৬ বছর পরও শীত এলেই ‘ভাইরাল’ তিনি, সাক্ষাৎকারে যা বললেন কুষ্টিয়ার সেই ব্যবসায়ী

সেবার শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছিল জনজীবন। এই শীতের প্রকোপ নিয়েই বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সরাসরি আয়োজনে কথা বলেছিলেন শামসুল আলম। আঞ্চলিক শব্দে সেদিন অনেক কথাই তিনি বলেছিলেন, তার মধ্যে একটি বাক্য ভাইরাল হয়ে যায়। ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও শীত এলেই এখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এবার শীতের আগেই তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌহিদী হাসান

প্রশ্ন

কেমন আছেন?

খুব ভালো আছি।

প্রশ্ন

আপনি তো ভাইরাল মানুষ...

জি, ভাইরাল হয়া গেছি। এক কথাতি সব ভাইরাল কইরে দিচে।

প্রশ্ন

কেমন লাগে?

ভালুই লাগে।

কুষ্টিয়ায় নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে শামসুল আলম
প্রশ্ন

সেদিনের ঘটনার কথা মনে আছে?

মনে থাকবে না মানে। খুব ভালো মনে আছে। ২০১৭ সালের এই সময়ে। সেদিন খুব শীত পড়িছিল। ওই দিন সকালবেলা দোকানের সামনে কয়েকজন মিলি আগুন ধরাইছি। একটা টেলিভিশন লাইভ করছিল। আমাকে বুইল্লো যে কাকা, শীতের কী অবস্থা। বুললাম যে শীতের ... জনজীবন অতিষ্ঠ। খেটে খাওয়া মানুষের খুব কঠিন অবস্থা।

প্রশ্ন

তারপর কী হলো?

পরে লোকে বলচে, তোর নামে ভিডিও বারাইচে। আমি নাকি ভাইরাল হয়ে গিচি। লোকজন দলে দলে চইলি আসছে। এমন পরিমাণ লোক আসা শুরু কইরলো, দোকানে থাকাই কঠিন। একরকম ভালোই লাগছিল। খারাপ লাগেনি।

শামসুল আলমের ভাইরাল সেই ছবি
প্রশ্ন

ওই শব্দটা কেন বলেছিলেন?

আসলে এটা আমাদের গিরামের অহরহ কথা। আঞ্চলিক শব্দ। পিরাই কথাতে সবাই বলে। এই কথা বলতে বোঝায় দাপট বা শক্তি। এটা আমাদের গ্রাম্য ভাষা।

প্রশ্ন

আপনার সেদিনের ভিডিও থেকে ছবি করে করে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহার হয়, জানেন কি না?

হু, জানি। নিজেও দেখি। আমার ফেসবুক আইডি আছে। ভালুই লাগে। কোনো সমস্যা নাই। ছেলেপুলেরা ভালোভাবেই করে। কোনো খারাপ লাগে না। বরং কোথাও গেলে সবাই চিনতে পারে। ছবি তোলে। ভালো ব্যবহারও করে। আর সারা দেশ থেকে এখনো অনেক ছেলেপুলেরা যোগাযোগ করে। আসে তারা। ছবি–ভিডিও করে নিয়ে যায়। খুব আনন্দ করে। ঢাকার একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ করে। তারা সবাই আমাকে ছোটন কাকা নামে চেনে ও ডাকে।

সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন শামসুল আলম
প্রশ্ন

পারিবারিকভাবে কোনো ঝামেলা হয় কি না?

না না, কেউ কিছু বলে না। পরিবারের স্ত্রী আছে। এক ছেলে পুলিশের গাড়ির চালক। এক মেয়ে আছে। দুই সন্তানের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা ভালো আছে। কুষ্টিয়া শহরে শিল্পকলার সামনে ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে টিন–সিমেন্ট বিক্রির দোকান। ব্যবসা ভালোয় চলে। তবে হরতাল–অবরোধে বেচাকেনা কম হচ্ছে।

প্রশ্ন

আবার তো শীত আসছে কিছু বলবেন কি না?

শীত আস্তে আস্তে বাড়ছে। তাই সবাইকে সাবধানে থাকার কথা বলব। বিশেষ করে শিশুদের যত্নে রাখতে হবে। যাঁরা বিত্তশীল, তাঁরা যেন অসহায়দের শীত নিবারণে সহায়তা করেন।