হানা দিয়েছে অমিক্রন। পেছাল অমর একুশে বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি যে মেলা হওয়ার কথা ছিল, তা আবার কখন, কীভাবে হতে পারে—এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছে নানা মত। বেশির ভাগ লেখকই চান ফেব্রুয়ারিতেই বইমেলা হোক। কিন্তু করোনা বাস্তবতাও আমলে নিয়েছেন তাঁরা। বইমেলা নিয়ে আট লেখকের কথকতা । পড়ুন আসিফ নজরুলের অভিমত।
আমি যেকোনো পরিস্থিতিতে বইমেলার সমর্থক। আর বিলম্ব না করে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলা করা উচিত। মিটিং-মিছিল, বাণিজ্য মেলা, গণরুম—সব অব্যাহত আছে, মেলা নিয়ে তাহলে এত দ্বিধার কারণ কী! সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখলে মনে হয় করোনাঝুঁকি আছে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর বইমেলায়। এটি তো ঠিক নয়।
মেলায় করোনাঝুঁকি অস্বীকার করি না। তবে এ জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। মেলায় কমপক্ষে ৫০ টাকা প্রবেশমূল্য ধার্য করা যেতে পারে। তাহলে অহেতুক লোকের আগমন বন্ধ হবে, এতে করোনাঝুঁকি কমে যাবে। আর মাস্কের পাশাপাশি প্রত্যেক স্টলে স্যানিটাইজার রাখা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। করোনার কারণে মেলায় বিক্রয় কম হয় বলে প্রকাশকদের স্টলের ভাড়া কমপক্ষে অর্ধেক হ্রাস করা উচিত বলেও আমি মনে করি।
এবার মেলা উপলক্ষে প্রথমা প্রকাশন থেকে দোষ নামে আমার নতুন উপন্যাস বের হয়েছে। বাতিঘর বের করছে স্মৃতিচারণামূলক বই কয়েকজন হুমায়ূন আহমেদ। মেলা হোক আর না হোক, আমার বই প্রকাশ বন্ধ হয় না। কিন্তু মেলা না হলে বই বিক্রয় প্রায় অর্ধেক কমে যায়। অনেক লেখক ও প্রকাশকের জন্য এটি আরও ক্ষতিকর হয়। মেলা না হলে নতুন লেখকদের বই প্রকাশও খুব কম হয়। এটি তাই কোনোভাবে কাঙ্ক্ষিত নয়।
বই সৃজনশীল ও মননশীলতার প্রকাশ। এ দেশে বই প্রকাশ আর বিক্রি মূলত ফেব্রুয়ারির মেলাকেন্দ্রিক। মেলা আমাদের সংস্কৃতিরও একটি প্রাণোচ্ছল ধারক। মেলা থাকুক অব্যাহত।