চুমুর নূপুর
চুমুর নূপুর রেখে,
আলতারাঙা পায়ে
কেউ কি কখনো
সোনার নূপুর পরে?
ফেলে দাও স্বর্ণনূপুর,
তোমার চরণ দুটি
আমাকে সাজাতে দাও
চুমুর নূপুরে।
চুম্বন
কখন কার ভাগ্যে চুমু জোটে,
কখন যে কোন পুরুষ ঠোঁট
গৃহবন্দী হয় নারীর ঠোঁটে—
কখন যে কোন ভ্রমর এসে
কোন ফুলের মধু লোটে,
কেউ বলতে পারে না তা।
ফুলের গন্ধে ভ্রমর ছোটে,
ফুল করে না মানা—
এই কথাটা ফুল শুধু নয়
ভ্রমরেরও জানা।
মানুষ কেন যে ওই ফুলের মতো নয়?
মানুষ কেন যে ওই ভ্রমরের মতো নয়?
মানুষ জানে না, কোথায় কার
চুম্বনফুল পাতা।
চুমুর নূপুর পরা মেয়ে
এইবার ঠিক কবিতার মতো হয়েছে।
সোনার নূপুর কেন এখনো রয়েছে?
কেন রয়েছে? কেন? কেন?
একেবারেই মানাচ্ছে না চুমুর পাশে—
খুলে ফ্যালো, চুমু পরেই হেঁটে বেড়াও
বাংলাদেশের সবুজ ঘাসে।
আমি ছাড়া এ-দৃশ্যটা আর যেন কেউ
দেখতে না পায় আশপাশে।
তুমি, শুধু তুমি
দেখতে দেখতে আমি বড় হয়ে গেছি।
আমারও বড় হওয়ার ইচ্ছে ছিল বটে,
তাই বলে এত তাড়াতাড়ি
এত বড় হওয়ার ইচ্ছে আমার ছিল না।
আমাকে বড় করা হয়েছে আমার সম্মতি ছাড়াই।
এখন আমি এত বড় হয়ে গেছি যে
চাইলেও আমি আর ছোট হতে পারব না।
স্বয়ং ভগবানও এখন আর ছোট করতে
পারবেন না আমাকে।
তবে যদি অভয় দাও তো বলি—
এখনো একটা উপায় অবশিষ্ট আছে,
আমাকে ছোট করতে পারো তুমি।
শুধু তুমি...শুধু তুমি।
এরই নাম প্রেম
বলি সাতসকালে সলতে পাকাচ্ছ কেন?
সন্ধ্যাবাতি জ্বালব তো, তার জন্য।
ও তাই? আমি ভাবলাম, বুঝি আমার জন্য।
তুমি বললে, কী কথার ছিরি, বালাই ষাট,
আমার জন্য তৈরি থাকুক শ্মশানঘাট।
তোমার আগে আমিই যেন যাই।
শুনে হঠাৎ চমকে উঠলাম আমি,
বললাম, শোনো আমার ছোট্ট পাখি,
আমি বড়—আমি তোমার স্বামী।
আমিই যাব আগে—জানা কথাই।
তুমি সলতে পাকানো বন্ধ করে দিলে।
ফিরে তাকাতেই আমি দেখলাম—
তোমার জঙ্ঘা উন্মুক্ত, মুখ ঘোমটায় ঢাকা।
পাশে বাঁশের ডালায় কিছু সলতে পড়ে আছে।
ভাবলাম, আমি তো মিথ্যে বলিনি কিছু।
সত্যের ভারে তার মাথাটি হলো নিচু।
আমি ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম তার
বহুবার-দেখা মুখ, দেখলাম তার চোখে জল।
পৃথিবীতে যেন আর কোনো নারী নেই,
এই ভেবে আমি তাকে জড়িয়ে নিলাম বুকে।
বললাম, ঠিক আছে, তুমিই যাবে আগে।
এইবার চোখ মুছে, বুক খুলে হাসো।
তুমি বললে, আমার কী দোষ?
তুমিই তো আমাকে বেশি ভালোবাসো।