‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’— বুকে–পিঠে এমন স্লোগান লিখে পথে নেমেছিলেন নূর হোসেন, ১০ নভেম্বর ১৯৮৭
‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’— বুকে–পিঠে এমন স্লোগান লিখে পথে নেমেছিলেন নূর হোসেন, ১০ নভেম্বর ১৯৮৭

বলেছিলেন নূর হোসেনের বাবা, ‘নূর হোসেন যা চেয়েছিল, তা তো হলো, গণতন্ত্র তো মুক্তি পেল না’

আজ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর স্মরণে কবি শামসুর রাহমান ও প্রথিতযশা সাংবাদিক মতিউর রহমানের লেখা নিয়ে প্রথমা প্রকাশন থেকে বের হয়েছে একটি বই— ‘শহীদ নূর হোসেন’।

‘নূর হোসেন’ নামটা উচ্চারিত হতেই দৃশ্যপটে ভেসে ওঠে আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলের মাঝখানে উদোম গায়ে টগবগে এক যুবকের প্রতিচ্ছবি, যার বুকে–পিঠে লেখা, ‘স্বৈরাচার নীপাত যাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক’। আমরা শুধু এটুকুই জানি, তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংঘটিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলাকালে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকায় নূর হোসেন নামের এক যুবক পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুদিনকে শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ দিন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আজ নূর হোসেন দিবস। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এই দিন নূর হোসেনের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে তাঁকে স্মরণ করে। এর বাইরে নূর হোসেনকে নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা চোখে পড়ে না, লেখালেখি তো নয়ই। তাহলে কি নূর হোসেনের গুরুত্ব দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে?

বাংলাদেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমান ও প্রথিতযশা সাংবাদিক মতিউর রহমানের ‘শহীদ নূর হোসেন’ বইয়ে এ উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বইটিতে উঠে এসেছে, নূর হোসেনের মৃত্যুর মাত্র ১৭ দিন পর তাঁর বৃদ্ধ পিতার সঙ্গে পরিচয় হয় মতিউর রহমানের। এই পরিচয়পর্বকে আকস্মিক ও বেদনদায়ক আখ্যা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘২৮ নভেম্বর (১৯৮৭ সাল) উয়ারী থেকে বেবিট্যাক্সিতে করে মণিপুরীপাড়ায় শিল্পী কামরুল হাসানের বাসা হয়ে বংশালের দিকে রওনা দিয়েছি। বেবিট্যাক্সি ইন্দিরা রোড হয়ে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছে। এমন সময় বৃদ্ধ ট্যাক্সিচালক চকিত পেছন ফিরে বললেন, “আমি আপনাকে চিনি। আপনি পত্রিকার লোক। আর আমি শহীদ নূর হোসেনের বাবা।” তাঁর কথায় আমি চমকে উঠলাম। নূর হোসেনের বাবার নাম মজিবুর রহমান। ওই সময় তাঁর বয়স ছিল ৬০। পেশায় ছিলেন বেবিট্যাক্সি চালক। এ যুগের তরুণ সমাজ বেবিট্যাক্সি চেনে না। ওই সময় ঢাকায় একটি জনপ্রিয় বাহন ছিল বেবিট্যাক্সি। এটিকে গরিবের বাহন বলা যাবে না, মধ্যবিত্তরাই বেবিট্যাক্সিতে বেশি উঠতেন। কিন্তু পরিবেশের জন্য সেটি মোটেই সুখকর ছিল না। বিশ শতকের শুরুর দিকে ঢাকায় বেবিট্যিাক্সি উঠে গিয়ে চালু হয় থ্রি হুইলার বা বর্তমানে আমরা যেটিকে বলি সিএনজিচালিত অটোরিকশা।’

‘আমি আপনাকে চিনি। আপনি পত্রিকার লোক’—লেখক মতিউর রহমানকে উদ্দেশ্য করে শহীদ নূর হোসেনের বাবার যে উক্তি, এটি দ্বারা একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে, নূর হোসেনের বাবা ছিলেন একজন সমাজসচেতন মানুষ। কারণ, ওই সময়ে অর্থাৎ আশির দশকের মাঝামাঝি বা শেষে বর্তমান সময়ের মতো এত সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলের ছড়াছড়ি ছিল না, যাতে সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের খুব দ্রুতই চিনে ফেলতে পারত। কিন্তু একজন বেবিট্যাক্সি চালক হয়েও এই বইয়ের লেখককে খুব দ্রুত চিনে ফেলতে সক্ষম হন তিনি। এই পরিচয় থেকেই লেখকের সঙ্গে সখ্য তৈরি হয় তাঁর। দিন যত গড়ায়, তাঁরা একে অপরের কাছাকাছি হন। নূর হোসেনের পরিবারের অনেক অব্যক্ত কথা ধীরে ধীরে জানতে পারেন লেখক। সাংবাদিক হিসেবে তিনি পত্রিকার পাতায় পাঠকদের সামনে বিষয়গুলোর ঝাঁপি খুলে দেন অবলীলায়।

