জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাংস্কৃতিক রাজনীতি

ছাত্র–জনতার সাম্প্রতিক গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজনীতি নিয়ে কিছু নতুন প্রশ্নের উন্মেষ ঘটিয়েছে। ইতিহাসের বিচার, জাতীয়তার তর্ক, জনগোষ্ঠীর বয়ান এক নতুন পটভূমি থেকে তা বিশ্লেষণ করতে আগ্রহী। এই লেখায় তারই প্রস্তাবনা। অন্যদেরও এই বিতর্কে আমন্ত্রণ

দুই হাজার চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাসের কিছু বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ বর্তমানে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু। সমাজে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী অনাগত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপকল্প–বিষয়ক গভীর আলোচনা-পর্যালোচনায় লিপ্ত। এসব আলোচনায় তরুণদের উপস্থিতি, অংশগ্রহণ ও জিজ্ঞাসা চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্ল্যাটফর্মের আবির্ভাব ঘটেছে। রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে বিকশিত হতে গেলে যে এজমালি ভাষা আর চিন্তার আদান-প্রদানের অর্থবহ পরিসর গড়ে তুলতে হয়, এ বিষয়ে সমাজে বিরল ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে। এই অর্থে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজনীতিতে এক নতুন আদিকল্পের (প্যারাডাইম) সম্ভাবনা হাজির করেছে।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের মধ্যে অন্তত ১১ বছর ছিল অগণতান্ত্রিক ও জনসম্মতিহীন শাসনামল। তবে আওয়ামী লীগ স্রেফ গায়ের জোরে টিকে ছিল—ব্যাপারটা অত সরলও নয়। গুম, খুন, ক্রসফায়ার, নিবর্তনমূলক আইন, অবাধ লুটপাট, দুর্নীতি ইত্যাদির মাধ্যমে বিগত আওয়ামী শাসন চিহ্নিত হবে ঠিকই; তবে ভুলে গেলে চলবে না যে এ শাসনের পেছনে ক্রিয়াশীল ছিল এক বিশেষ ধরনের সাংস্কৃতিক রাজনীতি। কেউ হয়তো বলতে চাইবেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পক্ষে উপযুক্ত বয়ান দাঁড় করাতে পেরেছিল বলেই আওয়ামী লীগকে ‘বিকল্পহীন’ মনে হতো। মুক্তিযুদ্ধের একপেশে, একচেটিয়া ও বিকৃত ইতিহাস অবলম্বনে গড়ে উঠেছিল সেই বয়ান, প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যার সম্পর্ক সামান্যই। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের জনগণের শ্রেষ্ঠতম অর্জন। এই অর্জনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে সংকীর্ণ ও একপেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’র বয়ান তৈরি করা হয়েছিল। অনেকেই এই বয়ানকে ‘বাঙালি জাতিবাদ’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।

এখানে দুটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। প্রথমত, অনেক ক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বয়ান খোদ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ইতিহাসের দলীয়করণ ছাড়াও গুম, খুন, অবৈধ শাসনসহ যাবতীয় অপরাধের বৈধতা দিতে এই বয়ান কাজ করেছে। অথচ পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের অগণতান্ত্রিক মনোভাব ছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান অনুঘটক। অর্থাৎ খোদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যে বয়ান ছিল, তা–ই ছিল মুক্তিযুদ্ধ–পরিপন্থী।

পরিতাপের বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জনগণের এজমালি অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে দূরে ঠেলে দিয়ে স্রেফ চেতনার রাজনীতি হিসেবে ক্রিয়াশীল ছিল। দ্বিতীয়ত, বাঙালি জাতিবাদের সমালোচনা করা মানেই খোদ বাঙালিত্বকে অস্বীকার করা নয়। ইহুদিমাত্রই যেমন জায়নবাদী নয়, বাঙালিমাত্রই বাঙালি জাতিবাদী নয়। বাঙালি জাতিবাদ কেবল বাংলাদেশের অপরাপর জাতিসত্তাকে অস্বীকার করে তা নয়, বাঙালি বনাম মুসলমান—এমন অনৈতিহাসিক বৈপরীত্যও হাজির করে। যেন বাঙালিত্বের সঙ্গে মুসলমানিত্বের এক আবশ্যিক বিরোধ রয়েছে। সত্যের খাতিরে বলতে হয়, বাংলাদেশের জনগণের ইসলাম ধর্মাবলম্বী অংশ বাঙালিত্ব ও মুসলমানিত্বকে তাদের আত্মপরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে। গেল শতকের চল্লিশের দশক থেকে সত্তরের দশক পর্যন্ত এ দুটি পরিচয়ই তারা রক্ত দিয়ে অর্জন করেছে। ‘বাঙালি মুসলমান’ ঐতিহাসিক বর্গটিকে এ পটভূমিতেই বোঝা দরকার।

