বিচিত্রিতা : লর্ড বায়রন

লর্ড বায়রন (১৭৮৮—১৮২৪)
লর্ড বায়রন  (১৭৮৮—১৮২৪)

ব্রিটিশ কবি কিন্তু গ্রিক বীর

ইংরেজি সাহিত্যের সর্বকালের সর্বাধিক আলোচিত কবিদের একজন লর্ড বায়রন। মূলত রোমান্টিক ঘরানার এ কবির জন্ম ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হয় একজন গ্রিক বীর হিসেবে। ১৮১৬ সালে বিভিন্ন কারণে ইংল্যান্ড ছাড়েন বায়রন। একপর্যায়ে অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন গ্রিসের স্বাধীনতাযুদ্ধে। একসময় তিনি আবিষ্কার করেন গ্রিক নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বই স্বাধীনতার পথে প্রধান অন্তরায়। ১৮২৩ থেকে এই দ্বন্দ্ব মেটানোয় মনোনিবেশ করেন তিনি। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশে অসুস্থ হয়ে ১৮২৪ সালের ১৯ এপ্রিল মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান, নিজ জন্মভূমি থেকে বহুদূরে গ্রিসের অ্যাটোলিয়ায়। অন্য একটি দেশের স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুর নিদর্শন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

অদ্ভুত সব সঙ্গী

বায়রনের বন্য প্রকৃতির জীবনে বিভিন্ন প্রাণীসঙ্গ ছিল উল্লেখ করার মতো। কথিত আছে, ক্যামব্রিজে পড়ার সময় তাঁর পোষা কুকুরকে নিয়ে ডরমিটরিতে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে কুকুর রাখার অনুমতি না মেলায় পোষা ভাল্লুকটিকে নিজের বন্ধু ঘোষণা করে, তাকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতেন আর মানুষের ভীতবিহ্বল চেহারা দেখে আনন্দ পেতেন। তাঁর সমকালের আরেক বিখ্যাত রোমান্টিক কবি শেলি একবার বায়রনের বাসস্থান বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘বায়রনের বাড়ি মানেই দশটি ঘোড়া, আটটি বিশালদেহী কুকুর, তিনটি বানর, পাঁচটি বিড়াল, একটা ঈগল পাখি, একটা কাক এবং একটি বাজপাখি…এখানেই শেষ নয়, সুবিশাল সিঁড়িতে দেখা হয়ে যায় পাঁচ পাঁচটি ময়ূর, দুটি গিনি মুরগি ও একটা মিসরীয় সারসের সঙ্গে।’

উন্মাদ, মন্দ ও বিপজ্জনক

বায়রনের ব্যক্তিজীবন ছিল প্রচণ্ড অগোছালো। জীবনে কতবার, কতজনের প্রেমে পড়েছেন হিসাব করে বলা মুশকিল। তাঁর প্রেমের ধরনও ছিল বিচিত্র। নিজের সৎবোন থেকে শুরু করে অল্পবয়সী পুরুষ—নানা জনের সঙ্গে নানান মাত্রার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বায়রন। কবির এক সাবেক প্রেমিকা তাঁর লাগামহীন রোমান্সে বিরক্ত হয়ে জনসমক্ষে বায়রনকে ‘উন্মাদ, মন্দ ও বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

সূত্র: ম্যান অব লা বুক, দ্য কালচার ট্রিপ এবং গ্রিকরিপোর্টারডটকম

গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির