>মালয়েশিয়ার লোকগল্পে, বিশেষ করে শিশুতোষ গল্পে, বুদ্ধিমান এক হরিণের দেখা মেলে। সেই ছোট্ট হরিণ তার বুদ্ধিবলে বনের হিংস্র পশুদের হাত থেকে নিজেকে যেমন রক্ষা করে, ঠিক তেমনি অন্য প্রাণীদেরও জীবন বাঁচিয়ে দেয়। এই ছোট্ট হরিণ মালয়েশিয়ার শিশুদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। ২০০৭ সালের ২৬ জুন মালয়েশিয়ার ডাক বিভাগ তাদের শিশুতোষ লোকগল্প নিয়ে এক সেট ডাকটিকিট প্রকাশ করে। গল্পটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন নিজাম বিশ্বাস
নদীর ধারে ছোট্ট এক হরিণ বাস করত। চারপাশে তার শত্রু আর শত্রু। হরিণটি শত্রু পশুদের হাত থেকে নিজেকে নানান কৌশলে বাঁচিয়ে রেখেছিল। একদিন সে দেখল, নদীর ওপারের গাছপালায় অসংখ্য ফল পেকে আছে। কিন্তু নদী পার হওয়ার কোনো উপায় নেই। এই নদীতে বাস করে বড় বড় কুমির।
হরিণের মাথায় হঠাৎ একটা বুদ্ধি এল। সে নদীর জলের কাছে গিয়ে ‘কুমির ভাই, ও কুমির ভাই’ বলে ডাকতে শুরু করল। একটি কুমির ধীরে ধীরে তার কাছে এসে দাঁত কেলিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘চিৎকার করছ কেন? তোমার কী ভয় হয় না, আমি যে তোমাকে খেয়ে ফেলব!’
হরিণ বলল, ‘তোমার ভয়েই তো এমুখো হই না। তবে আজ এসেছি রাজভোজের নিমন্ত্রণ দিতে।’
রাজভোজের কথা শুনে কুমিরটির জিবে জল চলে এল। হরিণটি বলল, ‘রাজভোজে তোমরা কতজন যাবে, রাজা জানতে চেয়েছেন। তাহলে তোমরা সবাই নদীর এপার থেকে ওপার একে একে ভেসে থাকো, যাতে আমি গুনতে পারি।’
কুমিরটি সবাইকে ডেকে সুসংবাদটি দিল, আর সার বেঁধে ভেসে থাকতে বলল।
এরপর ছোট্ট হরিণটি একটি কুমিরের পিঠে চেপে বলল, ‘এক’, এরপর দ্বিতীয় কুমিরের পিঠে চেপে বলল, ‘দুই’। এভাবে সে সব কটি কুমিরের পিঠে চেপে তাদের গুনে গুনে নদীর ওপারে চলে গেল। নদীর পারে পৌঁছেই কুমিরদের ধন্যবাদ জানাল, তাকে নদী পার করিয়ে দেওয়ার জন্য।
এ কথা শুনে কুমিরেরা গেল ভীষণ খেপে! দাঁত কিড়মিড় করে বলল, ‘এরপর যদি ধরতে পারি আর ছাড়ব না।’ কিন্তু চাইলেই কি আর এত বুদ্ধিমান হরিণকে ধরা যায়!
এদিকে নদীর এপারে এসে হরিণটি তিড়িংবিড়িং করে নাচতে শুরু করল। আহা, চারপাশে কত সুস্বাদু ফল! ছোট্ট হরিণটি
ইচ্ছেমতো সেই ফল খেয়ে খেয়ে মনের সুখে দিন কাটাতে লাগল।