তরুণ প্রজন্ম পুরোনো সাংস্কৃতিক যুদ্ধের ঘানি টানতে সম্মত নয়। তবু তরুণদের বিভাজিত করার চেষ্টা চলমান। ঠিক এ কারণেই অভ্যুত্থান–পরবর্তী বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্যোগের গুরুত্ব অপরিসীম।

খেয়াল রাখার বিষয়, মুসলিম জাতিবাদ বাঙালি জাতিবাদের প্রতি–উত্তর হতে পারে না। সেই সুযোগ নেই। বাংলাদেশের জনগণের বৃহত্তর অংশ একই সঙ্গে বাঙালি ও মুসলমান—এ কথা যেমন সত্য; একইভাবে এ দুই জাতিবাদের কোনো এক জাতিবাদকে তাদের আঁকড়ে ধরতে হবেই—এমন কোনো দিব্যি নেই। জাতিবাদ একটা পরিচয়কে অনড় ও স্থির ধরে নিয়ে তার সাপেক্ষে অপরাপর পরিচয়কে খারিজ ও অস্বীকার করে। জাতিবাদ আবশ্যিকভাবে বিভাজনমূলক। এক জাতিবাদের বিকার থেকে বেরিয়ে আরেক জাতিবাদের খপ্পরে পড়ার জন্য জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়নি; বরং যেকোনো ধরনের জাতিবাদ প্রশ্নে সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার পাশাপাশি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীরূপে নিজেদের কল্পনা করতে পারাটা জরুরি। জাতিবাদ বিভাজনমূলক; রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গঠনমূলক। ধর্ম–বর্ণ–জাতির বৈচিত্র্যময়তাকে ধারণ করে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী একটি স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম পলিটি আকারে বিকশিত হয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান সেই সম্ভাবনাসমেত হাজির।

মুসলিম জাতিবাদের প্রতি সংশয়ী হওয়ার অর্থ ইসলামের প্রতি সংশয়ী হওয়া নয়। ইসলাম উপমহাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ; একইভাবে উপমহাদেশও ইসলামের ইতিহাসে অপরিহার্য। গোত্রবাদ, জাতিবাদ ও রক্তবাদকে ইসলাম সমর্থন করে না। কাজেই আধুনিক জাতিবাদের গতরে ইসলামিক জোব্বা পরালেই তা জায়েজ হয়ে যাবে না।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক তাৎপর্য বিপুল। মনে রাখতে হবে, অন্তত এক যুগে পাকানো বিভাজনমূলক ভাষা ও চিহ্নব্যবস্থাকে মোকাবিলা করেই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ভাষিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎ গড়ে উঠেছে। পরস্পর বিবাদী মতাদর্শিক বৈপরীত্যসমূহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুষ্টি জুগিয়েছে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী শাসনামল বিভাজনের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ছিল। বিভাজনমূলক এ রাজনীতি আমাদের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবেও বিকশিত হতে দেয়নি। সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থা, ধর্ম বনাম প্রগতি, শাহবাগ বনাম শাপলা ইত্যাদি অসংখ্য পরস্পর বিবাদী মতাদর্শিক ও সাংস্কৃতিক কলহের গোড়ায় আওয়ামী লীগ পানি দিয়েছে। কারণ, বিভাজনই যে ফ্যাসিবাদ টিকে থাকার প্রধান শর্ত, সে সম্পর্কে আওয়ামী লীগ বেশ ভালোভাবে অবগত ছিল।

এই বিভাজনমূলক মতাদর্শিক ও সাংস্কৃতিক যুদ্ধকে পরাস্ত করতে কখনো নীরবে, কখনো সরবে প্রস্তুত হচ্ছিল এজমালি ও গণতান্ত্রিক ভাষার জমিন। বেশ কিছু বুদ্ধিবৃত্তিক ও পাঠচক্রভিত্তিক উদ্যোগ এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে৷ আলাদা করে নাম না নিয়েও বলা যায়, দেশের প্রধান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পেছনে ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক রাজনীতিকে পর্যালোচনার নিশানা করেছিল এসব উদ্যোগ। প্রতাপশালী মতাদর্শের পর্যালোচনা ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান সম্ভব হতো না। অর্থাৎ ফ্যাসিবাদী সাংস্কৃতিক রাজনীতির বিপরীতে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক রাজনীতির ভাষা নির্মাণই এ গণ–অভ্যুত্থানকে সম্ভব করে তুলেছে। অনেকে তাই যথার্থই অভ্যুত্থান–পরবর্তী এই মুহূর্তকে মতাদর্শ-উত্তর (পোস্ট-আইডিওলজিক্যাল) মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর সরল অর্থ হলো কোনো মোড়কের জাতিবাদী ফ্যাসিবাদের প্রতিই জনগণ—বিশেষত তরুণ প্রজন্ম—অনুরক্ত নয়।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সমাজের সব শ্রেণি–পেশার মানুষই অংশ নিয়েছিল। কিন্তু ছাত্রসমাজই যে এর প্রধান গাঠনিক শক্তি ছিল, এই সত্য অস্বীকার করা চলে না। আশ্চর্য নয় যে ৩ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্ব ঘোষিত এক দফার ভাষা ছিল এ রকম: ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েম। অর্থাৎ স্রেফ ফ্যাসিস্ট শক্তি নয়, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার দিকেই নিশানা তাক করেছে ছাত্রসমাজ। দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে ওঠা এজমালি ভাষার জগৎ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক প্রস্তুতি ছাড়া এ রাজনৈতিকতা কল্পনা করা যায় না।