পরিবারের সদস্যরা ওই দিন সকালবেলা ডিআইটি মসজিদে গিয়ে নূর হোসেনকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তাঁরা দেখেন, নূর হোসেনের বুকে-পিঠে কী যেন লেখা। স্বজনরা এ নিয়ে নূর হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে জবাব পান, ফুটবল ম্যাচ আছে, সে জন্য লেখা। তাঁরা তাকে নিষেধও করেছিলেন মিছিলে না যেতে এবং তাঁদের সঙ্গে বাসায় ফিরে যেতে। ওই দিন সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের সামনে জিরো পয়েন্টের সামনেই পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। সেখানেই নিহত হন নূর হোসেন।

বইটি থেকে জানা যায়, অনেকের মতোই ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে দক্ষিণের শহর বরিশালের মঠবাড়িয়ার ঝাটিবুনিয়া গ্রাম (বর্তমানে পিরোজপুর জেলার অন্তর্গত) থেকে ঢাকা শহরে এসেছিলেন নূর হোসেনের পিতা মজিবুর রহমান। যেদিন তিনি লঞ্চে চড়ে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিলেন, সেই দিনটি ছিল একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। রাজধানীতে পা রাখামাত্রই হোঁচট খান তিনি। সদরঘাটে অনেকেই সেদিন মজিবুর রহমানকে ঢাকা শহরে প্রবেশে বাধা দিয়ে বলেছিলেন, ঢাকা শহরের অবস্থা খারাপ, ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে, বেশ কয়েকজন ছাত্র মারা গেছে। ঢাকার শুরুর জীবনে তিনি তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়—বুয়েট) হোস্টেলে মসলা পেষার কাজ, পরে সেখানেই সিক বয় ডিউটির কাজ, সর্বশেষ অনেক দিন হোস্টেলে বাবুর্চির কাজ করেন। পঞ্চাশের দশকের সেই দিনগুলোতে তিনি ব্যাপকভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের সংস্পর্শে আসেন। এ সময় মজিবুর রহমানের মধ্যে একধরনের রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়। এরপর দীর্ঘদিন তিনি রিকশা চালিয়েছেন। ১৯৬২ সাল থেকে ঢাকা শহরে তিনি বেবিট্যাক্সি চালান। মালিককে প্রতিদিন ১০ টাকা করে জমা দিতে হতো। এ সময় রাজনীতির অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন মজিবুর রহমান। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় নবাবপুর রোডে শেরেবাংলা ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে করমর্দন করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ’৭০–এর নির্বাচন, ’৭১–এর মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ—পুরো সময়টাতে নূর হোসেনের বাবা ছিলেন ঢাকা শহরে। প্রায় সব ঘটনা বিশেষ করে মিছিল–মিটিং, গণজমায়েত, কারফিউ, গুলি সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন। স্বাধীনতাযুদ্ধের পরও একইভাবে আন্দোলন সংগ্রাম দেখেছেন তিনি। কখনো কখনো অংশগ্রহণও করেছেন।

এমনই এক পরিবার থেকে উঠে আসেন নূর হোসেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। সবার ছোট এক বোন। কোনো না কোনো পেশায় যুক্ত ছিলেন প্রত্যেকে—কেউ মিনিবাসের চালক, কেউ বাস চালকের সহকারী, কেউ লেদ মিস্ত্রী। নূর হোসেনও গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ২৪ বছরের টগবগে এই যুবক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই থাকতেন ঢাকার বনগ্রামে। পরে অন্য অনেকের মতো স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনিও। পরিবারের সদস্যরাও জানতেন, নূর হোসেন মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নেন। বইয়ের ভাষায় ‘পরের দিন অভিনব প্রতিবাদের যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তার উত্তেজনায় ১৯৮৭ সালের ৯ নভেম্বর রাতে বাসায়ই ফেরেননি নূর হোসেন। সে রাতেই বুকে-পিঠে স্লোগান লিখে ঘুমিয়ে ছিলেন নির্মাণাধীন ডিআইটি মসজিদের দোতলায়। কিন্ত নূর হোসেনের মা-বাবা আশঙ্কা করেছিলেন, ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে অনেক গণ্ডগোল হবে।’

পরিবারের সদস্যরা ওই দিন সকালবেলা ডিআইটি মসজিদে গিয়ে নূর হোসেনকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তাঁরা দেখেন, নূর হোসেনের বুকে-পিঠে কী যেন লেখা। স্বজনরা এ নিয়ে নূর হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে জবাব পান, ফুটবল ম্যাচ আছে, সে জন্য লেখা। তাঁরা তাকে নিষেধও করেছিলেন মিছিলে না যেতে এবং তাঁদের সঙ্গে বাসায় ফিরে যেতে। ওই দিন সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের সামনে জিরো পয়েন্টের সামনেই পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। সেখানেই নিহত হন নূর হোসেন ও যুবলীগ নেতা বাবুল। দেশের প্রায় সব সংবাদপত্রে নূর হোসেনের ছবি ছাপা হয়। লেখক মতিউর রহমানের ভাষায়, ‘সারা দুনিয়ার সংবাদ হলেন নূর হোসেন। তাঁকে নিয়ে কবিতাও লেখা হলো অনেক। নাটক মঞ্চায়িত হলো। পোস্টারের বিষয় হয়ে উঠলেন নূর হোসেন। এই আশির দশকের জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে নূর হোসেন এক গর্ব, নতুন এক সাহসের নাম।

