স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে পথচিত্র আঁকার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তামিম আনজু
আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে গেলেই চোখে পড়বে বড় জায়গাজুড়ে আঁকা একটি পথচিত্র। মহান স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে এই আলপনা এঁকেছি আমরা ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু বা থিম ছিল না। জাদুঘরের আশপাশে যে পিচঢালা রাস্তা রয়েছে, তা লাল-সবুজ রাঙাতে চেষ্টা করেছি। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের এই যৌথ উদ্যোগটির নাম ছিল ‘তারুণ্যের তুলিতে আঁকি স্বাধীনতা’।
২১ মার্চ ইফতারের আগে আগে আমরা কাজে নেমে পড়ি। ৮০-৯০ জন শিক্ষার্থী। সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষক। সবাই ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) চারুকলা বিভাগের। শুরুতে রাস্তায় সাদা রং করা হয়। কিন্তু এরপরই নামে ঝুম বৃষ্টি। রাত বারোটা-সাড়ে বারোটা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হতে থাকে। গানবাজনা করে সময় পার করতে লাগলাম আমরা। বৃষ্টি থামার পর দেখা গেল, কিছু কিছু জায়গায় রং উঠে গেছে। আবার রং করতে হলো। তবে পুরোদমে তখনো কাজ শুরু করা যায়নি। আমরা রাস্তা শুকানোর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এর মধ্যে সাহ্রির সময় হলো। সবাই একসঙ্গে সাহ্রি খেলাম।
খাওয়া শেষে এক মিনিটের জন্যও কেউ আর বসিনি। টানা ভোর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে গেছি। এ ধরনের কাজে একটা আলাদা মজা আছে। সবাই একসঙ্গে রাস্তায় রং করছে, দেয়ালগুলো রাঙাচ্ছে। প্যাটার্নটা ঠিক হলো কি হলো না—ভুল হওয়ার এমন কোনো ভয় কারও মনেই নেই! একটা ভালো উদ্যোগে অংশ নিতে পারাটাই এখানে বড়। আলপনা আঁকতে গিয়ে বেশ আনন্দও হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা একসঙ্গে ইফতার করেছি, সাহ্রি করেছি। সব মিলিয়ে অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মনে একটা ভয় কাজ করে—আমি কি বড় কোনো কাজ করতে পারব? এসব পথচিত্র ও আলপনা আঁকার মাধ্যমে রং–তুলির সঙ্গে সখ্য হয়। একসঙ্গে কাজ করলে ভয়টাও কেটে যায়। নতুনরাই তাই সবচেয়ে বেশি মুখিয়ে থাকে এমন উদ্যোগে।