মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর লেখা

‘যাঁরা পেরেশানিতে পড়েছেন, তাঁরা প্লিজ বউকে বলে দেন, এটা ফারুকীর বায়োগ্রাফি’

চরকিতে চলছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘লাস্ট ডিফেন্ডার অব মনোগামী’। চাঁদরাতে এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর এর পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তুমুল আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে ‘মনোগামী’ এবং এর স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সরব অনেকেই। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন, কেন তিনি এই ছবি তৈরি করলেন।

‘ব্যাচেলর’-এর একধরনের কম্প্যানিয়ন পিস বলা যায় ‘মনোগামী’কে, কোনো সন্দেহ ছাড়াই। ‘ব্যাচেলর’-এ আমি ঢাকার কিছু ব্যাচেলরের লাইফ দেখানোর চেষ্টা করেছি। আর ‘মনোগামী’তে ডিজায়ার আর গিল্ট ফিলিংয়ের মল্লযুদ্ধে ক্লান্ত এক মানুষকে ফলো করার চেষ্টা করেছি এবং কাজটা করে আমি খুবই আনন্দ পেয়েছি! অ্যাকচুয়ালি, আমার শেষ কাজগুলো অনেকটা সিরিয়াস টোনের ছিল। ফলে যাঁরা আমার হিউমার পছন্দ করতেন, তাঁরা প্রায়ই আমাকে কমপ্লেন করতেন এটা নিয়ে! তাঁদের কমপ্লেন বাদ দিলেও আমি নিজেও আসলে এই হিউমার ডিল করাটাকে মিস করছিলাম।

‘মনোগামী’ যে ‘ব্যাচেলর’-এর কম্প্যানিয়ন পিস, এটা শুধু টেম্পারামেন্টের দিক থেকে, তা নয়। রিঅ্যাকশনের দিক থেকেও একই রকমই মনে হচ্ছে। আমার মনে আছে, ‘ব্যাচেলর’ রিলিজ হওয়ার পর পত্রপত্রিকার রিভিউয়ে আমাকে ধুয়ে ফেলা হতো! ‘ডেইলি স্টার’ তাদের চিঠিপত্র পাতার অর্ধেক বরাদ্দ রাখত আমাকে ধুয়ে ফেলার জন্য। তখন তো আর ফেসবুক ছিল না, থাকলে ফেসবুকে গালাগালি করা হতো।

অ্যাট দ্য সেম টাইম ‘ব্যাচেলর’-এর পর আমার একটা বিশাল ফ্যানবেজ তৈরি হয়।

‘মনোগামী’তে জেফার ও চঞ্চল চৌধুরী

অনেক মানুষের ভালোবাসা পাই ‘ব্যাচেলর’-এর পরে। ‘মনোগামী’র ক্ষেত্রেও আমি তেমনটাই দেখতে পাচ্ছি। ‘মনোগামী’ আমার কাছে আমার একটা বিশাল অডিয়েন্সকে ফিরিয়ে এনেছে, যারা সত্যিকার অর্থে ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ থেকে শুরু করে এর পরের কাজগুলোতে আমার ওপর অভিমান করেছিল যে আমি কেন ওই হিউমারগুলো নিয়ে আর ডিল করছি না। সেই অডিয়েন্সরা আবার ফিরে আসছে এবং তারা অনেকেই চিঠি লিখেছে। এটা জেনে আমি খুবই আনন্দিত!

‘ব্যাচেলর’–এর পর যে রকম তর্কবিতর্ক হতো, এটার ক্ষেত্রেও সেটা হচ্ছে। হুইচ ইজ গুড, হেলদি। ‘ব্যাচেলর’-এর ২০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর এটাকে যখন কেউ কেউ ‘কাল্ট’ বলে ডাকে, আমি কিছু না বলে তাকিয়ে থাকি।

‘ব্যাচেলর’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

আমরা যখন ছবি বানাই, তখন তো কোনটা কাল্ট হবে, কোনটা হবে না—এসব ভেবে বানাই না। আমরা ছবিটা বানাই; কারণ, গল্পটা বলতে আমাদের ভেতরে অনেক উসখুস করে। না বলা পর্যন্ত শান্তি পাই না, সে জন্য বলি! এখন ‘মনোগামী’ কাল্ট হবে কি হবে না, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।

‘মনোগামী’তে জেফার ও চঞ্চল চৌধুরী

তবে ‘মনোগামী’ নিয়ে মানুষের যে প্রতিক্রিয়া—ভালো-মন্দ, প্রশংসা-সমালোচনা—সবকিছুই আমি সাদরে গ্রহণ করছি। আপনাদের সবার জন্য ভালোবাসা এবং আমার ‘মনোগামী’ টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা!

গ্রেট গোয়িং। ছবি দেখা চলতে থাকুক। চলছে চরকিতে।

বি.দ্র. বিবাহিত পুরুষদের মধ্যে যাঁরা পেরেশানিতে পড়েছেন, তাঁরা প্লিজ বউকে বলে দেন, এটা ফারুকীর বায়োগ্রাফি, এটার সঙ্গে আপনার কোনো সম্পর্ক নেই।