হান কাংয়ের এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল দ্য গার্ডিয়ান-এ ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এর আগে ২০১৬ সালে দ্য ভেজিটারিয়ান উপন্যাসের জন্য আন্তর্জাতিক ম্যান বুকার পেয়েছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকারের এই নির্বাচিত অংশে হান কাং বলেছেন নিজের লেখালেখি ও বেড়ে ওঠার কথা
টিনএজ থেকে অসাড় করে দেওয়ার মতো আপনার তীব্র মাইগ্রেন আছে। এটা আপনার ওপর কী প্রভাব ফেলেছে?
উত্তর: মাইগ্রেন আমাকে সব সময় মনে করিয়ে দেয়, আমি একজন মানুষ। কারণ, মাইগ্রেনের ব্যথা যখন আসে, আমাকে আমার কাজ, পড়া, লেখা, রুটিন—সব থামিয়ে রাখতে হয়। সুতরাং এটা আমাকে বিনয়ী করে, আমাকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে যে আমি একজন মরণশীল ও দুর্বল। হয়তো যদি আমি শতভাগ সুস্থ আর কর্মশক্তিসম্পন্ন হতাম, আমি লেখক হতে পারতাম না।
আপনি বলেছেন, আপনার বয়স যখন ১৪ তখনই জানতেন যে আপনি লেখক হবেন। এটা কীভাবে জানতেন?
উত্তর: আমি খুব সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছিলাম; এবং তখন একজন পাঠক হিসেবে আমি উপলব্ধি করি, প্রত্যেক লেখকই আসলে উত্তর খুঁজছে এবং তাদের কাছে চূড়ান্ত কোনো উত্তর নেই। তবু তারা লিখে যাচ্ছে। তাই আমি চিন্তা করলাম, তাহলে আমিও সেই কাজ করি না কেন?
আপনার বাবাও একজন ঔপন্যাসিক ছিলেন। তিনি কীভাবে আপনাকে প্রভাবিত করেছেন?
উত্তর: আমি যখন বেড়ে উঠি, তখন বাড়িভর্তি অনেক বই ছিল। আমার মনে হয়, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
আপনার পছন্দের বাচ্চাদের বই কোনগুলো?
উত্তর: আমি অনেক কোরিয়ান লেখকের লেখা খুব ভালোবাসি এবং কোরিয়ান ভাষায় অনুবাদ হওয়া বইও ভালোবাসি। যেমন আসট্রিড লিন্ডগ্রেনের দ্য ব্রাদার্স লায়নহার্ট।
আপনার লেখালেখিতে সবচেয়ে বেশি অবদান আছে কোন লেখকদের?
উত্তর: কোরিয়ান লেখকদের মধ্যে আমি লিম চুল-উর ছোটগল্প অনেক পছন্দ করি। বিদেশি লেখকদের মধ্যে আমার পছন্দ দস্তয়েভস্কি।
মৃত অথবা জীবিত কোন কোন সাহিত্য ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দেখা হলে আপনার ভালো লাগবে?
উত্তর: আমি লেখকদের সঙ্গে দেখা করতে চাই না। ইতিমধ্যেই তাঁদের বইয়ের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। যদি আমি তাঁদের বই পড়ি এবং পড়ে কিছু অনুভব করি, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। লেখকেরা তাঁদের লেখা বইতেই নিজেদের পুরোটা ঢেলে দেন। সুতরাং সেই বইগুলো পড়াই আমার জন্য যথেষ্ট।
আপনার উপন্যাস দ্য ভেজিটারিয়ান আন্তর্জাতিক ম্যান বুকার পুরস্কার জিতেছে। আপনার ক্যারিয়ারে এর প্রভাব কতটুকু?
উত্তর: আরও অনেক পাঠকগোষ্ঠীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস পরেই আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন ফিরে পেতে চেয়েছি। কারণ, অনেক বেশি বাইরের মনোযোগ একজন লেখকের জন্য সব সময় ভালো নয়। মনোযোগের প্রতি নজর দেওয়া এবং একই সঙ্গে লেখালেখি করা একটা অসম্ভব কাজ।
অনুবাদ: আশরাফুল আলম শাওন