মোবাইল ফোনে কল করিয়া বলল প্রথম আলো
লোকে বলে আপনি নাকি ছড়া লেখেন ভালো!
সে বিষয়েই লিখতে পারেন যেটাই হবে বলা?
দায়িত্ব দিই একটা, দেখি শুকায় নাকি গলা!
আমি বলি, বিষয় বলেন! দিচ্ছি ডেলিভারি
পড়ার পরে দেখতে পাবেন, আমি যে কী পারি!
বলল বিষয়, শুনে আমি ঢোঁক গিলি সাবধানে
(এই বিষয়ে জ্ঞান লিমিটেড দেখছি তারা জানে!)
অভিনয়ের নক্ষত্র ফারিণকে তো চিনি
টিভি ছাড়া তাকে দেখা হয়নি কোনো দিনই!
কোনো দিনই হয়নি কথা বাস্তবে বা ফোনে
নিতে হবে সাক্ষাৎকার! (শঙ্কা মনের কোণে)!
কোনখানে ঈদ করছে ফারিণ, করছে ঈদে কী কী
আমি যেন বিস্তারিত ছড়ায় ছড়ায় লিখি!
ফারিণকে কল দিলাম, ফারিণ বলল কথা হেসে
বুঝল আমি গ্যাঁড়াকলে বিরাট ফাঁসা ফেঁসে!
কথায় কথায় সময় গড়ায়, ফারিণ অনেক ভালো
ঘাবড়ে যাওয়া সিচুয়েশন খুব দ্রুত বদলাল।
ঈদবিষয়ক আলোচনায় অনেক বিষয় ওঠে
যত্ন করে যেসব কথা টুকে নিলাম নোটে!
এবার ঈদে ফারিণ কোথায়? করছেটা কী ঈদে?
বলছি রে ভাই! ধৈর্যহারা হচ্ছ কেন জিদে?
ঈদে কোথায়? প্রশ্ন শুনে বলল ফারিণ হেসে
আমরা দুজন ঈদ করব এইবার বৈদেশে!
দুজন মানে?
দুজন হলো—আমি, আমার স্বামী
এবার ঈদে প্লেন ধরব ইস্তাম্বুলগামী!
বিয়ের পরে প্রথম এ ঈদ! যাইনি দুজন ভুলে
দেখব কেমন ঈদ উৎসব হয় ইস্তাম্বুলে!
প্ল্যান করা শেষ অনেক আগেই, এবারকার এই ঈদে
ঈদের নামাজ পড়ব দুজন ‘ফাতিহ মসজিদ’-এ।
ভাবতে গেলেই ফুর্তি লাগে, দারুণ, দারুণ হবে!
দেখব কেমন আনন্দ হয় ‘বাইরাম’ উৎসবে!
ঈদের খাবার কেক, ক্যান্ডি, পুডিং, বাকলাভা
আমার যদি ভালো লাগে তোমরা গিয়ে খাবা!
ঈদের দিনের ইস্তাম্বুল প্রসঙ্গ বদলিয়ে
প্রশ্ন ছিল এই ঈদে তার পোশাক-আশাক নিয়ে!
(ভালো লাগবে জেনে)
উত্তরটা দিল ফারিণ অতীত স্মৃতি টেনে…
যখন আমি ছোট্ট ছিলাম, মানে যখন খুকি
ঈদের জামা বাক্সে রেখে সকাল-বিকাল উঁকি!
কেউ যেন না দেখে ফেলে জামা ঈদের আগে!
ছোটবেলার ঈদের কথা ভাবতে দারুণ লাগে!
বড়বেলায় পোশাক নিয়ে কে আছে যে ভাবি?
রেজওয়ানের জন্য কেনা হয়েছে পাঞ্জাবি।
নিজের জন্য ম্যাচিং করে একটা কিছু কিনে
পরব দুজন, ফুর্তি করে ঘুরব ঈদের দিনে!
ঈদের সময় মন খুশি হয় কী উপহার পেলে?
আর উপহার! বলল ফারিণ, দীর্ঘশ্বাস ফেলে!
বড় হয়ে আর কিছু না, পড়েছি মুশকিলে!
পাই না আমি তেমন মজা কেউ উপহার দিলে!
বড়বেলার ঈদে কি আর তেমন মজা আছে?
কিছুই তো নেই ছোটবেলার ঈদের ধারেকাছে।
ছোটবেলার ঈদে সালাম করে পাওয়া টাকা
উপহারের তালিকাতে সবার ওপর রাখা।
বড় হয়ে একটা জিনিস ঠিকই গেছি বুঝে
লাভ কোনো নেই ঈদ উপহার পাওয়ার মজা খুঁজে!
ছোটবেলায় পাওয়ায় মজা, কিন্তু বড় হলে
কাউকে কিছু দেয়াই হৃদয় তৃপ্ত করে তোলে!
অভিনয়ে দেশ–বিদেশের নানান পুরস্কারে
ফারিণ নামের উজ্জ্বলতা তরতরিয়ে বাড়ে!
সারা বছর নানান কাজে ছড়ায় দারুণ দ্যুতি
কিন্তু ঈদের কাজের বেলায় বিশেষ অনুভূতি!
এবার ঈদে কয়টা নাটক? প্রশ্নখানা শুনে
মুচকি হেসে ফারিণ সেটার সংখ্যা নিল গুনে!
খুব বেশি না, এবার ঈদে চারটা নাটক মোটে!
সংখ্যা শুনে সত্যি আমার দুঃখ জেগে ওঠে!
ভেবেছিলাম সংখ্যাখানা এরচে বড় হবে
ফারিণকে চাই দেখতে বেশি সবগুলো উৎসবে!
কথার মাঝে আমায় অমন দুঃখ পেতে দেখে
এক খবরেই চমকে দিল ফারিণ নিজের থেকে!
এবার ঈদের ‘ইত্যাদি’তে দেখব তাকে গানে!
জুটি বেঁধে গান গাইবে ফারিণ-তাহসানে!
তার মানে ঈদ রঙিন হবে এক ফারিণের গুণে!
হুররে বলে লম্ফ দিয়ে উঠলে খবর শুনে?
ফারিণ নামের গায়িকাকে পাচ্ছি এবার ঈদে!
টিভি স্ক্রিনে সময় দেওয়ায় নেই তো অসুবিধে!
ঈদ বিষয়ে সাক্ষাৎকার, ছোট্ট আলাপ শেষে
বলল ফারিণ, এবার বলি! (মিষ্টি করে হেসে)
তোমরা আমায় ভালোবাসো, তোমরা আমার প্রিয়
ভালো থেকো, সবাই ঈদের শুভেচ্ছাটা নিয়ো!
প্রতিটা ঈদ জমা করুক অনেক সুখের স্মৃতি
সবার জন্য ভালোবাসা, সবার জন্য প্রীতি!
ভালোবাসা, প্রীতির পরে করবটা কী আমি!
আর কিছু না, থামি!
ঈদের আরও প্রশ্ন ছিল? সব করা যায়? আরে!
আচ্ছা বাপু করব সেসব নেক্সট সাক্ষাৎকারে!
চলবে নাকি সব বিষয়ে ধৈর্যহারা হলে?
বিদায় নিলাম সব্বাইকে ঈদ মোবারক বলে!
(কেমন হলো সাক্ষাৎকার! মন্দ নাকি ভালো, বুঝুক প্রথম আলো!)