগে এইসব দিনরাত্রির মাধ্যমে তিনি পরিচিত নাম হয়ে উঠছিলেন আমার কাছে। প্রথম বাক্যটাই নিয়ে গেল আরেক দুনিয়ায়, ‘বাস থেকে নেমেই হকচকিয়ে গেলাম। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে সব। রাস্তায় পানির ধারাস্রোত। লোকজন চলাচল করছে না, লাইটপোস্টের বাতি নিভে আছে।’
ছোট ছোট বাক্যগুলো বয়ে আনল বৃষ্টিমেশানো মফস্সলের রাত। নয়টার মধ্যেই চায়ের দোকান বন্ধ। বৃষ্টির কারণেই পারিপার্শ্বিক রহস্যে ঘেরা। দশ বছরের মন্টু অপেক্ষা করছে বড় ভাইয়ের জন্য। এতক্ষণে মায়ের ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছিল না। তাকে নাকি বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার সময় মা বলেছেন ভিক্ষা করে খেতে। মন্টু আর খোকার জগতে ঢুকে গেলাম আমিও। ওদের সঙ্গেই প্রায় জনমানবশূন্য অন্ধকার রাস্তায় হেঁটে ঘরে ফিরলাম। সেই প্রথমবারের পড়ায় বইটা তেমন করে না বুঝলেও তাদের পৃথিবীটা খুব নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল আমাকে। কী রহস্যময়ী আর দুঃখী মনে হয়েছিল ওদের মাকে! ছাপোষা বোকাসোকা বাবার জন্য মন খারাপ হয়েছিল। সেই সঙ্গে আবিদ হোসেনের একাকিত্বও কিছুটা অনুভব করেছিলাম হয়তো।
এখানেও মধ্যবিত্ত পরিবারের বয়ান হলেও খোকার মা শিরিনের চরিত্র নিয়ে এসেছিল অন্য আঙ্গিক। এই পরিবারে তিনি ছিলেন বেমানান। তাঁর বিত্তশীল অতীতের ছিটেফোঁটা খোকা ও তার ভাইবোন টের পেত মামা ও খালাকে দেখে, যাদের মনে হতো অন্য জগতের মানুষ। শিরিন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন আবিদ হোসেনকে। কয়েক বছর পর সে বিয়ে ভেঙে গেছে, তত দিনে জন্ম হয়েছে রাবেয়ার। খোকার বাবা তাঁর দ্বিতীয় স্বামী, একসময় আশ্রিত ছিলেন শিরিনদের বাড়িতে। এতগুলো সন্তান জন্মানোর পরও কখনো সহজ হতে পারেননি স্ত্রীর কাছে, তাঁদের মধ্যে থেকে গেছে শ্রেণিবৈষম্য।
মেলবোর্নে এক বিকেলের ট্রেনে বাসায় ফিরতে ফিরতে পড়ছিলাম নির্বাসন। মফস্সল শহরের একান্নবর্তী পরিবারের একটা মেয়ে জরী, তার বিয়ের দিনের গল্প। মায়া আর বিষণ্নতা কুয়াশার মতো জড়িয়ে আছে গল্পটাকে। সেই ভোরবেলায় বড় চাচার বাজানো বিসমিল্লাহ খাঁর ‘মিঞা কি টৌরি’র মতনই। একটা দিনের স্বল্প পরিসরে কী নিখুঁতভাবে ধরা দেয় একটি পরিবারের মানুষেরা! মুক্তিযুদ্ধে মেরুদণ্ডে গুলি লেগে পঙ্গু হয়ে গেছে আনিস, যার সঙ্গে একসময় জরীর বিয়ের কথা ছিল। আর এই আসরে বেমানান, অনাহূত আনিসের মা।
একেকটা সম্পর্ক হয়ে ওঠা, ফুরিয়ে যাওয়া অথবা তার নামহীন রেশটুকু এখানে করুণ সুন্দরভাবে এসেছে। আনিসের বাবার মৃত্যুর পর আনিসের মা আবার বিয়ে করেছেন। আনিস বড় হয়েছে চাচাদের সংসারে। অনেক দিন পর তিনি এসেছেন ছেলেকে দেখতে। ছেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবে। এ কারণেই খবর দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কাকতালীয়ভাবে তিনি এসে পৌঁছালেন জরীর বিয়ের দিন, যখন সেখানে হইচই। তিনি একসময় এই বাড়ির দৈনন্দিনতার অংশ ছিলেন। আজ তাঁকে দেখেই সবার অস্বস্তি। বাড়িটার সবকিছু তাঁর পরিচিত। তিনি একা একা ঘুরে ঘুরে দেখছেন কোথায় কী কতটুকু বদলাল, অনভ্যাসে তলিয়ে যাওয়া ‘আতর-বউ’ নামটা উঠে এল স্মৃতিতে। সামাজিক সম্পর্কের সুতো কী অবলীলায় ছিঁড়ে যায়, সব কি শেষ হয় তারপরও?