ফ্যাসিস্ট শক্তি বিদায় নিয়েছে। তবে সমাজে ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ ও ব্যবস্থা অটুট রয়েছে। তার নানা আলামত টের পাওয়া যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম পুরোনো সাংস্কৃতিক যুদ্ধের ঘানি টানতে সম্মত নয়। তবু তরুণদের বিভাজিত করার চেষ্টা চলমান। ঠিক এ কারণেই অভ্যুত্থান–পরবর্তী বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্যোগের গুরুত্ব অপরিসীম। অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে মতাদর্শিক বিতর্ক তুঙ্গে থাকবে, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। খেয়াল রাখার বিষয় হচ্ছে এই, মতাদর্শ-উত্তর গণতান্ত্রিক পরিসরের দিকেই এ অভ্যুত্থানের অভিমুখ।

কংগ্রেস প্রভাবিত বাংলাদেশের ‘মূলধারা’র ইতিহাসচৈতন্যে একাত্তর মানে সাতচল্লিশের ‘ভ্রম সংশোধন’। আসল সত্য হচ্ছে এই, সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ—এই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর মুক্তির বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও ধারাবাহিক বিন্দুমাত্র। একে অন্যের অ্যান্টিথিসিস নয়। একাত্তরে সাতচল্লিশ বাতিল হয়নি; চব্বিশেও একাত্তর বাতিল হবে না। এ কথা সত্য যে সাতচল্লিশ ও একাত্তর–পরবর্তী রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ব্যর্থ হয়েছে। তার মানে এই নয় যে সাতচল্লিশ-একাত্তর ব্যর্থ হয়েছে। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সম্ভাবনা হাজির করেছে, কিন্তু তা কায়েমে ব্যর্থ হলে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ বলার কোনো সুযোগ থাকবে না।

কামরুদ্দীন আহমদ প্রমুখদের কাছে সাতচল্লিশ ও একাত্তর ‘ইতিহাসের প্রয়োজনে’ ঘটেছিল। তরুণ অবস্থায় পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, এমন কাউকে পাওয়া যাবে না, যিনি শেষ বয়সে এসে বলেছেন, পাকিস্তান আন্দোলন করাটা ‘ভুল’ ছিল। পাকিস্তান আন্দোলন আর পরবর্তী দমনমূলক পাকিস্তান রাষ্ট্র এক কথা নয়।

একইভাবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আর পরবর্তীকালে একটা রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনকে কেন্দ্রে রেখে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক কথা নয়। মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের আপামর জনগণের; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঙালি জাতিবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রধান মতাদর্শিক হাতিয়ার। এর উৎপাদক আর সুবিধাভোগী উল্লিখিত স্কুলের সবাই–ই, কিন্তু প্রধান শক্তি আওয়ামী লীগ। কাজেই পরস্পরের অ্যান্টিথিসিস অর্থে নয়, পরিপূরক হিসেবে সাতচল্লিশ-একাত্তর-চব্বিশের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোকে বোঝা দরকার।

সব জাতি–ধর্মের জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গণতান্ত্রিক এক দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে—এটাই চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের প্রধান দাবি। এ দাবিকে পূরণ করতে হলে এমন এক সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক আবহ প্রয়োজন, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও পরমতসহিষ্ণু। কোনো না কোনো বর্গে ফেলে ‘অপর’ করে তোলা ফ্যাসিবাদেরই নামান্তর। অপরকে ‘অ-পর’ করে তোলাই চব্বিশের অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার। কাজটা মুখ্যত সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি ওই গাঠনিক পাটাতনের ওপরেই দাঁড়াবে। অভ্যুত্থান–পরবর্তী গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্যোগগুলো জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।