ভাস্কর: সনদ বিশ্বাস
ভাস্কর: সনদ বিশ্বাস

শরীরী অবয়বের প্রতীকায়ন

লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে চলছে সনদ বিশ্বাসের ‘লিমিনাল হরাইজন’ নামের প্রদর্শনী। মোটাদাগে এটি ভাস্কর্য প্রদর্শনী। সনদ বিশ্বাস মূলত ভাস্কর হলেও শিল্প সৃষ্টির ক্ষেত্রে তাঁর আগ্রহ বিভিন্ন মাধ্যমে। ফলে এখানে আছে ড্রইং, পেইন্টিং আর ফটোগ্রাফি। সঙ্গে শিল্পী অতীতে যেসব পারফরম্যান্স-শিল্প করেছিলেন, রয়েছে সেগুলোর স্থিরচিত্রও। সব মিলিয়ে এতে শিল্পীর জীবনবোধের বৈচিত্র্যই দৃশ্যমান। 

মানবশরীরের অবয়বকে প্রতীকায়িত করেছেন শিল্পী। কিছু ক্ষেত্রে মানুষের শরীরকে তিনি বিমূর্ত করেছেন, সরলীকরণ করেছেন শরীরের আকারকে। শিল্পী মাত্তিস কিংবা ইগন শিলের পেইন্টিংয়ের কথা মনে পড়ে ভাস্কর সনদের কিছু কাজ দেখলে। আবার যখন তিনি তাঁর ফাইবার গ্লাসের ভাস্কর্যে বেলুনের মতো মানবশরীরকে ফুলিয়ে তোলেন, তখন মনে প্রশ্ন আসে, মানুষের জীবন বেলুনের মতোই খুব নাজুক কি না!

সনদের কাজগুলোয় সেই অর্থে গল্প নেই। তাঁর শিল্পকর্মের ধরন নন-ন্যারেটিভ। তবে যে দৃশ্য তিনি তৈরি করেন, সেগুলো ভাবনা-জাগানিয়া, অনুভূতির আখড়া হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন চিত্রকরের ছবি তাঁর ভালো লাগে। সেখান থেকে তিনি নেন ভাবনা, ইমেজ ও উৎসাহ। মানুষের দেহ, দেহযন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ, ভেতরের কলকবজা থেকে শুরু করে সবকিছুকেই তিনি তাঁর অস্তিত্ববিষয়ক ভাবনার সঙ্গে জুড়েছেন। জীবনের অর্থ, মানুষে মানুষে সম্পর্কের মিথস্ক্রিয়া এবং ব্যক্তির বেঁচে থাকার ইশতেহার সম্পর্কে নিজের দর্শন অনেকভাবেই আনতে চেয়েছেন সনদ। আর তাঁর বন্ধু সানজিদ মাহবুব সেই ভাবনাকে কিউরেশনের মাধ্যমে আরও সুচারুভাবে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন। পেপার ম্যাশ, ফাইবার গ্লাস, সিমেন্ট ইত্যাদি মাধ্যমে ভাস্কর্য করেছেন শিল্পী। এখানে আছে ৪৮টি শিল্পকর্ম। 

প্রদর্শনীটি চলবে ৭ জানুরারি পর্যন্ত।

অনিন্দ্য নাহার হাবীব