গ্যালারি কায়া প্রতিবার এমন প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করে, যেখানে নকশার মাধ্যমে ছবির আর্থবোধ তৈরি হয়, দর্শকও নতুনভাবে ছবি দেখার অবকাশ পান। এই ধারাবাহিকতায় আয়োজিত হলো তাদের নতুন প্রদর্শনী ‘স্কেপ’। প্রবীণ ও নবীন মিলিয়ে ২২ জন শিল্পী এতে অংশ নিয়েছেন।
প্রতিনিয়ত আমরা ভিন্ন ভিন্ন স্কেপ দেখি—কখনো ভূদৃশ্য, কখনো সাগর, কখনোবা শহরের চিত্র। শিল্পীরা তাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন এসব চিত্র। তবু ছবি তখনই সার্থক হয়, যখন তা সাধারণ দৃশ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশেষ কিছু হয়ে ওঠে। হামিদুজ্জামান খানের ‘কোস্টাল লাইফ’ শিরোনামের ছবিতে এমনই অনুরণন দেখা যাবে। চন্দ্র শেখর দের ‘অ্যানশিয়েন্ট বিউটি’ ছবিটিতে শহরের দৃশ্য এবং এখানে বসবাসরত মানুষের জীবন–রসায়নের যান্ত্রিকতাসমেত এর যে কৃত্রিম, চকচকে পরিপাটি ও কঠিন রূপ, তারই রূপায়ণ ফুটে উঠেছে।
জামাল আহমেদের ‘ফ্লাইট ফ্রম রিভার ব্যাংক’ ও রণজিৎ দাসের ‘টুইলাইট’ দর্শককে গভীর ভাবনার খোরাক জোগায়। আর আনিসুজ্জামানের ‘আরবান মিউজিং’ নগরজীবনের গভীরতাকে উপস্থাপন করেছে। কামরুজ্জামান সাগরের ‘হাউ সারভাইভ’ ও ‘জার্নি’—এ ছবি দুটি দৃশ্য রচনায় আমাদের ধারণাকে নাড়া দেবে, তাঁর রচনার গঠনে জটিল কাঠামো চিন্তার নতুন দরজা খুলে দেয়। সোহাগ পারভেজের ‘স্ট্রম অন হরাইজন’, কামরুজোহার ‘ফিশিং বোট’, এবং আলপ্তগীন তুষারের ‘বুলক-কার্ট’ তুলে ধরে শিল্পের বৈচিত্র্য।
নবরাজ রায়ের দুটি ছবি দৃশ্য রচনায় পঞ্চাশের দশকের আধুনিক গঠনের ধারাবাহিক অংশ, যা মিরোর কাতালনিয়ার ভূচিত্রের কাজের ধারাবাহিক রূপান্তর বলেই মনে হয়। সৈকত হোসেনের ‘উইনার অব টাইম-৭৬’ ও রুহুল আমিন তারেকের ‘মাই ভিলেজ–২’—এ ছবিগুলোতেও রয়েছে বিশেষ দ্যোতনা। শাহনুর মামুনের ‘রেইনি ডে’ শহুরে প্রকৃতির রহস্যময়তাকে ধারণ করে আছে।
দৃশ্য রচনার নানা রূপ দৃশ্যমান করার মধ্য দিয়ে প্রদর্শনীটি প্রকৃতপক্ষে ‘স্কেপ’–এর ধারণাকে আরও প্রসারিত করেছে। ২৯ নভেম্বর শুরু হয়ে এটি চলেছে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সৈয়দ গোলাম দস্তগীর