‘শহীদ নূর হোসেন’ বইয়ের প্রচ্ছদ

শহীদ নূর হোসেন

শামসুর রাহমান ও মতিউর রহমান

প্রথম প্রকাশ: ২০১৩

প্রথমা প্রকাশন

মূল্য: ১৩০ টাকা।

বইটি গতানুগতিক কোনো বইয়ের মতো নয়। এটি কবিতা ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন দিয়ে সাজানো হয়েছে। কবিতাগুলো লিখেছেন কবি শামসুর রাহমান। তাঁর তিনটি কবিতা এই বইয়ে জায়গা পেয়েছে। প্রতিবেদনগুলো সাংবাদিক মতিউর রহমানের। তাঁর রয়েছে পাচঁটি লেখা। বইটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কবি শামসুর রাহমানের কবিতা ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। নূর হোসেন স্মরণে তাঁর মারা যাওয়ার বছর অর্থাৎ ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে কবিতাটি ছাপা হয়েছিল সাপ্তাহিক ‘একতা’য়। শামসুর রাহমানের এই কবিতা নূর হোসেনকে দেশবাসীর সামনে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়। এতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হয়। মনে হয়, নূর হোসেন অর্থই সমগ্র বাংলাদেশ। মতিউর রহমান প্রতিবেদনগুলোতে ব্যক্তি নূর হোসেন, তাঁর বাবা মজিবুর রহমান, পরিবারের সদস্যদের কথা তুলে ধরেছেন। নূর হোসেনকে পূর্ণাঙ্গভাবে তুলে ধরার জন্য লেখক মতিউর রহমান বারবার নূর হোসেনের বয়োবৃদ্ধ পিতা মজিবুর রহমানকে সামনে নিয়ে এসেছেন। নূর হোসেনের অব্যক্ত কথাগুলোর প্রতিধ্বনিই ধ্বনিত হয়েছে মজিবুর রহমানের কণ্ঠে। মজিবুর রহমানের কথার সূত্র ধরেই লেখক নিজেও মাঝেমধ্যে কিছু মন্তব্য করেছেন।

গণতন্ত্রের প্রতি দুই লেখকের উদার ভালোবাসা এই বইয়ে প্রকাশ পেয়েছে। একজন লেখার মাধ্যমে নূর হোসেনের অবদানকে সবার সামনে তুলে ধরেছেন, অন্যজন কবিতা লিখে নূর হোসেনকে করে রেখে গেছেন অবস্মরণীয়।

শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে বইটি লেখা হলেও এটি কেবলই এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। দীর্ঘ একটি সময়ের একজন জীবন্ত সাক্ষী ছিলেন নূর হোসেনের বাবা মজিবুর রহমান। সত্যিকার অর্থে বইটির প্রকৃত নায়ক তিনি। তাঁর সূত্র ধরে ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী সাত দশকের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে এখানে। একই সঙ্গে সে সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাও আলোচনায় এসেছে।

২০০৫ সালের ৫ মার্চ নূর হোসেনের পিতা মারা যান। মৃত্যুর কিছুদিন আগেও বড় ছেলে আলী হোসেনকে দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘নূর হোসেন যা চেয়েছিল, তা তো হলো। স্বৈরতন্ত্র নিপাত হলো। এখনো কেন দেশে এত হানাহানি, সন্ত্রাস? গণতন্ত্র তো মুক্তি পেল না।’ মৃত্যুযন্ত্রণার মধ্যেও গণতন্ত্রের জন্য মজিবুর রহমানের হাহাকার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা। গণতন্ত্রের অপরিহার্যতার কথা। এই গণতন্ত্রকে ভালোবেসেই হাসিমুখে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মজিবুর রহমানের ছেলে নূর হোসেন। শহীদ নূর হোসেন শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একজন সৈনিকই শুধু নন, তিনি ন্যায় ও সততার প্রতীক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্রভাবে রুখে দাঁড়ানোর প্রতীক। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক সাহসী কণ্ঠ, যিনি নিজেকে তৈরি করেছিলেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এক স্বপ্নসাধক হিসেবে।

২০১৩ সালে বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন বিশিষ্ট শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। বিভিন্ন পাতায় তাঁর আঁকা স্কেচ বইটিকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে।

সবশেষে বলব, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাস লিখতে গেলে বারবার শহীদ নূর হোসেনের নাম উচ্চারিত হবে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পথিকৃত হিসেবে তিনি সবসময় বিবেচিত হবেন। তরুণ প্রজন্মের কাছেও তিনি হতে পারেন এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। সে ক্ষেত্রে নূর হোসেনের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভুক্ত হওয়া জরুরি। কারণ, গণতন্ত্রের প্রাথমিক পাঠ স্কুল–কলেজ থেকেই শুরু হওয়া দরকার।