১৯৯৮ সাল। আলোর মুখ দেখল প্রথম আলো। উন্নত ও পরিচ্ছন্ন ছাপা, উজ্জ্বল রঙের ছবি, বিভিন্ন বিভাগের আকর্ষণীয় নাম, খবর ও লেখা উপস্থাপনায় ভিন্নতা, নিরপেক্ষতা ও নিজস্বতা দিয়ে অচিরেই পাঠকের মন জয় করে নিল প্রথম আলো।
আমারও তখন পুরো মাত্রায় তারুণ্য। সাহস করে বাবার সঙ্গে কথা বলতে পারি। ঘুমভাঙা সকালে পত্রিকার ভাঁজ ভেঙে প্রিয় পাতাটা নিয়ে পড়ার মতো সাহসও হয়েছে। একসময় অনুভব করতে শুরু করলাম, আমি গভীরভাবে পত্রিকাটির প্রেমে পড়েছি। শুরুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত আমি ও আমার পরিবার প্রথম আলোর পাঠক ও গ্রাহক। প্রথম আলো প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বাবাকেও আর কখনো পত্রিকা বদল করতে দেখিনি। মৃত্যুর আগে সুস্থ থাকার দিন পর্যন্ত তিনি প্রথম আলোর পাঠক ছিলেন।
কিছু প্রিয় কখনো কখনো অধিকতর প্রিয় হয়ে ওঠে। আপন আলয়ে যাদের সঙ্গে নিত্য বসবাস, হয়ে ওঠে তাদের সহযাত্রী। আমার দুই কন্যা। তারাও এখন প্রথম আলোর পাঠক। একসময় বাবা আর কারও হাতে ভাঁজ না ভাঙার আগেই প্রথম আলো পড়তেন। পড়েছি আমিও। একই ধারাবাহিকতায় আজ আমার কন্যারা সদ্য আসা পত্রিকাটা সবার আগে হাতে নিতে চায়। প্রতি মাসের ‘কিশোর আলো’র জন্যও তারা তীব্র অপেক্ষা করে। বাবা, আমি এবং আমার দুই কন্যা—আমরা তিন প্রজন্ম প্রথম আলোর পাঠক।
আমার বড় কন্যা প্রথম যেদিন পৃথিবীর আলো দেখেছে, সেই দিনও ছিল ৪ নভেম্বর। ঠিক তিন বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো মা হলাম। সেদিনও ছিল ৪ নভেম্বর। সেই থেকে ৪ নভেম্বর আমার কাছে হয়ে উঠল এক ঐশ্বরিক দিন।
আমি একসঙ্গে তিন প্রিয়র জন্মদিন পালন করি। প্রথম আলো এবং আমার দুই কন্যা। তিন প্রিয়র সঙ্গেই আমার নাড়ির টান।
৪ নভেম্বর কাছাকাছি এলে প্রায়ই মনে করি, কন্যাদের সঙ্গে করে নিয়ে একবার প্রথম আলো কার্যালয়ে যাব। বছর ঘুরে নতুন বছর আসে। সময় করে যাওয়া হয়ে ওঠে না। প্রথম আলোতে কাজ করেন কবির সুমন। নিজ জেলার সূত্রে আগে থেকে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। ৪ নভেম্বর তাঁর মাধ্যমে আমি প্রথম আলোকে নিয়মিত শুভেচ্ছা জানাই।
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া