ঢাকার মাস্টারমাইন্ড স্কুল থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করেছিলেন রাইয়ান হক। একে একে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় যখন ফিরিয়ে দিল, বিকল্প ভাবতে শুরু করলেন তিনি। স্ট্যানফোর্ডের ফল প্রকাশ তখনো বাকি। কিন্তু রাইয়ান তত দিনে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ, যেসব জায়গায় ভর্তির সুযোগ তুলনামূলক বেশি, সেখান থেকেই ডাক আসেনি। তবে বাবা লিটু হক তখনো আশাবাদী। তাঁর কথাতেই স্ট্যানফোর্ডের ওয়েবসাইটে লগইন করেন রাইয়ান। ফল দেখেই চমকে ওঠেন। ২০২৩-২৪ সেশনে সুযোগ পেয়ে গেছেন। ল্যাপটপের পর্দায় বার্তাটা দেখেও সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছিল। মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই ফেলেন রাইয়ান।
স্ট্যানফোর্ডে যেকোনো বিষয় নিয়েই পড়তে পারবেন রাইয়ান। তবে তাঁর আগ্রহের জায়গা অর্থনীতি ও বিশ্বব্যবস্থা। সঙ্গে জানিয়ে রাখলেন, উন্নয়ন অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করতে চান। হতে চান পরিবেশ অর্থনীতিবিদ।
ছোটবেলা থেকেই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন রাইয়ান। অলিম্পিয়াডের মতো প্রতিযোগিতামূলক আসরগুলোর নিয়মিত মুখ। গণিত অলিম্পিয়াড দিয়ে হাতেখড়ি, দশম শ্রেণিতে এসে শুরু করেন বাংলাদেশ রোবোটিকস অলিম্পিয়াড। আন্তর্জাতিক রোবোটিকস অলিম্পিয়াডেও অংশ নিয়েছেন। গত বছর ক্লাইমেট সায়েন্স অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে ৫৫ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে অষ্টম স্থান অধিকার করে তাঁর দল। একইভাবে ইকোনমিকস অলিম্পিয়াডের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিকস কাপে সিলভার মেডেল এবং কুইন্স কমনওয়েলথ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় গোল্ড ফাইনালিস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি। রাইয়ান জানান, পাঠ্যক্রমবহির্ভূত এসব কার্যক্রম তাঁর স্ট্যানফোর্ড–যাত্রাকে সহজ করেছে।
বাংলাদেশের জলবায়ু নিয়ে কাজ করতে চান এই তরুণ। কারণ হিসেবে বলেন, ‘আমাদের দেশের গরিব-দুঃখী, বেদে সম্প্রদায় কিংবা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তন ভীষণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। এ সমস্যার মোকাবিলা করতেই স্ট্যানফোর্ডে পরিবেশ অর্থনীতি ও উন্নয়ন অর্থনীতি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। আবার রোবোটিকস যেহেতু ভালো লাগা ও আবেগের জায়গা, তাই রোবটপ্রযুক্তিকেও কাজে লাগাতে চাই।’