আজকের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশি মনে পড়ছে ‘নিমফুল’ গল্পটার কথা। গ্রামে এক ডাকাত ধরা পড়েছে তার ছেলেসহ। তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার শাস্তি ঠিক করা হয়েছে খেজুরকাঁটা দিয়ে চোখ তুলে ফেলা। সারা গ্রামে এই নিয়ে হইচই, যেন উৎসব। বিশাল হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে, মান্যগণ্যরা এসেছেন চেয়ারম্যানের বাড়িতে ডাকাতের উচিত শাস্তির ব্যবস্থা করতে। একটা অন্যায়ের সাজা নিজের হাতে তুলে নিতে গিয়ে আমাদের পরিচিত মানুষেরাই কতটা নৃশংস হয়ে উঠতে পারে, তার বর্ণনা আছে এ গল্পে। শেষ পর্যন্ত অসহায় সেই ডাকাতকে এই নির্মমতার হাত থেকে রক্ষা করে এক মমতাময়ী কিশোরী। হুমায়ূন আহমেদ বারবার আস্থা আনতে চেয়েছেন মানবিকতা, ভালোবাসা আর সহমর্মিতার প্রতি। কয়েক সপ্তাহ আগে অসহায় তোফাজ্জলের করুণ মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল, এই যে আমরা এত কিছু পড়ি, তা কি শুধু দুই মলাটে বন্দী রাখার জন্য? আমাদের আচরণে কেন তার ছায়া পড়ে না?
ধর্ম, সমাজ, সাহিত্য বা রাজনীতির বিষয়ে আমাদের মনসিক পরিপক্বতা বোঝা যায় কোনো কিছুর আনুষ্ঠানিকতা পার হয়ে মূল সত্যে পৌঁছানোর চেষ্টার মধ্যে। যেমন আমরা হিমু থেকে নিয়েছি কটকটে হলুদ পাঞ্জাবি, চাঁদনি রাতে গলা পর্যন্ত ডুবে থাকার নাটকীয়তা। অথচ হিমু যে বাতাসের মতো নির্লিপ্ততায় তার পারিপার্শিক ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে করতে তীব্র মায়ায় জড়িয়ে পড়ে, বুঝতে পারি? হিমুর আছে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আর অপ্রিয় প্রশ্ন করার সাহস। সে কারও ওপরেই নিজেকে চাপিয়ে দেয় না। যে কেউ একদম নিজের মতো করে হিমুর সঙ্গে মিশতে পারে। সে জানে ভালো-খারাপ, সত্য-মিথ্যা—এসব কোনো একরৈখিক বিষয় নয়; বরং এর মাঝখানে আছে অনন্ত স্তর। আপাত যা তুচ্ছ, হিমু তার দাম দিতে জানে। সে শুধু পথ চলতে চলতে তার নিজের দেখা দুনিয়া পাঠকদের দেখায়। একজন বস্তিবাসী, রিকশাওয়ালা, থানার ওসি অথবা রাস্তার কুকুর—সবার সঙ্গেই সে একই রকম সহজ।
অনেকেই মনে করেন, অরাজনৈতিক লেখক ছিলেন হুমায়ূন। বিষয়টি মোটেই তেমন নয়। আমরা হুজুগপ্রিয় জাতি বাকের ভাইয়ের ফাঁসি বন্ধের জন্য মিছিল করি, অথচ আমরাই আবার ফাঁসির দাবিতে তুলকালাম করি। লেখক আসিফ নজরুল বিচিত্রার পক্ষ থেকে হুমায়ূনের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বাকের ভাইয়ের ফাঁসির বিষয়ে। সেখান থেকে জানতে পারি, তিনি মনে করতেন, লেখকের দায়িত্ব সমস্যার প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া, সমাজ সংস্কার লেখকের কাজ নয়।
কখনো হাসিঠাট্টা, কখনো পাগলামির আড়ালে হুমায়ূন আমাদের সমাজের অসংগতিগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি অন্যের হেঁটে যাওয়া রাস্তার বদলে নিজের পথ নিজে তৈরি করতে চেয়েছেন। তাঁর কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছে, তিনি কেন লেখেন, জবাবে বলেছেন, ‘টাকার জন্য।’ একজন লেখকের কাছে এ রকম জবাব শুনতে এর আগে হয়তো আমরা অভ্যস্ত ছিলাম না।
আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করার মতো, হুমায়ূনের লেখার ভাষা একদমই বাংলাদেশের। হয়তো এ কারণেও তাঁকে আমাদের অনেক বেশি আপন মনে হয়, ‘মায়া রহিয়া যায়।’
নিজের লেখার ত্রুটি সম্পর্কেও হুমায়ূন খুব স্পষ্টভাবেই বলেছেন সাজ্জাদ শরিফ আর ব্রাত্য রাইসুর নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, ‘নিজের লেখা সম্পর্কে আরেকটা ব্যাপার আমাকে কষ্ট দেয়। সেটি হলো, একটা লেখা লেখার জন্য যে পরিমাণ প্রস্তুতি আমার থাকা দরকার, যে পরিমাণ পড়াশোনা নিয়ে আমার একটা লেখা লিখতে যাওয়া উচিত, ওই জায়গাটা আমি অবহেলা করি। আমি মনে করি, এটার দরকার নেই। হঠাৎ করে মনে হলো আর লেখা শুরু করলাম। কোনো রকম চিন্তাভাবনা নেই, কোনোরকম পরিকল্পনা নেই, কিচ্ছু নেই। ব্যস, লিখতে বসে গেলাম। যদি একটু পরিকল্পনা থাকত, তাহলে অনেক ভালো হতো।’
একজন লেখক হয়তো সারা জীবনে একটাই গল্প বলেন। আমরা ঘটনাগুলো ভুলে যাই, অনুভূতিটুকু থেকে যায়। আমার তীব্র অসহায়, হতাশার সময়ে আমি হুমায়ূন আহমেদ পড়ি। জীবনের কদর্যতা, মানুষের নৃশংসতা—সব সত্ত্বেও তাঁর চরিত্রদের মনের কোথাও একটা মায়া থেকে যায়। মোমবাতির নরম আলোর মতো এই মায়াটুকুর জন্যই হুমায়ূন আহমেদের লেখার কাছে আমরা বারবার ফিরি।